ঢাকায় এসে শুক্রবার থেকে চট্টগ্রামের সঙ্গে কাজ করছেন ইংল্যান্ডের সাবেক কিপার-ব্যাটসম্যান নিক্সন। এরই ফাঁকে ৩৬ বছর বয়সে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক, নিজের উদ্ভাবনী শট, বিপিএলে কোচিং করানো নিয়ে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের সঙ্গে কথা বললেন তিনি।
টি-টোয়েন্টি ব্লাস্ট ও ক্যারিবিয়ান প্রিমিয়ার লিগে কোচিং করানোর অভিজ্ঞতা আছে। ঠিক কিসের প্রত্যাশা নিয়ে বিপিএলে এলেন?
পল নিক্সন: অনেক বছর এই টুর্নামেন্ট আমি টিভিতে দেখেছি। সাবেক ক্রিকেটার হিসেবে দেখেছি, এখন কোচ হিসেবে দেখছি। এটা অনেকটা পাঠ্যসূচির মতো। এখানে আসতে পারাটা দারুণ সম্মানের। ইংলিশ কোচসহ সারা বিশ্বের সব কোচই এখানে আসতে এবং অভিজ্ঞতাটা উপভোগ করতে চায়। কারণ, এখানে ক্রিকেটের জন্য আবেগ, ক্রিকেটের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি অসাধারণ। এখানে এসে চাপ ও প্রাণশক্তি বোঝা অসাধারণ একটা ব্যাপার।
নতুন একটি দল, নতুন সব ছাত্র। এদের সঙ্গে কাজ করাটা কতটা চ্যালেঞ্জিং হবে?
নিক্সন: ছেলেরা চার তারিখ থেকে প্রস্তুতি শুরু করেছে। ওদের প্রাণশক্তি এখন পর্যন্ত যথেষ্ট ভালো, কোচ হিসেবে এটা সন্তোষজনক। ওদের মনোভাব ও সঙ্গ চমৎকার। দল এই প্রতিযোগিতায় এক সঙ্গেই থাকবে। ওদের জন্য আমাদের একটাই মন্ত্র, ‘আমরা এখন একটা আসনে থাকতে চাই, যেখানে সবাই বসতে চায়।’ আমরা মজা করব এবং একে অন্যকে সমর্থন করব। পরস্পরকে উৎসাহ দেব এবং সামনের দিকে এগিয়ে যাব।
আপনার হাত ধরে রিভার্স সুইপ পৌঁছেছে নতুন উচ্চতায়। স্কুপ শট খেলায়ও ছিলেন দক্ষ। এই ধরনের শট কতটা কার্যকর হতে পারে? কিভাবে ক্রিকেটাররা এমন সব শট খেলতে পারেন?
নিক্সন: অবশ্যই এই ধরনের শটগুলোর একটা ভূমিকা থাকবে। রিভার্স সুইপ আমার ক্ষেত্রে খুব ভালো কাজ করেছে। লক্ষ্য তাড়া করার সময় এই প্রতিযোগিতায় রান করা কঠিন হতে পারে। সেক্ষত্রে রিভার্স সুইপ ব্যাটসম্যানদের জন্য একটি শক্তির জায়গা হতে পারে। আর স্কুপের কথা যদি বলেন, (তিলকারত্নে) দিলশান এই ক্ষেত্রে অনেকের কাছেই আছেন অন্য উচ্চতায়। এখনকার সময়ে ক্রিকেট ৩৬০ ডিগ্রি খেলা। বোলাররা তীব্র চাপের মধ্যে থাকে। ব্যাটসম্যানরা যেভাবে অনুশীলন করে প্রস্তুতি নেয়, যেভাবে সাহস নিয়ে শট খেলে, অসাধারণ। আমরা চাই ছেলেরা ওদের শক্তির জায়গা জানুক এবং বুঝতে পারুক কোথায় উন্নতি করতে হবে। খেলা শুরুর আগে আমরা উন্নতি প্রয়োজন এমন জায়গাগুলো নিয়ে কাজ করব।
অবশ্যই চূড়ান্ত লক্ষ্য শিরোপা জয়। টুর্নামেন্ট শুরুর আগে কিভাবে দল গুছিয়ে নিতে চান। আর শিরোপা জিততে কী প্রয়োজন বলে মনে করেন?
নিক্সন: চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিতে হয়। কঠোর পরিশ্রমের দরকার হয়। ছেলেদের ব্যাট ও বল হাতে ম্যাচ জেতার মানসিকতা থাকতে হয়। যারা প্রবল চাপের মধ্যে ঠিকঠাক চিন্তা করতে পারে ওরাই সেরাটা দিতে পারে। যদি ওরা ঠিকভাবে চিন্তা করতে পারে তাহলে কেন নয়?
অভিষেক হয়েছিল ৩৬ বছর বয়সে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে খেলার স্বপ্ন তখনও কতটা বেঁচে ছিল?
নিক্সন: আমি সব সময় সেরা হতে চেয়েছি। নিজের ওপর বিশ্বাস সব সময়ই ছিল। কে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে খেলতে না চায়। ইংল্যান্ডের কিংবদন্তি (কিপার-ব্যাটসম্যান) অ্যালেক স্টুয়ার্ট আমাকে অনেক বছর দলের বাইরে রেখেছিল। তিনি ছাড়াও আমাদের দারুণ কয়েকজন কিপার-ব্যাটসম্যান ছিলেন। কেউ একজন আমাকে বলেছিল, ৩৬ বছর বয়সে আমার অভিষেক হচ্ছে, অস্ট্রেলিয়া যেতে হবে। অস্ট্রেলিয়ায় সিরিজ জিতেছি, পরে ওয়েস্ট ইন্ডিজে বিশ্বকাপে খেলেছি। ইংল্যান্ডের হয়ে খেলা ছিল আমার স্বপ্ন, সেই সময়টা ছিল বিশেষ কিছু।
এই বয়স পর্যন্ত ক্ষুধাটা কিভাবে ছিল?
নিক্সন: অবশ্যই এর জন্য অনেক প্রাণশক্তি থাকতে হবে। আমার কৃষক বাবার কাছ থেকে পেয়েছি ওয়ার্ক এথিকস। দলের প্রতি নিবেদিত থাকা, দলের জন্য খেলা…আমার মনে হয় ব্যাপারটা আমার ডিএনএতেই ছিল।