‘ফর্ম ফিরে পেতে’ মুস্তাফিজকে আইপিএলের অনুমতি

চোট তার পিছু লেগেই আছে। লম্বা টুর্নামেন্টে সেই শঙ্কা বাড়ে আরও। শারীরিক ও মানসিক ক্লান্তির ধকল তো আছেই। সবকিছু মিলিয়ে গত আইপিএলে খেলার ছাড়পত্র দেওয়া হয়নি মুস্তাফিজুর রহমানকে। বিসিবি সভাপতি এমনও বলেছিলেন, দুই বছর অন্তত এসব ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগে খেলা উচিত হবে না চোটপ্রবণ এই পেসারের। সেই মুস্তাফিজ এবার পেয়েছেন বিসিবির সবুজ সঙ্কেত। বোর্ডের ভাবনা, আইপিএল খেলে ফর্ম ফিরে পেতে পারেন এই বাঁহাতি পেসার।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 5 Dec 2019, 05:48 PM
Updated : 5 Dec 2019, 05:48 PM

বাংলাদেশ থেকে ৬ জন ক্রিকেটার আগামী আইপিএল খেলতে নিবন্ধন করেছেন। মুস্তাফিজের সঙ্গে আগ্রহীদের তালিকায় আছেন তামিম ইকবাল, মেহেদী হাসান মিরাজ, মাহমুদউল্লাহ, তাসকিন আহমেদ ও সৌম্য সরকার।

আগামী ১৯ ডিসেম্বর নিলাম হবে কলকাতায়। নিবন্ধন করা মানেই অবশ্য নিলামে নাম ওঠা নয়। ২৫৮ জন বিদেশিসহ যে ৯৭১ জন ক্রিকেটার নিবন্ধন করেছেন, তাদের মধ্য থেকে নিজেদের পছন্দের একটি তালিকা দেবে দলগুলি। সেই তালিকায় থাকা ক্রিকেটারদেরই কেবল নাম থাকবে নিলামে।

এবারের নিলাম থেকে বিদেশি ক্রিকেটার নেওয়া যাবে সর্বোচ্চ মাত্র ২৯ জন। সহজেই অনুমেয়, খুব বেশি নাম নিলামে উঠবে না। মুস্তাফিজের নামও তাই উঠতে নাও পারে।

তবে নিবন্ধন যখন করেছেন, বিসিবির অনুমতি অবশ্যই পেয়েছেন। অথচ মুস্তাফিজের বারংবার চোটে পড়া নিয়ে বিরক্ত হয়ে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান গত বছরের জুলাইয়ে বলেছিলেন, “মুস্তাফিজ এসে শুরুতে অসাধারণ সাফল্য নিয়ে এসেছিল। এখন বারবার ইনজুরিতে পড়ে যাচ্ছে। সবচেয়ে দুঃখজনক হচ্ছে, ও বাইরে ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগ খেলতে গিয়ে ইনজুরড হচ্ছে, আর দেশকে সার্ভিস দিতে পারছে না। এটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।”

“আমাদের বোর্ডে থাকবে, বোর্ডই তাকে সেবা শুশ্রূষা করবে, ভালো করবে, আবার সে ওখানে ওদের জন্য খেলতে গিয়ে জাতীয় দলে খেলবে না, আবার আমরা ওকে ঠিক করব, এটা হয় না। জানিনা শেষ পর্যন্ত কি হবে, তবে আমি ওকে বলে দিয়েছি, আগামী দুই বছর ওর বাইরে যাওয়া ঠিক হবে না।”

সেই ভাবনা কেন বদলে গেল এবার? বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে ব্যাখ্যা করলেন বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান আকরাম খান।

“মূলত ইনজুরির কারণেই তখন ওই ভাবনা ছিল। আমাদের মনে হয়েছে, এখন ওর শরীর কিছুটা থিতু হয়েছে। বেশ কিছুদিন ধরে টানা খেলছে। জাতীয় লিগ খেলল, ভারত সফরে খেলল। নিজেকে ম্যানেজ করে চলতে পারলে আপাতত শঙ্কা ততটা নেই।”

“আরেকটা ব্যাপার হলো, ওর ফর্মও একটা ভাবনার বিষয়। আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ বোলার ও। আইপিএল খেলার যদি সুযোগ পায় আর ফর্ম ফিরে পায়, তাহলে আমাদের জন্য খুবই ভালো হয়।”

সম্প্রতি ভারত সফরে তিনটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচে কোনো উইকেট পাননি মুস্তাফিজ। ছিলেন ভীষণ খরুচে। বেশ কিছু দিন ধরেই তিনি বল হাতে ধারহীন। দেদার রান দিয়েছেন ভারত সফরের আগে ত্রিদেশীয় সিরিজে আফগানিস্তান, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষেও।

আইপিএলে তার সাফল্য ব্যর্থতার দুইরকম অভিজ্ঞতাই আছে। ২০১৬ আইপিএলে তিনি উপহার দিয়েছিলেন দারুণ বিস্ময়। চমক জাগানিয়া পারফরম্যান্স দেখিয়েছিলেন ম্যাচের পর ম্যাচ। সানরাইজার্স হায়দরাবাদের হয়ে ১৭ উইকেট নিয়েছিলেন ওভারপ্রতি সাতের কম রান দিয়ে।

২০১৭ আইপিএলে একই দলের হয়ে খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন কেবল এক ম্যাচে। ২.৪ ওভারে ৩৪ রান দিয়ে ছিলেন উইকেটশূন্য। ২০১৮ আইপিএলে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সের হয়েও তার পারফরম্যান্স ছিল হতাশাজনক। ৭ ম্যাচে ৭ উইকেট নিয়েছিলেন ওভারপ্রতি প্রায় সাড়ে ৮ করে রান দিয়ে।

বাংলাদেশের হয়ে তার সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সেও ভাটার টান স্পষ্ট। বিপিএলে এবার মুস্তাফিজ খেলবেন রংপুর রেঞ্জার্সের হয়ে। বৃহস্পতিবার থেকে দলের সঙ্গে অনুশীলনও শুরু করেছেন তিনি।