অস্ট্রেলিয়ার বিশাল সংগ্রহের পর বিপাকে পাকিস্তান

ট্রিপল সেঞ্চুরিতে রেকর্ড রাঙালেন ডেভিড ওয়ার্নার, মারনাস লাবুশেনের ব্যাট থেকে এলো দেড়শো ছাড়ানো ইনিংস-বোলারদের উপর ছড়ি ঘুরিয়ে অস্ট্রেলিয়া গড়ল পাহাড়সম সংগ্রহ। পরে ব্যাট হাতেও ধুঁকতে দেখা গেল পাকিস্তানকে। মিচেল স্টার্কের তোপে তিন অঙ্ক ছোঁয়ার আগেই ৬ উইকেট হারিয়েছে সফরকারীরা।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 Nov 2019, 01:18 PM
Updated : 30 Nov 2019, 01:18 PM

অ্যাডিলেইডে দিবা-রাত্রির টেস্টের দ্বিতীয় দিনে ওয়ার্নারের অপরাজিত ৩৩৫ ও লাবুশেনের ১৬২ রানের ইনিংসে ৩ উইকেটে ৫৮৯ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করে অস্ট্রেলিয়া। জবাবে ৯৬ রান তুলতে ৬ উইকেট হারিয়েছে পাকিস্তান। ৪ উইকেট হাতে রেখে ৪৯৩ রানে পিছিয়ে আছে তারা।

১ উইকেটে ৩০২ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিন খেলতে নেমে শুরু থেকে দ্রুত রান তুলতে থাকে অস্ট্রেলিয়া। প্রথম সেশনে ৩৫ ওভারে তারা তোলে ১৭৩ রান। আগের দিনের অপরাজিত লাবুশেন অবশ্য এদিন বেশিক্ষণ টিকেননি। শাহিন শাহ আফ্রিদির বলে বোল্ড হয়ে ফেরার আগে ২৩৮ বলে ২২টি চারে লাবুশেন করেন ১৬২ রান।

ওয়ার্নারের সঙ্গে তার ৩৬১ রানের জুটি দ্বিতীয় উইকেটে অস্ট্রেলিয়ার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। ১৯৩৪ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওভাল টেস্টে স্যার ডন ব্র্যাডম্যান ও বিল পন্সফর্ড দ্বিতীয় উইকেটে তুলেছিলেন ৪৫১ রান। 

লাবুশেনের ফেরার ওভারেই লেগ সাইডে বল ঠেলে নেওয়া সিঙ্গেলে ওয়ার্নার দুইশ স্পর্শ করেন ২৬০ বলে। বিরতিতে যাবার আগে ছাড়িয়ে যান টেস্টে নিজের আগের সর্বোচ্চ ২৫৩।

দ্বিতীয় সেশনেও ওয়ার্নারকে খুব একটা পরীক্ষায় ফেলতে পারেননি বোলাররা। তৃতীয় উইকেটে স্টিভেন স্মিথ ও তার ১২১ রানের জুটিতে স্মিথের অবদান মাত্র ৩৬।

ব্যক্তিগত ২৩ রানে টেস্টে দ্রুততম সাত হাজার রানের রেকর্ড গড়েন স্মিথ। সাত হাজারে পৌঁছাতে স্মিথের লাগল ১২৫ ইনিংস। এতদিন রেকর্ডটি ছিল সাবেক ইংলিশ ব্যাটসম্যান ওয়েলি হ্যামন্ডের, ১৩১ ইনিংস লেগেছিল তার।

মাইলফলকের ইনিংসটিকে অবশ্য বড় করতে পারেননি স্মিথ। শাহিন আফ্রিদির বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি।

ছবি: আইসিসি

এরপর ম্যাথু ওয়েডকে নিয়ে ইনিংস টানেন ওয়ার্নার, এগোতে থাকেন ক্যারিয়ারে প্রথম ট্রিপলের দিকে। ইফতিখার আহমেদের বলে চার মেরে পৌঁছান ২৯০-এর ঘরে। আর মোহাম্মদ আব্বাসের করা পরের ওভারের প্রথম বলে মিড উইকেট দিয়ে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে সপ্তম অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটসম্যান হিসেবে স্পর্শ করেন তিনশর গন্ডি।

তিনশ ছাড়ানোর পরও ওয়ার্নার ব্যাট করছিলেন দারুণ চ্ছন্দে। দলীয় ৫৮৯ রানে ইনিংস ঘোষণা করেন অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক টিম পেইন। ওয়েড অপরাজিত থাকেন ৩৮ রানে।

দিবা-রাত্রির টেস্টে ওয়ার্নারের ৩৩৫ রানই এখন কোনো ব্যাটসম্যানের সর্বোচ্চ স্কোর। আগের সর্বোচ্চ ছিল এই ম্যাচে ওয়ার্নারের প্রতিপক্ষ অধিনায়ক আজহার আলির। ২০১৬ সালের অক্টোবরে, ইতিহাসের দ্বিতীয় দিবা-রাত্রির টেস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে আজহারের ব্যাট থেকে এসেছিল অপরাজিত ৩০২ রান।

ব্যাটিংয়ে শুরু থেকেই অস্ট্রেলিয়ান পেসারদের সামনে অসহায় দেখাচ্ছিল পাকিস্তানের ব্যাটসম্যানদের। ৩৮ রান তুলতেই তারা হারায় প্রথম তিন ব্যাটসম্যানকে।

বাবর আজমের সঙ্গে চতুর্থ উইকেটে প্রতিরোধের চেষ্টা করেছিলেন আসাদ শফিক। তবে জুটিতে ৩১ রানের বেশি আসেনি। ৯ রান করা শফিককে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন স্টার্ক। বাঁহাতি এই পেসার এরপর নিজের এক ওভারেই ফিরিয়ে দেন ইফতিখার (১০) ও মোহাম্মদ রিজওয়ানকে (০)।

পাকিস্তানের ভরসা হয়ে একপ্রান্ত আগলে রেখেছেন আগের ম্যাচে সেঞ্চুরি করা বাবর। অপরাজিত আছেন ৪৩ রানে। সঙ্গী ইয়াসির শাহর সংগ্রহ ৪।

১৩ ওভারে ৫ মেডেনসহ ২২ রান খরচায় ৪ উইকেট নিয়েছেন স্টার্ক। একটি করে শিকার প্যাট কামিন্স ও জশ হেইজেলউডের।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

অস্ট্রেলিয়া ১ম ইনিংস: (আগের দিন ৩০২/১) ১২৭ ওভারে ৫৮৯/৩ ডি. (ওয়ার্নার ৩৩৫*, বার্নস ৪, লাবুশেন ১৬২, স্মিথ ৩৬, ওয়েড ৩৮*; আব্বাস ২৯-৭-১০০-০, শাহিন আফ্রিদি ৩০-৫-৮৮-৩, মুসা ২০-১-১১৪-০, ইয়াসির ৩২-১-১৯৭-০, ইফতিখার ১৫-০-৭৫-০, আজহার ১-০-৯-০)

পাকিস্তান ১ম ইনিংস: ৩৫ ওভারে ৯৬/৬ (শান মাসুদ ১৯, ইমাম-উল-হক ২, আজহার ৯, বাবর ৪৩*, আসাদ ৯, ইফতিখার ১০, রিজওয়ান ০, ইয়াসির ৪*; স্টার্ক ১৩-৫-২২-৪, কামিন্স ১৪-১-৪৫-১, হেইজেলউড ৮-২-২৯-১)