কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে শুক্রবার বাংলাদেশের প্রথম ইনিংস টিকেছে মাত্র ৩০.৩ ওভার। টেস্টে তাদের এর চেয়ে কম ওভার স্থায়ী ইনিংস আছে কেবল পাঁচটি।
বাংলাদেশের ইনিংসে নেই তেমন কোনো জুটি। ত্রিশের ঘর পর্যন্ত যেতে পারেননি কোনো ব্যাটসম্যান। দুই অঙ্ক ছুঁতে পেরেছেন কেবল তিন জন। রানের খাতা খুলতে পারেননি মুমিনুল, মোহাম্মদ মিঠুন, মুশফিকুর রহিম ও আবু জায়েদ।
১০ উইকেট ভাগ করে নিয়েছেন ভারতের তিন পেসার। সবচেয়ে উজ্জ্বল ২২ রানে ৫ উইকেট নেওয়া ইশান্ত। ২৯ রানে ৩ উইকেট নেন উমেশ। ঘরের মাঠে মোহাম্মদ শামি ২ উইকেট নেন ৩৬ রানে।
নানা আয়োজনের টেস্টের শুরু হয় বিশেষভাবে তৈরি মুদ্রা দিয়ে। সিরিজে দ্বিতীয়বারের মতো টস জিতে মুমিনুল নেন ব্যাটিং। বিরাট কোহলি জানান, টস জিতলে ব্যাটিং নিতেন তিনিও।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পশ্চিম বঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী ঘণ্টা বাজিয়ে উদ্বোধন করেন উপমহাদেশের প্রথম দিবা-রাত্রির টেস্ট।
প্রথম তিন ওভারে তেমন কিছু হয়নি। এরপরই শুরু বিপর্যয়ের। ইমরুল কায়েসকে ফিরিয়ে শিকার শুরু করেন ইশান্ত। তিন বলের মধ্যে মুমিনুল ও মিঠুনকে বিদায় করে বাংলাদেশকে এলোমেলো করে দেন উমেশ।
দলকে অনেকবার টেনে তোলা মুশফিকুর রহিম এবার ব্যর্থ। খেলেন ব্যাট-প্যাডে অনেক ফাঁক রেখে, বল তার ব্যাটে লেগে স্টাম্পে আঘাত হানে। আগের টেস্টে ব্যর্থ মাহমুদউল্লাহ পারেননি এবারও। ইশান্তের বলে ফিরেন কিপার ঋদ্ধিমান সাহার দুর্দান্ত এক ক্যাচে।
এক প্রান্ত আগলে রেখে এগোচ্ছিলেন সাদমান ইসলাম। থিতু হয়েও ইনিংস বড় করতে পারেননি এই ওপেনার। উমেশের বলে ফিরেন ঋদ্ধিমানকে ক্যাচ দিয়ে। এটি ভারতীয় কিপারের শততম ডিসমিসাল। সাদমান করেন সর্বোচ্চ ২৯ রান।
ক্রিজে যাওয়ার পর থেকে দারুণ খেলছিলেন লিটন দাস। শামির বাউন্সার হেলমেটে লাগলেও নড়ে যায়নি মনোবল। পরের বলে হাঁকান বাউন্ডারি। পরের ওভারে আসে আরেকটি বাউন্ডারি। অস্বস্তি বোধ করায় সেই ওভারেই মাঠ ছাড়েন লিটন। এই ম্যাচে আর খেলা হচ্ছে না ২৭ বলে ৫ চারে ২৪ রান করা এই তরুণের।
লাঞ্চের পর বেশিদূর এগোয়নি বাংলাদেশের ইনিংস। ইবাদত হোসেনকে বোল্ড করার পর ‘কনকাশন’বদলি নামা মেহেদী হাসান মিরাজকে থামান ইশান্ত। পরে নাঈমকে বোল্ড করে ইনিংসে দশমবারের মতো পাঁচ উইকেট পান এই পেসার।
আবু জায়েদকে ফিরিয়ে বাংলাদেশকে ১০৬ রানে গুটিয়ে দেন শামি। টেস্টে ভারতের বিপক্ষে এর চেয়ে কম রান একটিই আছে বাংলাদেশের। অভিষেক টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসের ৯১।
ইন্দোর টেস্টে তৃতীয় সেশনে গিয়ে থেমেছিল বাংলাদেশের ইনিংস। কলকাতায় গুটিয়ে গেল দ্বিতীয় সেশনেই। গোলাপি বলে আরও বিবর্ণ রাসেল ডমিঙ্গোর দল।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ: ৩০.৩ ওভারে ১০৬ (সাদমান ২৯, ইমরুল ৪, মুমিনুল ০, মিঠুন ০, মুশফিক ০, মাহমুদউল্লাহ ৬, লিটন ২৬ (আহত অবসর), নাঈম ১৯, ইবাদত ১, মিরাজ ৮, আল আমিন ১*, আবু জায়েদ ০; ইশান্ত ১২-৪-২২-৫, উমেশ ৭-২-২৯-৩, শামি ১০.৩-২-৩৬-২, জাদেজা ১-০-৫-০)