বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস: ৩০.৩ ওভারে ১০৬ ভারত প্রথম ইনিংস: ৪৬ ওভারে ১৭৪/৩ (প্রথম দিন শেষে) |
প্রথম দিনেই নিয়ন্ত্রণে ভারত
গোলাপি বলের টেস্টের প্রথম দিনটি বাংলাদেশের জন্য হলো ভুলে যাওয়ার মতো। টস জয় হাসির উপলক্ষ্য মেলেনি সারা দিনে। দুর্দান্ত বোলিং পারফরম্যান্সের পর ব্যাটিংয়ের দৃঢ়তায় ভারত প্রথম দিনেই নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে ম্যাচের।
টস জিতে বিস্ময়করভাবে ব্যাটিংয়ে নামা বাংলাদেশ দেখাতে পারেনি অভাবনীয় কিছু। ভারতের পেস ত্রয়ীর আক্রমণে গুটিয়ে গেছে তারা কেবল ১০৬ রানেই। এক যুগ পর দেশের মাটিতে ৫ উইকেট নিয়ে ভারতের সফলতম বোলার ইশান্ত শর্মা।
ব্যাটিংয়ে ভারত দুই ওপেনারকে দ্রুত হারালেও পরের ব্যাটসম্যানরা দলকে এগিয়ে নিয়েছেন অনায়াসেই। ফিফটি করে আউট হয়েছেন চেতেশ্বর পুজারা। তবে ফিফটি করে দলকে আরও এগিয়ে নিতে টিকে আছেন বিরাট কোহলি। তার সঙ্গী অজিঙ্কা রাহানে। দিন শেষে ভারতের রান ৩ উইকেটে ১৭৪। প্রথম দিনেই এগিয়ে গেছে তারা ৬৮ রানে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস : ৩০.৩ ওভারে ১০৬ (সাদমান ২৯, ইমরুল ৪, মুমিনুল ০, মিঠুন ০, মুশফিক ০, মাহমুদউল্লাহ ৬, লিটন ২৬ (আহত অবসর), নাঈম ১৯, ইবাদত ১, মিরাজ ৮, আল আমিন ১*, আবু জায়েদ ০; ইশান্ত ১২-৪-২২-৫, উমেশ ৭-২-২৯-৩, শামি ১০.৩-২-৩৬-২, জাদেজা ১-০-৫-০)।
ভারত ১ম ইনিংস: ৪৬ ওভারে ১৭৪/৩ (মায়াঙ্ক ১৪, রোহিত ২১, পুজারা ৫৫, কোহলি ৫৯*, রাহানে ২৩*; আল আমিন ১৪-৩-৪৯-১, আবু জায়েদ ১২-৩-৪০-০, ইবাদত ১২-১-৬১-২, তাইজুল ৮-০-২৩-০)
নির্বিঘ্নে দিন শেষ ভারতের
চেতেশ্বর পুজারার বিদায়ের পর অজিঙ্কা রাহানের সঙ্গে মিলে ভারতকে এগিয়ে নিয়েছেন বিরাট কোহলি। দাঁড়িয়ে গেছে দুজনের জুটি। ভারত এ দিন হারায়নি আর কোনো উইকেট। কলকাতা টেস্টের প্রথম দিন শেষেই এগিয়ে গেছে তারা ৬৮ রানে।
বাংলাদেশের ১০৬ রানের জবাবে ভারত দিন শেষ করেছে ৩ উইকেটে ১৭৪ রানে। ৫৯ রানে দিন শেষ করেছে কোহলি, রানে রাহানে। দুজনের অবিচ্ছিন্ন জুটির রান ৩৭।
কোহলির ফিফটি
পুজারা আউট হওয়ার ওভারেই দারুণ এক পুল শটে বিরাট কোহলি স্পর্শ করলেন ফিফটি। ভারত অধিনায়ক তার ২৩তম টেস্ট ফিফটি পেলেন ৭৬ বল খেলে।
৪০ ওভারে ভারতের রান ৩ উইকেটে ১৪৪। লিড ৩৮ রানের।
পুজারা আবার
এমনিতে থিতু হয়ে গেলে বড় স্কোর করেন যিনি, সেই চেতেশ্বর পুজারা আবার আউট হলেন ফিফটি পেরিয়েই। দারুণ ডেলিভারিতে তাকে ফিরিয়ে ইবাদত হোসেন পেলেন দ্বিতীয় উইকেট।
এই স্পেলে দারুণ বোলিং করছিলেন ইবাদত। ব্যাটসম্যানদের অস্বস্তিতে ফেলেছেন কয়েকবার। সেই ধারাবাহিকতায়ই পেলেন উইকেট। অফ স্টাম্পের সামান্য বাইরে পিচ করা ক্রস সিম ডেলিভারিটি বাড়তি লাফিয়ে পুজারার ব্যাটে ছোবল দিয়ে যায় স্লিপে। দ্বিতীয় স্লিপে ক্যাচ নেন সাদমান ইসলাম।
আগের ম্যাচে ৫৪ রানের পর পুজারা এবার ফিরলেন ১০৫ বলে ৫৫ করে। ভারত ৩ উইকেটে ১৩৭। তৃতীয় উইকেট জুটি ছিল ৯৪ রানের।
পুজারার ফিফটি
ইবাদত হোসেনের বলে সিঙ্গেল নিয়ে চেতেশ্বর পুজারা পা রাখলেন পঞ্চাশে। ৯৩ বলে ছুঁয়েছেন তার ২৪তম টেস্ট ফিফটি।
সিরিজের আগের টেস্টে তিনি আউট হয়েছিলেন ৫৪ রানে।
৩৬ ওভারে ভারত ২ উইকেটে ১২৮। লিড ২২ রানের।
দুই ওপেনার বড় রান না পেলেও ভারত এগিয়ে চলেছে অনায়াসেই। তৃতীয় উইকেটে চেতেশ্বর পুজারা ও বিরাট কোহলির জুটিতেই ভারত পেরিয়ে গেছে বাংলাদেশের ১০৬ রান।
২৮ ওভার শেষে ভারতের রান ২ উইকেটে ১০৭। কোহলি খেলছেন ৩২ রানে, পুজারা ৩৯। দুজনের জুটির রান ৬৪।
কোহলির রেকর্ড
রেকর্ডে সমৃদ্ধ ক্যারিয়ারে বিরাট কোহলি স্পর্শ করলেন নতুন মাইলফলক। ৩২ রানের সময় ছুঁয়ে ফেললেন অধিনায়ক হিসেবে ৫ হাজার টেস্ট রান।
মাত্র ৮৬ ইনিংস লেগেছে তার অধিনায়ক হিসেবে ৫ হাজার রান করতে, টেস্ট ইতিহাসের দ্রুততম। ৯৭ ইনিংসের আগের রেকর্ড ছিল রিকি পন্টিংয়ের।
জুটির ফিফটি
চেতেশ্বর পুজারা ও বিরাট কোহলির জুটিতে ভারত এগিয়ে যাচ্ছে ওয়ানডের গতিতে। তৃতীয় উইকেটে দুজনের জুটির ফিফটি এসেছে ৫৮ বলেই। জুটিতে ২৮ এসেছে কোহলির ব্যাট থেকে, পুজারা ২২।
চা বিরতির পর প্রথম ওভারেই বাংলাদেশ পেল বড় সাফল্য। নিজের প্রথম ওভারেই রোহিত শর্মাকে ফিরিয়ে দিলেন ইবাদত হোসেন।
ওভারের শুরুটায় ছিল রোহিতের দাপট। টানা দুই বলে আদায় করেছিলেন বাউন্ডারি। ইবাদত শোধ তুললেন দারুণ ডেলিভারিতে। অফ স্টাম্পের অনেক বাইরে পিচ করে বল সিমে পড়ে ভেতরে ঢোকে অনেকটা। বাইরে যাবে ভেবে ছেড়ে দিয়েছিলেন রোহিত। বল লাগে প্যাডে। এলবিডব্লিউ দেন আম্পায়ার মারাইস ইরাসমাস।
রোহিত রিভিউ নিয়েছিলেন। কিন্তু টিকতে পারেননি। রিভিউয়ে দেখা যায়, বল লাগত অফ স্টাম্পের বেলসে। আম্পায়ার্স কলে আউট রোহিত, টিকে থাকে ভারতের রিভিউ।
১২ রানে জীবন পেয়ে রোহিত আউট হলেন ২১ রানে। ভারতের রান ২ উইকেটে ৪৩।
ভারতের একটি উইকেট নিতে পারলেও বাংলাদেশের সেশন শেষ হয়েছে ক্যাচ ছাড়ার তিক্ততায়। প্রথম সেশনের মতো প্রথম দিনের দ্বিতীয় সেশনও তাই ছিল ভারতের।
টস জয়ী বাংলাদেশেক ১০৬ রানে গুঁড়িয়ে ভারত চা বিরতিতে গেছে ১ উইকেটে ৩৫ রান নিয়ে। ১৪ রানে আউট হয়েছেন মায়াঙ্ক আগারওয়াল। ১৩ রানে খেলছেন রোহিত শর্মা, ৭ রানে চেতেশ্বর পুজারা।
জীবন পেলেন রোহিত
রোহিত শর্মাকে ফেরানোর বড় একটি সুযোড় হাতছাড়া করল বাংলাদেশ। সহজ ক্যাচ ছাড়লেন আল আমিন হোসেন, আগেও যিনি অনেক ম্যাচে ক্যাচ ছেড়ে ভুগিয়েছেন দলকে।
আবু জায়েদের শর্ট বল পুল করেছিলেন রোহিত, টাইমিং হয়নি ঠিকমতো। বল যায় ফাইন লেগে সোজা আল আমিনের কাছে। সহজ ক্যাচ। কিন্তু দুই বারের চেষ্টায়ও বল জমাতে পারলেন না হাতে।
রোহিত বেঁচে গেলেন ১২ রানে।
২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এই ইডেন গার্ডেন্সেই নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে সহজ ক্যাচ ছেড়েছিলেন আল আমিন। এরপর দলের বাইরে ছিলেন দীর্ঘ সময়।
লিটনের পর টেস্টের প্রথম দিনে ম্যাচ থেকে ছিটকে গেলেন নাঈম হাসানও। তার বদলি হিসেবে নেমেছেন বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল ইসলাম।
লিটনের মতোই ব্যাটিংয়ের সময় মোহাম্মদ শামির বল লেগেছিল নাঈমের হেলমেটে। পরে অবশ্য ব্যাটিং চালিয়ে গেছেন নাঈম। রান করেছেন ১৯। পরে হয়তো তাকে নিয়ে আর ঝুঁকি নিতে চায়নি দল।
‘কনকাশন’ বদলির নিয়ম চালুর পর এই প্রথম বদল করা হলো কোনো বোলারকে। কোনো দলের এক ইনিংসে দুইজন বদলিও হলো প্রথমবার । লিটনের বদলে শুধু ব্যাটসম্যান হিসেবে এর মধ্যেই ব্যাটিং করেছেন বদলি নামা মেহেদী হাসান মিরাজ।
এবার ব্যর্থ মায়াঙ্ক
আগের টেস্টে ক্যারিয়ার সেরা ২৪৩ রানের ইনিংস খেলা মায়াঙ্ক আগারওয়ালকে এবার দ্রুত ফেরাতে পারল বাংলাদেশ। ৫ বছর পর টেস্টে ফেরা আল আমিন হোসেন বাংলাদেশকে এনে দিলেন প্রথম উইকেট।
অফ স্টাম্পের বাইরে থাকা ডেলিভারি স্টিয়ার করে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্ট দিয়ে পাঠাতে চেয়েছিলেন মায়াঙ্ক। কিন্তু বেশি জোরের ওপর খেলতে গিয়ে টাইমিংয়ে একটু গড়বড় করে বসেন। ব্যাটের কানায় লেগে বল যায় গালিতে। দারুণ গতিতে ছুটে আসা বল হাতে জমান মেহেদী হাসান মিরাজ।
১৪ রানে ফিরলেন মায়াঙ্ক। ভারত ৪.৪ ওভারে ১ উইকেটে ২৬। বাংলাদেশ প্রথম ইনিংসে করেছে ১০৬।
রোহিত শর্মার সঙ্গে উইকেটে যোগ দিয়েছেন চেতেশ্বর পুজারা।
বিধ্বস্ত বাংলাদেশের ব্যাটিং
টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা বাংলাদেশ টিকতে পারেনি দ্বিতীয় সেশনের অর্ধেক পর্যন্তও। কেবল ৩০.৩ ওভারেই গুটিয়ে গেছে ১০৬ রানে।
অভিষেকে টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে সেই ৯১ রানের পর এটিই ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের সর্বনিম্ন দলীয় স্কোর।
তিন-চার-পাঁচে নামা ব্যাটসম্যান ফিরেছেন শূন্য রানে। ওপেনিংয়ে সাদমান দলের সর্বোচ্চ ২৯ রান করলেও খেলতে পারেননি খুব স্বচ্ছন্দে। ভালো খেলছিলেন কেবলমাত্র লিটন দাস। কিন্তু শামির বল হেলমেটে লাগার পর মাঠ ছাড়তে বাধ্য হন তিনি। তার ‘কানকাশন’ বদলি হিসেবে সুযোগ পেয়ে মেহেদী হাসান মিরাজ পারেননি তেমন কিছু করতে।
যথারীতি ভারতের তিন পেসারই ছিলেন দুর্দান্ত। তিন জনের মধ্যে সফলতম ছিলেন ইশান্ত। ২২ রানে নিয়েছেন ৫ উইকেট, দেশের মাটিতে তার সেরা বোলিং এটিই।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ: ৩০.৩ ওভারে ১০৬ (সাদমান ২৯, ইমরুল ৪, মুমিনুল ০, মিঠুন ০, মুশফিক ০, মাহমুদউল্লাহ ৬, লিটন ২৬ (আহত অবসর), নাঈম ১৯, ইবাদত ১, মিরাজ ৮, আল আমিন ১*, আবু জায়েদ ০; ইশান্ত ১২-৪-২২-৫, উমেশ ৭-২-২৯-৩, শামি ১০.৩-২-৩৬-২, জাদেজা ১-০-৫-০)।
শেষ উইকেট শামির
আবু জায়েদকে ফিরিয়ে বাংলাদেশের ইনিংস শেষ করে দিলেন মোহাম্মদ শামি। স্লিপে রোহিত শর্মার হাত ফসকে আসা বল ক্যাচে পরিণত করলেন চেতেশ্বর পুজারা। টেস্টে তার ৫০তম ক্যাচ।
শূন্য রানে আউট হলেন আবু জায়েদ, বাংলাদেশ ইনিংসের চতুর্থ শূন্য।
ইশান্তের পঞ্চম
সতীর্থের ব্যর্থতার ভীড়ে লড়াইয়ের চেষ্টা করছিলেন নাঈম হাসান। দুর্দান্ত লেগ কাটারে তার স্টাম্প উপড়ে দিলেন ইশান্ত শর্মা। পূর্ণ করলেন নিজের ৫ উইকেট।
অফ-মিডল স্টাম্পে পিচ করা বল নাঈমের ডিফেন্সকে ফাঁকি দিয়ে ছোবল দেয় অফ স্টাম্পে। নাঈম তো বটেই, স্পেশালিস্ট ব্যাটসম্যানদেরও জন্যও অনেক ভালো ডেলিভারি।
১৯ রানে বোল্ড নাঈম। বাংলাদেশের রান ৯ উইকেটে ১০৫।
টেস্টে দশমবার ৫ উইকেটের স্বাদ পেলেন ইশান্ত। তবে দেশের মাটিতে মাত্র দ্বিতীয়বার। আগেরটি ছিল সেই ২০০৭ সালে, পাকিস্তানের বিপক্ষে বেঙ্গালুরুতে।
সুযোগ কাজে লাগাতে পারলেন না মিরাজ
লিটনের বদলি হিসেবে নেমে খুব একটা সুবিধা করতে পারলেন না মেহেদী হাসান মিরাজ। ইশান্ত শর্মাকে চতুর্থ উইকেট উপহার দিয়ে ফিরলেন তিনি ৮ রানেই।
লেগ-মিডল স্টাম্পে থাকা ফুল লেংথ বল ফ্লিক করেছিলেন মিরাজ। বল রাখতে পারেননি নিচে। শর্ট মিড উইকেটে সামনে ঝাঁপিয়ে দারুণ ক্যাচ নিয়েছেন চেতেশ্বর পুজারা। বাংলাদেশের রান ৮ উইকেটে ৯৮।
লিটনের বদলি মিরাজ
‘কনকাশন’ বদলি হিসেবে লিটনের জায়গায় ব্যাট করতে নামলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। যদিও নিয়মে আছে, কারও বদলি নামাতে হলে একই ধরনের ক্রিকেটার হতে হবে। মিরাজ এমনিতে স্পেশালিস্ট ব্যাটসম্যান বা কিপার-ব্যাটসম্যান নন। তাই মিরাজকে খেলতে হবে স্রেফ ব্যাটসম্যান হিসেবে।
আরেক ব্যাটসমানের মাথায় আঘাত
লিটন দাসের পর এবার হেলমেটে বল লাগল নাঈম হাসানের। বোলার সেই মোহাম্মদ শামি।
শরীর তাক করে আসা বাউন্সার থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারেননি নাঈম। বল লাগে হেলমেটে। বাংলাদেশের ফিজিও জুলিয়ান কালেফাতো হয়তো ব্যস্ত লিটনকে নিয়ে। এবার তাই মাঠে ছুটে এলেন ভারতীয় ফিজিও নিতিন প্যাটেল। বেশ অনেকক্ষণ বিরতির পর স্বাভাবিক হলেন নাঈম। আবার শুরু করলেন ব্যাটিং।
লাঞ্চের পর ইবাদত-নাঈম
অনুমিতভাবেই লাঞ্চের পর ব্যাটিংয়ে নামেননি লিটন দাস। নাঈম হাসানের সঙ্গে উইকেটে যোগ দিয়েছেন ইবাদত হোসেন।
প্রথম সেশন ভারতের
আগের টেস্টের মতোই টস হেরেছে ভারত। আগের মতোই দারুণ বোলিংয়ে ম্যাচের প্রথম সেশন করে নিয়েছে নিজেদের।
ভারতীয় পেসারদের দারুণ বোলিংয়ের পাশাপাশি ব্যাটসম্যানদের বাজে ব্যাটিংও ডেকে এনেছে বাংলাদেশের পতন। প্রথম সেশনে বাংলাদেশের রান ৬ উইকেটে ৭৩।
লিটনের অবসর দিয়েই শেষ হয়েছে প্রথম সেশন। বিরতির পর যদি লিটন ফিরতে না পারেন ব্যাটিংয়ে, বাংলাদেশের ইনিংস তাহলে শেষ হতে পারে দ্রুতই!
নেই কোনো বদলি
লিটন যদি শেষ পর্যন্ত আর ফিরতে না পারেন, চাইলেই ‘কনকাসন’ বদলি পাবে বাংলাদেশ। কিন্তু সেই বদলি নেওয়ার উপায় নেই। বাংলাদেশের স্কোয়াডে যে বাড়তি কোনো ব্যাটসম্যানই নেই!
পারিবারিক কারণে টেস্ট সিরিজ শুরুর আগেই দেশে ফিরেছেন মোসাদ্দেক হোসেন। তার কোনো বদলি পাঠানো হয়নি। ইন্দোর টেস্টে চোট পেয়ে কলকাতা টেস্ট থেকে ছিটকে গেছেন টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান সাইফ হাসান। তারও কোনো বদলি নেওয়া হয়নি স্কোয়াডে।
স্কোয়াডে বাকি আছেন আর মেহেদী হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম ও মুস্তাফিজুর রহমান। তারা কেউই নন বিশেষজ্ঞ ব্যাটসম্যান বা কিপার-ব্যাটসম্যান।
অসাধারণ ক্যাচে ফিরলেন মাহমুদউল্লাহ
মাহমুদউল্লাহর খোঁচা, উইকেটের পেছনে বাজপাখির মতো ছোবল দিয়ে ঋদ্ধিমান সাহার অসাধারণ ক্যাচ। বাংলাদেশের আরেকটি উইকেটের পতন।
ইশান্ত শর্মার অফ স্টাম্প ঘেষা বলটিতে ব্যাট পেতে দিলেন মাহমুদউল্লাহ। যখন বুঝলেন খেলা উচিত হনি, সরিয়ে নিলেন ব্যাট, ততক্ষণে দেরি হয়ে গেছে অনেক। ব্যাটের কানায় লেগে বল যাচ্ছিল প্রথম স্লিপের দিকে। নিচুও হয়ে গিয়েছিল অনেকটা। ঋদ্ধিমান শরীর পুরো শূন্যে ভাসিয়ে ডানদিকে ঝা!পিয়ে এক হাতে গ্লাভসে জমালেন বল।
আরও অনেক ভালো কিপার-ব্যাটসম্যান থাকার পরও ঋদ্ধিমানের ওপর ভরসা রেখেছে ভারত তার কিপিং সামর্থ্যের কারণে। সেটির প্রতিদান দিয়ে চলেছেন ঋদ্ধিমান।
মাহমুদউল্লাহ আউট হলেন ২১ বলে ৬ রান করে। ইশান্ত নিলেন দ্বিতীয় উইকেট। বাংলাদেশ ৬ উইকেটে ৬০।
লিটন দাসের সঙ্গে উইেকটে এখন নাঈম হাসান।
ফিরলেন সাদমানও
উইকেট পতনের স্রোতে সামিল হলেন সাদমান ইসলামও। বাজে ফুটওয়ার্কে শেষ হলো বাঁহাতি ওপেনারের ইনিংস। তৃতীয় শিকার ধরলেন উমেশ যাদব।
অফ স্টাম্পে পিচ করা বল বেরিয়ে যাচ্ছিল বাইরে দিয়ে। ছেড়ে দেওয়া যেত অনায়াসেই। সাদমানের পা নড়ল না, কিন্তু নড়ল ব্যাট। বাইরের বল ডিফেন্স করতে গিয়ে ডেকে আনলেন নিজের পতন। উইকেটের পেছনে সহজ ক্যাচ নিলেন ঋদ্ধিমান সাহা। ভারতীয় কিপারের এটি শততম ডিসমিসাল।
৫২ বলে ২৯ রানে ফিরলেন সাদমান। বাংলাদেশ ৫ উইকেটে ৩৮।
দলকে উদ্ধার করতে পারলেন না মুশফিকুর রহিমও। এই দলের সবচেয়ে অভিজ্ঞ ক্রিকেটার ফিরলেন দলকে আরও বিপদে ঠেলে। মোহাম্মদ শামির বল স্টাম্পে টেনে এনে বিদায় নিলেন শূন্য রানে।
অফ স্টাম্প লাইনে খানিকটা শর্ট অব লেংথ বলটি আলগা হাতে ডিফেন্স করেছিলেন মুশফিক। বল পিচ করে ভেতরে ঢোকে খানিকটা। মুশফিক ব্যাট পেতেছিলেন শরীর থেকে খানিকটা দূরে। তাতেই সর্বনাশ। বল ব্যাটের কানায় লেগে উইকেট পড়ে গিয়ে লাগে স্টাম্পে।
আগের টেস্টে বাংলাদেশের সেরা ব্যাটসম্যান মুশফিক এবার বিদায় নিলেন ৪ বলে শূন্য রানে। টেস্টে তার একাদশ শূন্য।
বাংলাদেশ বিপর্যস্ত শুরুতেই। দ্বাদশ ওভারে রান ৪ উইকেটে ২৬।
উড়ল মিঠুনের স্টাম্পস
মোহাম্মদ মিঠুন উইকেটে গেলেন এবং ফিরলেন! তিন বলের মধ্যে দুই উইকেট নিলেন উমেশ যাদব।
মুখোমুখি প্রথম বলটি বেশ আস্থায় ডিফেন্স করেছিলেন মিঠুন। পরের বলটিতে ঠিকঠাক করতে পারলেন না কিছুই। সিমে পিচ করে একটু ভেতরে ঢোকে বল। মিঠুন জোড়া পায়ে খেলতে গিয়ে যখন ব্যাট নামালেন, বল তার আগেই উড়িয়ে দিয়েছে স্টাম্প!
গতি ছিল ১৩৮ কিলোমিটার, খুব বেশি নয়। তবু খেলতে অনেক দেরি করলেন মিঠুন। বিদায় নিলেন ২ বলে শূন্য রান করে।
বাংলাদেশ ৩ উইকেটে ১৭।
দলকে ভালো কিছু উপহার দিতে পারলেন না মুমিনুল হকও। বাংলাদেশ অধিনায়ক শূন্য রানে ফিরলেন স্লিপে রোহিত শর্মার অসাধারণ ক্যাচে।
নতুন স্পেলে ফেরা উমেশ যাদবের প্রথম ডেলিভারি সেটি। পিচ করে বল বেরিয়ে যাচ্ছিল অ্যাঙ্গেলে। মুমিনুল পেতে দিলেন ব্যাট। লাইন কাভার করেননি, বল তার ব্যাটের কানায় লেগে যায় স্লিপে বিরাট কোহলির দিকে। ভারতীয় অধিনায়ক প্রথম স্লিপে অপেক্ষা করছিলেন বল তার হাতে আসার। কিন্তু দ্বিতীয় স্লিপ থেকে ফুল লেংথ ডাইভ দিয়ে দুর্দান্ত রিফ্লেক্সে বল এক হাতে তালুবন্দী করলেন রোহিত।
টেস্ট ক্যারিয়ারে সপ্তমবার শূন্য রানে ফিরলেন মুমিনুল। বাংলাদেশ ২ উইকেটে ১৭।
শামির দ্বিতীয় বলেই আরেক দফা বাজেভাবে পরাস্ত সাদমান। উইকেটের পেছনে ডানদিকে ঝাঁপিয়ে অসাধারণভাবে বল গ্লাভসে জমালেন ঋদ্ধিমান সাহা। ভারতের জোরালো আবেদনে সাড়া দিলেন না আম্পায়ার মারাইস ইরাসমাস। বিরাট কোহলি নিলেন রিভিউ।
রিভিউয়ে দেখা গেল, সাদমানের ব্যাটের কাছাকাছিও ছিল না বল। শব্দ একটি হয়েছিল বটে, সেটি অন্য কিছু থেকে। ভারত হারাল একটি রিভিউ। সাদমানের রান তখন ১০।
অল্পের জন্য রক্ষা সাদমানের
মোহাম্মদ শামির প্রথম বলেই আউট হতে হতে বেঁচে গেলেন সাদমান ইসলাম। শামির শর্ট বলটি হয়তো বুঝতেই পারেননি সাদমান, খেলতে পারেননি ঠিকমতো। পজিশনেই যেতে পারেননি। বল তার বাড়িয়ে ধরা ব্যাটে লেগে বাতাসে ছিল বেশ কিছুক্ষণ। তবে কোনো ফিল্ডার বলের কাছে যেতে পারেননি সময় মতো।
আবার ব্যর্থ ইমরুল
একই ওভারে আবার ইমরুল কায়েসকে আউট দিলেন আম্পায়ার। এবার এলবিডব্লিউ। সাদমানের সঙ্গে পরামর্শ করে ইমরুল রিভিউ নিলেন আবার। তবে এবার রক্ষা হলো না। আউট হলেন ইমরুল, বাংলাদেশ হারাল একটি রিভিউও।
সুইং খুব বেশি না পাওয়ায় হয়তো ইশান্ত চেষ্টা করছেন কাটার করার। রাউন্ড দা উইকেটে করা বলটি অনেকটা শাফল করে খেলতে চেষ্টা করেছিলেন ইমরুল। কিন্তু বল পিচ করে ব্যাটকে ফাঁকি দিয়ে আরেকটু ভেতরে ঢুকে লাগে পায়ে। খালি চোখেই মনে হচ্ছিল আউট, রিভিউয়ে সেটিই নিশ্চিত হয়েছে।
১৫ বলে ৪ রান করে আউট হলেন ইমরুল। বাংলাদেশ ৬.৩ ওভারে ১ উইকেটে ১৫।
সাদমানের সঙ্গে উইকেটে যোগ দিয়েছেন মুমিনুল হক।
রিভিউয়ে টিকলেন ইমরুল
ইশান্ত শর্মার বলে ইমরুল কায়েসকে কট বিহাইন্ড দিয়েছিলেন আম্পায়ার জোয়েল উইলসন। ইমরুল রিভিউ নেন সঙ্গে সঙ্গেই। টিভি রিপ্লেতে দেখা যায়, ব্যাট স্পর্শ করেনি বল। তবে ইমরুলের থাই প্যাডে লাগায় শব্দ হয়েছিল, সেটিই হয়তো বিভ্রান্ত করেছিল আম্পায়ারকে।
ইমরুলের রান তখন ৪।
সতর্কতায় শুরু
যতটা ধারণা করা হয়েছিল, ততটা সুইং মিলছে না গোলাপি বলে। ঘাসের ছোঁয়া থাকা উইকেটেও গতি ও বাউন্স খুব একটা দেখা যাচ্ছে না। ভারতের নতুন বলের দুই বোলার ইশান্ত শর্মা ও উমেশ যাদবকে তাই খুব ভয়ঙ্কর মনে হচ্ছে না শুরুতে। বাংলাদেশের দুই ওপেনার ইমরুল কায়েস ও সাদমান ইসলাম শুরু করেছেন বেশ সতর্কতায় ও নির্ভরতায়।
গোলাপি বলের টেস্টে প্রথম রান এসেছে ইমরুলের ব্যাট থেকে। প্রথম বাউন্ডারি মেরেছেন সাদমান ইসলাম, চতুর্থ ওভারে। উমেশ যাদবের ওই ওভারেই দারুণ পুলে সাদমান বাউন্ডারি মেরেছেন আরেকটি।
৫ ওভার শেষে বাংলাদেশ কোনো উইকেট না হারিয়ে ১৪। সাদমানের রান ১০, ইমরুলের ৪।
গোলাপি বলের টেস্ট ম্যাচের জন্য ইডেন গার্ডেন্সের ঘণ্টাকেও সাজানো হয়েছে বিশেষভাবে। সেই ঘণ্টা বাজানোর দায়িত্বেও ছিলেন বিশেষ দুজন। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘণ্টা বাজিয়ে ছড়িয়ে দিলেন টেস্ট শুরুর বার্তা। দুইজনের পাশে ছিলেন ভারত ও বাংলাদেশের ক্রিকেট বোর্ডের দুই প্রধান সৌরভ গাঙ্গুলি ও নাজমুল হাসান।
মাঠে দেখা গেল বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। তাদের সঙ্গে ছিলেন কিংবদন্তি ক্রিকেটার শচীন টেন্ডুলকারকেও।
দুই দলের সঙ্গে পরিচিত হলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের সঙ্গে বেশ কিছু সময় কথা বলতেও দেখা গেল তাকে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আমন্ত্রণে শুক্রবার সকালে কলকাতায় উড়ে গেছেন শেখ হাসিনা। ভারতের ক্রিকেট বোর্ডের নতুন সভাপতি সৌরভ গাঙ্গুলীও তাকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন।
আগের ম্যাচে তিন দিনেই জয় পাওয়া একাদশে কোনো পরিবর্তন আনেনি ভারত। তিন পেসার ও দুই স্পিনার নিয়েই খেলছে বিরাট কোহলির দল।
ভারত একাদশ: রোহিত শর্মা, মায়াঙ্ক আগারওয়াল, চেতেশ্বর পুজারা, বিরাট কোহলি, অজিঙ্কা রাহানে, রবীন্দ্র জাদেজা, ঋদ্ধিমান সাহা, রবিচন্দ্রন অশ্বিন, ইশান্ত শর্মা, মোহাম্মদ শামি, উমেশ যাদব। |
একাদশে আল আমিন, নাঈম
বাংলাদেশের একাদশে পরিবর্তন দুটি। অনুমিতভাবেই তিন পেসার নিয়ে খেলছে বাংলাদেশ। বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল ইসলামের জায়গায় একাদশে এসেছেন আল আমিন হোসেন। ২০১৪ সালের অক্টোবরের পর আবার টেস্ট খেলার সুযোগ পেলেন এই পেসার।
আরেকটি পরিবর্তন স্পিন বিভাগে। দলের একমাত্র স্পিনার হিসেবে এই টেস্টে খেলছেন অফ স্পিনার নাঈম হাসান। বাদ পড়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ।
বাংলাদেশ একাদশ: ইমরুল কায়েস, সাদমান ইসলাম, মুমিনুল হক, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদউল্লাহ, মোহাম্মদ মিঠুন, লিটন দাস, নাঈম হাসান, আবু জায়েদ চৌধুরি, ইবাদত হোসেন, আল আমিন হোসেন। |
ভারতে প্রথম দিন-রাতের টেস্টের টস হলো বিশেষভাবে তৈরি এক মুদ্রায়। সাধারণ মুদ্রার বেশ বড় আকারের রূপার মুদ্রা এটি। সেই টসে জিতলেন মুমিনুল হক। বাংলাদেশ অধিনায়ক জানালেন, ব্যাটিং করবে বাংলাদেশ।
মুমিনুলের মতে, ঘাসের ছোঁয়া থাকলেও উইকেট বেশ শুষ্ক এবং খানিকটা শক্তও। ব্যাটিংয়ের জন্য ভালো হওয়ার কথা। শুরুতে যদিও চ্যালেঞ্জ থাকবে। তবে হাসিমুখে মুমিনুল বললেন, “সাহসী সিদ্ধান্ত, সাহসিকতার সঙ্গেই খেলতে হবে।”
টস জিতলে ভারতও আগে ব্যাটিং করত, জানালেন বিরাট কোহলি। তার ধারণা, প্রথম দুই সেশনে স্পিনারদের বড় ভূমিকা থাকবে। সেদিকেই তাকিয়ে ভারত অধিনায়ক।
ইডেনের উইকেটে ৫ মিলিমিটার পর্যন্ত ঘাস রেখে দিয়েছেন কিউরেটর সুজন মুখার্জি। গত ৪-৫ বছর ধরেই অবশ্য এই মাঠে সব টেস্টে উইকেটে একটু ঘাস নেখে দেওয়া হয়। টিভির পিচ রিপোর্টে কলকাতার সন্তান, সাবেক ক্রিকেটার দীপ দাসগুপ্ত জানালেন, “উইকেটে কিছুটা ঘাস থাকলেও তা খুব বেশি নয়। বরং বিশ্বের নানা প্রান্তে অন্যান্য দিন-রাতের টেস্টের উইকেটে ঘাস আরও বেশি রাখা হয়। শুরুতে কিছুটা শুষ্কও থাকবে উইকেট।”
টিভির বিশ্লেষণে ভিভিএস লক্ষ্ণণ বললেন, উইকেটে আরও ঘাস আশা করেছিলেন তিনি। টস জিতলে ব্যাটিং নেওয়ার পক্ষেই মত তার।
২২ গজের চ্যালেঞ্জ
এই ম্যাচকে ঘিরে নানা আয়োজনের ভিড়ে ২২ গজের লড়াই অনেকটা আড়ালেই চলে গেছে। তবে আদতে লড়াই জমবে কতটা, সেই শঙ্কাও আছে। প্রথম টেস্টে স্রেফ উড়ে গেছে বাংলাদেশ। দুই দলের শক্তির পার্থক্যও ফুটে উঠেছে প্রবলভাবে। দ্বিতীয় টেস্টে গোলাপি বলে আরও কঠিন পরীক্ষা। বাংলাদেশের জন্য আশার জায়গা তাই খুব কম।
টেস্টের প্রথম চার দিনের সব টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন সৌরভ গাঙ্গুলি। তবে ম্যাচ আদৌ চতুর্থ দিনে গড়াবে কিনা, সেটি নিয়ে সংশয়ের কারণ আছে যথেষ্টই।
নানা আয়োজন
ভারতের মাটিতে প্রথম দিবা-রাত্রির টেস্ট স্মরণীয় করে রাখতে আয়োজন করা হচ্ছে নানা কিছু। মূলত ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন অব বেঙ্গল ও বিসিসিআইয়ের সভাপতি সৌরভ গাঙ্গুলির উদ্যোগেই এই টেস্টকে ঘিরে তৈরি হয়েছে উৎসবের আবহ।
২০০০ সালে বাংলাদেশের অভিষেক টেস্টে খেলা সব ক্রিকেটারকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তাদেরকে দেওয়া হবে বিশেষ সম্মাননা।
ম্যাচে উপস্থিত থাকছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ম্যাচ শুরুর ঘণ্টাও বাজাবেন তারা। উপস্থিত থাকবেন দুই দেশের ক্রিকেট বোর্ড প্রধান, ভারতীয় কিংবদন্তি ক্রিকেটার শচীন টেন্ডুলকারসহ আরও অনেকে।
ম্যাচের টস করা হবে বিশেষভাবে তৈরি এক মুদ্রা দিয়ে।
ম্যাচে লাঞ্চ ও চা বিরতিতে টিভিতে বিশ্লেষণ করবেন টেন্ডুলকার, রাহুল দাবিড়, অনিল কুম্বলে, কপিল দেবসহ ভারতের কিংবদন্তি ক্রিকেটাররা। দিনশেষে থাকবে রুনা লায়না, জিৎ গাঙ্গুলির পারফরম্যান্স।
টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের শুরুটায় জড়িয়ে আছে ভারত। ১৯ বছর আগে বাংলাদেশ নিজেদের অভিষেক টেস্টের প্রতিপক্ষ হিসেবে পেয়েছিল ভারতকে। এবার ভারতের একটি নতুন শুরুতে জুড়ে যাচ্ছে বাংলাদেশের নাম। ভারতের মাটিতে প্রথম দিন-রাতের টেস্টে খেলছে বাংলাদেশ।
ভারত প্রথম টেস্ট খেলেছিল ১৯৩৩ সালে, মুম্বাইয়ের জিমখানা গ্রাউন্ডে। দ্বিতীয় টেস্ট ম্যাচটি তারা খেলেছিল ১৯৩৪ সালে কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে। সেই ইডেন এবার স্বাক্ষী হচ্ছে ভারতের প্রথম দিবা-রাত্রির টেস্ট ম্যাচের। বাংলাদেশেরও এটি কৃত্রিম আলোয় প্রথম টেস্ট।
নবীন দুই টেস্ট দল, আফগানিস্তান ও আয়ারল্যান্ড ছাড়া এতদিন কেবল ভারত ও বাংলাদেশই খেলেনি দিন-রাতের টেস্ট। এবার ঘুচে যাচ্ছে সেই বন্ধাত্ব।
ভারতের এটি ৫৪০তম টেস্ট, বাংলাদেশের ১১৭তম।