গোলাপি বলের লড়াইয়ে শঙ্কা-সম্ভাবনার দোলাচলে বাংলাদেশ

ভারতের পর অনুশীলন করে চলে গেছে বাংলাদেশ দলও। কিন্তু নেভেনি ইডেন গার্ডেন্সের বাতি। পরদিনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানকে ঘিরে চলছে একের পর এক মহড়া। শুধু ইডেন নয়, ম্যাচকে ঘিরে ব্যস্ততা পুরো কলকাতা জুড়ে। উপমহাদেশে প্রথমবারের মতো হতে যাচ্ছে দিবা-রাত্রির টেস্ট। ভারতের সামনে আরেকটি সিরিজ জয়ের হাতছানি। শক্তিতে অনেক পিছিয়ে থাকা বাংলাদেশ রয়েছে শঙ্কা আর সম্ভাবনার দোলাচলে।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 21 Nov 2019, 04:08 PM
Updated : 21 Nov 2019, 04:08 PM

ইডেন গার্ডেন্সে শুক্রবার বাংলাদেশ সময় দুপুর দেড়টায় শুরু হবে দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট। নতুন যুগে প্রবেশ করবে দেশ দুটির ক্রিকেট। এই ম্যাচ দিয়েই শেষ হবে বাংলাদেশের ভারত সফর।

ভারতের প্রথম পাঁচ ব্যাটসম্যানের সবাই রয়েছেন আইসিসি টেস্ট ব্যাটসম্যানদের র‌্যাঙ্কিংয়ে এগারোর মধ্যে। বোলারদের সবাই আছেন ২২ এর মধ্যে। সেখানে সফরকারীদের দলে থাকা সেরা ব্যাটসম্যানের র‌্যাঙ্কিং ৩০, সেরা বোলারের ২৩।

ভারত সবশেষ তিন টেস্টে জিতেছে ইনিংস ব্যবধানে। চার ম্যাচে ডাবল সেঞ্চুরি করেছেন দলের কোনো না কোনো ব্যাটসম্যান। স্পিনাররা বরাবরই তাদের শক্তি। এখন আছে দুর্দান্ত একটা পেস আক্রমণও। র‌্যাঙ্কিংয়ে তাদের সেরা বোলার জাসপ্রিত বুমরাহ না থাকলেও খুব একটা কমেনি শক্তি।

ইন্দোরে ইনিংস ও ১৩০ রানে হেরে আসা বাংলাদেশের সামনে অপেক্ষা করছে আরও কঠিন পরীক্ষা। এই ম্যাচও তিন দিনে শেষ হবে কি না, এমন প্রশ্ন শুনতে হলো মুমিনুল হককে।

“একজন খেলোয়াড় হিসেবে আমি তো কখনও বলতে পারি না যে খেলা তিন দিনে শেষ হবে। ঘাস থাকলেই যে খেলা তিন দিনে শেষ হবে এমন কোনো কথা নেই। হয়তো ঘাস থাকার পরও হার্ড উইকেটের জন্য বল ভালোভাবে ব্যাটে আসতে পারে। কিউরেটর স্পোর্টিং উইকেটের কথা বলেছেন। আমার মনে হয়, স্পোর্টিং উইকেট ব্যাটিংয়ের জন্য ভালো।”

হলকার স্টেডিয়ামের চেয়ে ইডেনে ঘাস একটু কমই আছে। তবুও গোলাপি বলে বাড়তি সুবিধা থাকে বলে মোহাম্মদ শামি, উমেশ যাদব, ইশান্ত শর্মাদের সামলানো ভীষণ কঠিন হবে। বিরাট কোহলির মতে, গোলাপি বলে পেসারদের খেলতে খুব আঁটসাঁট টেকনিক প্রয়োজন হবে, মনোযোগ ধরে রাখতে হবে পুরোটা সময়।

“আমি যখনই মাঠে নামব, জেতার জন্যই খেলব। প্রথম টেস্টে যে ভুলগুলো করেছিলাম, সেই ভুলগুলো যত কম করা যায় সেই চেষ্টা করব। ব্যাটসম্যানরা সেশন বাই সেশন ব্যাটিংয়ের চেষ্টা করব। বোলাররাও সেশন ধরে ধরে ভালো বোলিংয়ের চেষ্টা করবে।”

প্রথম ম্যাচ তিন দিনে শেষ হওয়ায় গোলাপি বলে প্রস্তুতি নিতে দুই দিন বাড়তি সময় পেয়েছে বাংলাদেশ। অনুশীলন করে সময়টা ভালোভাবে কাজে লাগিয়েছে তারা। মুমিনুলের আশা, ম্যাচে দেখা যাবে এর ইতিবাচক প্রভাব।

“আমরা সুযোগ কাজে লাগানোর দিকে তাকিয়ে আছি। ম্যাচটি নিয়ে আমরা রোমাঞ্চিত।”

মাঠের বাইরে ব্যাপক কর্মযজ্ঞ চলছে। দিবা-রাত্রির টেস্টকে ঘিরে সবার দারুণ আগ্রহ। আসবেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দেশের অভিষেক টেস্টের ক্রিকেটাররা আসবেন। থাকবেন আরও অনেক অতিথি। ৭০ হাজার দর্শকে ঠাসা থাকবে গ্যালারি। মুমিনুল জানান, এসব একদমই প্রভাবিত করছে না তাদের।

“বাইরে কি হচ্ছে না হচ্ছে আমার মনে হয় না, পেশাদার খেলোয়াড় হিসেবে এসব আমাদের প্রভাবিত করবে। এই চাপ কোনোভাবেই আসা উচিত না। যে যার কাজ ঠিক মতো করছি। চাপ চলে আসার কোনো সুযোগ নাই।”

“আমাদের মনোযোগ সরে যায়নি। কারণ, দিন শেষে আমাদের তো ক্রিকেটই খেলতে হবে। গোলাপি বল কেমন আচরণ করবে, এটা নিয়ে একটু আগ্রহ আছে সবার। এর বাইরে আমাদের রোমাঞ্চ কেবল খেলা নিয়ে।”

প্রায় কোনো প্রস্তুতি না নিয়েই টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসের নতুন অধ্যায়ে যোগ হতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। এখন দেখার বিষয়, তারা কি শুধু নতুনত্বের পতাকাই ওড়াবে নাকি দেখাতে পারবে লড়াইয়ের মানসিকতা।