ছুটিতে ভারত, পুরোদমে অনুশীলনে বাংলাদেশ

ইন্দোর টেস্ট দুই দলের কেটেছে দুই রকম। দুই সিরিজ মিলিয়ে টানা তিন ম্যাচে ইনিংস ব্যবধানে জিতেছে ভারত। দেশের মাটিতে আফগানিস্তানের কাছে হারের পর বাংলাদেশ ন্যূনতম লড়াইটুকুও করতে পারেনি বিরাট কোহলিদের বিপক্ষে। কলকাতা টেস্টের প্রস্তুতি নেওয়ার পথেও দুই দলের শুরুর চিত্র দুই রকম। বিশ্রামে রয়েছে ভারতীয় দল। অন্যদিকে দিবা-রাত্রির টেস্টের জন্য পুরোদমে অনুশীলন শুরু করেছে বাংলাদেশ।

অনীক মিশকাতঅনীক মিশকাতইন্দোর থেকে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 Nov 2019, 03:32 PM
Updated : 18 Nov 2019, 03:32 PM

ইন্দোরের হলকার স্টেডিয়ামে রোববার ঐচ্ছিক অনুশীলন ছিল ভারতের। কয়েকজন ক্রিকেটার এসেছিলেন সেদিন। সোমবার পুরো ছুটি কাটিয়েছে আইসিসি টেস্ট ‌র‍্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষ দলের খেলোয়াড়রা।

আগের দিন ঐচ্ছিক অনুশীলন ছিল বাংলাদেশেরও। সোমবার সবাই ছিলেন অনুশীলনে। বিকাল সোয়া চারটার দিকে সবার আগে নেটে যান মুমিনুল হক ও মুশফিকুর রহিম। আরেকটি নেটে স্পিন কোচ ড্যানিয়েল ভেটোরির তত্ত্বাবধানে কিছুক্ষণ বল করেন মেহেদী হাসান মিরাজ। তরুণ এই অফ স্পিনিং অলরাউন্ডার আগের দিন ছিলেন না দলের অনুশীলনে।

এক নেটে বল করেন ইন্দোর টেস্টে খেলা দুই পেসার আবু জায়েদ চৌধুরি ও ইবাদত হোসেন। আরেক নেটে ছিলেন শুধু স্পিনাররা। তাইজুল ইসলাম, নাঈম হাসান ও মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে পরে যোগ দেন মিরাজও।

এক দিকে সেন্টার উইকেটে তিনটি নেটে চলছিল ব্যাটিং-বোলিং অনুশীলন। অন্য দিকে মাঠের এক প্রান্তে ক্যাচিং অনুশীলন নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন ফিল্ডিং কোচ রায়ান কুক। প্রথম টেস্টে মায়াঙ্ক আগারওয়ালকে জীবন দেওয়ার চড়া মাশুল গুণতে হয়েছিল দলকে। কলকাতায় তেমন কিছুর পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে মরিয়া বাংলাদেশ।

যথারীতি উইকেটের পেছনে ছিলেন লিটন দাস। প্রথম স্লিপে ছিলেন ইমরুল কায়েস, দ্বিতীয় স্লিপে মোহাম্মদ মিঠুন, তৃতীয় স্লিপে সাদমান ইসলাম। কিছুটা সময় চতুর্থ স্লিপে ছিলেন তরুণ স্পিনার নাঈম।

স্লিপের অনুশীলন শেষে আলাদাভাবে ফরোয়ার্ড শর্ট লেগের ক্যাচিং অনুশীলন করেন সাদমান। নেটে মুমিনুল-মুশফিকের পর একে একে ব্যাট করেন ইমরুল, সাইফ হাসান, সাদমান, মাহমুদউল্লাহ, মিঠুন, লিটন, মিরাজ।

বিকেলে টানা বোলিং করা ইবাদত হোসেন সন্ধ্যায় আর বোলিং করেননি। ফ্লাড লাইটের আলো জ্বলে উঠার পর বোলিং শুরু করেন মুস্তাফিজুর রহমান ও আল আমিন হোসেন। প্রথম টেস্ট চলার পথেই গোলাপি বলে বোলিংয়ের সুযোগ হয়েছিল সেই ম্যাচের একাদশে না থাকা এই দুই পেসারের।

সেন্টার উইকেটে অনুশীলন জরুরি ছিল বাংলাদেশের জন্য। বোঝার প্রয়োজন ছিল, নতুন আর ব্যবহৃত পিচে কোন সময়ে কেমন আচরণ করে বল। ইন্দোরে সবশেষ অনুশীলন সেশনে সেই সুযোগ অনেকটাই করে দিয়েছে বাংলাদেশ দলকে।  

অনুশীলনের পর দলের প্রতিনিধি হয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হলেন মিরাজ। তরুণ এই অলরাউন্ডার জানালেন, লাল বলের চেয়ে গোলাপি বলে মুভেমন্ট ও গতি বেশি মনে হয়েছে তার কাছে।

“আসলে আজকে আমি প্রথম ব্যাটিং করেছি। বল একটু মুভ করছিল। আমার মনে হয়, লাল বলের চেয়ে গোলাপি বল একটু দ্রুত যায়।”

“গোলাপি বলে প্রথম দিকে একটু সুইং থাকতে পারে। দেখলাম মাঝে মাঝে বল কাট করছে। ম্যাচে গেলে বুঝতে পারব, কিভাবে কী হয়।”

অনুশীলনের এই দিনটি হওয়ার কথা ছিল ইন্দোর টেস্টের শেষ দিন। কিন্তু টেস্ট শেষ হয়ে গেছে তিন দিনেই। বাকি দুই দিন দল কাজে লাগিয়েছে পরের টেস্টের প্রস্তুতিতে। হতাশার মাঝেও এই বাড়তি অনুশীলনেই কিছুটা প্রাপ্তি খুঁজে নিচ্ছেন মিরাজ। 

“আমরা যতটা সম্ভব অনুশীলন করেছি। খুব অল্প সময় পেয়েছি। যতটুকু পাচ্ছি, তাতে যতটা সম্ভব কাভার করার চেষ্টা করছি। সময়টুকু শতভাগ কাজে লাগানোর চেষ্টা করছি।”

ইন্দোর টেস্টের ব্যর্থতা ভুলে কলকাতায় নিজেদের মেলে ধরতে প্রস্তুতি নিচ্ছেন বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা। মিরাজ বললেন, গোলাপি বলের টেস্ট নিয়ে দলের সবার মাঝে রোমাঞ্চ কাজ করছে।

“সবাই ইতিবাচক আছে। সবাই রোমাঞ্চিত যে, প্রথমবারের মতো দিবা-রাত্রির টেস্ট খেলবে, গোলাপি বল দিয়ে খেলবে। সবার জন্য এটা হবে নতুন অভিজ্ঞতা। এর জন্য সবাই রোমাঞ্চিত।”

ম্যাচে শুরুর সময়টুকু ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ হবে বলে মনে করেন মিরাজ। কিছুটা সময় কাটালে মানিয়ে নিতে সমস্যা হওয়ার কোনো কারণ দেখেন না এই তরুণ।

 “প্রথম দিকে একটু লড়াই করতে হবে। আমার মনে হয়,শুরুর সময়টা খুব জরুরি। থিতু হলে পরের দিকে মনে হয় খেলাটা সহজ হবে।”

মঙ্গলবার ইন্দোর থেকে কলকাতায় যাবে বাংলাদেশ। সেদিন কোনো অনুশীলন নেই তাদের। পরদিন কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে অনুশীলন করবেন মুমিনুলরা।