তিন দিনেই উড়ে গেল বাংলাদেশ

আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ম্যাচে ইন্দোরে ভারতের কাছে পাত্তাই পেল না বাংলাদেশ। বড় জয়ে পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষে নিজেদের অবস্থান আরও সংহত করল ভারত।

আরিফুল ইসলাম রনিআরিফুল ইসলাম রনিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 16 Nov 2019, 03:47 AM
Updated : 16 Nov 2019, 10:17 AM

ভারতের বিশাল জয়

আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচ শেষ হলো হতাশায়। ব্যাটে-বলে ভারতের সঙ্গে লড়াই করতেও পারল না দল। ইনিংস ও ১৩০ রানের জয়ে দুই ম্যাচের সিরিজে এগিয়ে গেল ভারত।

টস জয়ের পর গোটা ম্যাচে আর প্রায় কিছুই ঠিকঠাক হয়নি বাংলাদেশের। প্রথম সকালেই ব্যাটিং বিপর্যয় দিয়ে শুরু। প্রথম দিন ১৫০ রানে গুটিয়ে গিয়েই ম্যাচ থেকে অনেকটা ছিটকে পড়ে বাংলাদেশ। মায়াঙ্ক আগারওয়ালের ডাবল সেঞ্চুরিতে ভারত তোলে বড় স্কোর। দ্বিতীয় ইনিংসেও বাংলাদেশের ব্যাটিং নেই উন্নতির খুব ছাপ। কেবল খানিকটা লড়েছেন মুশফিকুর রহিম।

গোটা ম্যাচেই অসাধারণ বোলিং করেছে ভারতের বোলিং আক্রমণ। ব্যাটে-বলে মিলিয়েই দাপুটে পারফরম্যান্সে জিতেছে বিরাট কোহলির দল।

এই জয়ে আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে নিজেদের ৬ ম্যাচে পুরো ৩০০ পয়েন্ট নিয়ে আপাতত সবার ধরাছোঁয়ার বাইরে ভারত। বাংলাদেশ প্রথম ম্যাচ থেকে পেল না কোনো পয়েন্ট।

এই সিরিজের পরের টেস্ট কলকাতায়, শুক্রবার থেকে। দুই দলের জন্যই সেটি হবে দিন-রাতের প্রথম টেস্ট।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ১৫০

ভারত ১ম ইনিংস: ৪৯৩/৬ (ডি.)

বাংলাদেশ ২য় ইনিংস: ৬৯.২ ওভারে ২১৩ (সাদমান ৬, ইমরুল ৬, মুমিনুল ৯, মিঠুন ১৮, মুশফিক ৬৬, মাহমুদউল্লাহ ১৫, লিটন ৩৫, মিরাজ ৩৮, তাইজুল ৬, আবু জায়েদ ৪, ইবাদত ১*; ইশান্ত ১১-৩-৩১-১, উমেশ ১৪-১-৫১-২, শামি ১৬-৭-৩১-৪, জাদেজা ১৪-২-৪৭-০ অশ্বিন ১৪.২-৬-৪২-৩)।

ম্যাচের সমাপ্তি

অশ্বিনকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ১ রানে আউট হলেন আবু জায়েদ। ২১৩ রানে অল আউট হলো বাংলাদেশ। ম্যাচ যখন শেষ হলো, তৃতীয় দিনের ১৯ ওভারের বেশি বাকি তখনও।

৩ উইকেট নিয়ে শেষ করলেন অশ্বিন, শামির উইকেট ৪টি।

শেষ হলো মুশফিকের লড়াই

মুশফিককে স্ট্রাইকে রাখতে ওভারের শেষ দুই বলের জন্য ফিল্ডিং চাপিয়ে এনেছিলেন বিরাট কোহলি। মুশফিক চাইলেন বড় শট খেলতে। কিন্তু পারলেন না ঠিক মতো। তার লড়াই শেষ হলো উড়িয়ে মারতে গিয়ে।

অশ্বিনের বলের পিচে ঠিকমতো না গিয়েই উড়িয়ে মেরেছিলেন মুশফিক। বল উঠে যায় ওপরে। মিড অফ থেকে অনেকটা পেছনে গিয়ে দারুণ ক্যাচ নেন চেতেশ্বর পুজারা।

১৫০ বলে ৬৪ করে আউট হলেন মুশফিক। বাংলাদেশ ৯ উইকেটে ২০৮।

শামির আরেকটি

তাইজুলের ছোট্ট প্রতিরোধ ভাঙলেন মোহাম্মদ শামি। হেলমেট সোজা তাক করা শর্ট বল ঠিকমতো সামলাতে পারেননি তাইজুল। বল তার ব্যাটে লেগে উঠে যায় ওপরে। ক্যাচ নেন কিপার ঋদ্ধিমান সাহা।  ইনিংসে শামির এটি চতুর্থ উইকেট।

৪৩ বলে ৬ করে আউট হলেন তাইজুল। ম্যাচ শেষের পথে। বাংলাদেশের রান ৮ উইকেটে ২০৮।

আউট হয়েও হলেন না তাইজুল

রবিচন্দ্রন অশ্বিনের বলে তাইজুল ইসলামের ব্যাট ছুঁয়ে প্যাডে লেগে বল গিয়েছিল স্লিপে রোহিত শর্মার হাতে। কিন্তু আউট দেননি আম্পায়ার মারাইস ইরাসমাস। ভারত তাদের দুটি রিভিউ হারিয়েছে অনেক আগেই!

৬ রানে আউট হয়েও বেঁচে গেলেন তাইজুল।

৬৪ ওভারে বাংলাদেশের রান ৭ উইকেটে ২০৩।

ছবি: বিসিসিআই

মিরাজের বিদায়

চা বিরতির পর প্রথম ওভারেই মেহেদী হাসান মিরাজকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙলেন উমেশ যাদব। ভারত আরেকটু এগিয়ে গেল ইনিংস ব্যবধানে জয়ের দিকে।

মিরাজকে অবশ্য খানিকটা দুর্ভাগা বলা যায়। শর্ট অব লেংথ বলটি ছেড়ে দিয়েছিলেন মিরাজ। কিন্তু বল লাফিয়ে তার শরীরে লেগে আঘাত করে স্টাম্পে।

৫ চার ও ১ ছক্কায় ৩৮ রান করে বিদায় নিলেন মিরাজ। ভাঙল ৫৯ রানের সপ্তম উইকেট জুটি।

বাংলাদেশের রান ৭ উইকেটে ১৯৪।

কিছুটা স্বস্তির সেশন

উইকেট হারাতে হয়েছে দুটি। তার পরও দ্বিতীয় সেশনটি বাংলাদেশের ড্রেসিং রুমে স্বস্তির পরশ বুলিয়ে দেবে খানিকটা হলেও। অন্তত লড়াই তো করা গেছে এই সেশনে!

৪ উইকেটে ৬০ রান নিয়ে লাঞ্চের পর ব্যাটিংয়ে নামা বাংলাদেশ চা বিরতিতে গেছে ৬ উইকেটে ১৯১ রান নিয়ে।

এই সেশনে ২ উইকেট হারিয়ে ৩২ ওভারে রান এসেছে ১৩১।

৫৩ রান নিয়ে অপরাজিত আছেন মুশফিক, ৩৮ রানে মিরাজ। জুটির রান ৫৬।

মুশফিক-লিটন ও মুশফিক-মিরাজ জুটির ব্যাটিংয়ের সময় আরও স্পষ্ট হয়েছে, উইকেট ব্যাটিং সহায়ক যথেষ্টই। টপ অর্ডারের ব্যর্থতাকে তাই চোখে পড়ছে আরও বেশি করে।

আরেক জুটির ফিফটি

লিটন দাসের বিদায়ের পর মুশফিক ও মেহেদী হাসান মিরাজ গড়লেন আরেকটি অর্ধশত রানের জুটি।

সপ্তম উইকেট জুটির ফিফটি এসেছে ৮২ বলে। জুটিতে মিরাজই বেশি অগ্রণী, করেছেন ৩২ রান। 

মুশফিকের ফিফটি

দলের বিপর্যয়ে নিজের মতো করে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন মুশফিকুর রহিম। ৪ রানে জীবন পাওয়া ব্যাটসম্যান করেছেন ফিফটি।

১০১ বলে মুশফিক ছুঁয়েছেন ফিফটি। বাউন্ডারি ৬টি।

ভারতের বিপক্ষে ৫ টেস্টে তৃতীয়বার ফিফটি স্পর্শ করলেন মুশফিক। আগের দুবারই ইনিংসে রূপ দিয়েছিলেন সেঞ্চুরিতে।

ছবি: বিসিসিআই

লিটন আবার

দৃষ্টিনন্দন সব শট, আশা জাগিয়ে তোলা, আবার নিজের ব্যাটেই সেই আশা খুন করা, লিটন দাসের ইনিংসের সেই নিয়মিত চিত্র দেখা গেল আরেকবার। ভালো খেলতে খেলতেই বিলিয়ে এলেন উইকেট।

উইকেটে যাওয়ার পর থেকেই দারুণ খেলছিলেন লিটন। মেরেছেন চোখধাঁধানো কয়েকটি বাউন্ডারি। কিন্তু আবারও ব্যর্থ ইনিংস বড় করতে। রবিচন্দ্রন অশ্বিনের বলে বেরিয়ে এসে খেলতে চেয়েছিলেন। বুঝতে পেরে অশ্বিন বল পিচ করিয়েছিলেন একটু টেনে। লিটন তাই পারলেন না বলের পিচ পর্যন্ত যেতে। তবু চাইলেন উড়িয়ে খেলতে, কিন্তু অশ্বিনকেও পার করতে পারলেন না। বেশ গতিতে ছুটে আসা বল ফিরতি ক্যাচে পরিণত করলেন অশ্বিন।

৬ চারে ৩৯ বলে ৩৫ করে ফিরলেন লিটন। ভাঙল ৬৩ রানের ষষ্ঠ উইকেট জুটি।

বাংলাদেশ ৬ উইকেটে ১৩৫।

জুটির ফিফটি

স্পিন আক্রমণে আসার পর যেন আত্মবিশ্বাসও ফিরে পেয়েছেন লিটন দাস ও মুশফিকুর রহিম। দুজনের ব্যাট থেকে রান আসছে ওয়ানডে গতিতে। জুটির ফিফটি হয়ে গেছে কেবল ৫১ বলেই!

জুটিতে ২৩ বলে ২৭ করেছেন লিটন, ২৮ বলে ২৬ মুশফিক।

৩৫ ওভার শেষে বাংলাদেশ ৫ উইকেটে ১২৫।

বাংলাদেশের একশ

নতুন স্পেলে ফেরা ইশান্ত শর্মার এক ওভারে লিটন দাসের তিন বাউন্ডারিতে বাংলাদেশের স্কোর স্পর্শ করল ১০০। ৫ উইকেট হারিয়ে ৩১ ওভারে ১০০ ছুঁয়েছে বাংলাদেশ।

বাজে শটে ফিরলেন মাহমুদউল্লাহ

প্রথম ইনিংসে সবচেয়ে বাজে শটে আউট হয়েছিলেন সম্ভবত মাহমুদউল্লাহ। দ্বিতীয় ইনিংসেও ফিরলেন দৃষ্টিকটুভাবে। লাঞ্চের পরপরই ভারতকে উইকেট এনে দিলেন মোহাম্মদ শামি।

যথারীতি শামির ডেলিভারিটি ছিল দারুণ। বাতাসে একটু সুইং করে সিমে পিচ করে বেরিয়ে যায় আরও সুইং করে। মাহমুদউল্লাহ পারতেন ছেড়ে দিতে। কিন্তু জানতেন না তার অফ স্টাম্প কোথায়! জোড়া পায়ে ব্যাট পেতে দিলেন বলে। কানায় লেগে বল স্লিপে, এবার ক্যাচ নিতে ভুল করেননি রোহিত।

মাহমুদউল্লাহ ফিরলেন ৩৫ বলে ১৫ রানে। বাংলাদেশ ৫ উইকেটে ৭২। শামি নিলেন তৃতীয় উইকেট।

উইকেটে মুশফিকের সঙ্গী হলেন লিটন দাস।

ছবি: বিসিসিআই

ভোগান্তির আরেকটি সেশন
চ্যালেঞ্জ ছিল টিকে থাকার। বাংলাদেশের ব্যাটিং মুখ থুবড়ে পড়েছে আবার। এক সেশনেই হারাতে হয়েছে ৪ উইকেট। চোখ রাঙাচ্ছে ইনিংস পরাজয়।
ইন্দোর টেস্টের তৃতীয় দিনে লাঞ্চ বিরতিতে বাংলাদেশের স্কোর ৪ উইকেটে ৬০।
আগের দিনের ৬ উইকেটে ৪৯৩ রানেই সকালে ইনিংস ঘোষণা করে দেয় ভারত। বাংলাদেশ পিছিয়ে ছিল ৩৪৩ রানে। খেলা শুরুর আগে টিভিতে সুনীল গাভাস্কার বলেছিলেন, উইকেট ব্যাটিং সহায়ক, প্রয়োজন ব্যাটসম্যানদের নিবেদন। কিন্তু সেই নিবেদনের ছিটেফোটাও দেখা গেল না বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে।
ভারতীয় পেসারদের বোলিং যথারীতি ছিল দুর্দান্ত। সুইং আর বাউন্স আদায় করেছে তারা, পরীক্ষা নিয়েছেন ব্যাটসম্যানদের। বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের স্কিলের ঘাটতিও ফুটে উঠেছে স্পষ্ট হয়ে। সেই ঘাটতি পুষিয়ে দেওয়া যেত চোয়ালবদ্ধ প্রতিজ্ঞায়। কিন্তু বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ে পড়েনি সেই প্রতিজ্ঞার প্রতিফলন।
৯ রান নিয়ে মুশফিক ও ৬ রান নিয়ে মাহমুদউল্লাহ লাঞ্চের পর শুরু করবেন লড়াই।

খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে পঞ্চাশ

১৯তম ওভারে বাংলাদেশের রান স্পর্শ করেছে পঞ্চাশ। তবে রানের এই ছোট মাইলফলকের মূল্য আছে সামান্যই, উইকেট যে হারাতে হয়েছে ৪টি! ইনিংস হার এড়ানো আপাতত দৃষ্টি সীমারও বাইরে।

৫ রানে খেলছেন মুশফিক, ১ রানে মাহমুদউল্লাহ।

জীবন পেলেন মুশফিক

প্রথম ইনিংসে তিনবার জীবন পেয়েছিলেন মুশফিকুর রহিম। দ্বিতীয় ইনিংসেও একবার পেয়ে গেলেন শুরুতেই!

মোহাম্মদ শামির বলটি ছিল অফ স্টাম্পের বেশ বাইরে। সিমে পড়লেও মুভমেন্ট ছিল না। তবে ড্রাইভ করার মতোও ছিল না, ছেড়ে দেওয়া হতো সহজ সমাধান। মুশফিক চাইলেন শরীর থেকে অনেক দূরে ড্রাইভ করতে। বল তার ব্যাটের কানায় লেগে গেল স্লিপে। কিন্তু সহজ ক্যাচটি দ্বিতীয় স্লিপে নিতে পারলেন না রোহিত শর্মা।

৪ রানে বেঁচে গেলেন মুশফিক।

ব্যর্থ মিঠুনও

রিভিউ নিয়ে মিঠুনকে ভারত ফেরাতে না পারলেও সেই আক্ষেপ দীর্ঘায়িত হলো না বেশি। মিঠুন নিজেই দিয়ে এলেন উইকেট।

শামির শর্ট বলটি স্কিড করে ব্যাটসম্যানের কাছে যায় আরও দ্রুততায়। মিঠুন চাইলেন পুল করতে, কিন্তু শট খেলতে দেরি করলেন অনেক। টাইমিং হলো না মোটেও। ব্যাটের ওপরের দিকে লেগে শর্ট মিড উইকেটে সহজ ক্যাচ। দলের বিপদের সময় এরকম শট খেলা হয়তো অপরাধের পর্যায়েই পড়ে!

২৬ বলে ১৮ রান করে বিদায় নিলেন মিঠুন। বাংলাদেশের রান ৪ উইকেটে ৪৪।

মুশফিকের সঙ্গে উইকেটে যোগ দিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ।

রিভিউ হারাল ভারত

একটি রিভিউ নিয়ে সফল হওয়ার পরের ওভারেই আরেকটি রিভিউ নিল ভারত। এবার অসফল। নিজেদের রিভিউ দুটি হারাল তারা ১৪ ওভারের মধ্যেই।

উমেশ যাদবের বলটি খেলেছিলেন মিঠুন। মিডল স্টাম্পে পিচ করা বল সিমে পড়ে আরেকটি ভেতরে ঢুকে মিঠুনের ব্যাটকে ফাঁকি দিয়ে লাগে পায়ে। আউট দেননি আম্পায়ার মারাইস ইরাসমাস। রিভিউয়ে দেখা যায়, বল চলে যাচ্ছিল লেগ স্টাম্পের বাইরে দিয়ে। 

মিঠুনের রান তখন ১৮।

পারলেন না মুমিনুল

দলকে উদ্ধার করতে পারলেন না মুমিনুল হকও। অভিষিক্ত অধিনায়ক ফিরলেন দলকে আরও বিপদে ঠেলে। রিভিউ নিয়ে জিতল ভারত। মোহাম্মদ শামি উইকেটের দেখা পেলেন প্রথম ওভারেই।

অফ স্টাম্পের বাইরে পিচ করে ভেতরে ঢোকে শামির বলটি। মুমিনুল খেলেছিলেন শাফল করে। চেষ্টা করেছিলেন ফ্লিকের মতো করতে। ব্যাটে-বলে হয়নি। বল লাগে প্যাডে, লেগ স্টাম্প তখন দেখা যাচ্ছিল স্পষ্ট।

এলবিডব্লিউয়ের আবেদনে সাড়া দেননি আম্পায়ার রড টাকার। ভারত নেয় রিভিউ। দেখা যায়, বল লাগছিল লেগ স্টাম্পে।

৭ রানে ফিরলেন মুমিনুল। বাংলাদেশ ৩ উইকেটে ৩৭।

৬ রানে শেষ সাদমানও

প্রথম ইনিংসের চিত্রনাট্যই যেন অনুসরণ করছে বাংলাদেশের ব্যাটিং। ইমরুলের পর এবার ঠিক ৬ রানেই ফিরলেন সাদমান ইসলাম। দুজনের ক্ষেত্রেই উইকেট শিকারী বোলার আগের মতোই!

রাউন্ড দা উইকেটে করা ইশান্ত শর্মার লেংথ বল পিচ করে ভেতরে ঢোকে আরও। সাদমান পা না নড়িয়েই চেষ্টা করেন ডিফেন্স করতে। ব্যাট-প্যাডে ফাঁক যা ছিল, বল ভেতরে ঢোকার জন্য যথেষ্ট।

প্রথম ইনিংসে ইমরুলকে ফিরিয়ে ভারতকে প্রথম উইকেট এনে দিয়েছিলেন উমেশ। ইশান্ত শর্মা পরের উইকেট নিয়েছিলেন সাদমানকে ফিরিয়ে। সেটিরই পুনরাবৃত্তি দ্বিতীয় ইনিংসে।

২৪ বলে ৬ রানে ফিরলেন সাদমান। প্রথম ইনিংসেও তার ছিল ২৪ বলে ৬।

৩৪৩ রানে পিছিয়ে থেকে বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংসে ২ উইকেটে ১৬।
  
মুমিনুলের সঙ্গে উইকেটে যোগ দিয়েছেন মোহাম্মদ মিঠুন।

রিভিউ হারাল ভারত

ইমরুলকে বিদায় করার ওভারেই আরেকটি উইকেটের আশায় ছিল ভারত। তবে সফল হয়নি তারা রিভিউ নিয়েও। উল্টো হারাতে হয়েছে একটি রিভিউ।

অফ স্টাম্পের একটু বাইরে থাকা লেংথ বল ছেড়ে দিয়েছিলেন মুমিনুল হক। কিন্তু বল শেষ সময়ে একটু ভেতরে ঢুকে লাগে মুমিনুলের পায়ে। জোরালো আবেদনে সাড়া দেননি আম্পায়ার মারাইস ইরাসমাস। রিভিউ নেয় ভারত। দেখা যায়, বল চলে যাচ্ছিল অফ স্টাম্পের একটু বাইরে দিয়ে।

মুমিনুলের রান তখন ৪।

ছবি: আইসিসি

বোল্ড ইমরুল
প্রথম ইনিংসের মতোই বাংলাদেশের দুই ওপেনারের জুটি টিকল ৫ ওভার। ষষ্ঠ ওভারে ভারত পেল প্রথম উইকেটের দেখা। উমেশ যাদবের দারুণ এক ডেলিভারিতে বোল্ড হয়ে গেলেন ইমরুল কায়েস।
উমেশের বলটি বাতাসে একটু সুইং করে অফ স্টাম্পে পিচ করে ভেতরে ঢোকে আরও। ইমরুল জায়গায় দাঁড়িয়ে ড্রাইভ করেছিলেন, ব্যাট-প্যাডের মধ্যে ফাঁক ছিল বিশাল। বল ভেতরে ঢুকে উপড়ে দেয় তার লেগ স্টাম্প।
১৩ বলে ৬ রানে বোল্ড ইমরুল। প্রথম ইনিংসেও ইমরুল ফিরেছিলেন ৬ রানে।
বাংলাদেশ ১ উইকেটে ১০।

আজই শেষ?

সাধারণত, তৃতীয় দিনে টেস্টের গতিপথ অনেকটা বোঝা যায়। কিন্তু এই টেস্টের ভাগ্য অনেকটা স্পষ্ট হয়ে গেছে প্রথম দুই দিনেই। তৃতীয় দিনে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন, ম্যাচ কি চতুর্থ দিনে নিতে পারবে বাংলাদেশ?

টিভির পিচ রিপোর্টে সুনীল গাভাস্কার বললেন, “উইকেটে টুকটাক কিছু ক্ষত সৃষ্টি হয়েছে বটে, তবে তা খুবই হালকা। উইকেট এখনও ব্যাটিং সহায়ক। তবে সবচেয়ে জরুরী, এখানে লড়াই করে টিকে থাকার মানসিক শক্তি বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের আছে কিনা। যদি সেখানে তারা উন্নতি করতে না পারে, ম্যাচ শেষ হতে পারে আজ বিকেলেই।”

ভারতের ইনিংস ঘোষণা

আগের দিন শেষ বিকেলে রবিচন্দ্রন অশ্বিনের আগে উমেশ যাদবকে ব্যাটিংয়ে নামিয়েছিল ভারত। শেষ সময়ের ব্যাটিংয়েও ছিল ঝড়। সবকিছুতেই ইঙ্গিত ছিল, তৃতীয় দিন সকালে যে কোনো সময় ইনিংস ঘোষণা করে দেবে ভারত। সেই অনুমানের প্রতিফলনই পড়ল বাস্তবতায়। আগের দিনের স্কোরেই ইনিংস ঘোষণা করে দিয়েছে ভারত।

৬ উইকেটে ৪৯৩ রানে ইনিংস ঘোষণা করল ভারত। এগিয়ে তারা ৩৪৩ রানে। বাংলাদেশের সামনে এখন লড়াই ইনিংস ব্যবধনে পরাজয় এড়ানোর। প্রথম ইনিংসে ১৫০ রানে গুটিয়ে যাওয়া দলের জন্য এটি ভীষণ কঠিন এক চ্যালেঞ্জ।

দ্বিতীয় দিন শেষে সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ১৫০

ভারত ১ম ইনিংস: ১১৪ ওভারে ৪৯৩/৬  (মায়াঙ্ক ২৪৩, রোহিত ৬, পুজারা ৫৪, কোহলি ০, রাহানে ৮৬, জাদেজা ৬০*, ঋদ্ধিমান ১২, উমেশ ২৫*; ইবাদত ৩১-৫-১১৫-১, আবু জায়েদ ২৫-৩-১০৮-৪, তাইজুল ২৮-৪-১২০-০, মিরাজ ২৭-০-১২৫-১, মাহমুদউল্লাহ ৩-০-২৪-০)।