হোপের সেঞ্চুরিতে পিষ্ট আফগানদের আশা

আগের দুই ম্যাচেও আফগানদের যথেষ্ট ভুগিয়েছেন শেই হোপ। তবে তার সেরা আর আফগানদের যন্ত্রণার চূড়ান্ত রূপটা যেন জমা ছিল শেষ ম্যাচের জন্য। এই ওপেনারের অপরাজিত সেঞ্চুরিতে তৃতীয় ওয়ানডেতেও জিতল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সিরিজে হোয়াইটওয়াশড হলো আফগানিস্তান।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 Nov 2019, 05:00 PM
Updated : 11 Nov 2019, 05:01 PM

তিন ম্যাচ সিরিজের শেষ ওয়ানডেতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ জিতেছে ৫ উইকেটে। নতুন ওয়ানডে অধিনায়ক কাইরন পোলার্ডের পথচলা শুরু হলো ৩-০ ব্যবধানের জয়ে।

এই সিরিজের আগে ওয়ানডেতে দুই দলের মুখোমুখি লড়াইয়ে আফগানরা এগিয়ে ছিল ৩-২ ব্যবধানে। চিত্র পাল্টে গেল এবার।

লক্ষ্ণৌতে সোমবার তিন ব্যাটসম্যানের ফিফটিতে আফগানরা ৫০ ওভারে তুলেছিল ২৪৯ রান। ক্যারিবিয়ানরা শুরুতেই হোঁচট খেয়েছিল রান তাড়ায়। কিন্তু হোপের সেঞ্চুরিতে শেষ পর্যন্ত জিতেছে তারা ৮ বল বাকি থাকতে।

ইনিংস শুরু করতে নেমে ১০৯ রানের ইনিংস খেলে দলের জয় সঙ্গে নিয়ে ফিরেছেন হোপ।

টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা আফগানরা অভিষিক্ত ইব্রাহিম জাদরানকে (২) হারায় দ্রুত। এরপর রহমত শাহ ও ইকরাম আলিখিলকে লম্বা সময় টিকতে দেননি পেসার কিমো পল। তবে আরেক ওপেনার হজরতউল্লাহ জাজাই সচল রেখেছিলেন রানের চাকা।

৭ চার ও ২ ছক্কায় ৫০ রান করা জাজাইকে ফিরিয়ে যখন তৃতীয় শিকার ধরলেন পল, আফগানরা ধুঁকছে তখন ৪ উইকেটে ৭৪ রান নিয়ে।

ছবি: আইসিসি

সেখান থেকে দলকে এগিয়ে নেন আসগর আফগান। তাকে কিছুক্ষণ সঙ্গ দিয়ে নাজিবউল্লাহ জাদরান ফেরেন ৩০ রানে। আসগর দলকে উদ্ধার করেন মোহাম্মদ নবির সঙ্গে জুটি বেঁধে। ষষ্ঠ উইকেটে ১২২ বলে ১২৭ রানের জুটি গড়েন এই দুজন।

৬ ছক্কায় ৮৫ বলে ৮৬ করে আউট হন আসগর। নবি অপরাজিত থাকেন ৬৬ বলে ৫০ রানে।

রান তাড়ায় তৃতীয় ওভারেই জোড়া ধাক্কা খায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। আগ্রাসী দুই বাঁহাতি এভিন লুইস ও শিমরন হেটমায়ারকে এক ওভারেই ফেরান স্পিনার মুজিব উর রহমান।

ক্যারিবিয়ানদের মিইয়ে যাওয়া আশা জেগে ওঠে হোপের ব্যাটে। পরের চার জুটিতেই ফিফটি পেরোয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। প্রতিটিতেই এক প্রান্তে ছিলেন হোপ।

তৃতীয় উইকেটে অভিষিক্ত ব্র্যান্ডন কিংয়ের সঙ্গে জুটিতে আসে ৬৪ রান, চতুর্থ উইকেটে নিকোলাস পুরানের সঙ্গে জুটি ৫১ রানের।

জুটি ভেঙে তবু আশায় ছিল আফগানরা। কিন্তু ভাঙতে পারেনি তারা হোপের প্রতিরোধ। পঞ্চম উইকেটে পোলার্ডের সঙ্গে হোপের জুটি ৬৩ রানের, তাতে পোলার্ডের অবদান ২৬ বলে ৩২।

ম্যাচ শেষ করা জুটি এসেছে এরপর। রোস্টন চেইস ও হোপ ৭১ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়েন ৬৫ বলে। চেইস অপরাজিত থাকেন ৩২ বলে ৪২ রানে।

সপ্তম ওয়ানডে সেঞ্চুরিতে হোপ মাঠ ছাড়েন ৮ চার ও ৩ ছক্কায় ১৪৫ বলে ১০৯ রান করে। এই সময়ের ওয়ানডে ক্রিকেট বিবেচনায় হয়তো ইনিংসের গতি মন্থর, কিন্তু ম্যাচের বাস্তবতায় ও দলের প্রয়োজনে মহামূল্য ইনিংস!

সিরিজের আগের দুই ম্যাচে হোপের রান ছিল অপরাজিত ৭৭ ও ৪৩। সিরিজে তার মোট রান ২২৯, গড়ও ২২৯!

অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে সিরিজ সেরা অবশ্য চেইস। তিন ম্যাচে করেছেন ১৪৫ রান, নিয়েছেন ৬ উইকেট।

সিরিজে ক্যারিবিয়ানদের সাফল্যের একটি বড় কারণ ছিল রশিদ খানকে নিষ্ক্রিয় রাখতে পারা। ৩ ম্যাচে আফগান অধিনায়ক নিতে পেরেছেন কেবল ২ উইকেট।

বৃহস্পতিবার লক্ষ্ণৌতেই শুরু হবে দুই দলের তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

আফগানিস্তান : ৫০ ওভারে ২৪৯/৭ (জাজাই ৫০, ইব্রাহিম ২, রহমত ১০, ইকরাম ৯, আসগর ৮৬, নাজিবউল্লাহ ৩০, নবি ৫০*, রশিদ ০; জোসেফ ৯-১-৫৯-২, শেফার্ড ৯-০-৪৭-১, চেইস ১০-০-২৪-১, পল ১০-২-৪৪-৩, ওয়ালশ ৭-০-৫১-০, পোলার্ড ৫-০-২০-০)।

ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ৪৮.৪ ওভারে ২৫৩/৫ (হোপ ১০৯*, লুইস ২, হেটমায়ার ০, কিং ৩৯, পুরান ২১, পোলার্ড ৩২, চেইস ৪২*; মুজিব ১০-১-৪৯-২, ইয়ামিন ৮.৪-১-৪৯-০, শরাফউদ্দিন ১০-০-৫৭-১, নবি ১০-১-৪৭-১, রশিদ ১০-০-৪৬-১)।

ফল: ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৫ উইকেটে জয়ী

সিরিজ: ৩ ম্যাচ সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৩-০তে জয়ী

ম্যান অব দা ম্যাচ: শেই হোপ

ম্যান অব দা সিরিজ: রোস্টন চেইস