মরা ম্যাচে প্রাণ ফেরালেন রুবেল

চার দিনের ম্যাচের প্রথম দুই দিনের প্রায় পুরো ভেসে গেছে বৃষ্টিতে। ম্যাচের আর থাকে কী! প্রায় প্রাণহীন হয়ে পড়া সেই ম্যাচকেও জীবন্ত করে তুললেন রুবেল হোসেন। গতিময় ও আগ্রাসী ফাস্ট বোলিংয়ের প্রদর্শনীতে করলেন ক্যারিয়ার সেরা বোলিং। তার আগুনে বোলিংয়ে পুড়ল রাজশাহীর ব্যাটিং।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 Nov 2019, 11:49 AM
Updated : 11 Nov 2019, 01:28 PM

জাতীয় দলের বাইরে থাকা এই পেসার জাতীয় লিগে খুলনার হয়ে নিয়েছেন ৫১ রানে ৭ উইকেট। মিরপুরে তার বোলিং তোপে সোমবার রাজশাহী প্রথম ইনিংসে গুটিয়ে গেছে ১৫১ রানে। খুলনা প্রথম ইনিংসে এ দিনই তুলে ফেলেছে ৪ উইকেটে ১৫৪ রান।

ম্যাচের প্রথম দিন ভেস্তে গিয়েছিল বৃষ্টিতে। দ্বিতীয় দিনে খেলা হয়েছিল কেবল ১২ ওভার। রাজশাহী কোনো উইকেট না হারিয়ে করেছিল ৩৯ রান।

তৃতীয় দিন সকালে রাজশাহীর ইনিংসে ছোবল দেন রুবেল। আগের দিন ৩ ওভারে ১৮ রান দিয়ে উইকেটশূন্য ছিলেন তিনি। এ দিন দেখা দিলেন পুরো ভিন্ন চেহারায়। মিরপুরের উইকেটে ঘাস আছে বেশ। প্রায় ২ দিন ঢেকে রাখা উইকেটে আর্দ্রতাও ছিল যথেষ্ট। সহায়ক কন্ডিশন কাজে লাগিয়েছেন রুবেল।

অভিষেক মিত্রকে ফিরিয়ে দলকে এনে দেন প্রথম উইকেট। পরে ফিরিয়ে দেন ৭ চারে ৪৩ রান করা ওপেনার মিজানুর রহমানকেও।

রুবেলের ৬ ওভার স্পেল শেষেও স্বস্তি পায়নি রাজশাহী। অভিজ্ঞ জুনায়েদ সিদ্দিককে ২৩ রানে ফেরান জিয়াউর রহমান। মিডল অর্ডারে রাজশাহী অধিনায়ক ফরহাদ হোসেন ও কিপার শাকির হোসেনকে নিজের পরপর দুই ওভারে ফেরান বাঁহাতি স্পিনার আব্দুর রাজ্জাক।

একটু বিশ্রাম পেয়ে তরতাজা হয়ে ফেরা রুবেল পরের স্পেলে গুঁড়িয়ে দেন রাজশাহীর ব্যাটিং। একাই নেন বাকি ৫ উইকেট!

লাঞ্চের ঠিক আগে ফরহাদ রেজাকে ফিরিয়ে পূর্ণ করেন ৫ উইকেট। লাঞ্চের পর আক্রমণাত্মক খেলে কিছু রান বাড়ান সানজামুল ইসলাম। ৪টি চার ও ৩ ছক্কায় ৪৮ রান করা সানজামুলকে ফিরিয়েই ইনিংস শেষ করে দেন রুবেল।

লাঞ্চের আগে-পরে মিলিয়ে ৮.৪ ওভারের টানা সেই স্পেলে ২০ রানে রুবেল নেন ৫ উইকেট।

সব মিলিয়ে ৫১ রানে ৭ উইকেট তার ক্যারিয়ার সেরা বোলিং। আগের সেরা ছিল ২২ রানে ৫ উইকেট, ২০১৭ সালে বিসিএলে দক্ষিণাঞ্চলের হয়ে।

খুলনার ব্যাটিং শুরুর সময়ও উইকেটে পেসারদের সহায়তা ছিল যথেষ্ট। নতুন বলে ফরহাদ রেজা ও মোহর শেখ আদায় করে নেন বেশ সুইং। খুলনার দুই ওপেনার রবিউল ইসলাম ও এনামুল হককে দ্রুত ফেরান মোহর।

তবে অমিত মজুমদার ও তুষার ইমরানের দৃঢ়তায় খুলনা এগিয়ে যায় লিডের পথে। চার স্লিপ নিয়ে বোলিং করে গেছে রাজশাহীর পেসাররা। এই দুজন সামলে নিয়েছেন দারুণভাবে। তৃতীয় উইকেটে ১০১ রানের জুটি গড়েন দুজন।

ফিফটি করেছেন দুজনই। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে বাংলাদেশের সফলতম ব্যাটসম্যান তুষার এই মৌসুমে খুব ভালো করতে পারছিলেন না। মৌসুমের পঞ্চম ম্যাচে পেলেন দ্বিতীয় ফিফটির দেখা।

দুই বছর পর প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে খেলতে নেমে বাঁহাতি অমিতও খেলেছেন বেশ আস্থায়।

শেষ বিকেলে এই দুজনকেই ফিরিয়েছেন মুক্তার আলি। খুলনার লিড পাওয়া ততক্ষণে নিশ্চিত হয়ে গেছে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

রাজশাহী ১ম ইনিংস: ৫০.৪ ওভারে ১৫১ (অভিষেক ৯, মিজানুর ৪৩, জুনায়েদ ২৩, ফরহাদ হোসেন ৯, শাকির ০, মুক্তার ১০, সাব্বির ১, সানজামুল ৪৮, ফরহাদ রেজা ৪, সুজন ০, মোহর ০*; রুবেল ১৭.৪-৪-৫১-৭, হালিম ৯-৩-১৯-০, রাজ্জাক ১৬-১-৬০-২, জিয়াউর ৭-১-২১-১, নাহিদুল ১-১-০-০)।

খুলনা ১ম ইনিংস: ৫৪ ওভারে ১৫৪/৪ (রবি ১২, এনামুল ৭, অমিত ৫৯, তুষার ৫৮, সোহান ৬*, নাহিদুল ৬*; ফরহাদ রেজা ১১-২-২৩-০, মোহর ১৩-২-৩২-২, সুজন ১১-০-৩৯-০, মুক্তার ৮-২-২৬-২, সানজামুল ১১-৩-৩১-০)।