মালান-মর্গ্যানের রান উৎসবে ম্লান নিউ জিল্যান্ড

আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি তুলে নিলেন দাভিদ মালান। অধিনায়ক ওয়েন মর্গ্যান গেলেন সেঞ্চুরির কাছে। দুজনের বিস্ফোরক ব্যাটিংয়ে রেকর্ড সংগ্রহ গড়ল ইংল্যান্ড। বিশাল লক্ষ্য তাড়ায় নিউ জিল্যান্ড শুরুটা ভালো করলেও পাত্তাই পেল না পরে।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 Nov 2019, 09:11 AM
Updated : 8 Nov 2019, 11:23 AM

রেকর্ড ব্যবধানের জয়ে টি-টোয়েন্টি সিরিজের সমতা ফেরাল ইংল্যান্ড। নেপিয়ারে শুক্রবার চতুর্থ টি-টোয়েন্টিতে নিউ জিল্যান্ডকে ৭৬ রানে হারিয়েছে তারা। কিউইদের বিপক্ষে ইংলিশদের সবচেয়ে বড় ব্যবধানের জয় এটিই।

ম্যাকলিন পার্কের ব্যাটিং স্বর্গে তিনে নেমে ৫১ বলে ১০৩ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেছেন মালান। মর্গ্যানের ব্যাট থেকে এসেছে ৪১ বলে ৯১। ২০ ওভারে ইংল্যান্ড তোলে ২৪১ রান। টি-টোয়েন্টিতে ইংলিশদের সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ এটিই।
 
রান তাড়ায় কিউইরা থামে ১৬৫ রানে। ইংল্যান্ডের জয়ে পাঁচ ম্যাচের সিরিজে এখন ২-২ সমতা। শেষ ম্যাচ রোববার অকল্যান্ডে।
 
টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা ইংলিশদের শুরুটায় ছিল না এমন তাণ্ডবের ইঙ্গিত। প্রথম ৩ ওভারে রান ছিল ১৬। চতুর্থ ওভারের প্রথম বলে জনি বেয়ারস্টোকে ফেরান মিচেল স্যান্টনার।
 
ঝড়ের শুরু আরেক ওপেনার টম ব্যান্টনের ব্যাটে। দারুণ কিছু শটে ২০ বলে ৩১ রান করে তিনিও ফেরেন স্যান্টনারের বাঁহাতি স্পিনে।
 
মালান তখনও পর্যন্ত ছিলেন একরকম দর্শক হয়ে। ১০ ওভার শেষেও তার রান ছিল ২০ বলে ২৪। পরের ১০ ওভারে মর্গ্যানের সঙ্গে মিলে তিনি কচুকাটা করেছেন কিউই বোলিংকে।
 
৩১ বলে ফিফটি স্পর্শ করেন মালান। পরের পঞ্চাশে ছিলেন আরও বিধ্বংসী। সপ্তদশ ওভারে ইশ সোধিকে ওড়ান দুই চার ও তিন ছক্কায় । ওই ওভার থেকে আসে ২৮ রান। পরের ওভারে ট্রেন্ট বোল্টকে গ্যালারিতে পাঠিয়ে শতরান ছুঁয়ে ফেলেন ৪৮ বলেই।
 
ইংল্যান্ডের হয়ে টি-টোয়েন্টি সেঞ্চুরি ছিল আগে আর কেবল অ্যালেক্স হেলসের। ৯ ম্যাচের ক্যারিয়ারেই ৫ ফিফটি ও ১ সেঞ্চুরি হয়ে গেল মালানের।

আরেক প্রান্তে মর্গ্যান শুরু থেকেই ছিলেন আগ্রাসী। মাত্র ২১ বলে ছুঁয়েছেন পঞ্চাশ, ইংল্যান্ডের হয়ে যা দ্রুততম টি-টোয়েন্টি ফিফটি।
 
১৯তম ওভারে ড্যারিল মিচেলকে এক চার ও তিন ছক্কায় উড়িয়ে ইংলিশ অধিনায়ক সম্ভাবনা জাগিয়েছিলেন সেঞ্চুরি তুলে নেওয়ার। শেষ পর্যন্ত অবশ্য পারেননি। শেষ ওভারে আউট হয়ে যান সীমানায় ক্যাচ দিয়ে। তবে ৭টি করে চার ও ছক্কায় খেলেছেন টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের সেরা ইনিংস।
 
তৃতীয় উইকেটে মর্গ্যান ও মালানের জুটিতে এসেছে ৭৬ বলে ১৮২ রান, টি-টোয়েন্টিতে যে কোনো জুটিতেই ইংল্যান্ডের সর্বোচ্চ।
 
শেষ ১০ ওভারে ১৫৩ রান তুলে ইংল্যান্ড থামে ২৪১ রান করে। টি-টোয়েন্টিতে তাদের আগের সর্বোচ্চ ছিল ২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ২৩০।
 
শেষ ৪ ওভার থেকেই ৭৬ রান তুলেছে ইংল্যান্ড, টি-টোয়েন্টিতে যা বিশ্বরেকর্ড।
 
এই রান তাড়ায়ও ম্যাচ জমিয়ে তোলার আভাস দিয়েছিল নিউ জিল্যান্ড। ছোট মাঠ ও ব্যাটিং উইকেটে তাদের শুরুটাও ছিল উড়ন্ত। উদ্বোধনী জুটিতে ৫ ওভারেই তারা পেরিয়ে যায় পঞ্চাশ। 
 
পঞ্চম ওভারে টম কারানের বলে মার্টিন গাপটিলের (১৪ বলে ২৭) বিদায়ে পথ হারানোর শুরু। একের পর এক ব্যাটসম্যানের আসা-যাওয়ায় ৩৫ রানের মধ্যে ৬ উইকেট হারিয়ে তারা ছিটকে যায় ম্যাচ থেকে।
 
শেষ দিকে অধিনায়ক টিম সাউদি ৪ ছক্কায় ১৫ বলে ৩৯ রান করে ব্যবধান কমিয়েছেন কিছুটা। তার পরও রুখতে পারেননি রেকর্ড ব্যবধানের হার।
 
৪ ওভারে ৪৭ রান দিলেও দ্বিতীয় ম্যাচ খেলতে নামা লেগ স্পিনার ম্যাট পার্কিনসন নিয়েছেন ৪ উইকেট।
 
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
 
ইংল্যান্ড: ২০ ওভারে ২৪১/৩ (ব্যান্টন ৩১, বেয়ারস্টো ৮, মালান ১০৩*, মর্গ্যান ৯১, বিলিংস ০*; বোল্ট ৪-০-৩৫-০, সাউদি ৪-০-৪৭-১, স্যান্টনার ৪-০-৩২-২, টিকনার ৪-০-৫০-০, সোধি ৩-০-৪৯-০, মিচেল ১-০-২৫-০)
 
নিউ জিল্যান্ড: ১৬.৫ ওভারে ১৬৫ (গাপটিল ২৭, মানরো ৩০, সাইফার্ট ৩, ডি গ্রান্ডহোম ৭, টেইলর ১৪, মিচেল ২, স্যান্টনার ১০, সাউদি ৩৯, সোধি ৯, বোল্ট ৮, টিকনার ৫*; স্যাম কারান ৪-০-৩৬-১, টম কারান ৩-০-২৬-১, জর্ডান ২.৫-০-২৪-২, পার্কিনসন ৪-০-৪৭-৪, ব্রাউন ৩-০-২৯-১)
 
ফল: ইংল্যান্ড ৭৬ রানে জয়ী।
 
ম্যাচ সেরা: দাভিদ মালান।