ব্যাটে-বলে বিবর্ণ বাংলাদেশ

ভালো শুরু পেয়েও বড় সংগ্রহ গড়তে পারল না বাংলাদেশ। ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতার দিনে দুর্দান্ত কিছু উপহার দিয়ে লড়াই জমাতে পারেনি বোলাররাও। রোহিত শর্মার বিস্ফোরক ব্যাটিংয়ে সফরকারীদের উড়িয়ে সিরিজে সমতা ফিরিয়েছে ভারত। 

অনীক মিশকাতঅনীক মিশকাতরাজকোট থেকে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 Nov 2019, 05:11 PM
Updated : 7 Nov 2019, 08:54 PM

রাজকোটের সৌরাষ্ট্র ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বৃহস্পতিবার ৮ উইকেটে জিতেছে ভারত। ১৫৪ রানের লক্ষ্য ২৬ বল বাকি থাকতে পেরিয়ে যায় স্বাগতিকরা। তিন ম্যাচের সিরিজে এখন ১-১ সমতা। আগামী রোববার নাগপুরে হবে সিরিজ নির্ধারণী তৃতীয় টি-টোয়েন্টি।   

ছবি: আইসিসি

টস হেরে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশকে উড়ন্ত সূচনা এনে দেন লিটন দাস ও মোহাম্মদ নাঈম শেখ। প্রথম ওভারের শেষ বলে দিপক চাহারকে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে শুরুটা করেন লিটন। খলিল আহমেদের পরের ওভারের প্রথম তিন বলে বাউন্ডারি মারেন নাঈম। এই পেসারের পরের ওভারে আবার দুটি বাউন্ডারি হাঁকান বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান।

লিটন ও নাঈমের ঝড় থামাতে সেরা অস্ত্র যুজবেন্দ্র চেহেলকে পাওয়ার প্লেতে আক্রমণে আনেন অধিনায়ক। তৃতীয় বলেই উইকেট পেতে পারতেন এই লেগ স্পিনার। রিশাভ পান্তের ব্যর্থতায় ১৭ রানে স্টাম্পড হলেও বেঁচে যান লিটন। বল ধরার সময় পান্তের গ্লাভসের সামান্য অংশ ছিল স্টাম্পের সামনে! পরের দুই বলে চেহেলকে বাউন্ডারি হাঁকান লিটন।

পাওয়ার প্লেতে বাংলাদেশের সংগ্রহ ছিল ৫৪ রান। সপ্তম ওভারে আবারও বেঁচে যান লিটন, এবার তার ক্যাচ ফেলেন রোহিত। তবে সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান। পরের ওভারে ফিরেন রান আউট হয়ে। ভাঙে ৬০ রানের উদ্বোধনী জুটি। 

ছবি: আইসিসি

লিটনের বিদায়ের পর কমতে থাকে বাংলাদেশের রানের গতি। ভালো শুরুর পর হঠাৎ ছন্দ হারিয়ে ফেলা নাঈম যেতে পারেননি বেশিদূর। ওয়াশিংটন সুন্দরকে স্লগ সুইপ করে ধরা পড়েন শ্রেয়াস আয়ারের হাতে।

আগের ম্যাচের নায়ক মুশফিকুর রহিম ফিরেন দ্রুত। চেহেলকে স্লগ সুইপ করে ডিপ মিডউইকেটে ধরা পড়েন অভিজ্ঞ এই মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান। শুরু থেকে আস্থার সঙ্গে খেলা সৌম্য সরকার সেই ওভারেই ফিরেন স্টাম্পড হয়ে। ২০ বলে তিন চার ও এক ছক্কায় করেন ৩০ রান।

সময়ের দাবি মেটাতে পারেননি আফিফ হোসেন, মোসাদ্দেক হোসেন ও আমিনুল ইসলাম। শেষের দিকে রানের গতি কিছুটা বাড়ান মাহমুদউল্লাহ। চার বাউন্ডারিতে অধিনায়ক ২১ বলে করেন ৩০ রান।

বাংলাদেশের ইনিংসে বাউন্ডারি ১৭টি, এর নয়টিই আসে বাঁহাতি খলিলের বলে। ২৮ রানে ২ উইকেট নিয়ে ভারতের সেরা বোলার চেহেল। আঁটসাঁট বোলিংয়ে একটি করে উইকেট নেন সুন্দর ও চাহার।

বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা যে কাজটি করতে পারেননি, সেটিই অনায়াসে করে দেখালেন রোহিত। আগের ম্যাচে প্রথম ওভারে ফিরে যাওয়া এই ওপেনার বিস্ফোরক ব্যাটিংয়ে পোড়ালেন সফরকারীদের।

ছবি: আইসিসি

নিজের শততম টি-টোয়েন্টিতে ছক্কা হাঁকিয়ে ২৩ বলে ফিফটি স্পর্শ করেন রোহিত। দশম ওভারে মোসাদ্দেককে হাঁকান তিন ছক্কা। ফল নিয়ে সব অনিশ্চয়তা শেষ ততক্ষণে। শুধু দেখার ছিল ভারত অধিনায়কের সেঞ্চুরি হয় কি না।

দারুণ বোলিং করা আমিনুল একাদশ ওভারে ভাঙেন ১১৮ রানের উদ্বোধনী জুটি। লেগ স্পিনারকে বেরিয়ে এসে ওড়ানোর চেষ্টায় বোল্ড হয়ে যান ধাওয়ান।

শততম টি-টোয়েন্টির উপলক্ষ্য সেঞ্চুরিতে রাঙাতে পারেননি রোহিত। অমন ঝড়ের মধ্যেও দুর্দান্ত বোলিং করা আমিনুলই ফেরান ভারত অধিনায়ককে। ডিপ মিডউইকেটে ক্যাচ দিয়ে শেষ হয় রোহিতের ৮৫ রানের ইনিংস। তার ৪৩ বলের ইনিংস গড়া ছয়টি করে ছক্কা ও চারে। লোকেশ রাহুলকে নিয়ে বাকিটা সহজেই সারেন আয়ার।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ: ২০ ওভারে ১৫৩/৬ (লিটন ২৯, নাঈম ৩৬, সৌম্য ৩০, মুশফিক ৪, মাহমুদউল্লাহ ৩০, আফিফ ৬, মোসাদ্দেক ৭*, আমিনুল ৫*; চাহার ৪-০-২৫-১, খলিল ৪-০-৪৪-১, সুন্দর ৪-০-২৫-১, চেহেল ৪-০-২৮-২, দুবে ২-০-১২-০, ক্রুনাল ২-০-১৭-০)

ভারত: ১৫.৪ ওভারে ১৫৪/২ ( রোহিত ৮৫, ধাওয়ান ৩১, রাহুল ৮*, শ্রেয়াস ২৪*; মুস্তাফিজ ৩.৪-০-৩৫-০, শফিউল ২-০-২৩-০, আল আমিন ৪-০-৩২-০, আমিনুল ৪-০-২৯-২, আফিফ ১-০-১৩-০, মোসাদ্দেক ১-০-২১-০)।

ফল: ভারত ৮ উইকেটে জয়ী

ম্যান অব দা ম্যাচ: রোহিত শর্মা