লোকমানের ব্যাপারে ‘সময়মতো’ সিদ্ধান্ত নেবে বিসিবি

জেলে থাকা বিসিবি পরিচালক লোকমান হোসেন ভূঁইয়াকে সরিয়ে দেওয়ায় আইনগত বাধা আছে, দাবি বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসানের। গঠনতন্ত্র আরও ভালোভাবে বুঝে, আইন-কানুন জেনে সময়মতো এই ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানালেন তিনি।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 6 Nov 2019, 02:11 PM
Updated : 6 Nov 2019, 02:11 PM

গত ২৬ সেপ্টেম্বর মনিপুরীপাড়ার বাসা থেকে লোকমানকে গ্রেপ্তার করেছিল র‌্যাব। তার কয়েকদিন আগেই মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবে অভিযান চালিয়ে ক্যাসিনোর সরঞ্জাম উদ্ধার করেছিল পুলিশ। ৫ বোতল মদসহ লোকমানকে গ্রেপ্তারের পর র‌্যাবের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, মোহামেডান ক্লাবের ডিরেক্টর ইন চার্জ লোকমানই ক্যাসিনোর জন্য ঘর ভাড়া দিয়েছিলেন। ক্যাসিনো ভাড়া দিয়ে প্রতিদিন ৭০ হাজার টাকা পেতেন তিনি। অস্ট্রেলিয়ার দুটি ব্যাংকে তিনি ৪১ কোটি টাকা গচ্ছিত রেখেছেন বলেও জানায় র‍্যাব।

লোকমান গ্রেপ্তার হওয়ার পরই প্রশ্ন ওঠে বিসিবি পরিচালক পদে তার বহাল থাকা নিয়ে। বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসানের দিকেও গেছে সমালোচনার তির। তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু হিসেবেই লোকমান ক্রিকেট বোর্ডে জায়গা করে নিতে পেরেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে অনেকবার।

১৯৯৪ সাল থেকে দেশের ফুটবল অঙ্গনের সঙ্গে যুক্ত লোকমান হুট করেই ক্রিকেটে আসেন ২০১২ সালে। সেসময় অন্তর্বর্তীকালীন বোর্ডের সভাপতি হন নাজমুল হাসান। তার কমিটিতে স্থান পান লোকমান। পরের বছর বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বোর্ড পরিচালক হন তিনি। সবশেষ ২০১৭ সালের নির্বাচনেও তিনি পরিচালক হন।

বিসিবি প্রধানের ঘনিষ্ঠ বলেই লোকমান এখনও তার পদে বহাল, এমন অভিযোগ গত কিছুদিনে করেছেন অনেকেই। তবে বুধবার বিসিবিতে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে নাজমুল হাসানের দাবি, বাংলাদেশ ক্রিকেটের ভালোর জন্যই আইনী বাধ্যবাধকতা অনুসরণ করছেন তারা।

“আমাদের অবস্থান খুব পরিষ্কার। কতগুলো আইন আছে, যে আইন আমার করা নয়। আমাদেরকে আইন মেনে চলতে হবে। যে গঠনতন্ত্র আমাদের আছে এখন, সেটি আইসিসির অনুমোদন নিয়ে করতে হয়েছে। কাজেই আমরা এমন কিছু করতে যাব না, যাতে কিনা বাংলাদেশের ক্রিকেট বিপদে পড়ে। যখন যেটা করা উচিত ও করা সম্ভব, সেটি আমরা করব। এ ব্যাপারে কোনো সন্দেহ নেই।”

লোকমানের ব্যাপারে আরও কিছুদিন সময় নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানালেন বিসিবি সভাপতি।

“এখন আমরা মনে করছি যে আরও কিছুদিন সময় নেওয়া দরকার। একজন কাউন্সিলকেও চাইলেই বাদ দেওয়ার ক্ষমতা আমাদের নেই। সে তো কাউন্সিলর বটেই, পাশাপাশি নির্বাচিত পরিচালকও। একজন নির্বাচিত পরিচালককে বাদ দেওয়া খুবই কঠিন। আমরা আগে আইন-কানুন জানার ও বোঝার চেষ্টা করছি যে কী করা যায়। সময়মতো সিদ্ধান্ত যা নেওয়ার, আমরা নেব।”

লোকমানের বিসিবি পদে থাকা নিয়ে কিছুদিন আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংবাদ সম্মেলনেও প্রশ্ন হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী যদিও সরাসরি উত্তর দেননি। তার আগে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছিলেন, লোকমান হোসেন ভুঁইয়ার বিসিবিতে থাকার যৌক্তিকতা নেই।