মেহেদির অবিশ্বাস্য সেঞ্চুরির পর রাজ্জাকের ১০

মেহেদি হাসান যখন উইকেটে গেলেন, দল ততক্ষণে হারিয়ে ফেলেছে ৬ উইকেট। একটু পর আরও দুই উইকেট হারিয়ে রান দাঁড়াল ৮ উইকেটে ৮০। লিড পাওয়া তো বহুদূর, দলের একশ হওয়া নিয়েই টানাটানি। সেখান থেকে অসাধারণ এক সেঞ্চুরিতে খুলনাকে লিড এনে দিলেন তরুণ এই অলরাউন্ডার। পরে বল হাতে খুলনা অধিনায়ক আব্দুর রাজ্জাক পূর্ণ করলেন ম্যাচে ১০ উইকেট।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 Nov 2019, 12:22 PM
Updated : 3 Nov 2019, 12:22 PM

রোববার জাতীয় লিগের প্রথম স্তরের ম্যাচে আট নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমে মেহেদি খেলেছেন ১১৯ রানের ইনিংস। মিরপুরে রংপুরের বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে খুলনা তুলেছে ২৩৩ রান। আগের দিন রংপুর করেছিল ২২৪ রান।

শেষ সেশনে দ্বিতীয় ইনিংস খেলতে নেমে রংপুর দ্বিতীয় দিন শেষ করেছে ৪ উইকেটে ৬৭ রান নিয়ে। ৬ উইকেট হাতে নিয়ে রংপুর এগিয়ে কেবল ৫৮ রানে।

প্রথম ইনিংসের ৭টির সঙ্গে দ্বিতীয় ইনিংসে এর মধ্যেই ৩ উইকেট যোগ করে ফেলেছেন রাজ্জাক।

খুলনা দিন শুরু করেছিল ২ উইকেটে ২৪ রান নিয়ে। ইমরুল কায়েস ও মইনুল ইসলাম বিদায় নিয়েছিলেন আগের দিনই। দ্বিতীয় দিনেও ছিল একের পর পর এক ব্যাটসম্যানের আসা-যাওয়া। প্রথম ৭ ব্যাটসম্যান মিলিয়ে করতে পারেন কেবল ৫৫ রান।

নবম ব্যাটসম্যান রুবেল হোসেন যখন উইকেটে গেলেন, ১৭ রানে অপরাজিত মেহেদি খুঁজছিলেন একজন সঙ্গী। রুবেল জোগালেন সেই ভরসা, মেহেদি ছুটলেন অপ্রতিরোধ্য ব্যাটিংয়ে।

এক প্রান্তে রুবেল উইকেট আঁকড়ে রাখেন, আরেক পাশে মেহেদি ব্যাট করেন ওয়ানডের গতিতে। বাউন্ডারি আসে প্রায় প্রতি ওভারেই।

রুবেলকে ৫ রানে রেখে মেহেদি পেরিয়ে যান ৫০। এগিয়ে যেতে থাকেন আরও। মাহমুদুল হাসানের অফ স্পিনে টানা দুই বলে বাউন্ডারিতে সেঞ্চুরি স্পর্শ করেন তিনি ১১৭ বলে। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে মেহেদির এটি পঞ্চম সেঞ্চুরি।

নবম উইকেটে অভাবনীয় এই জুটি শেষ পর্যন্ত ভেঙেছে মেহেদির বিদায়েই। ১৫ চার ও ১ ছক্কায় ১৫০ বলে ১১৯ করে ফিরেছেন তরুণ পেসার মুকিদুল ইসলামের বলে।

রুবেলের সঙ্গে ১৩৩ রানের জুটিতে ১০২ রানই এসেছে মেহেদির ব্যাট থেকে। দলকে লিড এনে দিয়ে রুবেল অপরাজিত থেকে যান ৩৬ রানে।

শেষ ব্যাটসম্যান আব্দুল হালিমকে ফিরিয়ে রবিউল হক ধরেন তার পঞ্চম শিকার। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটের প্রথমবার ৫ উইকেটের স্বাদ পেলেন তরুণ এই পেসার।

খাদের কিনারা থেকে লিড পেয়ে উজ্জীবিত খুলনা এরপর বোলিংয়েও ভুগিয়েছে রংপুরকে। পেসার হালিম শুরুতেই ফিরিয়েছেন মাহমুদুলকে। পরে রাজ্জাক দ্রুত নিয়েছেন তিন উইকেট।

প্রথম ইনিংসে ৬৯ রানে ৭ উইকেটের পথে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ৬০০ উইকেট ছুঁয়েছিলেন এই বাঁহাতি স্পিনার। উপলক্ষ্য আরও স্মরণীয় করে রাখলেন ম্যাচে ১০ উইকেট নিয়ে।

ম্যাচে ১০ উইকেট শিকার করলেন রাজ্জাক এই নিয়ে ১১ বার। তৃতীয় দিনেও রংপুরের মূল চ্যালেঞ্জ হবে হয়তো তাকে সামলানোই।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

রংপুর ১ম ইনিংস: ২২৪

খুলনা ১ম ইনিংস: ৭১ ওভারে ২৩৩ (আগের দিন ২৪/২) (এনামুল ২১, ইমরুল ৬, মইনুল ২, তুষার ১, ইমরান ৯, সোহান ১, জিয়াউর ৬, মেহেদি ১১৯, রাজ্জাক ৪, রুবেল ৩৬*, হালিম ৩; রবিউল ১৮-২-৪১-৫, মুকিদুল ১৮-৩-৭১-২, সাজেদুল ৮-২-১৯-২, আরিফুল ৪-১-১১-১, রিশাদ ১৫-১-৩৪-০, সোহরাওয়ার্দী ৩-০-৯-০, নাসির ৩-০-১২-০, মাহমুদুল ২-০-১৩-০)।

রংপুর ২য় ইনিংস : ২৬ ওভারে ৬৭/৪ (মারুফ ২৩, মাহমুদুল ১, সোহরাওয়ার্দী ২৪, নাঈম ১১, সাজেদুল ০*, নাসির ০*; হালিম ৫-২-৬-১, জিয়াউর ৪-০-১১-০, রুবেল ৩-০-১৭-০, রাজ্জাক ৮-০-১২-৩, মইনুল ৫-০-১৫-০ তুষার ১-১-০-০।