বিস্ময়ের ঘোর কাটিয়ে মাঠের চ্যালেঞ্জে সানি

অবৈধ বোলিং অ্যাকশনের জন্য নিষেধাজ্ঞার পর নারী নির্যাতনের অভিযোগে কারাবাস। দুঃসময়ের মধ্যে আরাফাত সানি যেন হারিয়ে যেতে বসেছিলেন। সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে ভারত সফরের দলে থাকবেন, ভাবেননি নিজেও। বিস্ময়ের ঘোর কাটিয়ে এখন বাঁহাতি এই স্পিনারের সব মনোযোগ দলে জায়গা পুনরুদ্ধারের দিকে।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 Oct 2019, 02:28 PM
Updated : 25 Oct 2019, 03:51 PM

ভারত সফরের প্রস্তুতি ক্যাম্পের শুক্রবার ছিল প্রথম দিন। প্রতিটি মুহূর্ত উপভোগ করেছেন সানি। নেটে বোলিং করে গেছেন টানা। ফেরার সিরিজে অপেক্ষা করছে কঠিন চ্যালেঞ্জ। বিশ্বের সেরা ব্যাটিং লাইনআপের বিপক্ষে বোলিং করতে হবে, এই চ্যালেঞ্জ নিজেকে আরও নিংড়ে দিতে উদ্বুদ্ধ করছে সানিকে।

“ভিডিও দেখব আগে। কিভাবে তাদের আটকানো যায় বা বোলিং ভালো করতে পারব সেটা নিয়ে আলোচনা করব। ইনশাআল্লাহ। অবশ্যই আমরা জেতার জন্য যাচ্ছি। সেরাটা অবশ্যই দিব। প্রথম তিনটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ। এটা নিয়েই কাজ করছি। সবারই লক্ষ্য থাকে ম্যাচ জেতা। তো আমাদের পরিকল্পনাও আছে ম্যাচ জেতা।” 

লক্ষ্যটা পরিষ্কার ৩৩ বছর বয়সী এই ক্রিকেটারের। ফিরতে চান ফেলে আসা জায়গায়। লক্ষ্য পূরণে সহায়ক হতে পারেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সফলতম বাঁহাতি স্পিনার ড্যানিয়েল ভেটরি। এক সময় প্রতিপক্ষ হিসেবে পাওয়া নিউ জিল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক এখন বাংলাদেশের স্পিন বোলিং কোচ।

“একজন বাঁহাতি স্পিনার হিসেবে সবসময় কিন্তু আমরা তার বোলিংটা ফলো করতাম। যেহেতু উনি একজন গ্রেট স্পিনার বাঁহাতিদের মধ্যে। তিনি আমাদের এখন কোচ, আজকে তো প্রথম দিন। তার কাছ থেকে জানব কিভাবে কি করা যায়। কারণ তিনি অভিজ্ঞতায় পূর্ণ।”

২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে খেলার সময় প্রশ্ন উঠেছিল সানির বোলিং অ্যাকশন নিয়ে। পরে হন নিষিদ্ধ। বোলিং অ্যাকশন সংশোধন করে ঘরোয়া ক্রিকেটে ফিরে কেটেছে কঠিন সময়। নতুন বোলিং অ্যাকশনে মানিয়ে নিতে সময় লেগেছে।

বড় দৈর্ঘ্যের ক্রিকেটে এই সময়ে উইকেট হয়তো খুব বেশি পাননি, তবে বোলিং করেছেন প্রচুর। সেটা বেশ কাজে এসেছে। ক্রমেই ফিরেছেন নিজের শক্তির জায়গায়। ভালো লাইন-লেংথে করে যেতে পারছেন টানা বোলিং।

সানির মূল শক্তি আঁটসাঁট বোলিংয়ে ব্যাটসম্যানদের বেঁধে রাখার সামর্থ্য। সেটা ফিরে পেয়েছেন অনেকটাই। সানির বিশ্বাস, ভারতের বিস্ফোরক ব্যাটসম্যানদের বিপক্ষে কার্যকর হবে তার এই অস্ত্র।

“অবশ্যই অবাক হয়েছিলাম। তবে আরেকটি জিনিস ঠিক যে, গত তিন বছর ভালো ক্রিকেট খেলছিলাম…বাঁহাতি স্পিনার হিসেবে রান চেক দিয়ে কিভাবে উইকেট টু উইকেট বোলিং করব বা উইকেট বের করব সেই পরিকল্পনা নিয়ে এগোচ্ছি।”

ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে সবশেষ তিন আসরে বেশ সফল ছিলেন সানি। তিন আসরেই ওভার প্রতি রান দিয়েছেন পাঁচের নিচে। ৪৩ ম্যাচে নিয়েছেন ৭৬ উইকেট।  

এই সময়ে বিপিএল ও ডিপিএল টি-টোয়েন্টি মিলিয়ে ৩২ ম্যাচে নিয়েছেন ৩৩ উইকেট। খুব একটা খরুচে ছিলেন না তিনি।

মাঝে ব্যক্তিগত জীবন নিয়েও কম ঝাপটা যায়নি সানির ওপর দিয়ে। ২০১৭ সালে দ্বিতীয় স্ত্রীর করা মামলায় তিন মাস ছিলেন জেলে। সে সব পেছনে ফেলে হারানো জায়গা ফিরে পেতে উন্মুখ সানি।

“তিন বছর আগে আমি ভারতে বোলিং অ্যাকশনের কারণে বাদ পড়েছিলাম, এবার সেখানে আবার সফর করতে যাচ্ছি। অনেক দিন পর আমি সুযোগ পেয়েছি অবশ্যই নিজের সেরাটা দেয়ার চেষ্টা করব। আগের জায়গাটা ফিরে পেতে যা যা করার দরকার সব করব।”