মাহমুদউল্লাহর বোলিং ঝলক, তামিমের আক্ষেপ

শতরানের উদ্বোধনী জুটি। ম্যাড়ম্যাড়ে সমাপ্তির দিকে ম্যাচ। হঠাৎ করেই ম্যাচের রঙ বদলে দিলেন মাহমুদউল্লাহ। দুই ওভারের মধ্যে তিন উইকেট নিয়ে ফেরালেন উত্তেজনা। সেই তিন শিকারের মধ্যে ছিল ফিফটির কাছাকাছি থাকা তামিম ইকবালের উইকেটও। শেষ পর্যন্ত অবশ্য সেই নাটকীয়তা থাকেনি লম্বা সময়। জাতীয় লিগের দ্বিতীয় স্তরে চট্টগ্রাম ও ঢাকা মেট্রোর ম্যাচটি হয়েছে ড্র্।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 Oct 2019, 11:17 AM
Updated : 13 Oct 2019, 11:53 AM

মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে ম্যাচের শেষ দিনে রোববার মাহমুদউল্লাহর বোলিং আর তামিমের সম্ভাবনাময় ইনিংসের মৃত্যুই ছিল উল্লেখযোগ্য ঘটনা। তামিমের আউট ছিল তার জন্য জোড়া আক্ষেপের। ৪ রানের জন্য ফিফটি ছুঁতে পারেননি। আউটের সিদ্ধান্ত নিয়েও দেখালেন হতাশা। আম্পায়ার এলবিডব্লিউ দিলেও তামিম ব্যাট দেখাচ্ছিলেন বারবার। দূর থেকে স্পষ্ট বোঝা না গেলেও পরে নানা সূত্রে জানা গেল, বল তামিমের ব্যাটের কানায় লেগেছিল।

দিনের শুরু ছিল ঢাকা মেট্রোর প্রথম ইনিংস দিয়ে। ৭ উইকেটে ৩৪৯ রান নিয়ে দিন শুরু করে মেট্রোর ইনিংস শেষ হয় আর কেবল ৫ রান যোগ করে।

অষ্টম উইকেটে জাবিদ হোসেন ও শহিদুল ইসলামের অসাধারণ জুটি থামে ১৫১ রানে। দশে নামা শহিদুলকে ৮৩ রানে থামিয়ে অভিষিক্ত পেসার মেহেদি হাসান পান প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে প্রথম উইকেটের স্বাদ। পরের বলেই তিনি পেয়ে যান আরেকটি উইকেট।

আগের দিন চোট পেয়ে অবসরে যাওয়া মার্শাল আইয়ুব ব্যাটিংয়ে নামেন এরপর। তবে লম্বা হয়নি দলের ইনিংস। উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান জাবিদ হোসেনকে ৮৫ রানে বিদায় করে ঢাকা মেট্রোর ইনিংস শেষ করে দেন নোমান চৌধুরি।

প্রথম ইনিংসে ১৬৪ রানে পিছিয়ে থাকা চট্টগ্রামকে দ্বিতীয় ইনিংসে দারুণ সূচনা এনে দেন তামিম ও পিনাক ঘোষ। শুরুর জুটিতেই দল ছাড়িয়ে যায় একশ।

লাঞ্চের পর মাহমুদউল্লাহর ওই স্পেল। ১০২ রানের উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন ৯ চার ও ১ ছক্কায় ৫৭ রান করা পিনাককে ফিরিয়ে। পরের বলেই মুমিনুল হক ক্যাচ দেন স্লিপে।

হ্যাটট্রিক বলটি মাহমুদউল্লাহ করে বসেন লেগ স্টাম্পের বাইরে। তবে তৃতীয় উইকেট ধরা দিয়েছে তার পরের ওভারেই। ম্যাচে দ্বিতীয়বার ফেরান তামিমকে। ৪৬ রানের ইনিংসে ৪টি চারের সঙ্গে আরাফাত সানিকে একটি ছক্কা মারেন ওয়াইড লং অন দিয়ে। আম্পায়ার আউট দেওয়ার পর মাঠ ছাড়েন অসন্তুষ্টিতে মাথা নাড়তে নাড়তে।

তামিমের চেয়েও বড় অসন্তুষ্টি দেখা গেল মাহিদুল ইসলাম অঙ্কনের প্রতিক্রিয়ায়। আরাফাত সানির বলে তাকে এলবিডব্লিউ দেন আম্পায়ার। যদিও বল স্টাম্পের বাইরে দিয়ে চলে যেত বলেই মনে হচ্ছিল। শূন্য রানে আউট হওয়া তরুণ কিপার ব্যাটসম্যান মাঠই ছাড়তে চাইছিলেন না।

চট্টগ্রাম তখন ৬ রানের মধ্যে হারিয়েছিল ৪ উইকেট। ম্যাচে হঠাৎ-ই ফেরে প্রাণ। তবে তাসামুল হক ও মাসুম খানের ব্যাটে সেই বিপদ সামলে নেয় চট্টগ্রাম। পঞ্চম উইকেটে ১১৫ রানের জুটি গড়েন দুজন।

তাসামুল পরে বিদায় নেন ৫৩ রানে। ততক্ষণে ড্র নিশ্চিত হয়ে গেছে। অভিষিক্ত পেস বোলিং অলরাউন্ডার মাসুম খান অপরাজিত থেকে যান ৬১ রানে।

দুই ইনিংস মিলিয়ে ম্যাচে ৬ উইকেট নিয়ে ও একমাত্র ইনিংসে ৬৩ রান করে ম্যাচ সেরা হয়েছেন মাহমুদউল্লাহ।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

চট্টগ্রাম ১ম ইনিংস: ২৯০

ঢাকা মেট্রো ১ম ইনিংস: (আগের দিন ৩৪৯/৭) ১২৬.৪ ওভারে ৩৫৪ (মার্শাল ২১, জাবিদ ৮৫, শহিদুল ৮৩, মেহরাব ০; নোমান ২৫.৪-১-৭১-২, রনি ২৬-৫-৬২-১, মেহেদি ২৩-৬-৬০-২, আফ্রিদি ৩০-৩-১০৩-৩, মাসুম ১৪-০-৩৮-১, মুমিনুল ৮-২-১১-০)।

চট্টগ্রাম ২য় ইনিংস: ৭৬ ওভারে ২২৭/৫ ( তামিম ৪৬, পিনাক ৫৭, মুমিনুল ০, তাসামুল ৫৩, মাহিদুল ০, মাসুম ৬১*, সাদিকুর ১* ; শহিদুল ১০-৫-২১-০, আল আমিন ১৪-২-৩৯-১, সানি ১৯-১-৭৪-১, মাহমুদউল্লাহ ১৩-৩-২৫-৩ , শামসুর ৫-১-১৬-০, মেহরাব ১১-২-৩৭-০, সাদমান ৩-০-৬-০, জাবিদ ১-০-৩-০)।

ফল: ম্যাচ ড্র

ম্যান অব দা ম্যাচ: মাহমুদউল্লাহ