ফিটনেস পরীক্ষা নিয়ে দুর্ভাবনায় ক্রিকেটাররা

খেলা না থাকলে বাংলাদেশের বেশিরভাগ ক্রিকেটার চলে যান মাঠের বাইরে। সুযোগ-সুবিধা তেমন না থাকায় স্কিল কিংবা ফিটনেস নিয়ে খুব একটা কাজ করা হয়ে উঠে না। আবার খেলার আগে ঘাম ঝরিয়ে নিজেদের যতটা সম্ভব প্রস্তুত করে মাঠে নামেন তারা। এবার জাতীয় লিগের আগে তেমন প্রস্তুতিই নিচ্ছেন সবাই। এর মাঝে তারা শুনেছেন যে টুর্নামেন্টের আগে বাধ্যতামূলক 'বিপ টেস্ট' নামক ফিটনেস পরীক্ষায় পেতে হবে ১১ পয়েন্ট। প্রায় বিনা প্রন্তুতিতে এই পরীক্ষার সামনে দাঁড়িয়ে উৎকণ্ঠায় সিনিয়র ক্রিকেটাররা।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 Sept 2019, 03:31 PM
Updated : 26 Sept 2019, 03:46 PM

তবে জাতীয় ক্রিকেট লিগে খেলতে বিপ টেস্টে কত পেতে হবে তা অবশ্য এখনও চূড়ান্ত হয়নি। আগামী রোববার টুর্নামেন্ট কমিটির সভায় চূড়ান্ত হবে বিষয়টি। সেদিন কী সিদ্ধান্ত হয় সেদিকে তাকিয়ে আছেন ক্রিকেটাররা। 

জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক মোহাম্মদ আশরাফুল জানান, বিপ টেস্ট নিয়ে নিজেদের মধ্যে কথা বলছেন ক্রিকেটাররা।

“আগে ছিল ৯, এবার করা হয়েছে ১১। আমরা যারা ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলছি তাদের জন্য এটা করা হয়েছে। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে যারা খেলছি, সবাই যদি অফ সিজনে ফ্যাসিলিটিজটা পেত তাহলে ১১ দেয়া কোনো ব্যাপারই না।”

“ওই সুযোগ-সুবিধাটা কিন্তু আমরা পাই না। জাতীয় দল, হাইপারফরম্যান্স ইউনিট, অনূর্ধ্ব-২৩ দলে যারা না থাকে তাদের জন্য একা-একা অনুশীলন করা কিন্তু খুব কঠিন হয়ে যায়।”

খেলার বাইরে থেকে হুট করে এসে ১১ পয়েন্ট অর্জন সহজ নয়। বয়সের জন্য কারো কারো কাজটা হয়ে পড়বে আরও কঠিন।

“বয়স ৩৫ হয়ে যাওয়ার পরও আপনি যদি ১১ চান সেটাতো একটু কষ্টকরই। আমরা যেহেতু পেশাদার ক্রিকেটার এবং বেতনভুক্তও, আমাদের যা করতে বলা হবে তা তো করতেই হবে।…যদি আমরা একমাসের একটা ক্যাম্প করতে পারি, এরপর যদি ফিটনেস পরীক্ষা দিই তাহলে এই মান অর্জন সম্ভব।”

“বাংলাদেশ দলে অনেক পেসার আছে যারা বিপ টেস্টে ৮/৯ পায়। তবে এর জন্য যে তারা ম্যাচে টানা বোলিং করতে পারবে না তা না। ম্যাচ ফিটনেস এক ব্যাপার আর বিপ টেস্টের ফিটনেস আরেক ব্যাপার।”

অসুস্থা কাটিয়ে আসন্ন জাতীয় ক্রিকেট লিগ দিয়ে মাঠে ফিরতে মুখিয়ে আছেন মোশাররফ হোসেন। বাঁহাতি এই স্পিনার মনে করেন, ফিটনেসের একটা মানদণ্ড ঠিক করে দেওয়া খুব জরুরি ছিল।

“আমি অবশ্যই বলব যে, আমাদের ঘরোয়া ক্রিকেটের অবকাঠামো আরও প্রতিযোগিতামূলক করার জন্য এটি খুবই জরুরি ছিল। ঘরোয়া ক্রিকেটের অবকাঠামো যদি শক্তিশালী না হয় তাহলে একজন খেলোয়াড় তো কখনো আন্তর্জাতিক পর্যায়ে মানিয়ে নিতে পারবে না।”

“আর আমাদের জন্য ১৫ দিন বা এক মাসের জন্য একটা কন্ডিশনিং ক্যাম্প হলে ভালো হতো। যদিও এখন সময় নেই। প্রত্যেকটা বিভাগে আলাদা-আলাদা ক্যাম্প করার পর যদি এই পরীক্ষাগুলো নেয় তাহলে আমাদের জন্য অনেক সুবিধা হয়। যেহেতু এখন সময় নেই, আশা করি আগামী বছর থেকে এটা হবে।”

নিজের মতো অনুশীলন করে ফিটনেস পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত শুভাগত হোম চৌধুরী। আশরাফুল ও রুবেলের মতো জাতীয় দলের বাইরে থাকা এই অলরাউন্ডারও চান প্রস্তুতি ক্যাম্প।

“আমাদের মতো যারা এখন জাতীয় দলের বাইরে আছি তাদের জন্য এটি একটু কঠিন, কারণ আমরা কোনো ক্যাম্প করতে পারছি না। জাতীয় লিগ শুরু হওয়ার আগে শেষ মুহূর্তে হয়তো ৫/৭ দিনের একটি ফিটনেস ক্যাম্প হয়। সেটি দিয়ে কতটা উন্নতি করা যাবে আমি জানি না। তবে আমরা চেষ্টা করছি এই সময়ের মধ্যে যতটা উন্নতি করা যায়।”

আগামী মাসের শুরুতে হতে যাওয়া প্রথম শ্রেণির টুর্নামেন্টে পুরোপুরি প্রস্তুত পিচে খেলার তাগিদ দিলেন শুভাগত।

“আমরা তো প্রতিবারই শুনি যে ঘাসের উইকেটে খেলা হবে। এরপরে শেষ মুহূর্তে গিয়ে দেখি যে উইকেটে ঘাস থাকে, কিন্তু পিচ নরম থাকে। আমাদের কথা হলো, উইকেট হার্ড থাকুক, বাউন্স থাকুক এবং ঘাস থাকুক। তাহলেই আমাদের জন্য ভালো হবে।”