শ্রীলঙ্কায় ওয়ানডে সিরিজে ব্যাটিংয়ে সেভাবে ভালো করতে পারেনি বাংলাদেশ। আফগানিস্তানের বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টেও ব্যাটিং ছিল বিবর্ণ। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ত্রিদেশীয় সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে এক পর্যায়ে ৬০ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে ফেলেছিল বাংলাদেশ। শিষ্যদের এমন ব্যাটিং কতটা ভাবায় ম্যাকেঞ্জিকে?
“আমার মনে হয়, দুয়েকটা বলে এমন হয়েছে। সেভাবে আমরা বাস্তবায়ন করতে পারিনি। তবে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে এটা হয়ই। ছেলেরা নিজেদের পরিকল্পনায় থেকে আউট হয়ে গেলে আমরা মনক্ষুন্ন হই না।”
“যদি মুশফিক রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে আউট হয়, আমি উদ্বিগ্ন হবো না। যদি সৌম্য উড়িয়ে মারতে গিয়ে আউট হয়, আমি উদ্বিগ্ন হবো না। কারণ, ওরা এই শটগুলো খেলে। যদি কেউ চাপ মুক্ত হওয়ার চেষ্টায় সচরাচর খেলা হয় না এমন শট খেলে আউট হয়, সেটা আমাকে চিন্তায় ফেলবে।”
কদিন আগে সাকিব আল হাসান বলেছিলেন সীমাহীন চাপ নিয়ে খেলতে হয় তাদের। চাপটা অনুভব করেন ম্যাকেঞ্জিও। প্রবল চাপের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে শিষ্যরা যেভাবে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ম্যাচ বের করে এনেছে তাতে মুগ্ধ ব্যাটিং কোচ।
“ছেলেরা অনেক চাপে থাকে। ভয়হীন ক্রিকেট খেলে ওরা সেই চাপটা সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টায় থাকে। আর এভাবেই আমরা সাহসী ক্রিকেট খেলে আমাদের ক্রিকেট এগিয়ে নিতে চাই।”
“৬০ রানে ৬ উইকেট পড়ার পরও আফিফ ক্রিজে গিয়ে প্রথম বলেই বাউন্ডারি হাঁকিয়েছে, পরের ওভারে কয়েকটা দারুণ বাউন্ডারি তুলে নিয়েছে। পরের ওভারে দুটি দুর্দান্ত শটে ছক্কা হাঁকিয়েছে সৈকত। এটা ছিল হিসেবি প্রচেষ্টা। আমি বলবো, এটা ছিল ভীতিহীন দলীয় প্রচেষ্টা।”
বাংলাদেশের ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ নিয়ে কেউ কেউ শঙ্কিত। কেউ কেউ বর্তমান নিয়েই উদ্বিগ্ন। তাদের সঙ্গে দ্বিমত আছে ম্যাকেঞ্জির।
“আন্তর্জাতিক ক্রিকেট বেশ কঠিন আর বিশ্বসেরাও কখনও কখনও ব্যর্থ হয়। তবে আমাদের প্রতিভাবান ক্রিকেটারদের ওপর আস্থা রাখতে হবে। বাংলাদেশের প্রচুর প্রতিভাবান ক্রিকেটার আছে। ওদের জন্য আমাদের ধৈর্য্য ধরতে হবে, ওদের ওপর আমাদের বিশ্বাস রাখতে হবে।”
“আমি মনে করি, আমাদের জন্য সবচেয়ে বড় ব্যাপার, এই মুহূর্তে আমাদের হাতে অনেক ভালো খেলোয়াড় আছে। ছেলেরা এগিয়ে আসবে, আমাদের স্রেফ এটাই দরকার। ওদের কাছ থেকে আমরা আরও অনেক বেশি ধারাবাহিকতা দেখতে চাই। ওদের সামর্থ্য নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। প্রয়োজন স্রেফ ধারাবাহিকতা।”
সবশেষ কয়েকটা ম্যাচে রান পায়নি দলের টপ অর্ডার। এ নিয়ে ভাবনার কিছু দেখেন না ম্যাকেঞ্জি। তিনি চান, টপ অর্ডার ব্যর্থ হলে মিডল অর্ডার দায়িত্ব নিক।
“আন্তর্জাতিক ক্রিকেট বেশ কঠিন। আপনি সব সময় রান পাবেন না। এটা সাকিবের ক্ষেত্রে আপনারা সেটাই দেখছেন। বিশ্বকাপে ও ছিল অসাধারণ। ছেলেদের অনেকেই গত ছয় মাসে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বেশ ভালো খেলেছে। যখনই ওরা এক-দুই ম্যাচে রান করে না তখনই সবাই উত্তেজিত হয়ে পড়ে।”
“যখন টপ অর্ডারের কেউ ব্যর্থ হয় তখন আমাদের একটা দল আছে, যাদের কারোর দায়িত্বটা নিতে হয়। আর একটা ভালো দল এই কাজটাই করে। গতকাল ঠিক সেটাই হয়েছে।”
পরিস্থিতি যাই হোক শিষ্যদের খোলা মন নিয়ে খেলে যাওয়ার তাগিদ দিলেন ব্যাটিং কোচ। জোর দিলেন পরিকল্পনায় অনড় থাকার ওপর।
“যখন নিজেকে নিয়ে আপনার সংশয় থাকবে তখন আপনি নিজের সহজাত ক্রিকেট খেলতে পারবেন না। আমাদের এমন একজন ব্যাটসম্যান থাকতে পারবে না, যে মনে করবে, এটা আমার শেষ সুযোগ। আমরা এমন ছেলে চাই যারা মাঠে গিয়ে বাংলাদেশের জন্য ইতিবাচক ক্রিকেট খেলবে।”