স্মিথের আরেকটি দুর্দান্ত ইনিংসের পর বিপদে ইংল্যান্ড

দিনের শুরু আর শেষে অস্ট্রেলিয়ান পেসের দুর্দান্ত প্রদর্শনী। মাঝে স্টিভেন স্মিথের আরেকটি অসাধারণ ইনিংস। অ্যাশেজ ধরে রাখার পথে আরেক ধাপ এগিয়ে গেল অস্ট্রেলিয়া। ম্যাচ বাঁচানোর লড়াইয়ে কঠিন চ্যালেঞ্জে ইংল্যান্ড।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 Sept 2019, 07:01 PM
Updated : 7 Sept 2019, 08:54 PM

ম্যাচের প্রথম তিন দিনেই বৃষ্টি বাধা দিয়েছে বারবার। কিন্তু চতুর্থ দিনে ব্যাটে-বলে দারুণ পারফরম্যান্সে ওল্ড ট্র্যাফোর্ড টেস্টে জয়ের পথ তৈরি করে ফেলেছে অস্ট্রেলিয়া।

প্রথম ইনিংসে ১৯৬ রানের লিডের পর দ্বিতীয় ইনিংসে ৬ উইকেটে ১৮৬ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করে অস্ট্রেলিয়া। বলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে স্মিথ খেলেন ৮২ রানের ইনিংস। দলের প্রয়োজনে বড় শট খেলার পেছনে না ছুটলে হয়তো পেতে পারতেন আরেকটি সেঞ্চুরি!

শেষ ইনিংসে ইংল্যান্ডের লক্ষ্য দাঁড়ায় ৩৮৩। ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম ওভারেই হারায় তারা ২ উইকেট। শেষ পর্যন্ত দিন শেষ করেছে ২ উইকেটে ১৮ রানে।

শেষ দিনে ইংল্যান্ডের প্রয়োজন ৩৬৫ রান। সেটি প্রায় অসম্ভব। লক্ষ্য তাদের ম্যাচ বাঁচানো। অস্ট্রেলিয়ার প্রয়োজন ৮ উইকেট। জিতলেই তারা নিশ্চিত করবে অ্যাশেজ ধরে রাখা।

সকালে ইংল্যান্ড দিন শুরু করেছিল নিজেদের প্রথম ইনিংসে ৫ উইকেটে ২০০ রান নিয়ে। দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যান বেন স্টোকস ও জনি বেয়ারস্টো শুরুর সময়টুকু কাটিয়ে দেন নিরাপদেই। কিন্তু এড়াতে পারেননি দ্বিতীয় নতুন বলে মিচেল স্টার্কের ছোবল। দুর্দান্ত দুটি ডেলিভারিতে অল্প সময়ের ব্যবধানে দুজনকে ফেরান স্টার্ক।

এরপর ইংলিশদের ফলো অন বাঁচানোর লড়াই চলতে থাকে জস বাটলারের ব্যাটে। এক পর্যায়ে প্রবল শঙ্কাতেই ছিল তারা। স্টুয়ার্ট ব্রডের স্টাম্প যখন উপড়ে দিলেন স্টার্ক, ইংল্যান্ডের রান ৯ উইকেটে ২৯৩। ফলো এন এড়াতে তখনও চাই ১৫ রান।

বাটলারের সৌজন্যে সেটুকু পেরে যায় ইংল্যান্ড। ফলো অন এড়ানোর পরপরই বাটলার আউট হন ৪১ রানে।

১৯৬ রানের লিডকে আরও বাড়িয়ে নিতে নেমে শুরুতেই ধাক্কা খায় অস্ট্রেলিয়া। ব্রডের বোলিংয়ের বিভীষিকা কাটাতে পারেননি ডেভিড ওয়ার্নার। আবারও আউট হন প্রথম ওভারে। টেস্ট ক্যারিয়ারে প্রথমবার পেলেন ‘পেয়ার’, দুই ইনিংসেই শূন্য।

এই সিরিজে ষষ্ঠবার ব্রডের শিকার হলেন ওয়ার্নার।

টপ অর্ডারে ব্যর্থ অস্ট্রেলিয়ার অন্যরাও। ব্রড ও আর্চারের দারুণ বোলিংয়ে ৪৪ রানেই নেই ৪ উইকেট।

যথারীতি দলকে উদ্ধার অভিযানে নেমে যান স্মিথ। অস্ট্রেলিয়ার চাওয়া ছিল দ্রুত রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করা। উইকেট আঁকড়ে রাখার পাশাপাশি রান বাড়ানোর কাজটিও স্মিথ করতে থাকেন চোখধাঁধানো সব শটে।

পঞ্চম উইকেটে ১০৫ রানের জুটিতে ম্যাথু ওয়েড করেন ৭২ বলে ২৭, স্মিথের ব্যাট থেকে আসে ৭৩ বলে ৭২!

সেঞ্চুরিটা স্মিথ অনায়াসেই পেতে পারতেন। কিন্তু শুনেছেন তিনি দলের ডাক। ওয়ানডের মতো শট খেলে বাড়াচ্ছিলেন রান। তাকে থামতে হয় জ্যাক লিচকে বেরিয়ে এসে ছক্কা মারতে গিয়ে। ৯১ বলে ৮২ রানের ইনিংসে চার ছিল ১১ টি।

চলতি অ্যাশেজে ৫ ইনিংসেই তার রান হয়ে গেলো ৬৭১।

ম্যাথু ওয়েড ফেরেন ৩৪ রানে। অধিনায়ক টিম পেইন ১৮ বলে অপরাজিত ২৩ রান করে ঘোষণা করে দেন দলের ইনিংস।

উজ্জীবিত অস্ট্রেলিয়া এরপর বল হাতে নাড়িয়ে দেয় ইংল্যান্ডকে। প্রথম ইনিংসে ১৪১ রানের জুটি গড়া ররি বার্নস ও জো রুটকে এবার রানই করতে দেননি কামিন্স।

বাঁহাতি বার্নসকে ফেরান তিনি দুর্দান্ত বাউন্সারে। পরের বলেই ইংলিশ অধিনায়ক রুটের বেলস ওড়ান অসাধারণ এক ডেলিভারিতে।

এ দিন আর কোনো উইকেট হারায়নি ইংলিশরা। তবে শেষ দিনে অপেক্ষায় তাদের বড় পরীক্ষা।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

অস্ট্রেলিয়া ১ম ইনিংস: ৪৮৭/৮ (ডি.)

ইংল্যান্ড ১ম ইনিংস: ১০৭ ওভারে ৩০১ (আগের দিন ২০০/৫)(স্টোকস ২৬, বেয়ারস্টো ১৭, বাটলার ৪১, আর্চার ১, ব্রড ৫, লিচ ৪*; স্টার্ক ২২-৭-৮০-৩, হেইজেলউড ২৫-৬-৫৭-৪, কামিন্স ২৪-৬-৬০-৩, লায়ন ৩৬-৪-৮৯-০)।

অস্ট্রেলিয়া ২য় ইনিংস: ৪২.৫ ওভারে ১৮৬/৬ (ডি.) (ওয়ার্নার ০, হ্যারিস ৬, লাবুশেন ১১, স্মিথ ৮২, হেড ১২, ওয়েড ৩৪, পেইন ২৩*, স্টার্ক ৩*; ব্রড ১৪-৪-৫৪-২, আর্চার ১৪-২-৪৫-৩, ওভারটন ৫.৫-১-২২-০, লিচ ৯-০-৫৮-১)।

ইংল্যান্ড ২য় ইনিংস: (লক্ষ্য ৩৮৩) ৭ ওভারে ১৮/২ (বার্নস ০, ডেনলি ১০*, রুট ০, রয় ৮*; কামিন্স ৩-১-৮-২, হেইজেলউড ২-১-২-০, লায়ন ১-০-৫-০, স্টার্ক ১-০-৩-০)।