বলার অপেক্ষা রাখে না, আফগানিস্তানের বিপক্ষে টেস্টের উইকেট নিয়ে অসন্তুষ্ট বাংলাদেশ অধিনায়ক। দলের প্রত্যাশামতো উইকেট দিতে পারেননি জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের জন্য নিযুক্ত বিসিবির ভারতীয় কিউরেটর প্রাভিন হিঙ্গানিকার।
যে উইকেটে প্রথম ইনিংসে সাড়ে তিনশর কাছাকাছি স্কোর গড়েছে আফগানিস্তান, সেখানেই দেড়শর নিচে ৮ উইকেট হারিয়ে ফেলেছিল বাংলাদেশ। পরে খানিকটা লড়াই করলেও ম্যাচ এখন নিয়ন্ত্রণে আফগানদেরই।
মাত্র তৃতীয় টেস্ট খেলতে নামা দলের এমন পারফরম্যান্স বিস্ময় জাগানোর কথা। কিন্তু সাকিব অবাক নন। দ্বিতীয় দিনের খেলা শেষে সংবাদ সম্মেলনে এই প্রসঙ্গেই সাকিব উইকেটের দিকে প্রথম ইঙ্গিতটি দিলেন।
“যে উইকেট ছিল এবং প্রথম দিনে ওরা আগে ব্যাটিংয়ের যে সুবিধা পেয়েছিল, তাতে আমরা বিস্মিত নই (আফগানিস্তানের পারফরম্যান্সে)। আমি অবাক হয়েছিলাম বরং প্রথম দিনে আমরা ৫ উইকেট নিতে পারায়। কারণ এরকম ফ্ল্যাট উইকেটে আমরা অনেক দিন পরে খেলছি মনে হয়।”
এই ‘ফ্ল্যাট’ উইকেটেও ঠিকই বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের নাকানিচুবানি খাইয়েছে আফগান স্পিনাররা। যে ২২ গজ থেকে খুব একটা টার্ন আদায় করতে পারেনি বাংলাদেশের স্পিনাররা, সেখানে আফগান স্পিনাররা পেয়েছেন বড় বড় টার্ন। তাদের তিন রিস্ট স্পিনার তো বটেই, অফ স্পিনার মোহাম্মদ নবি টার্নের জন্য খুব পরিচিত না হলেও দ্বিতীয় দিনে পেয়েছেন বেশ টার্ন।
স্পিনারদের পারফরম্যান্সের এই ব্যবধান নিয়ে সাকিবের ব্যাখ্যায় উঠে এলো রিস্ট স্পিনার না থাকার আক্ষেপ। আবারও বললেন উইকেট নিষ্প্রাণ। সরাসরি জানিয়ে দিলেন, উইকেটে দলের প্রত্যাশা পূরণ হয়নি।
“আমাদের ফিঙ্গার স্পিনার আর ওদের রিস্ট স্পিনার। এটাই পার্থক্য। এছাড়া আমি আর পার্থক্য দেখি না। হ্যাঁ, নবি ভাই দুটি উইকেট পেয়েছে। আমাদেরও কিন্তু ফিঙ্গার স্পিনাররাই ১০টি উইকেট পেয়েছে!”
“ওদের রিস্ট স্পিনাররাই কার্যকর ছিল বেশি। আমাদের তো রিস্ট স্পিনার নেই। এরকম ফ্ল্যাট উইকেটে রিস্ট স্পিনার না থাকলে, কাজ কঠিন হয়ে যায়। আর যেহেতু আমরা এই ধরনের উইকেট প্রত্যাশা করিনি, আমাদের জন্য পরিস্থিতি কঠিন।”
“আমরা সবাই অনেক বিস্মিত, কারণ আমরা এরকম কিছু আশা করিনি। আমরা যা আশা করেছিলাম, তার পুরো উল্টো পেয়েছি। আমরা যেভাবে দলটি সাজিয়েছি বা তৈরি করেছি, আপনারা সবাই বুঝবেন যে কী ধরণের উইকেট প্রত্যাশা করছিলাম।”
“আসলে আমি চাওয়া-পাওয়াগুলো কখনোই চাই না যে বাইরে প্রকাশ হোক। খুবই গোপনীয়তার সঙ্গে মিটিংগুলো হয় এবং পরিকল্পনা হয়। আমি কখনোই চাইব না যে এই পরিকল্পনাগুলো জানাজানি হোক। তবে আমি যেটি বললাম যে আমরা যে প্রত্যাশা নিয়ে এসেছিলাম তেমন কিছু হয়নি। হতাশার অবশ্যই।”
তবে হতাশার কথা জানিয়েই দায়িত্ব শেষ করতে চান না সাকিব। বড় দল হয়ে উঠতে হলে সব প্রতিকূলতার সঙ্গে মানিয়ে নিতে হয়। তার দলের মধ্যেও সেই মানসিকতার প্রতিফলন দেখতে চান অধিনায়ক।
“এখন আসলে এসব নিয়ে আলোচনা করে কিংবা চিন্তা করে লাভ হবে না। এখান থেকে কিভাবে ঘুরে দাঁড়াতে পারি, সেটি বেশি গুরুত্বপূর্ণ। একটি জিনিস আপনি চাইতেই পারেন। সবসময় পাবেন, সেই প্রত্যাশা করা ভুল। স্বাভাবিকভাবেই অনেক কিছু অনেক সময় অনেক কারণে সম্ভব হয় না। সেটি নিয়ে চিন্তার কিছু নেই।”
“প্রত্যাশা মতো পাইনি, তার মানে এই না যে আমরা ভালো কিছু করতে পারব না। বড় দলগুলো এখানেই প্রমাণ করে যে, যখন বক্সের বাইরেও তাদের কোনো প্রশ্ন আসে, সেটির উত্তর তাদের জানা থাকে। আমরা চেষ্টা করব সেই উত্তরগুলো দিতে।এটি আসলে আমাদেরই দায়িত্ব যে এই সময়গুলোতে ভালোভাবে নিজেদের মেলে ধরা।”