রহমত-আসগরের ব্যাটে আফগানদের দিন
আরিফুল ইসলাম রনি, চট্টগ্রাম থেকে, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published: 05 Sep 2019 09:24 AM BdST Updated: 05 Sep 2019 05:35 PM BdST
বাংলাদেশের বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম দিনটি নিজেদের করে নিয়েছে আফগানিস্তান।
আফগানদের দিন
দিনের প্রথম সেশনটি ছিল বাংলাদেশের। দারুণ ব্যাটিংয়ে পরের দুই সেশনে ঘুরে দাঁড়িয়েছে আফগানিস্তান। চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম দিনটি তাই আফগানদের। দিন শেষে তাদের রান ৫ উইকেটে ২৭১।
দেশকে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি উপহার দিয়েছেন রহমত শাহ। সেঞ্চুরির সম্ভাবনা নিয়ে দিন শেষ করেছেন আসগর আফগানও। বাংলাদেশের বাঁধা আর আফগানদের আশা হয়ে টিকে আছেন আসগর।
প্রথম সেশনে তিনটি উইকেট নিলেও পরের দুই সেশনে আর কেবল দুটি উইকেট নিতে পেরেছে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের হয়ে হাত ঘুরিয়েছেন সাত স্পিনার। তাইজুল ও নাঈম নিয়েছেন দুটি করে উইকেট। প্রথম দিনে খুব ভালো করতে পারেননি সাকিব ও মিরাজ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
আফগানিস্তান: ৯৬ ওভারে ২৭১/৫ (ইব্রাহিম ২১, ইহসানউল্লাহ ৯, রহমত ১০২, শহিদি ১৪, আসগর ৮৮*, নবি ০, আফসার ৩৫*; তাইজুল ৩১-৪-৭৩-২, সাকিব ১৭-১-৫০-০, মিরাজ ২২-৪-৫৯-০, নাঈম ১৩-০-৪৩-২, মাহমুদউল্লাহ ৪-০-৯-১, সৌম্য ৪-০-২৬-০, মুমিনুল ৪-০-৯-০, মোসাদ্দেক ১-০-১-০)।
স্বস্তিতে শেষ আফগানদের
জোড়া উইকেটে শুরু করা শেষ সেশনে পরে আর কোনো উইকেটই নিতে পারল না বাংলাদেশ। আসগর আফগান ও আফসার জাজাইয়ের দৃঢ়তায় আফগানরা দিন শেষ করল স্বস্তিতে।
প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরির আশায় দ্বিতীয় দিন শুরু করবেন আসগর। খেলছেন তিনি ৮৮ রান নিয়ে। তাকে দারুণ সঙ্গ দেওয়া কিপার ব্যাটসম্যান আফসার জাজাই দিন শেষে অপরাজিত ৩৫ রানে।
ষষ্ঠ উইকেটে দুজনের অবিচ্ছিন্ন জুটির রান ৭৪।
জুটির ফিফটি
এক ওভারে জোড়া উইকেটের ধাক্কা সামলে উঠেছে আফগানিস্তান। আসগর আফগান ও আফসার জাজাই ষষ্ঠ উইকেটে গড়েছেন অর্ধশত রানের জুটি। মিরাজের বলে আফসারের ছক্কায় জুটির পঞ্চাশ এসেছে ৯৪ বলে।
দ্বিতীয় নতুন বল
আফসার জাজাইকে নিয়ে জুটি গড়ে তুলছেন আসগর আফগান। দুজনে উইকেটে কাটিয়ে দিয়েছেন ১০ ওভার। পুরানো বলে খুব সুবিধে করতে পারছেন না স্পিনাররা। ৮০ ওভার শেষ হওয়া মাত্র তাই দ্বিতীয় নতুন বল নিয়ে নিলেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান।
দিনের শুরুতে ম্যাচের প্রথম ওভার করেছিলেন যিনি, সেই তাইজুল শুরু করলেন দ্বিতীয় নতুন বলেও।
আসগরের ফিফটি
জোড়া আঘাতে টালমাটাল আফগানদের ভরসা হয়ে উইকেটে টিকে আছেন আসগর আফগান। অভিজ্ঞ ব্য্যাটসম্যান পৌঁছে গেছেন পঞ্চাশে।
আগের টেস্টে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ৬৭ রান করেছিলেন আসগর। এবার ফিফটি ছুঁলেন ৯৬ বলে।
নাঈমের জোড়া ছোবল
বড় জুটি ভাঙার পর সেই ওভারেই দলকে আরেকটি উইকেট এনে দিলেন নাঈম হাসান। রানের খাতা খুলতে পারলেন না মোহাম্মদ নবি।
একটি উইকেটের হাত ধরে এলো আরেকটি। একটু শর্ট অব লেংথের বলটি পেছনের পায়ে খেলতে চেয়েছিলেন নবি। কিন্তু বল পিচ করে আচমকাই গতি পেয়ে যায়। স্কিড করে ঢোকে ভেতরে। নবির ব্যাটকে ফাঁকি দিয়ে লাগে স্টাম্পে।
শূন্য রানে বিদায় নিলেন নবি। আফগানিস্তানের রান ৫ উইকেটে ১৯৭।
সেঞ্চুরি ও বিদায়
সেঞ্চুরি করার পরের বলেই আউট রহমত শাহ। বাংলাদেশকে কাঙ্ক্ষিত ব্রেক থ্রু এনে দিলেন নাঈম হাসান।
সেঞ্চুরির পর যেন মনোযোগ একটু নড়ে গিয়েছিল রহমতের। সারাদিনে যে ভুল করেননি, সেঞ্চুরির পরের বলেই করে বসলেন সেই ভুল। অফ স্টাম্পের বাইরের বলে জায়গায় দাঁড়িয়ে খেললেন আলসে এক শট। ব্যাটের কানায় লেগে বল গেল স্লিপে সৌম্য সরকারের হাতে।
১৮৭ বলে ১০২ রান করে ফিরলেন রহমত। ভাঙল ১২০ রানের চতুর্থ উইকেট জুটি।
আফগানিস্তানের রান ৪ উইকেটে ১৯৭।
ইতিহাসে রহমত
ঠিক আগের টেস্টেই ইতিহাস গড়ার খুব কাছে গিয়েছিলেন রহমত। কিন্তু আউট হয়ে গিয়েছিলেন ৯৮ রানে। এবার আর ব্যর্থ হলেন না। আফগানিস্তানকে উপহার দিলেন প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি।
৯৭ রান নিয়ে চা-বিরতিতে গিয়েছিলেন রহমত। বিরতির পর দ্বিতীয় ওভারেই নাঈম হাসানকে কাট করে বাউন্ডারি মেরে পৌঁছে যান সেঞ্চুরিতে।
১৮৬ বলে রহমত স্পর্শ করলেন সেঞ্চুরি। ১০ বাউন্ডারির পাশে ইনিংসে ছক্কা দুটি।
বিস্ময়করভাবে রহমতের উদযাপনে দেখা গেল না ততটা উচ্ছ্বাস।
নিজেদের তৃতীয় টেস্টে আফগানিস্তান পেল প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরিয়ান।
গোটা সেশনে নেই কোনো উইকেট। রহমত শাত ও আসগর আফগানের জুটিতে আফগানিস্তান এগিয়ে যাচ্ছে দারুণভাবে। বাংলাদেশ চা বিরতিতে গেছে হতাশাকে সঙ্গী করে।
চা বিরতির সময় আফগানিস্তানের রান ৩ উইকেটে ১৯১। দ্বিতীয় সেশনে ৩৫.২ ওভারে এসেছে ১১৪ রান।
রহমত ও আসগরের অবিচ্ছিন্ন জুটির রানও ১১৪। দুই ব্যাটসম্যানই অপেক্ষায় মাইলফলক ছোঁয়ার। ৯৭ রান নিয়ে বিরতিতে গেছেন রহমত, ৪৮ রান নিয়ে আসগর।
বাঁচলেন রহমত
জুটি ভাঙার দারুণ একটি সুযোগ পেয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু সরাসরি থ্রোয়ে বল স্টাম্পে লাগাতে পারলেন না সাকিব আল হাসান। বেঁচে গেলেন রহমত শাহ।
তাইজুলের বলটি কাভার-পয়েন্টের দিকে ঠেলেছিলেন আসগর আফগান। রহমত রান নিতে ছুটে গিয়েছিলেন মাঝ উইকেট পর্যন্ত। কিন্তু আসগর ছিলেন ঠায় দাঁড়িয়ে। পরে পড়িমরি করে ফিরতে চেষ্টা করেন রহমত। সরাসরি থ্রো স্টাম্পে লাগলে তবু হয়ে যেতেন রান আউট। কিন্তু পারলেন না সাকিব। ৯৪ রানে রক্ষা পেলেন রহমত।
রিভিউয়ে টিকলেন আসগর
জুটি ভেঙে বাংলাদেশকে স্বস্তির উপলক্ষ্য এনে দিয়েছিলেন মেহেদী হাসান মিরাজ। তবে দীর্ঘায়িত হলো না সেই স্বস্তি। রিভিউ নিয়ে টিকে গেলেন আসগর আফগান।
মিডল স্টাম্পে পিচ করা বলটি খানিকটা বেরিয়ে এসে খেলতে চেয়েছিলেন আসগর। ব্যাটে-বলে করতে পারেননি। বল লাগে পায়ে। জোরালো আবেদনে সাড়া দেন আম্পায়ার। কিন্তু আসগর রিভিউ নেন সঙ্গে সঙ্গেই। রিভিউতে দেখা যায়, বল টার্ন করে চলে যাচ্ছিল লেগ স্টাম্পের বাইরে।
আসগর তখন খেলছিলেন ৪২ রানে।
জুটির সেঞ্চুরি
বাংলাদেশের স্পিনারদের অনায়াসে সামলে দাপুটে এক জুটি গড়ে তুলেছেন রহমত শাহ ও আসগর আফগান। চতুর্থ উইকেটে দুজনের জুটি স্পর্শ করেছে শতরান।
১৭১ বলে এসেছে জুটির একশ। তাতে রহমতের অবদান ছিল ৫৯ রান, আসগরের ৪১।
টেস্ট ক্রিকেটে আফগানিস্তানের এটি তৃতীয় শতরানের জুটি। তিনটিতেই অংশীদারী থাকল রহমতের। আগের দুটি সেঞ্চুরি জুটিতে তার সঙ্গী ছিলেন ইহসানউল্লাহ ও হাশমতউল্লাহ শহিদি। দুটিই ছিল আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে দেরাদুন টেস্টে।
জুটির ফিফটি
রহমত শাহ ও আসগর আফগানের সৌজন্যে ইনিংসের প্রথম অর্ধশত রানের জুটির পেল আফগানিস্তান। চতুর্থ উইকেটে ৮৬ বলে হয়েছে এই দুই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যানের জুটির ফিফটি। জুটিতে ২৮ রান এসেছে আসগরের ব্যাট থেকে, রহমতের ব্যাট থেকে ২২।
রহমতের ফিফটি
আফগানিস্তানের আগের টেস্টে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে দেরাদুনে ৯৮ ও ৭৬ রানের দুটি ইনিংস খেলেছিলেন রহমত শাহ। সেই ধারাবাহিকতা ধরে রাখলেন চট্টগ্রামেও। টানা তৃতীয় ইনিংসে করলেন ফিফটি।
বাংলাদেশের স্পিন আক্রমণের সামনে শুরু থেকেই রহমত ছিলেন সাবলীল। খুব একটা ভুগতে হয়নি কোনো বোলারের সামনেই। ৮৫ বলে ছুঁয়েছেন ফিফটি। ইনিংসে তিনটি চারের পাশে ছক্কা ছিল দুটি।
ক্রিকেটাররা মাঠ ছাড়ার পরপরই কমতে থাকে বৃষ্টির তীব্রতা। থেমেও যায় দ্রুত। তাই খুব বেশিক্ষণ বন্ধ থাকল না খেলা। ২৫ মিনিট পরই খেলা শুরু আবার।
বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ
লাঞ্চের পর যখন খেলা শুরু হলো, আকাশে তখন মেঘের আনাগোণা। খানিকটা কালো হয়ে আসছিল চারপাশ। এক পর্যায়ে আকাশের কান্নাও শুরু হয়ে গেল। দুপুর ১টা ৫ মিনিটে মাঠ ছাড়লেন ক্রিকেটাররা। খেলা বন্ধ বৃষ্টিতে।
তবে বাতাসের তীব্রতা আছে বেশ। তাই মেঘ কেটে যাওয়ার আশা করা যায় দ্রুতই।
সুযোগ হাতছাড়া
লাঞ্চের পরপরই উইকেট নেওয়ার একটি সুযোগ পেয়েছিল বাংলাদেশ। তবে কঠিন ক্যাচটি নিতে পারেননি সাদমান ইসলাম।
মিরাজের বলে লেগ সাইডে খেলেছিলেন আসগর আফগান। বল বেশ দ্রুতগতিতে গিয়েছিল শর্ট লেগে। সাদমান চেষ্টা করেছিলেন, তবে রিফ্লেক্স ছিল একটু কম। বল সরাসরি লাগে তার পায়ে, পারেননি হাতে জমাতে।
আসগর জীবন পেলেন ৯ রানে।
প্রথম সেশন বাংলাদেশের
শেষ ওভারের আগেও হয়তো দুই দলই ছিল সমতায়। কিন্তু লাঞ্চের আগে শেষ ওভারে উইকেট নিয়ে প্রথম সেশনটি নিজেদের করে নিয়েছে বাংলাদেশ।
টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা দলের ৩ উইকেট নিতে পারা যথেষ্টই স্বস্তির।
ম্যাচের শুরু থেকেই বল টার্ন করেছে মোটামুটি। বাউন্সও ছিল খানিকটা অসমান। বাংলাদেশের বোলিং আক্রমণের পুরোটুকুই ছিল কেবল স্পিন। ৫ স্পিনার বোলিং করেছেন।
আফগানিস্তান লাঞ্চে গিয়েছে ৩ উইকেটে ৭৭ রান নিয়ে। তাইজুল নিয়েছেন ২ উইকেট, মাহমুদউল্লাহ একটি।
আফগানদের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান রহমত শাহ অবশ্য টিকে গেছেন। অপরাজিত আছেন তিনি ৩১ রানে।
একটু বৈচিত্রের জন্য লাঞ্চের আগে শেষ ওভারটিতে মাহমুদউল্লাহর হাতে বল তুলে দিলেন সাকিব আল হাসান। প্রথম ওভারেই এই অলরাউন্ডার দলকে এনে দিলেন উইকেট!
একটু রাউন্ড আর্ম ডেলিভারিটি ছিল স্টাম্পের বাইরে। হাসমতউল্লাহ শহিদি চাইলেন কাট করতে। কিন্তু বল তার প্রত্যাশার চেয়ে একটু দ্রুত চলে আসে ব্যাটে। কানায় লেগে স্লিপে যায় বেশ গতিময়তায়। সৌম্য নেন দারুণ রিফ্লেক্স ক্যাচ।
এমনিতে বেশ গোছানো ব্যাটসম্যান হলেও শহিদির শটটি ছিল বাজে। বাঁহাতি ব্যাটসম্যান আউট হলেন ১৪ রানে। এই আউটেই এলো লাঞ্চের ঘোষণা।
প্রথম সেশনে ৩২.৪ ওভারে আফগানদের রান ৩ উইকেটে ৭৭।
আবারও তাইজুল
আফগানিস্তানের ব্যাটসম্যানরা যখনই একটু চাপ সরানোর চেষ্টা করছিলেন, তাদেরকে আবার ধাক্কা দিলেন তাইজুল ইসলাম। বাঁহাতি স্পিনার বাংলাদেশকে এনে দিলেন আরেকটি উইকেট।
প্রথম ঘণ্টায় জড়সড় হয়ে থাকার পর দ্বিতীয় ঘণ্টায় বাংলাদেশের স্পিনারদের চাপ ফিরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছিলেন আফগান ব্যাটসম্যানরা। উইকেট ছেড়ে বেরিয়ে এসে দুটি বাউন্ডারি মারেন ইব্রাহিম জাদরান। সাকিবের শর্ট বল ছক্কায় ওড়ান রহমত শাহ।
সেই প্রচেষ্টাই শেষ পর্যন্ত কাল হলো। বেরিয়ে এসে শট খেলে বিদায় নিলেন ইব্রাহিম।
ঝুলিয়ে ডেলিভারি করেছিলেন তাইজুল। লং অফে ফিল্ডার থাকলেও ইব্রাহিম বেরিয়ে এসে উড়িয়ে মারেন। কিন্তু টার্ন করায় বল লাগেনি ব্যাটের ঠিক জায়গায়। লং অফে ক্যাচ নেন মাহমুদউল্লাহ।
ইব্রাহিমের অভিষেক ইনিংস শেষ হলো ৬৯ বলে ২১ রান করে। ২৫তম ওভারে আফগানিস্তানের রান ২ উইকেটে ৪৮।
প্রথম ঘণ্টা বাংলাদেশের
টস হেরে বোলিংয়ে নামা বাংলাদেশ বেশ নিয়ন্ত্রিত বোলিং করেছে ম্যাচের প্রথম ঘণ্টায়। বাংলাদেশের চার স্পিনার আটকে রেখেছেন আফগান ব্যাটসম্যানদের। প্রথম পানি পানের বিরতির সময় আফগানদের রান ১৬ ওভারে ১ উইকেটে ২৫।
বাংলাদেশের তৃতীয় বোলার হিসেবে টেস্টে ১০০ উইকেটের মাইলফলক ছুঁলেন তাইজুল। তবে আগের দুই জনের মাইলফলক ছুঁতে ম্যাচ লেগেছিল তাইজুলের বেশি। বাংলাদেশের হয়ে দ্রুততম ১০০ টেস্ট উইকেটের রেকর্ড এখন তাইজুলের। উইকেটের সেঞ্চুরি করা আগের দুজনও বাঁহাতি স্পিনার। বাংলাদেশের প্রথম বোলার হিসেবে এই মাইলফলক ছুঁয়েছিলেন মোহাম্মদ রফিক, ৩৩তম টেস্টে। যেটি ছিল তার শেষ টেস্টও। ক্যারিয়ার শেষ করেছেন ঠিক ১০০ উইকেটেই। সাকিব এই টেস্ট খেলতে নেমেছেন নামের পাশে ২০৫ উইকেট নিয়ে। ১০০ উইকেট হতে তার লেগেছিল ২৮ টেস্ট। তাইজুল মাইলফলক স্পর্শ করলেন ২৫ টেস্ট খেলেই।
সাবধানী শুরুর পর অবশেষে উইকেট হারাল আফগানিস্তান। বাংলাদেশকে প্রথম উইকেট এনে দিলেন তাইজুল ইসলাম। যেটি তার শততম টেস্ট উইকেট।
প্রথম ওভার থেকে এক প্রান্তে টানা বোলিং করে চলেছেন তাইজুল। দলকে প্রথম উইকেট এনে দিলেন তিনি বাঁহাতি স্পিনের ক্ল্যাসিক এক ডেলিভারিতে। বলে ড্রিফট ছিল দারুণ। ব্যাটসম্যানকে সামনে টেনে এনে হালকা গ্রিপ করে টার্ন করে ব্যাটকে ফাঁকি দিয়ে ছোবল দেয় স্টাম্পে। ইহসানউল্লাহ পেছনে তাকিয়ে দেখেন, উড়ছে বেলস।
৩৬ বলে ৯ রান করে বিদায় নিলেন ইহসানউল্লাহ। আফগানিস্তান ১ উইকেটে ১৯।
সতর্কতায় শুরু আফগানদের
বাংলাদেশের স্পিন আক্রমণের বিপক্ষে সাবধানী ব্যাটিংয়ে শুরু করেছে বাংলাদেশ। দুই ওপেনার ইহসানউল্লাহ ও অভিষিক্ত ইব্রাহিম জাদরান ঠাণ্ডা মাথায় ব্যাট করে নিরাপদে কাটিয়ে দিয়েছেন প্রথম ১০ ওভার। ম্যাচের প্রথম বাউন্ডারি এসেছে দশম ওভারে, ইব্রাহিমের ব্যাট থেকে।
১০ ওভার শেষে আফগানদের রান বিনা উইকেটে ১৫।
একগাদা স্পিনার নিয়ে নামা বাংলাদেশ স্পিনের বৈচিত্রময় ব্যবহার শুরু করেছে ম্যাচ শুরুর দিকেই। টেস্টে সাধারণত বোলারদের লম্বা স্পেল দেওয়া হয়। কিন্তু এবার ইনিংসের প্রথম চার ওভারেই বাংলাদেশ অধিনায়ক ব্যবহার করলেন তিন জনকে!
বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল ইসলামকে দিয়ে ম্যাচের শুরু। দ্বিতীয় ওভারে আসেন অধিনায়ক সাকিব নিজে। তৃতীয় ওভারে আবার তাইজুল। চতুর্থ ওভারে অফ স্পিনার মেহেদী হাসান মিরাজ।
উইকেটে চিড়
জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামের উইকেটে ঘাসের ছোঁয়া আছে সামান্য। তবে সবই মরা ঘাস। তাই খুব একটা প্রভাব ফেলবে না তা। দুই দলের একাদশে একগাদা স্পিনার রাখার কারণও বোঝা যায় উইকেটে তাকিয়ে। ম্যাচ শুরুর আগেই উইকেটে দেখা গেছে খানিকটা চিড়।
রেকর্ড বইয়ে রশিদ
টেস্ট অধিনায়কত্বের অভিষেকেই রেকর্ড বইয়ে জায়গা করে নিলেন রশিদ খান। টেস্ট ইতিহাসের সর্বকনিষ্ঠ অধিনায়ক এখন এই আফগান লেগ স্পিনার।
চট্টগ্রাম টেস্টে যখন টস করতে নামলেন, রশিদ খানের বয়স ২০ বছর ৩৫০ দিন। টেস্টে সবচেয়ে কম বয়সে নেতৃত্ব দেওয়ার আগের রেকর্ড ছিল জিম্বাবুয়ের টাটেন্ডা টাইবুর। ২০০৪ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হারারে টেস্টে দলকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন এই কিপার ব্যাটসম্যান ২০ বছর ৩৫৮ দিন বয়সে।
গত বছর ভারপ্রাপ্ত দায়িত্বে ওয়ানডেতে নেতৃত্ব দেওয়ার সময় ওয়ানডেতে সবচেয়ে কম বয়সী টেস্ট অধিনায়কের রেকর্ড গড়েছিলেন রশিদ।
চার স্পিনারের আফগানিস্তান
বাংলাদেশের মতো একেবারেই পেসবিহীন দল সাজায়নি আফগানিস্তান। তাদের একাদশে স্পেশালিস্ট পেসার আছেন ইয়ামিন আহমাদজাই। একাদশে চার জন স্পেশালিস্ট স্পিনার আছে তাদেরও। অধিনায়ক রশিদ খান, অভিজ্ঞ মোহাম্মদ নবির সঙ্গে আছেন চায়নাম্যান জহির খান ও লেগ স্পিনার কাইস আহমেদ।
জহিরের এটি অভিষেক টেস্ট, কাইসের অভিষেক হচ্ছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেই। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রথম ম্যাচ খেলতে নামছেন ওপেনার ইব্রাহিম জাদরানও।
আফগানিস্তান একাদশ: ইব্রাহিম জাদরান, ইহসানউল্লাহ, রহমত শাহ, হাশমতউল্লাহ শহিদি, আসগর আফগান, মোহাম্মদ নবি, আফসার জাজাই, রশিদ খান (অধিনায়ক), ইয়ামিন আহমাদজাই, কাইস আহমেদ, জহির খান। |
পেসার ছাড়া বাংলাদেশ
গত কিছুদিনে বিসিবি কর্তাদের নানা কথায় ইঙ্গিত মিলেছিল, আফগানিস্তানের বিপক্ষে হয়তো স্পিন বান্ধব উইকেটের কৌশল নেবে না বাংলাদেশ। কিন্তু বাস্তবে সেটির প্রতিফলন পড়ল না। বাংলাদেশ একাদশই বলে দিচ্ছে উইকেটের অবস্থা। একাদশে নেই কোনো স্পেশালিস্ট পেসার। কাজ চালানোর পেসার আছেন কেবল সৌম্য সরকার।
সাকিব আল হাসানসহ একাদশে স্পেশালিস্ট স্পিনার চারজন। পাশাপাশি স্পিন করার মতো আছেন মাহমুদউল্লাহ , মোসাদ্দেক হোসেন ও মুমিনুল হক। দেশের মাটিতে বাংলাদেশের সবশেষ টেস্টেও গত নভেম্বরে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে স্পেশালিস্ট পেসার ছাড়া খেলেছিল বাংলাদেশ।
বাংলাদেশ একাদশ: সাদমান ইসলাম, লিটন দাস, মুমিনুল হক, মুশফিকুর রহিম, সাকিব আল হাসান (অধিনায়ক), মাহমুদউল্লাহ, সৌম্য সরকার, মোসাদ্দেক হোসেন, মেহেদী হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলাম, নাঈম হাসান। |
টেস্ট অধিনায়কত্বের অভিষেকেই টস ভাগ্যকে পাশে পেলেন রশিদ খান। টস জিতে আফগান অধিনায়ক বোলিংয়ে পাঠিয়েছেন বাংলোদেশকে।
আফগানদের সমীহ আছে, ভয় নেই
টেস্টে দেড় যুগের বেশি সময় কাটানো বাংলাদেশের প্রতি যথেষ্টই সমীহ দেখাচ্ছে আফগানরা। তবে ভারপ্রাপ্ত কোচ অ্যান্ডি মোলস জানিয়েছেন, তাদের ভয়ডরহীন চরিত্রের প্রমাণ রাখতে চান তারা এই ম্যাচেও। তাই বাংলাদেশের প্রতি সমীহ থাকলেও ভয় নেই তাদের। অধিনায়ক রশিদ খানের কণ্ঠেও ছিল একই কথার প্রতিধ্বনি।
জিততে মরিয়া বাংলাদেশ
বিশ্বকাপে ব্যর্থতার পর দুঃস্বপ্নের মতো কেটেছে বাংলাদেশ দলের শ্রীলঙ্কা সফর। একই সময়ে ‘এ’ দল, হাই পারফরম্যান্স দল, বিসিবি একাদশের পারফরম্যান্সও ছিল হতাশাজনক। সেই হতাশার প্রহর কাটিয়ে উঠতে চায় বাংলাদেশ। টেস্ট শুরুর আগের দিন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান বলেছেন, দেশের ক্রিকেটের সামগ্রিক দুঃসময় কাটিয়ে উঠতে আফগানিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট জয় খুব করে চায় তার দল।
অধিনায়কের বিশ্বাস, এই ম্যাচ জিতলে আবার সবকিছু স্বাভাবিক হতে শুরু করবে।
সাদা পোশাকে প্রথম লড়াই
৯ মাস পর আবার দেশের মাটিতে টেস্ট ম্যাচ। আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজের একমাত্র টেস্ট দিয়ে শুরু হচ্ছে বাংলাদেশ ক্রিকেটের নতুন মৌসুম।
সীমিত ওভারের ক্রিকেটে পরিচিত প্রতিপক্ষ বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান। ওয়ানডেতে এখন পর্যন্ত ৮ বার পরস্পরের মুখোমুখি হয়েছে এই দুই দল। টি-টোয়েন্টিতে দুই দলের ম্যাচ হয়েছে ৪টি। তবে টেস্টে দু দলের এটি প্রথম লড়াই।
আফগানিস্তানের এটি তৃতীয় টেস্ট। আগের দুটি টেস্ট খেলেছে তারা ভারত ও আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে। বাংলাদেশের ১১৫তম টেস্ট।
-
স্পিনারের ‘ক্রাইসিস’, মিরপুরে মোসাদ্দেকের অফ স্পিনেই ভরসা
-
হজে যাওয়ার জন্য উইন্ডিজ সফরে থাকছেন না মুশফিক
-
মেয়েদের ডিপিএলের ৩ ম্যাচই পরিত্যক্ত
-
ওভারে ৬ বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ১৯ বলে ফিফটি মইনের
-
২০২৩ আইপিএলেও চেন্নাইয়ের ‘অধিনায়ক’ ধোনি
-
নাঈমের বিকল্প ভাবনায় কয়েকজন
-
১১ বছর পর ইংলিশ ক্রিকেটে পোলার্ড
-
এশিয়া কাপ ও বিশ্বকাপ জয়ের জন্য সব করতে প্রস্তুত কোহলি
সর্বাধিক পঠিত
- স্বর্ণ উদ্ধার করে মাদকের মামলা: চাকরি গেল এসপি আলতাফের
- ফাইনালের আগে আবারও রিয়ালের হোঁচট
- কানের গালিচায় নগ্ন হয়ে প্রতিবাদ
- নাঈমের বিকল্প ভাবনায় কয়েকজন
- মাঙ্কিপক্স নিয়ে জরুরি বৈঠকে বসছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা
- ওভারে ৬ বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ১৯ বলে ফিফটি মইনের
- চ্যাম্পিয়ন্স লিগের চেয়েও তৃপ্তিদায়ক ইপিএলের শিরোপা!
- বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে ভ্যানে, প্রাণ গেল ২ জনের
- ‘গণকমিশনের' নামে বিশৃঙ্খলা করলে ব্যবস্থা: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
- অবশিষ্ট যোদ্ধাদের আত্মসমর্পণ, শেষ হল ইস্পাত কারখানার অবরোধ