দুর্দান্ত বোলিংয়ে নিউ জিল্যান্ডের রেকর্ড গড়া জয়

ম্যাচের প্রথম তিন দিনের অনেকটাই খেয়ে নিয়েছিল বৃষ্টি। শেষ দিনের খেলা যখন শুরু হলো, তখনও শেষ হয়নি দুই দলের একটি করে ইনিংসও। এই ম্যাচে ফল সম্ভব? নিউ জিল্যান্ড দেখাল, খুবই সম্ভব। দুর্দান্ত ব্যাটিংকে অনুসরণ করে শেষ দিনে কিউইদের বোলিং হলো অসাধারণ। ধসে পড়ল লঙ্কান ব্যাটিং। রেকর্ড গড়া জয়ে সিরিজ ড্র করল নিউ জিল্যান্ড।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 August 2019, 12:45 PM
Updated : 26 August 2019, 12:45 PM

বৃষ্টি বিঘ্নিত পি সারা ওভাল টেস্টে শ্রীলঙ্কাকে ইনিংস ও ৬৫ রানে হারিয়েছে নিউ জিল্যান্ড। পিছিয়ে পড়েও ড্র করেছে দুই ম্যাচের সিরিজ।

আগের দিন টম ল্যাথামের সেঞ্চুরির পর শেষ দিনে তিন অঙ্কের স্বাদ পেয়েছেন বিজে ওয়াটলিং। ১৮৭ রানের লিড নিয়ে প্রথম ইনিংস ঘোষণা করে নিউ জিল্যান্ড। লঙ্কানরা দ্বিতীয় ইনিংসে গুটিয়ে যায় ১২২ রানেই।

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এটি নিউ জিল্যান্ডের সবচেয়ে বড় ব্যবধানের জয়। ইনিংস ও ৬১ রানে জয়ের আগের রেকর্ডটি ছিল ১৯৮৪ সালে, কলম্বোতেই।

এই জয় দিয়ে আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে নিজেদের হিসাব খুলল নিউ জিল্যান্ড। সিরিজে একটি করে জয়ে দুই দলই পেয়েছে ৬০ পয়েন্ট করে।

৫ উইকেটে ৩৮২ রান নিয়ে শেষ দিন শুরু করেছিল নিউ জিল্যান্ড। ব্যাটিংয়ে ঝড় তুলে তারা জানিয়ে দেয় দ্রুত ইনিংস ঘোষণার বার্তা।

৫টি করে চার ও ছক্কায় আগের দিনের ৮৩ রানেই বিদায় নেন কলিন ডি গ্র্যান্ডহোম। তবে ৮১ রানে শুরু করা ওয়াটলিং পৌঁছে যান সেঞ্চুরিতে। সপ্তম টেস্ট সেঞ্চুরিতে অপরাজিত থাকেন ১০৫ রানে।

তিন বছরেরও বেশি সময় পর টেস্ট সেঞ্চুরির দেখা পেলেন এই কিপার ব্যাটসম্যান। মাঝের সময়টায় চোট ও ফর্ম মিলিয়ে দলে আসা যাওয়া করতে হয়েছে কয়েকবার। ৩৩ ইনিংস পর আবার ছুঁলেন তিন অঙ্ক।

আরেকপাশে টিম সাউদি খেলেন দারুণ এক ক্যামিও। দুটি করে চার ও ছক্কায় ১০ বলে করেন অপরাজিত ২৪। সকালে ৫ ওভারে ৪৯ রান তুলে ইনিংস ঘোষণা করে নিউ জিল্যান্ড।

শ্রীলঙ্কা বড় ধাক্কা খায় ব্যাটিংয়ে নামার আগেই। চোটের কারণে ফিল্ডিংয়ের সময় মাঠের বাইরে থাকায় ইনিংস উদ্বোধন করতে পারেননি অধিনায়ক দিমুথ করুনারত্নে। তাকে নামতে হয়েছে সাতে।

মাঠে নেমেও তারা বিপদে পড়ে যায় দ্রুতই। অভিজ্ঞ লাহিরু থিরিমান্নে রান আউট হয়ে যান প্রথম ওভারেই। করুনারত্নে না থাকায় ওপেনিংয়ে উঠে আসা কুসল পেরেরাও শূন্য রানে বিদায় নেন বাজে শটে।

উইকেট পতনের ধারা চলতে থাকে। অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস ও প্রথম ইনিংসের সেঞ্চুরিয়ান ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা বিদায় নেন দ্রুত। অফ স্পিনার উইলিয়াম সমারভিলের দারুণ এক ডেলিভারিতে যখন বোল্ড হন কুসল মেন্ডিস, ৩২ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে তখন কাঁপছে শ্রীলঙ্কা।

কিপার ব্যাটসম্যান নিরোশান ডিকভেলা ও সাতে নামা করুনারত্নে প্রতিরোধ গড়েন লাঞ্চের পর। উইকেটে কাটিয়ে দেন ২০ ওভারে বেশি। তবে হুমকি হয়ে ওঠার আগেই এই জুটি ভাঙে কিউইরা। ২১ রানে করুনারত্নেকে ফেরান টিম সাউদি।

শেষ দিনের উইকেটে দুর্দান্ত বোলিং করেছেন দুই পেসার সাউদি ও ট্রেন্ট বোল্ট। দুই স্পিনার এজাজ প্যাটেল ও উইলিয়াম সমারভিল ধরে রাখেন চাপ। ভেঙে পড়ে লঙ্কান ব্যাটিং। ডিকভেলা চেষ্টা করেছেন লড়াইয়ের। তার সাড়ে তিন ঘণ্টার লড়াই শেষ হয়েছে ৫১ রানে আউট হয়ে।

চা বিরতির পর ঘন কালো মেঘে ঢাকা আকাশ ইঙ্গিত দিচ্ছিল আবারও বৃষ্টির। তবে তার আগেই নিজেদের কাজ সেরে ফেলে নিউ জিল্যান্ড।

১৫৪ রানের ইনিংসের জন্য ম্যাচের সেরা টম ল্যাথাম। প্রথম টেস্টে ৭৭ রানের ইনিংসের পর এই টেস্টের সেঞ্চুরিতে সিরিজ সেরা ওয়াটলিং।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

শ্রীলঙ্কা ১ম ইনিংস: ২৪৪

নিউ জিল্যান্ড ১ম ইনিংস: (আগের দিন ৩৮২/৫) ১১৫ ওভারে ৪৩১/৬ (ডি.) (ওয়াটলিং ১০৫*, ডি গ্র্যান্ডহোম ৮৩, সাউদি ২৪*; দিলরুয়ান ৩৭-৪-১১৪-৩, ধনাঞ্জয়া ৫-১-১০-০, লাকমল ১১-২-৩২-০, কুমারা ২৫-০-১১৫-১, এম্বুলদেনিয়া ৩৭-৪-১৫৬-২)।

শ্রীলঙ্কা ২য় ইনিংস: ৭০.২ ওভারে ১২২ (থিরিমান্নে ০, কুসল পেরেরা ০, কুসল মেন্ডিস ২০, ম্যাথিউস ৭, ধনাঞ্জয়া ১, ডিকভেলা ৫১, করুনারত্নে ২১, দিলরুয়ান ০, লাকমল ১৪, এম্বুলদেনিয়া ৫, কুমারা ০*; বোল্ট ১৪.২-৮-১৭-২, সাউদি ১২-৬-১৫-২, এজাজ ১৯-৩-৩১-২, ডি গ্র্যান্ডহোম ৪-১-৮-১, সমারভিল ২১-৬-৪৯-১)।

ফল: নিউ জিল্যান্ড ইনিংস ও ৬৫ রানে জয়ী

সিরিজ: ২ ম্যাচ সিরিজ ১-১ ড্র

ম্যান অব দা ম্যাচ: টম ল্যাথাম

ম্যান অব দা সিরিজ: বিজে ওয়াটলিং