রুট-ডেনলির ব্যাটে ম্যাচ জমিয়ে তুলেছে ইংল্যান্ড

রান প্রয়োজন ছিল দুজনেরই। প্রেক্ষাপট যদিও খানিকটা ভিন্ন। একজন দলের অধিনায়ক, মনে করা হয় সেরা ব্যাটসম্যানও। কিন্তু পারছিলেন না সামনে থেকে নেতৃত্ব দিতে। আরেকজনের দলে জায়গা টিকিয়ে রাখার শেষ সুযোগ ছিল হয়তো এটিই। জো রুট ও জো ডেনলি, হতাশার সিরিজে অবশেষে হাসল দুজনের ব্যাট। ডেনলি অবশ্য ফিরে গেছেন ফিফটি করে। তবে টিকে আছেন রুট। তাই টিকে আশা ইংল্যান্ডের আশাও।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 August 2019, 07:06 PM
Updated : 24 August 2019, 07:06 PM

প্রথম দুই দিনে উইকেট পতনের স্রোত শেষে তৃতীয় দিনে জমে উঠেছে অ্যাশেজের হেডিংলি টেস্ট। প্রথম ইনিংসে ৬৭ রানে গুটিয়ে যাওয়া ইংল্যান্ড দারুণ প্রতিরোধ গড়েছে দ্বিতীয় ইনিংসে। রেকর্ড গড়ে প্রায় অবিশ্বাস্য এক জয়ের খানিকটা আশাও তারা জাগাতে পেরেছে। সম্ভাবনায় যদিও এগিয়ে অস্ট্রেলিয়াই।

হেডিংলি টেস্ট জিততে ইংল্যান্ডের চাই ২০৩ রান, অস্ট্রেলিয়ার প্রয়োজন ৭ উইকেট। শেষ ইনিংসে জয়ের জন্য ৩৫৯ রান তাড়া করতে নেমে ইংল্যান্ড শনিবার তৃতীয় দিন শেষ করেছে ৩ উইকেটে ১৫৬ রানে।

জিতলে রান তাড়ার নতুন রেকর্ড গড়বে রুটের ইংল্যান্ড। সেই ১৯২৮ সালে ৩৩২ রান তাড়ায় জয়ই তাদের সর্বোচ্চ রান তাড়ার রেকর্ড। ইতিহাস গড়ার আশা জিইয়ে আছে তাদের অধিনায়কের ব্যাটে। ৭৫ রানে অপরাজিত থেকে দিন শেষ করেছেন রুট।

অস্ট্রেলিয়ার দ্বিতীয় ইনিংস দিয়ে শুরু হয়েছিল তৃতীয় দিন। ৬ উইকেট ১৭১ রানে দিন শুরু করা দলকে আরও কিছু দূর এগিয়ে নেয় মার্নাস লাবুশেন ও জেমস প্যাটিনসনের জুটি। সপ্তম উইকেটে দুজনে যোগ করেন ৫১ রান।

প্যাটিনসনকে ২০ রানে ফিরিয়ে এই জুটি ভাঙেন জফরা আর্চার। এরপর আর খুব বেশি দূর যেতে পারেনি অস্ট্রেলিয়া। অসাধারণ ইনিংস খেলে লাবুশেন রান আউট হয়ে যান ৮০ রানে। ৩১ রানের মধ্যে শেষ ৪ উইকেট হারায় অস্ট্রেলিয়া।

রান তাড়ায় ইংল্যান্ডের শুরুটা মনে করিয়ে দিয়েছিল তাদের প্রথম ইনিংসের দুঃস্বপ্নকে। ১৫ রানের মধ্যেই হারায় তারা দুই ওপেনারকে। ররি বার্নসকে ফেরান জশ হেইজেলউড। দুর্দান্ত ডেলিভারিতে জেসন রয়ের বেলস উড়িয়ে দেন প্যাট কামিন্স।

সেখান থেকেই ইংল্যান্ডকে টেনে নিয়েছেন রুট ও ডেনলি। উড়তে থাকা অস্ট্রেলিয়ার আশা ধীরে ধীরে স্তিমিত হতে থাকে এই দুজনের দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ব্যাটে।

ডেনলি শুরুতে একটু নড়বড়ে ছিলেন। সময়ের সঙ্গে খুঁজে পান আত্মবিশ্বাস। রুট থিতু হওয়ার পর ফেরেন নিজের সেরা চেহারায়। বলের পর বল ছেড়েছেন দুজন, ঝুঁকি নেননি বিন্দুমাত্র। তৃতীয় উইকেটে ৫৩ ওভার উইকেটে কাটিয়ে দেন দুজন।

ডেনলিকে কাবু করতে স্রোতের মতো শর্ট বল করেছে অস্ট্রেলিয়ানরা। শরীরে লাগিয়ে, কোনো রকমে ছেড়ে দিয়ে উইকেটে পড়ে থেকেছেন ডেনলি। কিন্তু ১৫৫ বলে ৫০ রানের ইনিংসটি শেষ হয়েছে শর্ট বলেই। ১২৬ রানের জুটি ভেঙে অস্ট্রেলিয়ানদের স্বস্তি কিছুটা ফিরিয়েছেন হেইজেলউড।

১৮৯ বলে ৭৫ রানে দিন শেষ করেছেন রুট। প্রতিজ্ঞার ছাপ দেখা গেছে বেন স্টোকসের ব্যাটেও। ৫০ বলে ২ রান করে তিনি কাটিয়ে দিয়েছেন বিকেলটুকু। চতুর্থ দিনের জন্য তাই জমে উঠেছে রোমাঞ্চের রসদ।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

অস্ট্রেলিয়া ১ম ইনিংস: ১৭৯

ইংল্যান্ড ১ম ইনিংস: ৬৭

অস্ট্রেলিয়া ২য় ইনিংস: ৭৫.২ ওভারে ২৪৬ (আগের দিন ১৭১/৬)(লাবুশেন ৮০, প্যাটিনসন ২০, কামিন্স ৬, লায়ন ৯, হেইজেলউড ৪*; আর্চার ১৪-২-৪০-২, ব্রড ১৬-২-৫২-২, ওকস ১০-১-৩৪-১, লিচ ১১-০-৪৬-১, স্টোকস ২৪.২-৭-৫৬-৩)।

ইংল্যান্ড ২য় ইনিংস:(লক্ষ্য ৩৫৯) ৭২ ওভারে ১৫৬/৩ (বার্নস ৭, রয় ৮, রুট ৭৫*, ডেনলি ৫০, স্টোকস ২*; কামিন্স ১৫-৩-৩৩-১, হেইজেলউড ১৮-৬-৩৫-২, লায়ন ২১-৩-৪২-০, প্যাটিনসন ১৩-৩-২৩-০, লাবুশেন ৫-০-১৩-০)।