ডমিঙ্গো-হেসনের মধ্যে পার্থক্য গড়েছে ‘প্যাশন’

বিসিবির আগ্রহ বেশি ছিল মাইক হেসনকে নিয়ে। কিন্তু হেসনের মাঝে বাংলাদেশ ক্রিকেটের প্রতি ততটা আগ্রহ খুঁজে পায়নি বিসিবি। রাসেল ডমিঙ্গো ছিলেন উল্টো। সুনির্দিষ্ট ভবিষৎ পরিকল্পনা, সাফল্যের সম্ভাব্য ছবি আঁকা, ধাপে ধাপে এগিয়ে চলা, সব কিছু মিলিয়ে তার উপস্থাপনায় মুগ্ধ হয়েছিল বিসিবি। তার ভাবনায় ফুটে উঠেছিল ‘প্যাশন’। দায়িত্ব পাওয়ার পথে সেখানেই এগিয়ে গেছেন ডমিঙ্গো।

আরিফুল ইসলাম রনিআরিফুল ইসলাম রনিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 17 August 2019, 01:51 PM
Updated : 17 August 2019, 01:51 PM

বিসিবির নানাসূত্র থেকে যা জানা যাচ্ছে, বাংলাদেশের কোচ হওয়ার লড়াইয়ে ছিল মিকি আর্থারের নামও। তবে ডমিঙ্গো আর হেসনই ছিলেন সম্ভাবনায় এগিয়ে। শেষ পর্যন্ত এই দুজনের লড়াইও খুব একটা জমেনি। অনেকটা এগিয়ে থেকেই দায়িত্ব পেয়েছেন ডমিঙ্গো।

কোচ হিসেবে নামে-ভারে হেসন এগিয়ে অনেকটাই। আধুনিক ক্রিকেটের অন্যতম সেরা কোচদের একজন মনে করা হয় তাকে। তার কোচিং দর্শন ও ব্যক্তিত্ব প্রশংসিত প্রবলভাবে। এরপরও কিভাবে দায়িত্ব পেলেন ডমিঙ্গো?

যে সভায় ডমিঙ্গো তার উপস্থাপনা দেখিয়েছেন, সেই সভায় উপস্থিত ছিলেন বিসিবির মিডিয়া কমিটির প্রধান জালাল ইউনুস। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে এই বিসিবি পরিচালক জানালেন ডমিঙ্গোর কোন ব্যাপারটিকে তারা বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন।

“ডমিঙ্গোর যেটি সবচেয়ে বেশি আমাদের মনে ধরেছে, সেটি হলো তাকে এখনই পাওয়া যাবে এবং লম্বা সময়ের জন্য পাওয়া যাবে। সব সময়ের জন্য পাওয়া যাবে তাকে। অন্য প্রার্থীদের ক্ষেত্রে সেটির নিশ্চয়তা ছিল না। এছাড়া, ডমিঙ্গোর পরিকল্পনা, বাংলাদেশ ক্রিকেটকে এগিয়ে নেওয়ার পথে তার ভাবনা, সবই আমাদের ভালো লেগেছে।”

“বাংলাদেশের সম্ভাব্য সব ক্রিকেটারের এখনকার অবস্থা, বছর ধরে এগিয়ে সামনে কে কোন অবস্থায় থাকতে পারে, কে কোথায় ভালো করতে পারে, সবকিছু প্রেজেন্টেশনে দেখিয়েছে সে। কিভাবে কার উন্নতি করানো যায়, দল হিসেবে এগিয়ে যাওয়া যায়, সেটিরও ধারণা দিয়েছে সে।”

দেশের মাটিতে গত কয়েক বছরে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স বেশ ধারাবাহিক হলেও দেশের বাইরে এখনও ভীষণ রকম বিবর্ণ। ডমিঙ্গো জোর দিতে চান এখানে। জালাল ইউনুস জানালেন, নতুন কোচের সেই পরিকল্পনাও তাদের ভালো লেগেছে।

হেসন পেছনে পড়ে গেছেন এখানেই। আনুষ্ঠানিকভাবে তার নাম নেননি বিসিবির কেউ। তবে বোর্ডের নানা সূত্র থেকে যা জানা যাচ্ছে, হেসন কোচ হওয়ার আবেদন করলেও খুব একটা আগ্রহ দেখাননি বাংলাদেশের দায়িত্বে। তার মাঝে ডমিঙ্গোর মতো ‘প্যাশন’ দেখতে পায়নি বিসিবি। সাক্ষাৎকার দিতে তিনি বাংলাদেশে আসেননি, কোনো উপস্থাপনা দেখাননি। বিসিবির সঙ্গে আলোচনায়ও খুব আন্তরিক নাকি তাকে মনে হয়নি।

কখনও তিনি বলেছেন ৩ মাস পরে দায়িত্ব নিতে চান, কখনও ৬ মাস পরে। কখনও আবার সুনির্দিষ্ট কিছু বলেননি। হেসনের মূল আগ্রহ ছিল ভারতের কোচের দায়িত্ব নিয়ে। বিসিবিও ছিল অপেক্ষায়। কিন্তু ভারতের দায়িত্ব না পাওয়ার পরও হেসনের কাছ থেকে উল্লেখযোগ্য সাড়া পায়নি বিসিবি। তার জন্য অপেক্ষার অনিশ্চয়তায় তাই থাকতে চায়নি বিসিবি।

উপমহাদেশের কোনো দলে কোনো পর্যায়েই কাজ করেননি ডমিঙ্গো, এটি তার একটি বড় বাধা ছিল। তবে জালাল ইউনুস জানালেন, সেটির ব্যাখ্যাও তারা পেয়েছেন ডমিঙ্গোর কাছ থেকে।

“ডমিঙ্গো আমাদের বলেছে যে সে ৬-৭ বার দল নিয়ে বাংলাদেশে এসেছে। ২০০৪ সালে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ থেকে শুরু করে ‘এ’ দল, জাতীয় দলের সঙ্গে বারবার এসেছে। এখানকার মাঠ, পরিবেশ সব তার চেনা। আমাদের ক্রিকেটারদেরও খুব ভালোভাবে জানে। এখানে তার সমস্যা হওয়ার কথা নয়।”

জাতীয় দলের পাশাপাশি ‘এ’ দল, হাই পারফরম্যান্স দল নিয়ে কাজ করে ভবিষ্যতের ক্রিকেটার তৈরিতে অবদান রাখতে চান ডমিঙ্গো। যেটি তিনি বলেছেন নিজ থেকেই। এটিও পক্ষে গেছে তার। জালাল ইউনুস জানালেন, সবকিছু মিলিয়েই বিসিবি বেছে নিয়েছে ডমিঙ্গোকে।