স্মিথের কীর্তির দিনে ওয়েডেরও সেঞ্চুরি

প্রথম ইনিংসের সেঞ্চুরিতে ছিল ফেরার ঘোষণা। দ্বিতীয় ইনিংসের সেঞ্চুরি যেন জানিয়ে দিল, হারানো সময়টায় হারায়নি কিছুই। প্রত্যাবর্তনের টেস্ট থেকেই আবার ছুটল স্টিভেন স্মিথের রান রথ। নাম লেখালেন রেকর্ড বইয়ে। ম্যাথু ওয়েডেরও এটি ফেরার টেস্ট। ক্যারিয়ারে প্রথমবার টেস্ট খেলছেন বিশেষজ্ঞ ব্যাটসম্যান হিসেবে। নিজের নতুন শুরু তিনিও রাঙালেন সেঞ্চুরিতে।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 4 August 2019, 05:48 PM
Updated : 4 August 2019, 05:48 PM

অ্যাশেজের এজবাস্টন টেস্টে প্রথম ইনিংসে পিছিয়ে থাকা অস্ট্রেলিয়া দ্বিতীয় ইনিংসে বড় লিড নিয়েছে স্মিথ-ওয়েডের সেঞ্চুরিতে। দ্বিতীয় ইনিংস ঘোষণা করেছে ৭ উইকেটে ৪৮৭ রানে।

প্রথম ইনিংসে ১৪৪ রানের পর স্মিথ দ্বিতীয় ইনিংসে করেছেন ১৪২। মাত্র পঞ্চম অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটসম্যান হিসেবে করলেন অ্যাশেজে এক টেস্টে জোড়া সেঞ্চুরি। টেস্ট ইতিহাসের দ্বিতীয় দ্রুততম ব্যাটসম্যান হিসেবে করলেন ২৫ সেঞ্চুরি। তৃতীয় টেস্ট সেঞ্চুরিতে ওয়েড করেছেন ১১০ রান।

প্রথম ইনিংসে ৯০ রানে এগিয়ে থাকা ইংলিশদের জয়ের লক্ষ্য ৩৯৮। রোববার চতুর্থ দিন বিকেলের ৭ ওভার তারা কাটিয়ে দেয় নিরাপদে।

স্মিথ দিন শুরু করেছিলেন ৪৬ রান নিয়ে। আগের দিনই প্রতিরোধ গড়া জুটিতে তার সঙ্গী ছিলেন ট্রাভিস হেড। দুজনের জুটি এ দিন দলকে এগিয়ে নেয় আরও অনেকটা পথ। অস্ট্রেলিয়া পায় ম্যাচে প্রথম সেঞ্চুরি জুটি।

লাঞ্চের একটু আগে হেডকে ফিরিয়ে ১৩০ রানের চতুর্থ উইকেট জুটি ভাঙেন বেন স্টোকস। ৫১ রান করে স্লোয়ারে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন হেড।

একটি শতরানের জুটির শেষে ছিল আরেকটির সূচনা। স্মিথের সঙ্গী এবার ওয়েড। ১২৬ রানে এই জুটিই মূলত শেষ করে দেয় ইংলিশদের ম্যাচে ফেরার সম্ভাবনা।

ক্যারিয়ারের প্রথম ২২ টেস্ট কিপার ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলেছেন ওয়েড। ২০১৭ সালের অগাস্ট-সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশ সফরে ব্যাট হাতে বাজে পারফরম্যান্সের পর জায়গা হারান দলে। এরপর ঘরোয়া ক্রিকেট ও ‘এ’ দলে রানের জোয়ার বইয়ে দিয়ে ফিরেছেন এই সিরিজে। এই টেস্টে একাদশে জায়গা পেয়েছেন ব্যাটসম্যান হিসেবে।

প্রথম ইনিংসের ব্যর্থতার পর ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলার যৌক্তিকতা প্রমাণ করার ছিল। সেটি দারুণভাবে করলেন দ্বিতীয় ইনিংসে। নিজের ব্যাটিংয়ে উন্নতির প্রমাণও মেলে ধরলেন দুর্দান্ত প্রদর্শনীতে।

স্মিথকে তো থামানোর কোনো পথই পাচ্ছিলেন না ইংলিশ বোলাররা। ম্যাচে দ্বিতীয় সেঞ্চুরি স্পর্শ করেন ১৪৭ বলে।

সেঞ্চুরির পরও স্বস্তি দেননি ইংলিশদের। এগিয়ে যান আরও কিছুদূর। শেষ পর্যন্ত দ্বিতীয় নতুন বলে ক্রিস ওকস ফেরাতে পারেন তাকে। উইকেটের পেছনে ধরা পড়েন ২০৭ বলে ১৪২ করে।

ওয়েডের সেঞ্চুরি ছিল আরও গতিময়। ৬ বছর পর পেয়েছেন টেস্ট সেঞ্চুরির স্বাদ। রিভার্স সুইপে বাউন্ডারিতে তিন অঙ্ক ছুঁয়েছেন ১৩১ বলে। তার ইনিংস থেমেছে ১১০ রানে।

দুই সেঞ্চুরিয়ানের ফেরার পর ইংলিশদের যন্ত্রণা দীর্ঘায়িত করেছে অস্ট্রেলিয়ায় লোয়ার মিডল অর্ডার। অধিনায়ক টিম পেইন করেছেন ৩৪।

অবিচ্ছিন্ন অষ্টম উইকেট জুটিতে দুই পেসার জেমস প্যাটিনসন ও প্যাট কামিন্স ৭৮ রান তুলেছেন ৭৫ বলে। ২৬ রানে অপরাজিত ছিলেন কামিন্স, ৪ ছক্কায় ৪৮ বলে ৪৭ প্যাটিনসন।

প্যাটিনসন যখন প্রথম ফিফটির কাছে, অস্ট্রেলিয়ার লিড চারশর কাছে, ইনিংস ঘোষণা করে দেন পেইন।

জয়ের লক্ষ্য ৩৯৮ হলেও ইংলিশদের মূল লক্ষ্য লড়াই করে ম্যাচ বাঁচানো। ররি বার্নস ও জেসন রয় উতরে গেছেন শেষ বিকেলের চ্যালেঞ্জে। তবে শেষ দিনেও ইংলিশদের অপেক্ষায় কঠিন চ্যালেঞ্জ।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

অস্ট্রেলিয়া ১ম ইনিংস: ২৮৪

ইংল্যান্ড ১ম ইনিংস: ৩৭৪

অস্ট্রেলিয়া ২য় ইনিংস: (আগের দিন ১২৪/৩) ১১২ ওভারে ৪৮৭/৭ (ডিক্লেয়ার) (স্মিথ ১৪২, হেড ৫১, ওয়েড ১১০, পেইন ৩৪, প্যাটিনসন ৪৭*, কামিন্স ২৬*; ব্রড ২২-২-৯১-১, ওকস ১৩-১-৪৬-১, মইন ২৯-১-১৩০-২, রুট ১২-১-৫০-০, স্টোকস ২২-৫-৮৫-৩, ডেনলি ১৪-১-৭২-০)।

ইংল্যান্ড ২য় ইনিংস:(লক্ষ্য ৩৯৮) ৭ ওভারে ১৩/০ (বার্নস ৭*, রয় ৬*; সিডল ২-০-৪-০, লায়ন ৩-০-৭-০, প্যাটিনসন ২-১-২-০)