মাশরাফির লড়াইটা বাতাসের সঙ্গেও

প্রথম বল শর্ট। বাউন্ডারি। দ্বিতীয় বলও শর্ট। আবার চার। রান আপে যেন কোনোরকমে টেনে নিয়ে যাচ্ছিলেন নিজের শরীর। লাইন-লেংথের ঠিক নেই। মাশরাফি বিন মুর্তজাই তো? ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দ্বিতীয় ম্যাচে প্রথম দুই ওভারের বোলিংয়ে চেনাই যাচ্ছিল না তাকে। কন্ডিশন যদিও চেনা হতে শুরু করেছে, এরপরও বাংলাদেশের অধিনায়ককে এমন অচেনা করে তুলেছিল আসলে মালাহাইডের বাতাস।

আরিফুল ইসলাম রনিআরিফুল ইসলাম রনিডাবলিন থেকে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 May 2019, 04:36 PM
Updated : 14 May 2019, 04:36 PM

ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম ২ ওভারে মাশরাফি দিয়েছিলেন ১৫ রান। এই সময়ের বিবেচনায় খুব খরুচে নয়। তবে রান আপ ও বোলিংয়ের লেংথের ভোগান্তিই ফুটিয়ে তুলছিল সমস্যা কিছু হচ্ছে। ম্যাচের আগে গা গরমে ঘাটতি ছিল কিনা, সেই সংশয়ও জাগাল।

এমনিতে খানিকটা চোট সমস্যাও আছে তার। হ্যামস্ট্রিংয়ের চোট সামলেই খেলছেন বেশ অনেকদিন থেকে। গত ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ থেকে ভোগাচ্ছে শরীরের পেছন দিকের ব্যথা। তবে চোটের কারণে নয়, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বাংলাদেশ অধিনায়ক জানালেন, সমস্যা কোথায় হচ্ছিল।

“ঝামেলা করছিল বাতাস। যে প্রান্ত থেকে (ড্রেসিং রুম প্রান্ত) বোলিং করছিলাম, তার উল্টো দিক থেকে আসছিল বাতাস। রান আপে টেনে ধরছিল যেন। এজন্যই শরীর আটকে যাচ্ছিল। বাতাসের বিরুদ্ধে বোলিং করাটাও কঠিন। আমার পেস এমনিতেই কম। এত প্রবল বাতাস, যে লেংথে বল ফেলতে চাচ্ছিলাম, সেখানে পড়ছিল না।”

“বলের লাইনও খানিকটা বদলে দিচ্ছিল বাতাস, কয়েকটি বল লেগ স্টাম্পে চলে গেল এই কারণেই। ওয়ার্ম আপ ঠিকমতোই করেছিলাম। তবু বাতাসে মানিয়ে নিতে ২-৩ ওভার লেগে গেল।”

অভিজ্ঞতা ও নিজের সামর্থ্য দিয়েই পরে বাতাসের সঙ্গে লড়াইয়ে জিতেছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। প্রথম ব্রেক থ্রু এনে দিয়েছেন দলকে। পরে শেষ দিকে ফিরে নিয়েছেন থিতু হয়ে যাওয়া শেই হোপ ও জেসন হোল্ডারের উইকেট। ৩ উইকেট নিয়েছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচেও। সেদিনও বোলিং করেছিলেন বাতাসের বিরুদ্ধে।

প্রথম নয় এবারই। বরাবরই বাতাসের বিরুদ্ধে বোলিংয়ের কঠিন কাজটি নিজের কাঁধে নেন মাশরাফি। বিশেষ করে নিউ জিল্যান্ডে, যেখানে বাতাস বরাবরই তীব্র গতিময়, সেখানেও তাকেই পালন করতে হয়েছে এই দায়িত্ব।

গতির সীমাবদ্ধতার পরও কেন তিনিই এই কঠিন চ্যালেঞ্জে পিছপা হননা, সেই ব্যাখ্যাও দিলেন অধিনায়ক।

“বাতাসের বিরুদ্ধে বোলিং করতে সব পেসারেরই ঝামেলা হয়। কেমার রোচ তো অনেক জোরে বোলিং করে, কালকে সেও ওই পাশ থেকে বোলিং করে অনেক রান দিয়েছে। আমি অনেক দিন থেকে খেলছি, এই ধরনের পরিস্থিতিতে খেলে আসছি। কাজটা খুব কঠিন। কিন্তু কাউকে না কাউকে তো কাজটা করতে হবে। অভিজ্ঞ হিসেবে দায়িত্বটা আমিই নেই।”

বুধবার আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশের ম্যাচ ক্লনটার্ফ ক্রিকেট ক্লাব মাঠে। বাতাস সেখানে সাধারণত ততটা তীব্র থাকে না। ডাবলিন শহর থেকে বেশ দূরে মালাহাইডে বাতাসের গতি তুলনামূলকভাবে থাকে বেশি। ফাইনালে আবার সেই চ্যালেঞ্জ নিতে হবে মাশরাফিকে।