ধারাবাহিক মাশরাফি, দুর্দান্ত মুস্তাফিজ

প্রথম ম্যাচের চেয়ে রান খরচ হলো একটু বেশি। তবে কার্যকারিতা একইরকম। টানা দ্বিতীয় ম্যাচে মাশরাফি বিন মুর্তজা নিলেন ৩ উইকেট। মুস্তাফিজুর রহমানের চ্যালেঞ্জটা ছিল ফিরে আসার। আগের ম্যাচে ছিলেন ভীষণ বিবর্ণ। চ্যালেঞ্জটা দারুণভাবে জিতে এই বাঁহাতি পেসারই দলের উজ্জ্বলতম বোলার।

ক্রীড়া প্রতিবেদক ডাবলিন থেকেবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 May 2019, 04:07 PM
Updated : 13 May 2019, 05:52 PM

ত্রিদেশীয় সিরিজে সোমবার ডাবলিনের মালাহাইডে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৬০ রানে ৩ উইকেট নিয়েছেন মাশরাফি। দুই দলের প্রথম লড়াইয়ে বাংলাদেশ অধিনায়ক নিয়েছিলেন ৪৯ রানে ৩ উইকেট।

মুস্তাফিজ সেই ম্যাচে দুই উইকেট নিয়েছিলেন বটে, কিন্তু রান গুনেছিলেন ৮৪। এবার উইকেট ৪টি, রান দিয়েছেন কেবল ৪৩।

মাশরাফির ধারাবাহিকতা কিংবা মুস্তাফিজের ছন্দে ফেরা, বিশ্বকাপের আগে দলের জন্য দুটিই দারুণ সুখবর। ইংল্যান্ডের উইকেটে বোলারদের অপেক্ষায় যে কঠিন পরীক্ষা!

মাশরাফি অবশ্য বরাবরই ধারাবাহিক। দেশের ওয়ানডে ইতিহাসের সফলতম বোলারই কেবল নন, গত কয়েক বছর বা সাম্প্রতিক সময়, খুব বেশি উইকেট খরায় তাকে কখনোই থাকতে হয়নি। এরপরও ত্রিদেশীয় টুর্নামেন্টের দুই ম্যাচে ভুলে যাওয়া একটি স্বাদ পেলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। পরপর দুই ম্যাচে ৩ উইকেট।

সবশেষ ২০০৬ সালের ডিসেম্বরে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে পরপর তিন ম্যাচে নিয়েছিলেন তিন উইকেট করে। এরপর উইকেট নিয়মিতই পেয়েছেন। ক্যারিয়ার জুড়েই ছিলেন দলের সেরা বোলারদের একজন। কিন্তু পরপর দুই ওয়ানডেতে তিন উইকেট পেলেন প্রায় এক যুগ পর। সবশেষ খুব কাছাকাছি গিয়েছিলেন ২০০৯ সালে, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তিন ম্যাচে নিয়েছিলেন ৩, ২ ও ৩ উইকেট।

টানা দুই ম্যাচের এই পারফরম্যান্স ব্যক্তিগতভাবেও একটু স্বস্তি দেবে মাশরাফিকে। গত ডিসেম্বরে দেশের মাটিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে ৩ উইকেট নিয়ে হয়েছিলেন ম্যাচ সেরা। পরের দুই ম্যাচ মিলিয়েও নিয়েছিলেন ৩ উইকেট। তবে এরপর নিউ জিল্যান্ড সফর ভালো কাটেনি। বেশ নিয়ন্ত্রিত বোলিং করলেও তিন ওয়ানডেতে উইকেট নিতে পেরেছিলেন কেবল একটি। এই টুর্নামেন্টে দুই ম্যাচেই হয়ে গেল ৬ উইকেট।

শুধু সংখ্যা নয়, ম্যাচের পরিস্থিতি বিবেচনায় অধিনায়কের উইকেটগুলো এসেছে দলের প্রয়োজনের সময়। প্রথম ম্যাচে তার তিন উইকেটই শেষ দিকে ঘুরিয়ে দেয় ম্যাচের মোড়। এই ম্যাচে ঝড়ো শুরু করা ওয়েস্ট ইন্ডিজকে প্রথম ধাক্কা দেন তিনিই, সুনিল আমব্রিসকে ফিরিয়ে।

পরে দুই থিতু ব্যাটসম্যান শেই হোপ ও জেসন হোল্ডার যখন প্রস্তুতি নিচ্ছেন শেষ দিকে দ্রুত রান তোলার, দুজনকেই থামান মাশরাফি।

মাশরাফি নতুন বলে যেখানে শেষ করেছিলেন, মুস্তাফিজ দায়িত্ব নেন সেখান থেকেই। মিডল অর্ডারে রোস্টন চেইস ও জোনাথন কার্টারকে দ্রুত ফিরিয়ে থমকে দেন ক্যারিবিয়ানদের। নিজের শেষ ওভারে নেন আরও দুটি।

মুস্তাফিজের ক্ষেত্রেও শুধু উইকেট সংখ্যা নয়, চোখে পড়ার মতো ছিল তার বোলিং। গতি ছিল যথেষ্ট ভালো, তার বোলিংয়ের অ্যাঙ্গেল ভুগিয়েছে ব্যাটসম্যানদের। স্লোয়ার ও কাটারগুলোও অস্বস্তিতে ফেলেছে প্রতিপক্ষকে।

এই টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচে ৮৪ রান দেওয়ার আগে নিউ জিল্যান্ড সফরের শেষ ম্যাচে ১০ ওভারে মুস্তাফিজ দিয়েছিলেন ৯৩ রান। মাঝে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে একটি ম্যাচ খেলার পর ভুগেছেন ইনজুরিতে। আয়ারল্যান্ডে আসার আগে নেটেও ঠিকমতো বোলিং করতে পারেননি। বিশ্বকাপের আগে তার ছন্দে ফেরা বাংলাদেশের সম্ভাবনাকে করবে আরও উজ্জ্বল।