বাংলাদেশের বিশ্বকাপ স্কোয়াডের ১৫ জনের বাইরে চলতি ত্রিদেশীয় সিরিজের দলে আছেন এই চার জন। বিশ্ব আসরের দলে পরিবর্তনের সুযোগ আছে ২৩ মে পর্যন্ত। নাটকীয় কোনো পালাবদলে বিশ্বকাপে যাওয়ার স্বপ্নও খানিকটা জিইয়ে আছে তাদের। স্বপ্নের ‘লাইফলাইন’ এই টুর্নামেন্ট। একটি ম্যাচে সুযোগ পেলেও অসাধারণ কিছু করে যদি নাড়া দেওয়া যায় টিম ম্যানেজমেন্টের ভাবনায়!
দলের ভাবনা ছিল, ফাইনাল আগেই নিশ্চিত হয়ে গেলে প্রাথমিক পর্বের শেষ ম্যাচে পরখ করে দেখা হতো কয়েকজনকে। কিন্তু ফাইনালে উঠতে যদি নির্ভর করতে হয় শেষ ম্যাচের ফলে, দল নিশ্চিতভাবেই পরীক্ষা-নিরীক্ষার ঝুঁকিতে যেতে চাইবে না।
এমনিতে অনুশীলনে নিজেদের উজার করে দিচ্ছেন চার জনই। জিমেও তারা নিয়মিত মুখ। ব্যাটিং-বোলিং কোচরা আলাদা কাজ করছেন তাদের নিয়ে। দলে উপস্থিতি প্রাণবন্ত। যথাসাধ্য চেষ্টা করছেন মূল গ্রুপের সঙ্গে মিশে যেতে এবং টিম ম্যানেজমেন্টের নজর কাড়তে। তবে শুধু অনুশীলন দলে বিশ্বকাপ দলে পরিবর্তনের দাবি জানানো হবে খুবই কঠিন।
ওই চারজনের জন্য কাজটি কঠিন হয়ে গেল, উপলব্ধি করতে পারছেন স্টিভ রোডসও। বিশেষ করে বাংলাদেশ কোচ আলাদা করে বললেন ফরহাদ ও ইয়াসিরের কথা। নাঈমকে কোচ এর মধ্যেই দেখেছেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে। তাসকিনকে দেখেছেন বিপিএলে। কিন্তু দীর্ঘদিন পর জাতীয় দলে ফেরা ফরহাদ ও নবীন ইয়াসিরকে দেখার পরিকল্পনা ছিল কোচের।
“আজকের ম্যাচটি জিতলে সামনে হয়তো আমরা ওদের পরখ করতে পারতাম। তা হলো না, কেবল দুটি পয়েন্টই পেলাম। ওদের কয়েকজনের খেলার সম্ভাবনা তাতে কিছুটা হলেও কমে গেল, যা খুবই হতাশার।”
তবে বরাবরই ইতিবাচক মানসিকতার বলে পরিচিত রোডস আশা ছাড়ছেন না এখনই। কোচের চাওয়া, সমীকরণ পক্ষে এনে বাংলাদেশ ফাইনাল নিশ্চিত করবে আগেই। আর শেষ পর্যন্ত যদি তাদের কারও ম্যাচ খেলা না হয়, তার পরও ইতিবাচক প্রাপ্তির কমতি দেখছেন না তিনি।
“দুনিয়ার সবকিছু তো আদর্শ নয়। ওরা যারা আছে, বিশেষ করে ইয়াসির ও ফরহাদ, ওদেরকে ঘরোয়া ক্রিকেটে দেখেছি আমি। ভালো লেগেছে ওদের খেলা। এখানে কাছ থেকে দেখতে চেয়েছিলাম। ওদের পেশাদারীত্ব, কিভাবে দলে মিশতে পারে, এসব দেখতে চেয়েছিলাম। দুজনই সেসব খুব ভালো পেরেছে।”
“আশা করি ওরা দুজনই সুযোগ পাবে। যদি সুযোগ না হয়, এরপরও ইতিবাচক অনেক কিছু আছে। ওদেরকে আরও ভালো করে জানতে পারছি, এই পরিবেশে দেখছি। ওরাও নিজেদের দেখাতে পারছে, বিশ্বকাপ দলের সঙ্গে অনুশীলন করছে, এসবও কম নয়। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দেখতে পারলে ভালো লাগত। তবে সেই সুযোগ না হলেও যেটুকু হচ্ছে তা কম নয়।”
সেই বাস্তবতা অস্বীকার করছেন না কোচ। তবে স্কোয়াডের আকার বড় করার দাবিটা মূলত এসেছিল তার কাছ থেকেই। তাই নিজের কাজ সামলানোর চেয়ে দলের প্রয়োজনের কথাই তুলে ধরলেন আবার।
“কোচ হিসেবে কাজটা কঠিন। আমরা চাই গুছিয়ে অনুশীলন করাতে। অনুশীলনে সবাইকে পর্যাপ্ত সুযোগ দেওয়াও জরুরি। সেদিক থেকে আমার কাজটা কঠিন। তবে তাতে আমার আপত্তি নেই। আমরা চেয়েছিলাম বাড়তি কিছু ক্রিকেটারকে দেখতে। আগেই বলেছি, কি কারণে ওদেরকে আনা হয়েছে। সেসবও কম নয়।”
“আমরা চেষ্টা করছি সবাইকে দেখতে। আশা করি পরের ম্যাচে আমরা প্রত্যাশিত পয়েন্ট পাব এবং শেষ ম্যাচে ওদেরকে সুযোগ দিতে পারব।”
পরের ম্যাচে ক্যারিবিয়ানদের হারালেই ফাইনাল নিশ্চিত হয়ে যাবে বাংলাদেশের। শেষ ম্যাচে সুযোগ থাকবে কাউকে পরখ করার। ইয়াসির-ফরহাদ-তাসকিনরা অপেক্ষায় সেই সুযোগের।