‘সৌম্য-লিটনের দেখিয়ে দেওয়ার সময় এখনই’

লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে দেশের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে ডাবল সেঞ্চুরি। সৌম্য সরকারের অর্জনের বিশালত্ব ছুঁয়ে যাচ্ছে তামিম ইকবালকে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে কাজটা যদিও অনেক কঠিন। তামিম তবু উদ্বেধনী জুটিতে আশার আলো দেখছেন নতুন করে। শুধু সৌম্য নন, তামিম আশাভরে তাকিয়ে লিটন দাসের দিকেও।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 24 April 2019, 01:17 PM
Updated : 24 April 2019, 01:17 PM

বিশ্বকাপে উদ্বোধনী জুটিতে তামিমের সম্ভাব্য সঙ্গীর লড়াইয়ে থাকবেন এই দুজনই। মঙ্গলবার ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচে ইতিহাস গড়া ডাবল সেঞ্চুরি করেছেন সৌম্য। সেঞ্চুরি করেছিলেন আগের ম্যাচেও। বিশ্বকাপের আগে আয়ারল্যান্ড সিরিজে তামিমের সঙ্গী হওয়ার লড়াইয়ে এগিয়ে থাকবেন সৌম্যই।

বুধবার মিরপুরে অনুশীলন শেষে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে তামিম উচ্ছ্বসিত প্রতিক্রিয়া জানালেন সৌম্যর কীর্তি নিয়ে। তার ধারণা, ইনিংস দুটির পর সৌম্য আত্মবিশ্বাস ফিরে পাবেন।

“এটা অসাধারণ অর্জন, বাংলাদেশের প্রথম কেউ দুইশ করেছে। যদিও আমরা সামনে খেলব ভিন্ন কন্ডিশন, ভিন্ন বোলিং আক্রমণের বিপক্ষে। তবু রান করাটা সবসময়ই ইতিবাচক। এটা আত্মবিশ্বাস জোগায়। কোথায় রান করেছে সে, এটির চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো রান করেছে। সবশেষ দুই ম্যাচে সেঞ্চুরি না করে যদি ৫ ও ১০ করতো, তাহলে এক শতাংশ বেশি হলেও চাপে থাকত।”

“এখন সে রান করেছে। কেউ যখন রান করে, সে জানে কিভাবে রান করতে হয়। কারও ফর্ম খারাপ থাকলে ভুলে যায় যে কিভাবে রান করতে হয়। এটা খুবই ইতিবাচক দিক যে আয়ারল্যান্ডে যাওয়ার আগে সে দুটি বড় ইনিংস খেলেছে।”

আয়ারল্যান্ডে খেলতে পারা মানেই বিশ্বকাপে একাদশে থাকার নিশ্চয়তা নেই। সৌম্য বা লিটন, আগে সুযোগ যারই হোক, খারাপ করলে অন্য জনের সুযোগ মিলবে। তামিম তাই তাকিয়ে আছেন দুজনের দিকেই। দুজনই দারুণ প্রতিভাবান, নিজেদের দিনে গুঁড়িয়ে দিতে পারেন যে কোনো বোলিং আক্রমণ। কিন্তু আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ধারাবাহিক হতে পারেননি কেউই।

অন্যরা সফল হতে না পারার আঁচ লাগছে তামিমেরও। তিনি পাচ্ছেন না উদ্বোধনী জুটিতে নিয়মিত একজন সঙ্গী। তার মতে, লিটন ও সৌম্যর সময় হয়েছে দারুণ কিছু করার।

“নিয়মিত এক সঙ্গী থাকলে যেটি হয়, দুজনই পরস্পরের খেলাটাকে বুঝতে পারি। অনেক সময় হয়তো আমার টাইমিং ভালো হচ্ছে না, শট খেলছি কিন্ত ফিল্ডারের কাছে চলে যাচ্ছে, তখন সে বুঝতে পারে যে তার বাড়তি চান্স নিতে হবে। একইভাবে ওর সঙ্গে এরকম হলে আমার চান্স নিতে হবে। কিন্তু কেউ দলে থিতু না হলে তাকে ঝুঁকি নিতে বলা অন্যায়। কারণ একটা প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হয় তাকে।”

“আমি নিশ্চিত, লিটন ও সৌম্যর সামর্থ্য আছে। যথেষ্ট সুযোগ পাচ্ছে। আমি নিশ্চিত, এখনই ওদের সময়, গোটা বিশ্বকে দেখিয়ে দেওয়ার যে তারা কতটা ভালো।”

ধারাবাহিক সাফল্যের জন্যই একজন থিতু সঙ্গীকে পাওয়ার তাড়না তামিমের কণ্ঠে। সেখানেও তার বাজি সৌম্য ও লিটনকে নিয়ে। তার বিশ্বাস, দুজনই আগামী অনেক বছর খেলতে পারবেন বাংলাদেশের হয়ে।

“যে কোনো পেশায় যদি লম্বা সময় কারও সঙ্গে কাজ করেন, তাহলে সে আপনার পছন্দ-অপছন্দের ব্যাপারগুলো জানবে। বিশ্বের সেরা ওপেনিং জুটিগুলো, হেইডেন-গিলক্রিস্ট, সৌরভ-শচিন, শেবাগ-শচিন, সবারই দেখবেন বোঝাপড়া ভালো ছিল। ওদের খেলা দেখলে মনে হতো যে তারা দারুণ উপভোগ করছে এবং বুঝতে পারছে, সঙ্গী কোনটি চায়।”

“দুর্ভাগ্যজনকভাবে, এ রকম সুযোগ আমাদের এখনও হয়নি। তবে আমি নিশ্চিত, সৌম্য-লিটন বিশ্বকাপে যাচ্ছে, দুজনই বাংলাদেশের হয়ে আরও ১০-১৫ বছর খেলার সামর্থ্য রাখে। এজন্যই আমি মনে করি, ওদের ভালো পারফরম্যান্স দেখানোর সেরা সময় এটিই।”