নাটকীয় শেষ ওভারে দোলেশ্বরের নায়ক রেজা

বারবার রঙ পাল্টানো ম্যাচে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবকে জয়ের পথে নিয়ে গিয়েছিলেন নিহাদ-উজ-জামান। তবে শেষরক্ষা করতে পারেননি তিনি। দুর্দান্ত এক শেষ ওভারে ব্যবধান গড়ে দেন ফরহাদ রেজা। রোমাঞ্চকর লড়াইয়ে মোহামেডানকে হারিয়ে দেয় প্রাইম দোলেশ্বর।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 23 April 2019, 12:43 PM
Updated : 23 April 2019, 03:04 PM

প্রিমিয়ার লিগে সুপার লিগের পঞ্চম ও শেষ রাউন্ডের ম্যাচে ৩ রানে জিতেছে রেজার দল। ২৭৪ রান তাড়ায় ২৭১ রানে থামে মোহামেডান।

জয়ের জন্য শেষ ওভারে মোহামেডানের প্রয়োজন ছিল ১০ রান। রেজার দারুণ বোলিংয়ে তারা নিতে পারে কেবল ৬ রান। দশম উইকেটে ২৬ বলে ৪০ রানের ঝড়ো এক জুটিতেও দলকে জয় এনে দিতে পারেননি নিহাদ ও সাকলাইন সজীব।

ফতুল্লার খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই জসিম উদ্দিনকে হারায় প্রাইম দোলেশ্বর। সাইফ হাসানের সঙ্গে ৬৪ রানের জুটিতে দলকে টানেন সৈকত আলী।

৬৯ বলে ৮ চারে ৫৫ রান করা সাইফ রান আউট হলে ভাঙে জুটি। এই ইনিংস খেলার পথে প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে এক আসরে আটশ রানের কীর্তি গড়েন সাইফ। ৮১৪ রান নিয়ে লিগ শেষ করেন তরুণ এই ওপেনার। তার চেয়ে ৭ রান কম করে দ্বিতীয় স্থানে আছেন লেজেন্ডস অব রূপগঞ্জের মোহাম্মদ নাঈম।

ফরহাদ হোসেনের সঙ্গে ৮৬ রানের জুটি গড়ে ফিরে যান সৈকত আলী। ১০৬ বলে তার খেলা ৬৫ রানের ইনিংস গড়া দুই ছক্কা ও এক চারে। বেশিক্ষণ টিকেননি ফরহাদ রেজা। মার্শালের সঙ্গে ৮৩ রানের জুটিতে দলকে লড়াই করার মতো সংগ্রহ এনে দেন ফরহাদ হোসেন। এই মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান ৭৬ বলে সাত চার ও দুই ছক্কায় করেন ৮৯ রান। ২৮ বলে দুটি করে ছক্কা ও চারে ৩৮ রান করেন মার্শাল।

রান তাড়ায় শুরুটা ভালো করে মোহামেডান। তবে ভালো শুরুটা বড় করতে পারেননি আব্দুল মজিদ ও ইরফান শুক্কুর। দুই ওপেনারকেই ফেরান মাহমুদুল হাসান। রকিবুল হাসান ও তুষার ইমরান পারেননি দলকে টানতে।

এক প্রান্ত আগলে রেখে মোহামেডানকে টানেন মোহাম্মদ আশরাফুল। ৯৭ বলে ৭৬ রান করা এই অভিজ্ঞ মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানকে ফিরিয়ে ম্যাচ দোলেশ্বরের দিকে ঘুরিয়ে দেন রেজা। দ্রুত রান তোলা রাহাতুল ফেরদৌসকেও ফেরান এই পেস বোলিং অলরাউন্ডার।

২৩১ রানে নয় উইকেট হারানো মোহামেডানের আশা জাগে শেষ জুটির দৃঢ়তায়। তবে দারুণ বোলিংয়ে দোলেশ্বরকে নাটকীয় জয় এনে দেন রেজা। ৩৩ বলে ৩৭ রান করেন রাহাতুল ফেরদৌস। ১৯ বলে ৩৫ রানে অপরাজিত থাকেন নিহাদ।

৩৪ রানে ৩ উইকেট নিয়ে দোলেশ্বরের সেরা বোলার তাইবুর রহমান। দুটি করে উইকেট নেন রেজা ও মাহমুদুল।

১ উইকেটের জন্য গতবার মাশরাফির গড়া প্রিমিয়ার লিগের এক আসরে সর্বোচ্চ উইকেটের রেকর্ড স্পর্শ করতে পারেননি রেজা। আবাহনীর হয়ে মাশরাফি নিয়েছিলেন ৩৯ উইকেট। রেজা নিলেন ৩৮টি। 

দলকে লড়াই করার মতো সংগ্রহ এনে দেওয়া ফরহাদ হোসেন জেতেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার। 

২০ পয়েন্ট নিয়ে তিন নম্বরে থেকে লিগ শেষ করল দোলেশ্বর। ১৪ পয়েন্ট নিয়ে ষষ্ঠ স্থানে থেকে টুর্নামেন্ট শেষ করল মোহামেডান। রান রেটে লেজেন্ডস অব রূপগঞ্জকে পেছনে ফেলে শিরোপা জেতে আবাহনী।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

প্রাইম দোলেশ্বর স্পোর্টিং ক্লাব: ৫০ ওভারে ২৭৪/৬ (সাইফ ৫৫, জসিম ৬, সৈকত ৬৫, ফরহাদ ৮৯, রেজা ১০, মার্শাল ৩৮, মাহমুদুল ১*; শফিউল ২/৩৯, রাহাতুল ১/৬১, সাকলাইন ১/৪৪, নিহাদ ০/৪৯, সোহাগ ০/৬১, আশরাফুল ০/১৯)

মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব: ৫০ ওভারে ২৭১/৯ (মজিদ ২৫, শুক্কুর ২৬, আশরাফুল ৭৬, রকিবুল ২২, তুষার ১৫, লিটন ৫, সোহাগ ৮, রাহাতুল ৩৭, শফিউল ৬, নিহাদ ৩৫*, সাকলাইন ১০*; রেজা ২/৫১, মানিক ১/৫৩, মাহমুদুল ২/৫৬, এনামুল জুনিয়র ১/৫৩, জাকারিয়া ০/২৪, তাইবুর ৩/৩৪)

ফল: প্রাইম দোলেশ্বর স্পোর্টিং ক্লাব ৩ রানে জয়ী

ম্যান অব দা ম্যাচ: ফরহাদ হোসেন