সবচেয়ে উজ্জ্বল মোসাদ্দেকই। ব্যাট হাতে সাতে নেমে অপরাজিত ফিফটি করেছেন। এরপর নতুন বলে বোলিং করেছেন, নিয়েছেন ৩ উইকেট। মোহামেডান স্পোটিং ক্লাবকে ৪৫ রানে হারিয়েছে আবাহনী।
বিকেএসপিতে বুধবার মোসাদ্দেকের পাশাপাশি আগ্রাসী ফিফটি করেছেন বিশ্বকাপ দলে থাকা সাব্বির ও মিঠুন। ৫০ ওভারে আবাহনী তোলে ৩০৪ রান। মোহামেডান ৪৬.৩ ওভারে অলআউট হয় ২৫৯ রানে।
মোসাদ্দেকের পাশাপাশি ৩টি উইকেট নিয়েছেন বাংলাদেশের বিশ্বকাপ অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা। প্রথম উইকেটটি নিয়ে বাংলাদেশের দ্বিতীয় বোলার হিসেবে স্পর্শ করেন লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে ৪০০ উইকেট। ব্যাটিংয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইনিংসের পর বোলিংয়ে উইকেট পেয়েছেন সাইফ উদ্দিন।
তবে দুই ওপেনারকে দ্রুত হারানোর ধাক্কা টের পেতে দেননি সাব্বির। তিনে নেমে পাল্টা আক্রমণে সরিয়ে দেন চাপ। তৃতীয় উইকেটে ওয়াসিম জাফরকে নিয়ে গড়েন ৭১ রানের জুটি, যেখানে জাফর ছিলেন কার্যত দর্শক।
দুই জন আউট হয়ে যান পরপর দুই ওভারে। ৩২ বলে ১৯ করে ফেরেন জাফর। ৫ চার ও ৪ ছক্কায় সাব্বির করেন ৫৩ বলে ৬৪।
এই জোড়া ধাক্কা আবাহনী সামাল দেয় নাজমুল হোসেন শান্ত ও মিঠুনের ব্যাটে। পঞ্চম উইকেটে এই দুজনের জুটি ৯১ রানের।
তবে কাজ শেষ করে আসতে পারেনি তারা দুজনও। ৩৬ রানে শফিউল ইসলামের বলে বোল্ড হয়ে যান শান্ত। ৫২ বলে ৫৬ করে মিঠুন ফিরতি ক্যাচ দেন বাঁহাতি স্পিনার রাহাতুল ফেরদৌসকে।
রান রেট ভালো থাকলেও ৬ উইকেট হারিয়ে তখন আবাহনী কিছুটা বিপাকে। মোসাদ্দেক ও সাইফের জুটি এখান থেকেই টেনে নেয় দলকে। ১০৪ রানের সময়োপযোগী জুটি গড়েন দুজন।
৫৭ বলে ৫৪ রানে অপরাজিত থেকে যান মোসাদ্দেক। এবারের লিগে এটা তার ষষ্ঠ পঞ্চাশোর্ধ স্কোর। ৩৫ বলে ৪১ করে সাইফ রান আউট হন শেষ বলে।
২০ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে মোহামেডান তখন বিপথে। দলকে পথে ফেরান রকিবুল হাসান। অসাধারণ ফর্মে থাকা ব্যাটসম্যান এ দিনও খেলেছেন দুর্দান্ত।
পঞ্চম উইকেটে রকিবুলকে সঙ্গ দেন মোহাম্মদ আশরাফুল। ১২৮ রানের জুটিতে দুজনে নতুন করে জাগান দলের সম্ভাবনা।
৭৯ বলে ৯৬ রান করা রকিবুলকে ফিরিয়ে আবাহনীর স্বস্তি ফেরান দ্বিতীয় স্পেলে ফেরা মাশরাফি। এই ইনিংসের পর ১ সেঞ্চুরি ও ৭ ফিফটিতে এবারে লিগে রকিবুলের রান এখন ৬৯৯!
রকিবুল ঝড়ো গতিতে ব্যাট করলেও পরিস্থিতির দাবি ততটা মেটাতে পারেননি আশরাফুল। ৬৮ রান করলেও বল খেলেছেন ৮৫টি, তাতে একটু পিছিয়ে পড়ে দল। এরপর সোহাগ গাজীর ২৮ বলে ২৮ ছাড়া আর দাঁড়াতে পারেননি কেউ।
ব্যাটিংয়ে ব্যর্থ সৌম্য ভালো বোলিংয়ের ধারাবাহিকতা ধরে রেখে নিয়েছেন ২ উইকেট।
জয় স্বস্তি হয়ে এসেছে আবাহনীর জন্য। বিশ্বকাপ তারকাদের পারফরম্যান্স স্বস্তি দেবে বাংলাদেশের ক্রিকেটকেও।
আবাহনী: ৫০ ওভোরে ৩০৪/৭ (জহুরুল ৪, সৌম্য ১৭, সাব্বির ৬৪, জাফর ১৯, শান্ত ৩৬, মিঠুন ৫৬, মোসাদ্দেক ৫৪*, সাইফ ৪১; শফিউল ৯-০-৬৩-৩, অনিক ১০-১-৬০-০, সাকলাইন ৪-০-৩৮-০, রাহাতুল ১০-১-৪১-২, সোহাগ ১০-০-৫৯-১, আশরাফুল ৭-০-৪২-০)।
মোহামেডান: ৪৬.৩ ওভারে ২৫৯ (মজিদ ০, ইরফান ৮, অভিষেক ৪, রকিবুল ৯৬, তুষার ১৬, আশরাফুল ৬৮, সোহাগ ২৮, রাহাতুল ৯, শফিউল ৩*,অনিক ৮, সাকলাইন ৫; মোসাদ্দেক ৮-১-৩৬-৩, মাশরাফি ৮.৩-০-৪০-৩, অপু ৭-০-৩৬-১, সাইফ ৯-০-৪৬-১, সানজামুল ৫-০-৩৬-০, সৌম্য ৭-০-৪০-২, সাব্বির ২-০-২১-০)।
ফল: আবাহনী লিমিটেড ৪৫ রানে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: মোসাদ্দেক হোসেন