মিরপুর-খুলনা স্টেডিয়াম সংস্কারে এনএসসির দিকে তাকিয়ে বিসিবি

খুলনার শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামের গ্যালারি ধ্বংসস্তুপ হয়ে আছে প্রায় তিন বছর ধরে। মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামের গ্যালারি-প্রেসবক্সের অবস্থাও সুবিধের নয়। সংস্কার জরুরি, অনুধাবন করছে বিসিবিও। সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার কথা তারা জানিয়েছে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদকে (এনএসসি)।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 April 2019, 01:00 PM
Updated : 13 April 2019, 01:00 PM

পুরোনো স্টেডিয়ামগুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে নতুন স্টেডিয়াম তৈরির সভায়। পূর্বাচলে নিজস্ব ক্রিকেট স্টেডিয়াম তৈরির জন্য ৩৭ একর জমি কিছুদিন আগে বরাদ্দ পেয়েছে বিসিবি। শনিবার ছিল সেই স্টেডিয়াম তৈরির জন্য গঠিত প্রকল্প বাস্তবায়ন গ্রুপের (পিআইজি) প্রথম সভা।

এই সভাতেই আলোচনা হয়েছে পুরোনো স্টেডিয়ামগুলোর দুর্দশা নিয়ে। ২০১৬ সালের এপ্রিলে ঝড় ও টর্নেডোতে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয় খুলনা শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামের গ্যালারি, হসপিটালিটি বক্স, মিডিয়া সেন্টারসহ প্রায় সব স্থাপনা। উইকেট ও আউটফিল্ড ভালো থাকায় সেখানে ঘরোয়া ক্রিকেটের খেলা হচ্ছে বটে, তবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট আয়োজনের কোনো অবস্থাই নেই।

‘হোম অব ক্রিকেট’ নামে পরিচিত মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামেও অনেক স্থাপনা হয়ে পড়েছে জীর্ণ। গ্র্যান্ড স্ট্যান্ড থেকে শুরু করে সাধারণ গ্যালারির অনেক আসন নষ্ট হয়ে গেছে। প্রেস বক্সের অবস্থা করুণ।

সংস্কারের প্রয়োজন দেশের আরও বেশ কটি ক্রিকেট স্টেডিয়ামেরও। সবগুলোরই মালিকানা জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের। বিসিবিকে লিজ দেওয়া হয়েছে ব্যবহারের জন্য।

শনিবার পূর্বাচল স্টেডিয়াম প্রকল্প বাস্তবায়ন গ্রুপের সভা শেষে এটির অন্যতম সদস্য ও বিসিবি পরিচালক জালাল ইউনুস জানালেন, স্টেডিয়ামগুলো সংস্কারের জন্য ক্রীড়া পরিষদের উদ্যোগের অপেক্ষায় তারা।

“যে স্টেডিয়ামগুলো এখন আছে, আমরা যেগুলো ব্যবহার করছি, চট্টগ্রাম, খুলনা বা এখানে, সবই সংস্কার করতে হবে। খুলনার অবস্থা মনে হয় সবচেয়ে বাজে। আমরা তো শুধু লিজ নিয়েছি। সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা এনএসসি জানে। তারা সম্ভবত দ্রুত সব ঠিক করার পরিকল্পনা করছে। শিগগিরই তার টেন্ডার প্রক্রিয়ায় যাবে। গ্যালারির সিট, প্রেসবক্স, সবকিছুর অবস্থা তারা জানে এবং বলেছে যে ব্যবস্থা নেবে।”

পূর্বাচলের স্টেডিয়াম অবশ্য এনএসসির অধীনে নয়, স্বত্ব পুরোপুরিই বিসিবির। যেটির নাম ঠিক করা হয়েছে শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম। মূল মাঠের সঙ্গে একাডেমি মাঠ ও ভবন, সুইমিংপুল, জিমসহ অনেক পরিকল্পনা নিয়েছে বিসিবি এই স্টেডিয়াম ঘিরে। প্রকল্প বাস্তবায়ন গ্রুপের প্রধান, বিসিবি পরিচালক মাহবুব আনাম জানালেন অগ্রগতি।

“আজকে আমাদের প্রজেক্ট ইমপ্লিমেন্টেশন গ্রুপের প্রথম সভা ছিল। কিভাবে আমরা কাজ করব, তার রূপরেখা তৈরি করা হয়েছে। পূর্বাচলের এই জমিটি বিসিবির পক্ষে রেজিস্ট্রি হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী রাজউকের মাধ্যমে প্রতীকী মূল্যে জমিটি বরাদ্দ করেছেন। এই মাসের মধ্যে আমরা মাঠের পজেশনে যাব। পজেশন পেলে দ্রুত গতিতে কাজ এগিয়ে যাবে।”

“এই কমিটিতে বাইরে থেকে বিশেষজ্ঞ রাখব আমরা। বুয়েটের প্রতিনিধি, যারা অডিট করে, তাদের প্রতিনিধি থাকবে। আমাদের ইচ্ছে, স্টেডিয়ামটি হবে এই অঞ্চল তো বটেই, পুরো বিশ্বের মধ্যে খুব সুন্দর একটি স্টেডিয়াম। যেহেতু এটি গ্রিন ফিল্ড স্টেডিয়াম, অনেক কিছু করার সুযোগ আছে এখানে। এজন্য আমরা এমন কানসাল্টিং ফার্ম নিয়োগ দেব, যারা আন্তর্জাতিক মানের আরও স্টেডিয়াম তৈরি করেছে। স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সব করা হবে।”

মাহবুব আনাম জানালেন, আগামী শীত মৌসুমে কাজ শুরু করার ইচ্ছে তাদের। কাজ শুরুর পর দুই বছরের মধ্যে স্টেডিয়াম তৈরি হয়ে যাবে বলে আশাবাদ এই বিসিবি পরিচালকের।