রকিবুলের সেঞ্চুরি, সোহাগের অলরাউন্ড দ্যুতি

ভীষণ চাপের মধ্যে নেমে মোহামেডান স্পোর্টি ক্লাবকে টানলেন রকিবুল হাসান। দারুণ এক সেঞ্চুরিতে দলকে এনে দিলেন লড়াইয়ের পুঁজি। ব্যাটিংয়ে শেষটায় ঝড় তোলা সোহাগ গাজী আলো ছড়ালেন বোলিংয়েও। তদের নৈপুণ্যে প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাবকে উড়িয়ে দিয়ে সুপার সিক্সের আশা বাঁচিয়ে রাখল মোহামেডান।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 8 April 2019, 11:42 AM
Updated : 8 April 2019, 02:23 PM

ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের দশম রাউন্ডের ম্যাচে ডাকওয়ার্থ ও লুইস পদ্ধতিতে ১৩৩ রানে জিতেছে মোহামেডান। ২৯৬ রান তাড়ায় প্রাইম ব্যাংক ৩৯.১ ওভারে ৯ উইকেটে ১৫০ রান করার পর আলোকস্বল্পতায় খেলা বন্ধ হয়ে যায়। সে সময় জয়ের জন্য ডাকওয়ার্থ ও লুইস পদ্ধতিতে তাদের প্রয়োজন ছিল ২৮৪ রান।

বিকেএসপির চার নম্বর মাঠে সোমবার টস হেরে ব্যাট করতে নেমে নাঈম হাসান, মনির হোসেন ও আল আমিন হোসেনের ছোবলে শুরুতেই চাপে পড়ে মোহামেডান। আবার ভালো শুরুটা বড় করতে ব্যর্থ হলেন লিটন দাস। ৩৫ বলে পাঁচ চার ও এক ছক্কায় এই ওপেনার ফিরে যান ৩৬ রান করে।

লিটনের ঝড়ো ব্যাটিংয়ের পরও ২৩তম ওভারে ৮৮ রান তুললেই ৫ উইকেট হারিয়ে ফেলে মোহামেডান। সেখান থেকে দলকে তিনশ রানের কাছে নিয়ে যান রকিবুল। শুরুতে একটু সময় নেন অভিজ্ঞ এই মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান। ভারতীয় অলরাউন্ডার রজত ভাটিয়াকে নিয়ে শতরানের জুটিতে দলকে পথ দেখান তিনি।

৬০ বলে তিন ছক্কা ও চারটি চারে ৬৬ রান করা ভাটিয়াকে ফিরিয়ে ১৪৬ রানের জুটি ভাঙেন আব্দুর রাজ্জাক। সোহাগের সঙ্গে রকিবুল উপহার দেন ৫০ রানের আরেকটি ভালো জুটি।

নাঈমের এক ওভার থেকে তিন ছক্কা ও দুই চারে ২৮ রান নেন সোহাগ। ১৪ বলে ৩৩ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলা এই অফ স্পিনিং অলরাউন্ডারকে ফিরিয়ে দেন আল আমিন।

এবারের আসরে ষষ্ঠ পঞ্চাশ ছোঁয়া ইনিংসে রকিবুল পেলেন প্রথম সেঞ্চুরি। লিস্ট ‘এ’ ক্যারিয়ারে ষষ্ঠ সেঞ্চুরি পাওয়া ডানহাতি এই ব্যাটসম্যানের ১০৪ বলের দায়িত্বশীল ইনিংস গড়া ১১ চার ও এক ছক্কায়।

প্রাইম ব্যাংকের মনির, নাঈম, আল আমিন ও রাজ্জাক নেন দুটি করে উইকেট।

নাজমুল হোসেনের সঙ্গে ৪৮ রানের উদ্বোধনী জুটিতে দলকে ভালো শুরু এনে দেন এনামুল হক। তবে ৩ বলের মধ্যে দুই ওপেনারকে ফিরিয়ে দেন সোহাগ। এই অফ স্পিনার পরে তুলে নেন আল আমিন জুনিয়রের উইকেট।

ব্যাটিংয়ে হতাশ করা মোহাম্মদ আশরাফুলও যোগ দেন উইকেট শিকারে। ছন্দে থাকা অভিমান্যু ঈশ্বরণকে ফেরানোর পর বিদায় করেন আরিফুল হক ও নাহিদুল ইসলামকে। শুরুর জুটির পর আর তেমন কোনো জুটি গড়তে পারেনি প্রাইম ব্যাংক। দায়িত্ব নিয়ে দলকে টানতে পারেননি কেউই।

২১ রানে ৪ উইকেট নিয়ে মোহামেডানর সফলতম বোলার সোহাগ। আশরাফুল ৩ উইকেট নেন ৩৭ রানে। 

দাপুটে সেঞ্চুরিতে ব্যবধান গড়ে দেওয়া রকিবুল জেতেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার।

পঞ্চম জয়ে ১০ পয়েন্ট নিয়ে পাঁচ নম্বরে উঠে এসেছে মোহামেডান। আগেই সুপার সিক্স নিশ্চিত করা প্রাইম ব্যাংক ১৪ পয়েন্ট নিয়ে আছে তিন নম্বরে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

মোহামেডান স্পোর্টি ক্লাব: ৫০ ওভারে ২৯৬/৯ (লিটন ৩৬, শুক্কুর ০, অভিষেক ২০, রকিবুল ১০২, আশরাফুল ৪, নাদিফ ১১, ভাটিয়া ৬৬, সোহাগ ৩৩, রাহাতুল ৮*, শফিউল ২; আল আমিন ২/৫৪, মনির ২/৩৭, নাহিদুল ০/৪১, নাঈম ২/৫৩, রাজ্জাক ২/৬৫, আরিফুল ০/৩৩, কাপালী ০/৪)

প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব: (লক্ষ্য ৩৯.১ ওভারে ২৮৪) ৩৯.১ ওভারে ১৫০/৯ (এনামুল ২৬, নাজমুল ১৯, ঈশ্বরণ ২২, আল আমিন জুনিয়র ৫, আরিফুল ১২, কাপালী ১৫, নাহিদুল ২৮, নাঈম ১৮*, মনির ১, রাজ্জাক ০, আল আমিন ০*; শফিউল ০/৩১, সাকলাইন ১/২২, সোহাগ ৪/২১, রাহাতুল ১/৩২, আশরাফুল ৩/৩৭, ভাটিয়া ০/৬)

ফল: ডাকওয়ার্থ ও লুইস পদ্ধতিতে ১৩৩ রানে জয়ী মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব

ম্যান অব দা ম্যাচ: রকিবুল হাসান