দুই রাব্বির ব্যাটিং তাণ্ডব ছাপিয়ে প্রাইম ব্যাংকের জয়

দুই জনের সেঞ্চুরি, দুইশ ছুঁইছুঁই জুটি। শেষ ১০ ওভারে ফজলে মাহমুদ রাব্বি ও ইয়াসির আলি চৌধুরী রাব্বির টর্নেডো ব্যাটিং। ব্রাদার্সের বড় সংগ্রহ। লাভ হলো না কোনো কিছুতেই। অসাধারণ রান তাড়ায় ওই পাহাড় টপকে জিতল প্রাইম ব্যাংক।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 March 2019, 11:53 AM
Updated : 30 March 2019, 12:37 PM

ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে ব্রাদার্স ইউনিয়নকে ৫ উইকেটে হারিয়েছে প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব। ৭ ম্যাচে পেয়েছে ষষ্ঠ জয়।

মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে শনিবার ৫০ ওভারে ব্রাদার্স তোলে ২ উইকেটে ৩৩০ রান। সেঞ্চুরি করেন ওপেনার মিজানুর রহমান। তিনে নেমে ফজলে মাহমুদ উপহার দেন ১৪৯ রানের অপরাজিত ইনিংস। শেষ দিকে ঝড় তোলেন ইয়াসির।

প্রাইম ব্যাংকের ইনিংসে সেঞ্চুরি নেই কারও। তবে শুরুতে রান তাড়ার সাহস জোগায় এনামুল হকের ব্যাট। তিনে নামা অভিমন্যু ইশ্বরণ দলকে এগিয়ে নেন অনেকটা দূর। মাঝের ওভারগুলোয় রানের গতি ধরে রাখেন আল আমিন। আর নান্দনিক ব্যাটিংয়ে কাজ শেষ করেন অভিজ্ঞ অলক কাপালী। প্রাইম ব্যাংক জিতে যায় ৭ বল বাকি রেখেই।

মিরপুরের উইকেট এ দিন ছিল নিখাদ ব্যাটিং বান্ধব। সীমানাও খানিকটা ছোট করে দেওয়া হয়। তাতে রান উৎসবে মেতে ওঠে দুদলই।

টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা ব্রাদার্স ওপেনার জুনায়েদ সিদ্দিককে হারায় দ্রুতই। দ্বিতীয় উইকেটে দারুণ জুটিতে দলকে বড় স্কোরের পথে এগিয়ে নেন মিজানুর ও ফজলে মাহমুদ। ৮ চার ও ৫ ছক্কায় ১০৮ বলে মিজানুর স্পর্শ করেন এবারের লিগে তার দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। আউট হয়ে যান তার পরের বলেই। ভাঙে ১৯৩ রানের জুটি।

পরের জুটিতে রীতিমতো তাণ্ডব চালান ফজলে মাহমুদ ও ইয়াসির। সেঞ্চুরি ছুঁতে ১২৩ বল লেগে যায় ফজলে মাহমুদের। এরপর তার ব্যাট হয়ে ওঠে উন্মত্ত। আরেক পাশে ইয়াসির তুলোধুনো করতে থাকেন বোলারদের।

১২ ওভারে ১২৭ রান যোগ করেন দুজন। তাতে ফজলে মাহমুদের অবদান ৩৫ বলে ৬১, ইয়াসিরের ৩৭ বলে ৬১।

অভিজ্ঞ বাঁহাতি স্পিনার মনির হোসেনের করা ইনিংসের শেষ ওভার থেকে আসে ২২ রান। ইনিংসের শেষ বলে ছক্কায় ফজলে মাহমুদ ছাড়িয়ে যায় তার আগের সেরা ১৪৮ রানকে। ১৪৭ বলে ১৪৯ রানের অপরাজিত ইনিংসে ছয় ৫টি, চার ১৩টি। ইয়াসিরের ইনিংসে ছক্কা ৩টি, চার ৬টি। শেষ ১০ ওভারে ব্রাদার্স তোলে ১২৩ রান!

প্রাইম ব্যাংকের রান তাড়ায় শুরু থেকেই ছিল জয়ের তাড়নার ইঙ্গিত। ওপেনার সালমান হোসেন ১৩ রানে ফিরলেও আরেক ওপেনার এনামুল খেলেন দারুণ সব শট। ১০ চারে ৪৭ বলে ৫৪ রানের ইনিংসটি অবশ্য শেষ হয়েছে বাজে শটে।

তবে অধিনায়কের বিদায়ে ভড়কে যায়নি দল। ভারতীয় ব্যাটসম্যান ইশ্বরণ রানের গতি ধরে রাখার পাশাপাশি আগলে রাখেন এক পাশ। আল আমিন উইকেটে গিয়েই দুর্দান্ত সব শটে বাড়াতে থাকেন রান।

৪৭ বলে ৫২ করে বিদায় নেন আল আমিন। প্রাইম ব্যাংক এরপরও পেয়ে যায় আরেকটি কার্যকর জুটি। এবার ইশ্বরণকে সঙ্গ দেন অলক। পঞ্চম জুটিতে আসে ১০১ রান। এই জুটিই মূলত জয়ের কাছে টেনে নেয় দলকে।

বাঁহাতি স্পিনার নাঈম ইসলাম জুনিয়রের বাড়তি লাফানো বলে ইশ্বরণ আউট হন ৯৬ বলে ৯০ রান করে। নাজমুল ইসলাম মিলন ফেরেন অল্পতে। কিন্তু অলকের ব্যাট নির্ভরতা জুগিয়ে দলকে এগিয়ে নেয় জয়ের ঠিকানায়।

৪৯ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে অলককে ভরসা জোগান নাহিদুল ইসলাম। ৬ চার ও ৩ ছক্কায় ৬৫ বলে ৮২ রানের অপরাজিত ইনিংসে দলকে জিতিয়ে ফেরেন অলক।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

ব্রাদার্স: ৫০ ওভারে ৩৩০/২ (মিজানুর ১০০, জুনায়েদ ৭, ফজলে মাহমুদ ১৪৯*, ইয়াসির ৬১*; সাদ্দাম ৭-০-৬৮-০, সালমান ২-০-২১-০, নাঈম ১০-১-৬২-১, মনির ৯-০-৫৯-০, নাহিদুল ৮-০-৪৫-০, রাজ্জাক ১০-০-৪৮-০, অলক ৩-০-১৬-০, আল আমিন ১-০-১০-০)।

প্রাইম ব্যাংক: ৪৮.৫ ওভারে ৩৩১/৫ (এনামুল ৫৪, সালমান ১৩, ইশ্বরণ ৯০, আল আমিন ৫২, অলক ৮২*, মিলন ১, নাহিদুল ২৩*; সাজেদুল ১০-০-৭০-৩, হাবিবুর ৩-০-২২-০, ইবাদত ৭-০-৫৬-০, শরিফ ৯.৫-০-৬০-১, শরিফউল্লাহ ৯-০-৬৭-০, নাঈম জুনিয়র ১০-০-৫২-১)।

ফল: প্রাইম ব্যাংক ৫ উইকেটে জয়ী

ম্যান অব দা ম্যাচ: ফজলে মাহমুদ রাব্বি