চারশ ছোঁয়ার ম্যাচে জয়ের নায়কও রাজ্জাক

চারশ উইকেট হতে প্রয়োজন ছিল কেবল একটি উইকেট। সেটি ধরা দিল নিজের প্রথম ওভারেই। ব্যক্তিগত লক্ষ্য ছোঁয়ার পর দলকে জেতানোর পালা। আব্দুর রাজ্জাক সেই কাজও করলেন সুনিপুণভাবে। অভিজ্ঞ স্পিনার যেন ফিরে গেলেন নিজের সেরা দিনগুলোয়। দারুণ বোলিংয়ে ছড়ালেন মুগ্ধতা। মাইলফলকের ম্যাচ রাঙালেন প্রাইম ব্যাংককে জিতিয়ে, নিজে ম্যাচ সেরা হয়ে।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 March 2019, 12:58 PM
Updated : 27 March 2019, 12:58 PM

বাংলাদেশের প্রথম বোলার হিসেবে লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে চারশ ছুঁয়েছেন রাজ্জাক, নিয়েছেন চার উইকেট। উত্তরা স্পোর্টিং ক্লাবকে ৫৭ রানে হারিয়েছে প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব।

মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে বুধবার বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে প্রাইম ব্যাংক ৩৮ ওভারে তোলে ২৩০ রান। ডাকওয়ার্থ লুইস পদ্ধতিতে উত্তরার লক্ষ্য দাঁড়ায় ৩৮ ওভারে ২৪০। থমকে যায় তারা ১৮২ রানে।

টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা প্রাইম ব্যাংক ওপেনার জাকির হাসানকে হারায় দ্রুতই। দ্বিতীয় উইকেটে সেই ধাক্কা সামাল দেন এনামুল হক ও অভিমন্যু ইশ্বরণ। দুজনে গড়েন ৭৪ রানের জুটি।

তবে দুজন আউট হয়ে যান পরপর দুই ওভারে। টানা তিন সেঞ্চুরির পর এনামুল উইকেটে জমে গিয়েছিলেন এ দিনও। তবে টানা চার আর হয়নি। আউট হয়ে যান ৫০ বলে ৩৬ রানে। পরের ওভারে ইশ্বরণের বিদায় ৪৬ বলে ৩৫ রানে।

২২.৩ ওভারে প্রাইম ব্যাংকের রান যখন ৩ উইকেটে ৯৮, বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ থাকে আড়াই ঘণ্টা। ম্যাচ নেমে আসে ৩৮ ওভারে।

ম্যাচের দৈর্ঘ্য কমায় আল আমিন ও সালমানের ব্যাটে দেখা যায় দ্রুত রানের তাড়া। চতুর্থ উইকেট জুটিতে আসে ৯০ রান।

৫ চার ও ২ ছক্কায় ৪৭ বলে ৬০ করেন আল আমিন, ৪২ বলে ৩৭ সালমান। পরে অলক কাপালীর ১৫ বলে ১৯ ও নাজমুল হোসেন মিলনের ১৮ বলে অপরাজিত ২৫ রানে সমৃদ্ধ হয় প্রাইম ব্যাংকের ইনিংস।

উত্তরার রান তাড়ার শুরুতে ছিল চ্যালেঞ্জ জানানোর ইঙ্গিত। দুই তরুণ তানজিদ হাসান ও আনিসুল ইসলাম ইমন বলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে গড়েন ৬৪ রানের উদ্বোধনী জুটি।

৩২ বলে ৩৫ রান করা তানজিদকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন অফ স্পিনার নাঈম হাসান। এরপরই দৃশ্যপটে রাজ্জাক। নিজের প্রথম ওভারে বোল্ড করে দেন ৩৩ বলে ৩৩ করা ইমনকে। পূর্ণ করেন চারশ উইকেট।

এরপর রাজ্জাকের বোলিংয়েই ভেঙে পড়ে উত্তরার ব্যাটিং। দুর্দান্ত এক স্পেলে পরের তিন উইকেটও নিয়েছেন অভিজ্ঞ বাঁহাতি স্পিনার। এরপর রান আউট করেছেন এক প্রান্ত আগলে রাখা মোহাইমনুল ইসলামকে (৩০)। শেষ হয়ে যায় উত্তরা সম্ভাবনা।

পরে দুটি করে চার ও ছক্কায় ৩৯ রান করেছেন শেখ হুমায়ুন। তাতে কেবল হারের ব্যবধান কিছুটা কমেছে।

৮ ওভারে ১ মেডেন নিয়ে ১৫ রানে ৪ উইকেট নিয়েছেন রাজ্জাক। লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে চার উইকেট নিলেন ১১ বার। আরও ৯ বার নিয়েছেন ৫ উইকেট।

৬ ম্যাচে প্রাইম ব্যাংকের এটি পঞ্চম জয়, উত্তরার পঞ্চম পরাজয়।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

প্রাইম ব্যাংক: ৩৮ ওভারে ২৩০/৭ (এনামুল ৩৬, জাকির ২, ইশ্বরণ ৩৫, আল আমিন ৬০, সালমান ৩৭, অলক ১৯, মিলন ২৫*, নাহিদুল ০; নাহিদ ১/৪৭, রশিদ ০/৪৪, সাজ্জাদ ১/৪৫, পায়েল ২/২৯, মোহাইমিনুল ০/২৪, হুমায়ুন ০/৮, ইমন ৩/২৪)।

উত্তরা স্পোর্টিং: (ডাকওয়ার্থ-লুইস পদ্ধতিতে লক্ষ্য ৩৮ ওভারে ২৪০) ৩৮ ওভারে ১৮২/৮ (তানজিদ ৩৫, ইমন ৩৩, মোহাইমিনুল ৩০, আবরার ১০, মিনহাজুল ১১, শাকির ২, হুমায়ুন ৩৯*, সাজ্জাদ ১, রশিদ ৪, নাহিদ ১১*; নাহিদুল ০/৫১, মনির ০/২৮, নাঈম ২/৪২, সালমান ২/১২, রাজ্জাক ৪/১৫, অলক ০/২৩, মিলন ০/৮)।

ফল: প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব ৫৭ রানে জয়ী

ম্যান অব দা ম্যাচ: আব্দুর রাজ্জাক