আবাহনীর জয়ে জহুরুলের ৪ রানের হতাশা

ম্যাচ শেষে হাসি মুখেই ড্রেসিং রুম থেকে বের হলেন জহুরুল ইসলাম। বললেন, দল জিতেছে তাতেই খুশি। কিন্তু সেই আনন্দে ব্যক্তিগত আক্ষেপ খানিকটা না থেকে পারেই না। মোহামেডানের বিপক্ষে আবাহনীকে জিতিয়ে ম্যাচ সেরা হয়েছেন এই ওপেনার। কিন্তু মাত্র ৪ রানের জন্য করতে পারেননি লিগে দ্বিতীয় সেঞ্চুরি।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 25 March 2019, 12:29 PM
Updated : 25 March 2019, 12:29 PM

আবাহনী ও মোহামেডানের লড়াই অনেক দিন ধরেই ঐতিহ্যের কঙ্কাল। ঢাকার ক্রিকেটে দুই দল চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী এখন কেবল কাগজে-কলমেই। ম্যাচের আবহে, দর্শক উপস্থিতিতে উত্তেজনা নেই। মাঠের লড়াইয়েও নেই আগের ঝাঁঝ। এবারও ম্যাচ হলো নিরুত্তাপ। মোহামেডানকে অনায়াসেই ৬ উইকেটে হারাল আবাহনী।

মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে সোমবার ৫০ ওভারে মোহামেডান তুলেছিল ৭ উইকেটে ২৪৮। আবাহনী জিতেছে ১৫ বল বাকি রেখে।

৬ ম্যাচে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন আবাহনীর এটি পঞ্চম জয়। সমান ম্যাচে মোহামেডানের জয়-হার তিনটি করে।

টস হেরে সকালে ব্যাটিংয়ে নেমে মোহামেডানের শুরুটা ছিল মন্থর। ঘাসের ছোঁয়া থাকা উইকেটে বাউন্স ছিল খানিকটা অসমান। প্রথম স্পেলে মাশরাফি বিন মুর্তজা ও সাইফ উদ্দিনের দারুণ বোলিংয়ে ব্যাটে-বলে করতেই ধুঁকছিলেন লিটন দাস ও আব্দুল মজিদ। প্রথম ৭ ওভারে রান ছির ১৯।

নিউ জিল্যান্ড সফর থেকে ফিরে প্রথম খেলতে নামা লিটন এরপর চেষ্টা করেছেন ইনিংসকে একটু গতি দিতে। কিন্তু স্পিন আক্রমণে আসতেই শেষ তার দৌড়। বাঁহাতি স্পিনার নাজমুল অপুর বলে আউট ৩৮ বলে ২৭ রানে।

আগের দুই ম্যাচে সেঞ্চুরি ও ফিফটি করা মজিদ এরপরও ধুঁকছিলেন মজিদ। শেষ পর্যন্ত তার অস্বস্তিতে ভরা ইনিংস শেষ হয় ৬৭ বলে ২৬ রানে।

তৃতীয় উইকেটে ইরফান শুক্কুর ও রকিবুল হাসান গড়েছেন ৬৮ রানের জুটি। রানের গতি খুব বাড়েনি এই জুটিতেও। ৭৮ বলে ৫৭ করেন ইরফান। রকিবুল চেষ্টা করেছেন বলপ্রতি রান করতে। ৫১ করেছেন ৫৪ বলে।

শেষ দিকে খানিকটা দ্রুত রান আসে। ২৪ বলে ৩২ রান করেন শ্রীলঙ্কান চতুরঙ্গা ডি সিলভা। মাশরাফিকে দুটি ছক্কায় সোহাগ গাজী করেন ২০ বলে ২৭। তার পরও আড়াইশ ছুঁতে পারেনি মোহামেডান।

আট নম্বরে ব্যাটিং পেয়ে মোহাম্মদ আশরাফুল ৭ বলে করেছেন কেবল ৪ রান। তবে বোলিংয়ে নতুন বলে এক পাশে তার অফ স্পিন দিয়ে আক্রমণ শুরু করে মোহামেডান। সেই ফাটকা কাজে লাগেনি। জহুরুল ও সৌম্য সরকার আবাহনীকে এনে দেন ১০৫ রানের উদ্বোধনী জুটি।

শুরুতে জহুরুলই ছিলেন বেশি রান পিয়াসী, সৌম্য ছিলেন সাবধানী। পরে সৌম্য খেলেছেন দারুণ কিছু শট। আউটও হন তিনিই আগে। শাহাদাত হোসেনের শিকার হন ৫৪ বলে ৪৩ রান করে।

আবাহনীর রান তাড়া তাতে খুব বাধাগ্রস্ত হয়নি। ফর্মে থাকা ওয়াসিম জাফরকে নিয়ে দ্বিতীয় উইকেটে ৬৯ রানের জুটি গড়েন জহুরুল। ৪২ বলে ৩৮ রান করে আউট হন ওয়াসিম।

আবাহনীর জয় তখন কেবল সময়ের ব্যাপার। অপেক্ষা ছিল জহুরুলের সেঞ্চুরিও। লিগের প্রথম ম্যাচে পুরো ৫০ ওভার খেলে অপরাজিত ১২১ রানের অসাধারণ ইনিংস খেলেছিলেন এই ওপেনার। পঞ্চম ম্যাচে সুবাস পাচ্ছিলেন আরেকটি সেঞ্চুরির। কিন্তু শাহাদাতের ইয়র্কার তাকে থামিয়ে দিয়েছে ৯৬ রানে।

এরপর মোসাদ্দেক হোসেন ও সাব্বির রহমান সেরেছেন শেষের আনুষ্ঠানিকতা। মজিদের বল লং অন দিয়ে গ্যালারিতে পাঠিয়ে ম্যাচ শেষ করেছেন সাব্বির।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

মোহামেডান : ৫০ ওভারে ২৪৮/৭ (লিটন ২৭, মজিদ ২৬, ইরফান ৫৭, রকিবুল ৫১, নাদিফ ৭, চতুরঙ্গা ৩২, সোহাগ ২৭, আশরাফুল ৪*, আলাউদ্দিন ২*; মাশরাফি ৯-০-৫১-০, সাইফ ৯-২-৩১-৩, রুবেল ১০-১-৭১-০, অপু ৯-০-২৯-৩, সৌম্য ২-০-১০-০, মোসাদ্দেক ৬-০-২৭-১, সানজামুল ৫-০-২৩-০)।

আবাহনী : ৪৭.৩ ওভারে ২৩৬/৪ (জহুরুল ৯৬, সৌম্য ৪৩, ওয়াসিম ৩২, শান্ত ১৬, মোসাদ্দেক ১৮*, সাব্বির ২১*; শফিউল ৯-১-৫৪-১, আশরাফুল ৫-০-২১-০, সোহাগ ৮-০-৫১-০, শাহাদাত ১০-০-৫৯-২, চতুরঙ্গা ১০-০-২৭-১, আলাউদ্দিন ৫-০-২৭-০, মজিদ ০.৩-০-৭-০)।

ফল: আবাহনী লিমিটেড ৬ উইকেটে জয়ী

ম্যান অব দা ম্যাচ: জহুরুল ইসলাম