ব্যাটে-বলে প্রাইম ব্যাংকের নায়ক আরিফুল

বল হাতে দুর্দান্ত প্রথম স্পেলে দুটি উইকেট। শেষ দিকে ফিরে দুই ওভারে উইকেট আরও দুটি। ব্যাট হাতে কার্যকর এক ইনিংসে দলকে জয়ের ঠিকানায় পৌঁছে দেওয়া। ছোটো রানের ম্যাচে বড় ব্যবধান গড়ে দিলেন আরিফুল হক। এই অলরাউন্ডারের দারুণ পারফরম্যান্সে জয়ে লিগ শুরু করল প্রাইম ব্যাংক।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 March 2019, 12:29 PM
Updated : 9 March 2019, 12:29 PM

ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে খেলাঘর সমাজ কল্যান সমিতিকে ২ উইকেটে হারিয়েছে প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব।

মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে শনিবার আরিফুল নেন ২৪ রানে ৪ উইকেট। খেলাঘর অলআউট হয় ১৯৫ রানে। রান তাড়ায় খুব সুবিধে করতে পারছিল না প্রাইম ব্যাংক। ছয়ে নামা আরিফুল এক প্রান্তে আগলে রেখে অপরাজিত ৩২ রানে দলকে পার করান শেষে বৈতরণী। প্রাইম ব্যাংক জেতে তিন ওভার বাকি থাকতে।

মিরপুরে ঢাকা লিগের আগের ম্যাচটির মতো এ দিনের উইকেটেও ঘাস ছিল বিচ্ছিন্নভাবে। উইকেট ছিল দুইরকম গতির, বাউন্স অসমান। ব্যাটসম্যানদের ভুগতে হয়েছে আবার।

টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা খেলাঘর শুরুতে উইকেট খুব বেশি না হারালেও ধুঁকেছে রান তুলতে। নতুন বলে প্রাইম ব্যাংকের পেসার আল আমিন হোসেন ফিরিয়ে দেন ওপেনার মাহিদুল ইসলাম অঙ্কনকে।

প্রথম পরিবর্ত পেসার হিসেবে আক্রমণে এসে আরিফুল হক ছিলেন প্রায় নিখুঁত। প্রথম ৫ ওভারের প্রতিটিতে দিয়েছেন কেবল ১ রান করে। নিয়েছেন ওপেনার রবিউল ইসলাম রবি ও চারে নেমে দারুণ শুরু করা মোসাদ্দেক ইফতেখারের উইকেট।

খেলাঘরের সেরা জুটি ছিল চতুর্থ উইকেটে। অমিত মজুমদার ও অশোক মেনারিয়া তোলেন ৫৬ রান। দীর্ঘক্ষণ উইকেট আগলে রাখা অমিত ৭০ বলে ৩৬ করে ফেরেন আব্দুর রাজ্জাকের বলে।

গত মৌসুমে খেলাঘরের সাফল্যে বড় অবদান রাখা ভারতীয় ব্যাটসম্যান মেনারিয়া এবারও শুরুটা করেছিলেন ভালো। কঠিন উইকেটেও খেলছিলেন দারুণ। কিন্তু ৪২ বলে ৩৫ রান করা ব্যাটসম্যানকে থামান অলক কাপালী।

অলকের লেগ স্পিনে পরে উইকেট ধরা দেয় আরও দুটি। খেলাঘর অধিনায়ক নাজিমউদ্দিন চেষ্টা করছিলেন শেষ দিকে রান বাড়াতে। তাকে ২৯ রানে বিদায় করার পর শেষ ব্যাটসম্যানকেও ফিরিয়ে খেলাঘরের ইনিংস শেষ করেন আরিফুল।

প্রাইম ব্যাংকের রান তাড়ার শুরুটা দেখে বোঝা যায়নি এতটা ভুগতে হবে জিততে। উদ্বোধনী জুটিতে এনামুল হক ও রুবেল মিয়া দলকে এনে ৬৩ রানের জুটি।

অধিনায়ক এনামুল ফেরেন ৬ চারে ৪৬ বলে ৩৭ রান করে। প্রিমিয়ার লিগ টি-টোয়েন্টির সর্বোচ্চ রান স্কোরার রুবেল একদিনের আসরের শুরুতেও ছিলেন আত্মবিশ্বাসী। কিন্তু ফিফটি করতে পারেননি তিনি। দারুণ কয়েকটি শট খেলে ফেরেন ৫৯ বলে ৪৬ রান করে।

এমন শুরুর পরও প্রাইম ব্যাংক পথ হারায় মাঝে। মিডল অর্ডারে জাকির হাসান, আল আমিন, অলকরা পারেননি টিকতে। ভারতীয় ব্যাটসম্যান সুদিপ চ্যাটার্জিকে অল্পতে থামান দারুণ বোলিং করা পেসার ইরফান হোসেন। ১৩২ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে প্রাইম ব্যাংক পড়ে যায় হারের শঙ্কায়।

আরিফুল হাল ধরেন সেখানেই। আটে নামা নাহিদুল ইসলামের ৩৩ বলে ৩১ রানের ইনিংস চাপ কমিয়ে দেয় অনেকটা।

শেষ দিকে নাহিদুল ও মোহর শেখ দ্রুত ফিরলেও আস্থা হয়ে থেকে দলকে জিতিয়ে ফেরেন আরিফুল। একটি করে চার ও ছক্কায় ৫২ বলে অপরাজিত থেকে যান ৩২ রানে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

খেলাঘর : ৪৬.৫ ওভারে ১৯৫ (রবি ১৬, অঙ্কন ৪, অমিত ৩৬, ইফতেখার ১৯, মেনারিয়া ৩৫, নাজিমউদ্দিন ২৯, মইনুল ০, মাসুম ১৭, রবিউল ১৪*, ইরফান ১, তানভির ৫; মোহর ০/৪২, আল আমিন হোসেন ১/২৭, আরিফুল ৪/২৪, নাহিদুল ০/৩২, আল আমিন ০/১৬, রাজ্জাক ১/২৮, অলক ৩/২০)।

প্রাইম ব্যাংক: ৪৭ ওভারে ১৯৬/৮ (এনামুল ৩৭, রুবেল ৪৬, সুদিপ ১৪, জাকির ৬, আল আমিন ১২, আরিফুল ৩২*, অলক ৪, নাহিদুল ৩১, মোহর ৬, রাজ্জাক ১*; রবিউল ২/৪০, তানভির ০/৩২, ইরফান ৩/৪০, মাসুম ১/২৬, ইফতেখার ১/২১, রবি ১/১৬, মইনুল ০/১৪, মেনারিয়া ০/৬)।

ফল: প্রাইম ব্যাংক ২ উইকেটে জয়ী

ম্যান অব দা ম্যাচ: আরিফুল হক