শফিউলের ক্যারিয়ার সেরা বোলিং, রকিবুলের ব্যাটিং বীরত্ব

ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো পাঁচ উইকেট নিয়ে গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সকে শুরুতেই এলোমেলো করে দিলেন শফিউল ইসলাম। তৌহিদ তারেক ও শামসুল ইসলামের ব্যাটে তবুও হলো লড়াই করার মতো রান। ব্যাটিং ব্যর্থতায় পৌনে দুইশ রানের সেই লক্ষ্য হয়ে গেল দূরের পথ। লড়াকু ব্যাটিংয়ে পথ দেখালেন রকিবুল হাসান। অধিনায়কের ব্যাটিং বীরত্বে নাটকীয় জয়ে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ শুরু করল মোহামেডান।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 9 March 2019, 11:40 AM
Updated : 9 March 2019, 11:40 AM

প্রথম রাউন্ডের ম্যাচে ৩ উইকেটে জিতেছে রকিবুলের দল। ১৮৩ রানের লক্ষ্য ২৮ বল বাকি থাকতে ছুঁয়ে ফেলে তারা।

বিকেএসপির তিন নম্বর মাঠে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শফিউলের বোলিং তোপে এলোমেলো হয়ে যায় গাজী। ২৬ রানের মধ্যে হারিয়ে ফেলে প্রথম ছয় ব্যাটসম্যানকে।

মেহেদি হাসানকে প্রথম ওভারে এলবিডব্লিউ করে শিকার শুরু করেন শফিউল। পরের ওভারে ফিরে পরপর দুই বলে বিদায় করেন রনি তালুকদার ও শামসুর রহমানকে। চতুর্থ ওভারে ইমরুল কায়েসের উইকেট তুলে নেন আলাউদ্দিন বাবু।

রায়হান উদ্দিন ও পারভেজ রসুলকে পরপর দুই ওভারে কট বিহাইন্ড করে দীর্ঘ অপেক্ষার অবসান হয় শফিউলের। লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে অভিষেকের এক যুগ পর এই সংস্করণে দেখা পেলেন পাঁচ উইকেটের।

শফিউল আক্রমণ থেকে সরে যাওয়ার পর চাপটা ধরে রাখতে পারেননি মোহামেডানের স্পিনাররা। সুযোগ কাজে লাগিয়ে তৌহিদ তারেকের সঙ্গে ১০১ রানের জুটিতে দলকে এগিয়ে নেন কিপার-ব্যাটসম্যান শামসুল। চারটি চার ও একটি ছক্কায় ৭০ বলে ৫৬ রান করা তারেককে ফিরিয়ে বিপজ্জনক হয়ে ওঠা জুটি ভাঙেন মোহাম্মদ আশরাফুল।

আবু হায়দারের সঙ্গে ৫১ রানের আরেকটি ভালো জুটিতে দলকে দুইশ রানে নিয়ে যাওয়ার আশা জাগান শামসুল। তবে এক ছক্কায় ২৬ রান করে আবু হায়দার ফিরে গেলে আর খুব একটা এগোয়নি গাজীর ইনিংস। শামসুল তিন চারে ১১১ বলে খেলেন অপরাজিত ৭১ রানের দায়িত্বশীল ইনিংস।

৩২ রানে ৫ উইকেট নেন শফিউল। লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে তার আগের সেরা ছিল ২১ রানে ৪ উইকেট। অফ স্পিনার সোহাগ গাজী ২ উইকেট নেন ১৭ রানে।

ছোট রান তাড়ায় ভালো শুরুটা বড় করতে পারেননি মোহামেডানের দুই ওপেনার অভিষেক মিত্র ও আব্দুল মজিদ। গোল্ডেন ডাকের স্বাদ পান আশরাফুল ও ইরফান শুক্কুর। রান আউট হয়ে ফিরেন নাদিফ চৌধুরী ও বিপুল শর্মা। রুহেল আহমেদ ও কামরুল ইসলাম রাব্বির ছোবলে ৮৭ রানে ৬ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে মোহামেডান।

এক প্রান্ত আগলে রাখা রকিবুল প্রাথমিক প্রতিরোধ গড়েন সোহাগের সঙ্গে। ৪৪ বলে ২৯ রান করে সোহাগ ফিরে গেলে ভাঙে ৪৯ রানের জুটি। আলাউদ্দিনের সঙ্গে ৪৭ রানের জুটিতে জয় নিয়ে ফিরেন রকিবুল। মোহামেডান অধিনায়কের ১২৪ বলে খেলা ৮২ রানের দায়িত্বশীল ইনিংস গড়া ছয় চার ও এক চারে।

গাজীর রুহেল ও রাব্বি নেন দুটি করে উইকেট।

দারুণ বোলিংয়ে সুর বেঁধে দেওয়া শফিউল জেতেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্স: ৪৫.২ ওভারে ১৮২ (মেহেদি ১, ইমরুল ৭, রনি ০, শামসুর ০, রসুল ৬, রায়হান ২, তারেক ৫৬, শামসুল ৭১*, আবু হায়দার ২৬, রাব্বি ২, রুহেল ০; শফিউল ৫/৩২, আলাউদ্দিন ১/২২, সাকলাইন ০/৩৬, সোহাগ ২/১৭, বিপুল ০/৪৫, আশরাফুল ১/২৮)

মোহামেডান: ৪৫.২ ওভারে ১৮৩/৭ (অভিষেক ২৪, মজিদ ১৩, আশরাফুল ০, রকিবুল ৮২*, শুক্কুর ০, নাদিফ ১, বিপুল ৯, সোহাগ ২৯, আলাউদ্দিন ১৪*; রুহেল ২/৩২, আবু হায়দার ০/৩৭, রাব্বি ২/১৯, মেহেদি ০/৩৬, রসুল ০/২৭, রায়হান ১/২৫)

ফল: মোহামেডান ৩ উইকেটে জয়ী

ম্যান অব দা ম্যাচ: শফিউল ইসলাম