রুবেলের ব্যাটিং আর দুর্দান্ত ক্যাচিংয়ে সেমিতে প্রাইম ব্যাংক

দুর্দান্ত ইনিংস খেলে দলের ব্যাটিং বয়ে নিলেন ওপেনার রুবেল মিয়া। অসাধারণ ক্যাচিংয়ে প্রতিপক্ষের কাজ কঠিন করে তুললেন ফিল্ডাররা। আবাহনীকে গুঁড়িয়ে সেমি-ফাইনালে উঠল প্রাইম ব্যাংক।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 27 Feb 2019, 10:19 AM
Updated : 27 Feb 2019, 10:19 AM

ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ টি-টোয়েন্টিতে ‘এ’ গ্রুপ থেকে সেমি-ফাইনালে পা রেখেছে প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব। গ্রুপের প্রথম ম্যাচে জয়ী দুই দলের লড়াইয়ে বুধবার আবাহনী লিমিটেডকে ৪৯ রানে হারিয়েছে প্রাইম ব্যাংক।

মিরপুর শেষ-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে প্রাইম ব্যাংকের ১৭৬ রানের জবাবে শুরু থেকেই ধুঁকতে থাকা আবাহনী করতে পেরেছে ১২৭ রান।

২০১৭ সালের জুনে ভিক্টোরিয়ার হয়ে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে লেখার পর এই প্রথম ঘরোয়া ক্রিকেটের শীর্ষ পর্যায়ে আবার খেলছেন রুবেল। আগের দিন টি-টোয়েন্টি অভিষেকে করেছিলেন ৪৩ বলে ৪৪। এবার ২৬ বছর বয়সী ব্যাটসম্যান ৫৬ বলে করেছেন ৭৬।

শুরুতে প্রাইম ব্যাংকের ইনিংস এগিয়ে নিয়েছেন রুবেলই। তার উদ্বোধনী জুটির সঙ্গী এনামুল হকের ব্যাট ছিল ঘুমিয়ে। পাওয়ার প্লেতে কোনো উইকেট না হারালেও রান আসে কেবল ৩১। তার ২৫ রানই ছিল রুবেলের।

এনামুলের রান এক পর্যায়ে ছিল ১৩ বলে ৬। পাওয়ার প্লে শেষ হতেই ঘুম ভাঙে তার। বাঁহাতি স্পিনার নাজমুল অপুকে টানা দুটি ছক্কা মারেন লং অন দিয়ে।

পরে অভিষিক্ত বাঁহাতি স্পিনার জাকারিয়া ইসলামকেও টানা দুটি ছক্কা মারেন এনামুল। পরের বলেই স্টাম্পড হয়ে যান বেরিয়ে খেলতে গিয়ে। শুরুর মন্থরতা পুষিয়ে দিয়ে ২২ বলে করেন ৩৭।

নতুন ব্যাটসম্যান জাকির হাসান উইকেটে গিয়ে শুরু করে বাউন্ডারিতে। ওভারের শেষ বলে রুবেল মারেন ছক্কা।

রুবেল ফিফটি স্পর্শ করেন ৪০ বলে। জাকির-আল আমিনরা শুরুটা দারুণ করলেও টিকতে পারেননি। দলকে এগিয়ে নেন রুবেলই। শেষ পর্যন্ত ১৯তম ওভারে আউট হন ৭ চার ও ৪ ছক্কায় ৭৬ করে।

আগের ম্যাচের নায়ক আরিফুল হক দুর্দান্ত এক পুল শটের ছক্কায় ১৫ বলে করেন ২১ রান। প্রাইম ব্যাংক পায় ভালো পুঁজি।

আবাহনীর রান তাড়া গতি পায়নি কখনোই। ওপেনার শাকিল হোসেন থার্ডম্যানে ধরা পড়েন মনির হোসেনের ভালো ক্যাচে। আরেক ওপেনার জাহিদ জাভেদ বোল্ড হন মোহর শেখের বাতাসে সুইং করা বলে।

আবাহনী সবচেয়ে বড় ধাক্কা খায় এরপরই। আল আমিন হোসেনের বলে স্কুপ করেছিলেন সাব্বির রহমান। শর্ট ফাইন লেগ থেকে পেছন দিকে অনেকটা ছুটে ডাইভ দিয়ে অসাধারণ ক্যাচ নেন মোহর।

এরপর একের পর এক উইকেট হারাতে থাকে দল। আরেকটি দুর্দান্ত ক্যাচে ফেরেন নাজমুল হোসেন শান্ত। অলক কাপালীর বলে শর্ট থার্ডম্যানে সামনে ঝাপিয়ে রিফ্লেক্স ক্যাচটি নেন আব্দুর রাজ্জাক। ১৪ বলে ১৭ করে আউট হন অধিনায়ক মোসাদ্দেক হোসেন।

নিউ জিল্যান্ড সফর থেকে ফিরে বিশ্রাম নেওয়ার কথা থাকলেও মোহাম্মদ সাইফ উদ্দিনকে নামিয়ে দেয় আবাহনী। বোলিং ভালো করলেও ব্যাটিংয়ে এই অলরাউন্ডার ফিরে যান ১২ রানে।

৭০ রানে ৭ উইকেট হারানোর পর ব্যাটিংয়ে নেমে স্টেডিয়ামের গুটিকয় দর্শককে বিনোদন দেন রুবেল হোসেন। ২৩ বলে করেন ক্যারিয়ার সেরা ৩৬ রান। আবাহনীর পরাজয়ের ব্যবধান এরর পরও অনেক বড়।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

প্রাইম ব্যাংক: ২০ ওভারে ১৭৬/৬ (এনামুল ৩৭, রুবেল ৭৬, জাকির ১৭, আল আমিন ২০, আরিফুল ২১, মিলন ১, অলক ০*, মনির ১*; সাইফ উদ্দিন ৪-০-২০-১, আরিফুল হাসান ৩-০-৩১-১, নাজমুল ৪-০-৩৫-০, জাকারিয়া ১-০-২৪-১, মোসাদ্দেক ২-০-১৪-০, সাব্বির ২-০-২২-১)।

আবাহনী: ২০ ওভারে ১২৭/৯ (শাকিল ৬, জাভেদ ৭, সাব্বির ৬, শান্ত ১১, মোসাদ্দেক ১৭, সাইফ ১২, তাপস ৪, অপু ৮, রুবেল ৩৬, আরিফুল হাসান ১৫*, জাকারিয়া ২*; মোহর ৪-০-২৬-৩, মনির ৪-০-২০-০, আল আমিন হোসেন ৪-১-২১-২, রাজ্জাক ৩-০-৩৪-০, অলক ৪-০-২২-৩, আল আমিন ১-০-৩-১)।

ফল: প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব ৪৯ রানে জয়ী

ম্যান অব দা ম্যাচ: রুবেল মিয়া