আরিফুল-মিলনের ঝড়ে প্রাইম ব্যাংকের জয়

এই ম্যাচের আগে টি-টোয়েন্টিতে ৫৩ ইনিংস খেলেছিলেন আরিফুল হক, ফিফটি ছিল না একটিও। অবশেষে সেই খরা ঘোচালেন ঝড়ো ফিফটিতে। ঘরোয়া ক্রিকেটে একসময় দ্রুতগতির ব্যাটিংয়ের জন্য পরিচিত ছিলেন নাজমুল হোসেন মিলন, কেউ কেউ ডাকত ‘ছক্কা মিলন’ নামেও। অনেক দিন পর তার ব্যাটে দেখা গেল পুরোনো ধার। দুজনের দারুণ ব্যাটিংয়ে ব্রাদার্স ইউনিয়নকে বিদায় করে প্রাইম ব্যাংক শুরু করল জয়ে।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 26 Feb 2019, 03:15 PM
Updated : 26 Feb 2019, 03:59 PM

ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ টি-টোয়েন্টিতে 'এ' গ্রুপের ম্যাচে ব্রাদার্সকে ৪৭ রানে হারিয়েছে প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব।

টানা দ্বিতীয় হারে টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে গেল ব্রাদার্স। সেমি-ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে বুধবার প্রাইম ব্যাংক মুখোমুখি হবে আবাহনীর। 

মিরপুর শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে মঙ্গলবার ৩৩ বলে ৫৯ করেছেন আরিফুল, ২১ বলে ৪৫ মিলন। ২০ ওভারে প্রাইম ব্যাংক তোলে ১৬৯ রান। ব্রাদার্স ধুঁকতে ধুঁকতে করতে পারে ১২২।

অথচ ম্যাচের শুরুতে ধুঁকছিল প্রাইম ব্যাংকই। টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা দলটির শুরু ছিল মন্থর। উইকেটও হারাতে হয়েছে নিয়মিত।

ওপেনিংয়ে অধিনায়ক এনামুল হক ফিরে যান ৯ বলে ৬ করে। পরে জাকির হাসান, আল আমিনরাও ছিলেন একই পথের পথিক। নবম ওভারে দলের রান ছিল ৩ উইকেটে ৪৭।

আরেক ওপেনার রুবেল মিয়া টিকেছিলেন আরেক প্রান্তে। দারুণ কয়েকটি শটও খেলেছেন। তবে তার ব্যাটে ছিল না টি-টোয়েন্টির গতি। ৪৩ বলে ৪৪ করে যখন আউট হলেন রুবেল, দলের রান রেট ঠিক ৬।

শম্বুক গতিতে এগোতে থাকা দল আচমকাই রকেটের গতিতে ছুটতে থাকে পরের জুটিতে। আরিফুল ও নাজমুলের ব্যাটে পিষ্ট হয় ব্রাদার্সের বোলিং। অবিচ্ছিন্ন পঞ্চম উইকেট জুটিতে ৩৮ বলে ৮৭ রানের জুটি গড়েন দুজন।

১৫ ওভারের পর থেকে শুরু হয় দুজনের ব্যাটিং তাণ্ডব। তরুণ পেসার মেহেদি হাসানের এক ওভারে দুজন নেন ১৭ রান। পরের তিন ওভার থেকেই এসেছে ১৮ রান করে। মোহাম্মদ শাহজাদাকে টানা দুই ছক্কায় ওড়ান মিলন, টানা দুটি ছক্কা মারেন রনি হোসেনকেও। শেষ ৫ ওভার থেকে প্রাইম ব্যাংক তোলে ৭৮ রান।

টি-টোয়েন্টিতে আরিফুলের আগের সর্বোচ্চ ছিল ৪৩। ক্যারিয়ারের প্রথম ফিফটি স্পর্শ করেন ২৯ বলে। ৪টি চার ও ২ ছক্কায় অপরাজিত ৩৩ বলে ৫৯। চার ছক্কায় মিলন ২১ বলে অপরাজিত ৪৫।

ব্রাদার্সের রান তাড়া সেভাবে পথে ছিল না কখনোই। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারেই মনির হোসেন ফেরান ওপেনার মিজানুর রহমানকে। মনিরকেই সুইপে ছক্কা মেরে পরের বলে আউট হন আরেক ওপেনার জুনায়েদ সিদ্দিক।

তিনে নেমে ফজলে মাহমুদ রাব্বি চেষ্টা করেছেন দলকে টেনে নিতে। কিন্তু মিডল অর্ডারে দাঁড়াননি একজনও। দল উইকেট হারায় নিয়মিত। ৩২ বলে ৩৯ করে আউট হয়ে যান ফজলে মাহমুদও। ব্রাদার্স পারেনি লক্ষ্যের ধারেকাছে যেতে।

প্রাইম ব্যাংকের সেরা দুই বোলার ছিলেন বিপিএলে দল না পাওয়া দুই স্পিনার মনির ও আব্দুর রাজ্জাক। প্রায় আড়াই বছর পর টি-টোয়েন্টি খেলতে নেমে ৪ ওভারে ২৪ রানে ৩ উইকেট নেন মনির। অভিজ্ঞ রাজ্জাক প্রায় দেড় বছর পর টি-টোয়েন্টি খেলতে নেমে ৪ ওভারে ১০ রানে নিয়েছেন ২ উইকেট।

ফিফটির পর বল হাতে একটি উইকেট নিয়ে ম্যাচ-সেরা আরিফুল। 

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

প্রাইম ব্যাংক: ২০ ওভারে ১৬৯/৪ (এনামুল ৬, রুবেল ৪৪, জাকির ৯, আল আমিন ২, আরিফুল ৫৯*, মিলন ৪৫*; মেহেদি ৪-০-৪৭-১, রনি ৪-০-৩৭-০, শরিফউল্লাহ ৪-০-২৩-২, নাঈম জুনিয়র ৪-০-১৫-০, শাহজাদা ৩-০-৩৭-১, ফজলে মাহমুদ ১-০-৯-০)।

ব্রাদার্স: ২০ ওভারে ১২২/৮ (মিজানুর ৭, জুনায়েদ ১৪, ফজলে মাহমুদ ৩৯, ইয়াসির ১০, শরিফুল ১৫, শরিফউল্লাহ ৪, জাহিদুজ্জামান ১১, শাহজাদা ১, নাঈম জুনিয়র ৪*, রনি ১০*; মিলন ১-০-৯-০, মনির ৪-০-২৪-৩, আল আমিন হোসেন ৪-০-২৩-১, আল আমিন ১-০-৩-০, রাজ্জাক ৪-০-১০-২, অলক ৪-০-২৯-১, আরিফুল ১-০-১৩-১, সালমান ১-০-৭-০)।

ফল: প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব ৪৭ রানে জয়ী

ম্যান অব দা ম্যাচ: আরিফুল হক