সাউদির দুর্দান্ত শেষ ওভারে সিরিজ নিউ জিল্যান্ডের

প্রাণপণ চেষ্টা করেও পারলেন না দিনেশ কার্তিক ও ক্রুনাল পান্ডিয়া। শেষ ওভারে দারুণ বোলিং করে রোমাঞ্চকর ম্যাচে ব্যবধান গড়ে দিলেন টিম সাউদি। ভারতকে হারিয়ে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতে নিল নিউ জিল্যান্ড।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 10 Feb 2019, 10:57 AM
Updated : 10 Feb 2019, 12:35 PM

তৃতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টিতে ৪ রানে জিতেছে কেন উইলিয়ামসনের দল। ২১২ রান তাড়ায় ২০৮ রানে থামে ভারত। ২-১ ব্যবধানে সিরিজ ঘরে তুলেছে নিউ জিল্যান্ড। এই প্রথম তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজে হারল ভারত।   

১৮তম ওভারে ১৮ রান দিয়েছিলেন সাউদি। শেষ ওভারে প্রয়োজন ছিল ১৬ রান। তবুও অভিজ্ঞ এই পেসারের ওপরই ভরসা রাখেন উইলিয়ামসন। আস্থার প্রতিদান দেন সাউদি, প্রথম পাঁচ বলে মাত্র ৪ রান দিয়ে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেন তিনি।

শেষ বলে ছক্কা হাঁকান কার্তিক, তাতে কেবল পরাজয়ের ব্যবধান কমে। ২২ বলে ৬৩ রানের বিধ্বংসী এক জুটিতেও ভারতকে জেতাতে পারেননি ক্রুনাল ও কার্তিক।

হ্যামিল্টনের সেডন পার্কে রোববার টস হেরে ব্যাট করতে নেমে টিম সাইফার্ট ও কলিন মানরোর ব্যাটে উড়ন্ত সূচনা পায় নিউ জিল্যান্ড। দলে ফেরা কুলদীপ যাদব ভাঙেন ৭.৪ ওভার স্থায়ী উদ্বোধনী জুটি।

রিস্ট স্পিনারের বলে স্টাম্পড হয়ে শেষ হয় কিপার সাইফার্টের ২৫ বলে তিনটি করে ছক্কা-চারে গড়া ৪৩ রানের বিস্ফোরক ইনিংস। রিপ্লেতে দেখা গেছে মহেন্দ্র সিং ধোনি বেলস ফেলে দেওয়ার সময় ব্যাটসম্যানের বুটের কিছু অংশ ছিল লাইনের ভেতরে। তবুও আউট দেন আম্পায়ার।

দ্বিতীয় উইকেটে কেন উইলিয়ামসনের সঙ্গে ৫৫ রানের জুটি গড়েন মানরো। একবার জীবন পাওয়া বিস্ফোরক এই ওপেনারকেও ফেরান কুলদীপ। ৪০ বলে পাঁচটি করে ছক্কা-চারে ৭২ রান করেন মানরো। ডানা মেলার আগেই উইলিয়ামসনকে ফেরান খলিল আহমেদ। 

ক্রিজে গিয়েই বোলারদের ওপর চড়াও হন কলিন ডি গ্র্যান্ডহোম। ১৬ বলে খেলেন ৩০ রানের ঝড়ো ইনিংস। শেষের দিকে বোলারদের ওপর চড়াও হয়ে দলের রান দুইশ ছাড়ান ড্যারিল মিচেল ও রস টেইলর।

কুলদীপ ২৬ রানে নেন ২ উইকেট। তিনি ছাড়া দলের আর সবার ইকোনমি রেট ছিল নয়ের উপরে।

বড় রান তাড়ায় শুরুতেই শিখর ধাওয়ানকে হারায় ভারত। মিচেল স্যান্টনারকে স্লগ সুইপ করে উড়ানোর চেষ্টায় ডিপ মিডউইকেটে ধরা পড়েন বাঁহাতি ওপেনার। দেখেশুনে খেলছিলেন রোহিত শর্মা, অন্য প্রান্তে ঝড় তুলেছিলেন বিজয় শঙ্কর। তাদের ৭৫ রানের জুটিতে দৃঢ় ভিতের ওপর দাঁড়ায় সফরকারীরা।

২৮ বলে ৪৩ রান করা শঙ্করকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন স্যান্টনার। ড্যারিল মিচেলের বলে কিপারের গ্লাভসে ধরা পড়েন রোহিত।

এসেই বোলারদের ওপর চড়াও হওয়া রিশাব পান্ত ও হার্দিক পান্ডিয়া টিকেননি বেশিক্ষণ। দ্রুত ফিরে যান ধোনি। ৪ রানের মধ্যে এই তিন ব্যাটসম্যানের বিদায়ে চাপে পড়ে যায় ভারত।

কার্তিক ও ক্রুনালের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে জেগে উঠে ভারতের আশা। শেষ ৪ ওভারে ৫৯ রানের সমীকরণ প্রায় মিলিয়ে ফেলেছিলেন তারা। কিন্তু সাউদির অসাধারণ শেষ ওভারে আর পেরে উঠেননি তারা।

কার্তিক ৪ ছক্কায় অপরাজিত থাকেন ৩৩ রানে। দুটি করে ছক্কা-চারে ২৬ রানে অপরাজিত থাকেন ক্রুনাল।  

বিস্ফোরক ইনিংসে সুর বেঁধে দেওয়া মানরো জেতেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার। সিরিজ সেরার পুরস্কার জেতেন সাইফার্ট।  

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

নিউ জিল্যান্ড: ২০ ওভারে ২১২/৪ (সাইফার্ট ৪৩, মানরো ৭২, উইলিয়ামসন ২৭, ডি গ্র্যান্ডহোম ৩০, মিচেল ১৯*, টেইলর ১৪*; ভুবনেশ্বর ১/৩৭, খলিল ১/৪৭, হার্দিক ০/৪৪, ক্রুনাল ০/৫৪, কুলদীপ ২/২৬)

ভারত: ২০ ওভারে ২০৮/৬ (ধাওয়ান ৫, রোহিত ৩৮, শঙ্কর ৪৩, পান্ত ২৮, হার্দিক ২১, ধোনি ২, কার্তিক ৩৩*, ক্রুনাল ২৬*; স্যান্টনার ৩-০-৩২-২, সাউদি ৪-০-৪৭-০, কাগেলেইন ৪-০-৩৭-১, টিকনার ৪-০-৩৪-১, সোধি ২-০-৩০-০, মিচেল ৩-০-২৭-২)

ফল: নিউ জিল্যান্ড ৪ রানে জয়ী

সিরিজ: ৩ ম্যাচের সিরিজে ২-১ ব্যবধানে জয়ী নিউ জিল্যান্ড

ম্যান অব দা ম্যাচ: কলিন মানরো

ম্যান অব দা সিরিজ: টিম সাইফার্ট