তামিমের নেতৃত্বে বিপিএলের গত আসরে প্রাথমিক পর্ব শেষে শীর্ষে ছিল কুমিল্লা। কিন্তু ফাইনালে ওঠার দুটি সুযোগ পেয়েও তারা পারেনি কাজে লাগাতে। এবার ফাইনাল খেলতে মরিয়া ছিল ম্যানেজমেন্ট। তাদের নেতৃত্বের ভাবনায় এবারও তামিমই ছিলেন। তবে অভিজ্ঞ এই ব্যাটসম্যান নিজে চেয়েছিলেন নেতৃত্ব না নিয়েও দলের চাওয়া পূরণে সবটা উজার করে দিতে।
ব্যক্তিগত একটি লক্ষ্য পূরণের ব্যাপারও ছিল। দেশের সফলতম ব্যাটসম্যান ও অন্যতম সিনিয়র ক্রিকেটার হয়েও বিপিএল ফাইনাল খেলার স্বাদ পাননি এখনও। এবার দুটি চাওয়া একসঙ্গে মিলে যাওয়ায় তামিম উচ্ছ্বসিত। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে জানালেন, ফাইনাল খেলতে তার তর সইছে না।
“মৌসুম শুরুর আগে দলকে কথা দিয়েছিলাম, এবার আমরা ফাইনাল খেলব। আমার নিজেরও একটা লক্ষ্য ছিল। মাশরাফি ভাই চারবার জিতেছেন, সাকিব দুইবার চ্যাম্পিয়ন হয়েছে, রিয়াদ ভাই দুবার ফাইনাল খেলেছেন। আমারও খুব ইচ্ছা ছিল বিপিএলের ফাইনাল খেলার। আমাদের ঘরোয়া ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় স্টেজ তো বিপিএল ফাইনালই।”
কুমিল্লা এবার বিপিএল শুরু করেছিল স্টিভেন স্মিথের নেতৃত্বে। চোট নিয়ে স্মিথ ফিরে যাওয়ার পর থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন ইমরুল কায়েস। তামিম কেন অধিনায়ক নন, সেটি নিয়ে আলোচনা হয়েছে অনেক। বাংলাদেশকে একটি টেস্টে নেতৃত্ব দেওয়া ওপেনার নিজে অবশ্য এটিকে বড় করে দেখতে চান না।
“অধিনায়ক হওয়াই বড় কথা নয়। আমি চেষ্টা করেছি মাঠের ভেতরে ও বাইরে যতটা সম্ভব সম্পৃক্ত থাকতে, দলকে সাহায্য করতে। আপনারা সবাই জানেন, নিজের প্রস্তুতি, পারফরম্যান্স নিয়ে আমি সবসময় কতটা খুঁতখুঁতে থাকি। কিন্তু এবার নিজেকে নিয়ে ভাবিনি। ভাবনার সবটা জুড়ে কেবল ছিল দল।”
ব্যাট হাতে পারফরম্যান্স এবার খুব ভালো না হওয়ার একটি কারণ কি তাহলে এটিই? এমনিতে খুব যে বিবর্ণ তামিমের পারফরম্যান্স, তা নয়। রান সংগ্রহের তালিকায় এখনও পর্যন্ত আছেন পাঁচে। তবে ১৩ ম্যাচে ২৭.১৬ গড়ে ৩২৬ রান, তামিমের মানের তুলনায় একটু ম্লানই।
“প্রথম দুই বিপিএলে ইনজুরিতে বেশি ম্যাচই খেলতে পারিনি। তার পর থেকে বিপিএলেও অনেক রান করেছি। এবারের পারফরম্যান্সে আমি নিজে খুব খুশি নই। তবে নিজে খুব ভালো না করলে আমার যতটা খারাপ লাগে, এবার লাগছে না কারণ দল ফাইনালে উঠেছে। কিন্তু নিজের পারফরম্যান্সের জন্য অজুহাত দিতে চাই না। অনেকগুলো ম্যাচে খুব ভালো শুরু করেছি। কিন্তু হয়তো একটা মুহূর্তের ভুল সিদ্ধান্তের কারণে ইনিংস বড় করতে পারিনি।”
“এমনিতে তিনবার শূন্য রানে আউট হওয়ার পরও ৩২৬ রান, সেরা পাঁচে থাকা কিন্তু খারাপ নয়। তবে নিজের কাছে আমার যা প্রত্যাশা, সেটির কথা ভাবলে বলব ব্যর্থতাই বেশি। অন্তত ৪০০ রান করা উচিত ছিল এই সময়ে। সবচেয়ে খারাপ লেগেছে, বেশ কিছু ম্যাচে ভালো শুরুর পরও টানতে না পারায়, যেমনটি এমনিতে এখন আমার হয় না।”
তবে এখানেই যে শেষ নয়, সেটাও মনে করিয়ে দিলেন তামিম।
“খেলাটার সৌন্দর্য্য হলো, এক ম্যাচেই অনেক সময় অনেক কিছু বদলে যায়। যদি ফাইনালে একটা ভালো ইনিংস খেলতে পারি, হয়তো রানের তালিকায় আরও ওপরে উঠে যাব। তখন হয়তো সফল বিপিএলই বলতে হবে!”