আরেকটি রোমাঞ্চকর জয়ে সিরিজ দক্ষিণ আফ্রিকার

একজনের ব্যাট থেকে এসেছে ৯০, আরেকজন করেছেন ফিফটি। দুজনে মিলে শতরানের জুটি। রান তাড়ায় তারপরও হারা যায়? পাকিস্তান হেরেই সেটির প্রমাণ দিল। নেতৃত্বের অভিষেকে ডেভিড মিলারের বিস্ফোরক ইনিংস যেখানে নিয়ে গিয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকার রান, যথেষ্ট হলো সেটিই। টানা দ্বিতীয় ম্যাচে উত্তেজনাপূর্ণ জয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা নিশ্চিত করল সিরিজ জয়।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 Feb 2019, 05:56 PM
Updated : 3 Feb 2019, 05:58 PM

সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি অনুসরণ করল যেন প্রথম ম্যাচের চিত্রনাট্যই। সম্ভাবনা জাগিয়েও হারল পাকিস্তান। দক্ষিণ আফ্রিকা জিতল ৭ রানে।

জোহানেসবার্গে রোববার ২৯ বলে ৬৫ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলেন মিলার। মাঝারি স্কোরের পথে এগোতে থাকা দক্ষিণ আফ্রিকা শেষ পর্যন্ত ২০ ওভারে তোলে ১৮৮ রান। জবাবে বাবর আজম খেলেন ৯০ রানের নান্দনিক ইনিংস। দ্বিতীয় উইকেটে পাকিস্তান পায় শতরানের জুটি। কিন্তু শেষের দাবি মেটাতে না পেরে থমকে যায় তারা ১৮১ রানে।

দক্ষিণ আফ্রিকা ব্যাটিং পেয়েছিল টস হেরে। শুরুটা ছিল একটু মন্থর। প্রথম তিন ওভারে আসেনি বাউন্ডারি। অভিষিক্ত ওপেনার জানেমান মালান ও আরেক ওপেনার রিজা হেনড্রিকস পরে শট খেলেছেন দারুণ কিছু। তবে ইমাদ ওয়াসিমের আঁটসাঁট বোলিংয়ে রানের গতি ছিল না খুব বেশি। উদ্বোধনী জুটিতে ৫৮ রান এলেও রান রেট ছিল কেবল ছয়ের একটু বেশি।

ইমাদকে বেরিয়ে এসে মারতে গিয়েই উইকেট হারান মালান। তিনটি চার ও দুই ছক্কায় ৩৩ করেছেন ৩১ বলে। হেনড্রিকস ফিরেন ২৭ বলে ২৮ করে।

তিনে নেমে রানের গতি বাড়ান রাসি ফন ডার ডাসেন। অধিনায়ক মিলারের ব্যাটও কথা বলতে থাকে তাল মিলিয়ে। বাড়তে থাকে রান। চার ছক্কায় ২৭ বলে ৪৫ রান করে আউট ফন ডার ডাসেন।

পরের জুটি ছিল অবিশ্বাস্য। ২৪ বলে ৬২ রানের সেই জুটিতে হাইনরিখ ক্লাসেন করেছেন কেবল ৭ বলে ৫। মিলার বল উড়িয়েছেন মাঠের নানা প্রান্তে। উসমান খান শিনওয়ারির করা ইনিংসের শেষ ওভারেই এসেছে তিন ছক্কা ও দু্ই চারে ২৯ রান।

চারটি চার ও পাঁচ ছক্কায় ২৯ বলে ৬৫ করে অপরাজিত থাকেন মিলার। শেষ ৬ ওভারে দক্ষিণ আফ্রিকা তোলে ৮৫ রান।

নতুন বলে ৪ ওভারে মাত্র ৯ রানে ১ উইকেট নেন বাঁহাতি স্পিনার ইমাদ। ৪ ওভারে ৬৩ রান হজম করেন বাঁহাতি পেসার উসমান।

পাকিস্তানের জবাবও হচ্ছিল দারুণ। ইনিংসের প্রথম তিন বলেই বিউরান হেনড্রিকসকে টানা তিনটি চার মারেন বাবর আজম। পরের ওভারে টানা তিনটি মারেন ক্রিস মরিসের বলে।

আরেকপাশে ফখর জামানও চেষ্টা করেছেন। হেনড্রিকসকে এক ওভারে দুটি বাউন্ডারির পর আউট হয়েছেন ১৪ রানে।

বাবরের ব্যাটিংয়ে তা প্রভাব ফেলেনি। আবারও হ্যাটট্রিক বাউন্ডারি মেরেছেন জুনিয়র ডালার বলে। ৫ ওভার শেষে বাবরের রান ১৯ বলে ৪৩, সবগুলোই দৃষ্টিনন্দন সব ক্রিকেট শটে। পরে চায়নাম্যান বোলার তাবরাইজ শামসিকেও বাবর মারেন টানা তিনটি বাউন্ডারি।

তিনে নেমে হুসাইন তালাতও দারুণ সঙ্গ দিচ্ছিলেন বাবরকে। দুজনের জুটি পেরিয়ে যায় শতরান।

ছবি: ক্রিকেট দক্ষিণ আফ্রিকা

শেষ চার ওভারে পাকিস্তানের প্রয়োজন ছিল ৪২। হাতে তখনও ৯ উইকেট। বাবর ও তালাত তখনও উইকেটে, ম্যাচ তাই পাকিস্তানের দিকেই ছিল হেলে। সমীকরণ বদলে গেল দুজনের বিদায়ে।

১৩ চার ও ১ ছক্কায় ৫৮ বলে ৯০ করে আউট হলেন বাবর। ৪১ বলে ৫৫ রান করা তালাতকে বোল্ড করার পর ওই ওভারেই ইমাদের মিডল স্টাম্প উপড়ে দিলেন মরিস। মাঝে আসিফ আলিও ফিরলেন ঝড় তোলার আগে।

শেষ ওভারে পাকিস্তানের প্রয়োজন ছিল ১৫ রান। অধিনায়ক শোয়েব মালিক বাউন্ডারিতে শুরু করলেও আন্দিলে ফেলুকওয়ায়ো আর সুযোগ দেননি। তুলে নেন দুটি উইকেট। ৩৩ রানের মধ্যে ৬ উইকেট হারিয়ে ম্যাচ হারে পাকিস্তান।

নেতৃত্বের অভিষেকে জয়ের পাশাপাশি ম্যাচ সেরার পুরস্কারও পান মিলার। বুধবার সেঞ্চুরিয়নে সিরিজ ও সফরের শেষ ম্যাচ।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

দক্ষিণ আফ্রিকা: ২০ ওভারে ১৮৮/৩ (রিজা হেনড্রিকস ২৮, মালান ৩৩, ফন ডার ডাসেন ৪৫, মিলার ৬৫, ক্লাসেন ৫*; ইমাদ ১/৯, শাহিন শাহ ১/২৭, উসমান ০/৬৩,  হাসান ০/৪৮, শাদাব ০/২৫, ফখর ০/১২)।

পাকিস্তান: ২০ ওভারে ১৮১/৭ (ফখর ১৪, বাবর ৯০, তালাত ৫৫ আসিফ ২, মালিক ৬, ইমাদ ৬, হাসান ১, শাদাব ০*, রিজওয়ান ১*; বিউরান হেনড্রিকস ২/৩০, মরিস ২/৩৫, সিপামলা ০/২৩, ডালা ০/২৫, শামসি ০/৩১, ফেলুকওয়ায়ো ৩/৩৬)।

ফল: দক্ষিণ আফ্রিকা ৭ রানে জয়ী

সিরিজ: ৩ ম্যাচ সিরিজে দক্ষিণ আফ্রিকা ২-০তে এগিয়ে

ম্যান অব দা ম্যাচ : ডেভিড মিলার