ঢাকাকে হারিয়ে শেষ চারে চিটাগং

চট্টগ্রামে টানা তিন ম্যাচে হারার পর জয়ে ফিরল চিটাগং ভাইকিংস। ঢাকা ডায়নামাইটসকে হারিয়ে তৃতীয় দল হিসেবে শেষ চার নিশ্চিত করল মুশফিকুর রহিমের দল। লড়াকু ফিফটিতেও ঢাকার টানা চতুর্থ হার ঠেকাতে পারলেন না অধিনায়ক সাকিব আল হাসান।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 30 Jan 2019, 09:20 AM
Updated : 30 Jan 2019, 07:26 PM

বিপিএলে বুধবারের প্রথম ম্যাচে ১১ রানে জিতেছে চিটাগং। ১৭৪ রান তাড়ায় ঢাকা ৯ উইকেটে করে ১৬৩ রান। 

১১ ম্যাচে সপ্তম জয় পাওয়া চট্টগ্রামের পয়েন্ট ১৪। শেষ চার নিশ্চিত করা রংপুর রাইডার্স ও কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সেরও পয়েন্ট ১৪ করে। ১০ ম্যাচের পাঁচটিতে হারা ঢাকার পয়েন্ট ১০। শেষ চারের আশা টিকে আছে সাকিবদের। 

চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে মোহাম্মদ শাহজাদের সঙ্গে ৫ ওভার ২ বল স্থায়ী ৪২ রানের উদ্বোধনী জুটিতে দলকে ভালো শুরু এনে দেন ক্যামেরন ডেলপোর্ট। ১৫ বলে তিন চার ও এক ছক্কায় ২১ রান করা শাহজাদকে ফিরিয়ে শুরুর জুটি ভাঙেন সুনিল নারাইন।

দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ইয়াসির আলী চৌধুরীর সঙ্গে ৬ ওভার ১ বলে ৪৬ রান যোগ করেন ডেলপোর্ট। নারাইনকে সুইপ করে সীমানায় ইয়াসির ধরা পড়লে ভাঙে জুটি।

৪৩ বলে পঞ্চাশ ছোঁয়ার পর রানের গতি বাড়ান ডেলপোর্ট। রুবেল হোসেনকে ছক্কা হাঁকিয়ে ডানা মেলেন মুশফিকুর রহিম। তৃতীয় উইকেটে তারা গড়েন ৭৯ রানের জুটি।

ইনিংসের শেষ ওভারের প্রথম বলে আন্দ্রে রাসেলকে উড়ানোর চেষ্টায় লং অনে শুভাগত হোম চৌধুরীর হাতে ধরা পড়েন মুশফিক। ২৪ বলে খেলা তার ৪৩ রানের ঝড়ো ইনিংস গড়া চারটি চার ও দুটি ছক্কায়।

পরের বলে লং অফ সীমানায় শুভাগতর হাতে ধরা পড়েন বাঁহাতি ওপেনার ডেলপোর্ট। চলতি আসরে নিজের প্রথম ফিফটি পাওয়া দক্ষিণ আফ্রিকান এই ব্যাটসম্যান ৫৭ বলে চারটি ছক্কা ও পাঁচটি চারে করেন ৭১ রান।

মুখোমুখি হওয়া প্রথম বলে স্কুপ করতে গিয়ে ফাইন লেগে মিজানুর রহমানের হাতে ধরা পড়েন দাসুন শানাকা। ক্যারিয়ারের তৃতীয় হ্যাটট্রিক করেন রাসেল। টি-টোয়েন্টিতে তিনটি করে হ্যাটট্রিক আছে কেবল ভারতের অমিত মিশ্র ও অস্ট্রেলিয়ান অ্যান্ড্রু টাইয়ের।  

বিপিএলের চলতি আসরে এনিয়ে হল তিনটি হ্যাটট্রিক। আগের পাঁচ আসর মিলিয়ে হয়েছিল মোটে দুটি।

রাসেল ৩ উইকেট নেন ৩৮ রানে। আঁটসাঁট বোলিংয়ে ২০ রানে ২ উইকেট নেন নারাইন।

রান তাড়ায় শুরুটা ভালো হয়নি ঢাকার। ২৩ রানের মধ্যে ফিরে যান টপ অর্ডারের তিন ব্যাটসম্যান। নারাইন ও রনি তালুকদারকে ফিরিয়ে দেন আবু জায়েদ চৌধুরী। রান আউট হয়ে ফিরে যান মিজানুর রহমান।

চতুর্থ উইকেটে সাকিবের সঙ্গে ৫০ রানের জুটি গড়েন প্রমোশন পেয়ে পাঁচ নম্বরে নামা নুরুল হাসান সোহান। ২৩ বলে দুটি করে ছক্কা-চারে ৩৩ রান করা কিপার-ব্যাটসম্যান সোহানকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন ডেলপোর্ট। পরের বলে রান আউট হয়ে ফিরে যান মিডল অর্ডারের অন্যতম ভরসা কাইরন পোলার্ড।

সাকিবের সঙ্গে রাসেলের ৬৬ রানের জুটিতে ম্যাচে ফিরে ঢাকা। ক্রিজে গিয়েই বোলারদের ওপর চড়াও হওয়া রাসেলকে ফিরিয়ে বিপজ্জনক হয়ে উঠা জুটি ভাঙেন শানাকা। ক্যারিবিয়ান অলরাউন্ডারের ২৩ বলে খেলা ৩৯ রানের বিধ্বংসী ইনিংস গড়া চারটি চার ও দুটি ছক্কায়।

সময়ে দাবি মেটাতে পারেননি শুভাগত। শানাকার স্লোয়ার বলে নাঈম হাসানকে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন আশা হয়ে টিকে থাকা সাকিব। ৪২ বলে খেলা ঢাকা অধিনায়কের ৫৩ রানের ইনিংস গড়া ছয়টি চারে।

ব্যাটে-বলে-ফিল্ডিংয়ে অবদান রেখে ম্যাচ সেরার পুরস্কার জেতেন ডেলপোর্ট।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

চিটাগং ভাইকিংস: ২০ ওভারে ১৭৪/৫ (শাহজাদ ২১, ডেলপোর্ট ৭১, ইয়াসির ১৯, মুশফিক ৪৩, শানাকা ০, রাজা ৬*, মোসাদ্দেক ১*; বার্চ ৪-০-৩৫-০, রাসেল ৪-০-৩৮-৩, সাকিব ৩-০-২৪-০, নারাইন ৪-০-২০-২, রুবেল ৪-০-৪০-০, মাহমুদুল ১-০-৮-০)

ঢাকা ডায়নামাইটস: ২০ ওভারে ১৬৩/৯ (মিজানুর ১১, নারাইন ০, রনি ৬, সাকিব, নুরুল ৩৩, পোলার্ড ০, রাসেল ৩৯, শুভাগত ৫, বার্চ ৭*, মাহমুদুল ২, রুবলে ০*; আবু জায়েদ ৪-০-২৫-৩, খালেদ ৪-০-৩৫-০, নাঈম ৪-০-৩৭-১, ডেলপোর্ট ৪-০-৩১-১, শানাকা ৪-০-৩৪-২)

ফল: চিটাগং ভাইকিংস ১১ রানে জয়ী

ম্যান অব দা ম্যাচ: ক্যামেরন ডেলপোর্ট