হেলস-ডি ভিলিয়ার্স-গেইলের ব্যাটে রংপুরের জয়

বড় রান তাড়ায় উড়ন্ত সূচনা এনে দিলেন অ্যালেক্স হেলস। মাঝে রানের গতিটা ধরে রাখলেন এবি ডি ভিলিয়ার্স। দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে ফিফটি করলেন ক্রিস গেইল। টপ অর্ডারের দৃঢ়তায় রোমাঞ্চকর লড়াইয়ে খুলনা টাইটানসকে হারালো রংপুর রাইডার্স।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 22 Jan 2019, 09:19 AM
Updated : 22 Jan 2019, 01:37 PM

বিপিএলে মঙ্গলবারের প্রথম ম্যাচে ৬ উইকেটে জিতেছে মাশরাফি বিন মুর্তজার দল। ১৮২ রানের লক্ষ্য তিন বল বাকি থাকতে পেরিয়ে যায় গত আসরের চ্যাম্পিয়নরা।

মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি খুলনার। আল আমিন জুনিয়রকে প্রথম ওভারে কট বিহাইন্ড করে ফেরান মাশরাফি। আরেক ওপেনার জুনায়েদ সিদ্দিককে বিদায় করেন ফরহাদ রেজা।

ব্রেন্ডন টেইলরের সঙ্গে ৪৯ ও মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে ৫৬ রানের জুটিতে দলকে ৩ উইকেটে ১৩৪ রানের দৃঢ় ভিতের ওপর দাঁড় করান নাজমুল হোসেন শান্ত। ষোড়শ ওভারে পরপর দুই বলে মাহমুদউল্লাহ ও শান্তকে বিদায় করে খুলনাকে চাপে ফেলে দেন রেজা। এই অলরাউন্ডার দ্রুত ফেরান রানের জন্য সংগ্রাম করা আরিফুল হককেও।

একটি করে ছক্কা-চারে ২০ বলে ২৯ রান করা অধিনায়ক সীমানায় ধরা পড়েন নাজমুল ইসলাম অপুর হাতে। রেজাকে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে শেষ হয় শান্তর ৩৫ বলে তিন ছক্কা আর দুই চারে গড়া ৪৮ রানের ইনিংস।

দ্রুত ৩ উইকেট হারানো খুলনাকে ১৮১ পর্যন্ত নিয়ে যান ডেভিড ভিসা। বোলারদের ওপর চড়াও হওয়া দক্ষিণ আফ্রিকার এই অলরাউন্ডার ১৫ বলে তিন চার আর দুই ছক্কায় অপরাজিত থাকেন ৩৫ রানে।

৩২ রানে ৪ উইকেট নেন রেজা। আঁটসাঁট বোলিংয়ে ১৭ রানে ১ উইকেট নেন অধিনায়ক মাশরাফি।

রান তাড়ায় হেলসের ব্যাটে উড়ন্ত সূচনা পায় রংপুর। গেইলের সঙ্গে ৭.৪ ওভার স্থায়ী উদ্বোধনী জুটিতে ৭৪ রান তোলেন এই ইংলিশ ব্যাটসম্যান। বোলারদের তুলোধোনা করা হেলস ২৬ বলে পৌঁছান ফিফটিতে। সে সময় গেইল ছিলেন যেন দর্শক হয়ে। সতীর্থ পঞ্চাশ ছোঁয়ার সময় তার রান ছিল ১০ বলে চার!

এবারের আসরে প্রথমবারের মতো খেলতে নামা পাকিস্তানের লেগ স্পিনার ইয়াসির শাহ বোল্ড করে থামান হেলসকে। ডানহাতি এই ব্যাটসম্যানের ২৯ বলে খেলা ৫৫ রানের বিস্ফোরক ইনিংস গড়া আট চার ও তিন ছক্কায়।

আগের ম্যাচে মিডল অর্ডারে ব্যাট করা ডি ভিলিয়ার্স প্রমোশন পেয়ে নামেন তিনে। মারকুটে এই ব্যাটসম্যান ক্রিজে এসেই চড়াও হন বোলারদের ওপর। রান আসতে থাকে বানের স্রোতের মতো। খুলনার বোলাররা যেন ভেবেই পাচ্ছিলেন না বল ফেলবেন কোথায়।

মাহমুদউল্লাহকে রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে বলে-ব্যাটে করতে না পেরে এলবিডব্লিউ হয়ে যান ডি ভিলিয়ার্স। ২৫ বলে খেলা তার ৪১ ইনিংস গড়া চার ছক্কা ও তিন চারে। তার সঙ্গে ৪৩ রানের জুটিতে গেইলের অবদান মাত্র ২! 

ডি ভিলিয়ার্সের বিদায়ের পর কিছুটা ভাটা পড়ে রানের গতিতে। মাহমুদউল্লাহকে তিন ছক্কা হাঁকিয়ে ডানা মেলেন গেইল। জুনাইদ খানকে চার হাঁকিয়ে এবারের আসরে প্রথমবারের মতো পৌঁছান ফিফটিতে।

পাকিস্তানের বাঁহাতি পেসারকে ছক্কা হাকাতে গিয়ে শেষ হয় গেইলের পথ চলা। ৪০ বলে ৫ ছক্কা ও দুই চারে বাঁহাতি এই ওপেনার করেন ৫৫ রান। তার বিদায়ের পর দ্রুত বিদায় নেন মোহাম্মদ মিঠুনও। তবে ইয়াসিরকে ছক্কা হাঁকিয়ে দলকে দারুণ জয় এনে দেন রাইলি রুশো। ৩ বলে ১০ রানে অপরাজিত থাকেন ছন্দে থাকা বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান।

আট ম্যাচে সপ্তম হারের তেতো স্বাদ পেলো খুলনা। সমান ম্যাচে চতুর্থ জয় পেলো রংপুর।

ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে ৪ উইকেট পাওয়া পেসার রেজা জেতেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

খুলনা টাইটানস: ২০ ওভারে ১৮১/৬ (আল আমিন ৪, জুনায়েদ ১৩, টেইলর ৩২, শান্ত ৪৮, মাহমুদউল্লাহ ২৯, ভিসা ৩৫*, আরিফুল ৬, ইয়াসির ৫*; মাশরাফি ৪-০-১৭-১, সোহাগ ২-০-৩০-০, রেজা ৪-০-৩২-৪, শফিউল ৪-০-৪০-০, অপু ৪-০-৩৭-০, গেইল ২-০-২৩-১)

রংপুর রাইডার্স: ১৯.৩ ওভারে ১৮৩/৪ (গেইল ৫৫, হেলস ৫৫, ডি ভিলিয়ার্স ৪১, মিঠুন ১৫, রুশো ১০*, নাহিদুল ১*; শুভাশিস ৪-০-৩০-০, জুনাইদ ৪-০-৩৭-১, ভিসা ৪-০-৩১-১, তাইজুল ১-০-১০-০, ইয়াসির ৩.৩-০-৪৭-২, মাহমুদউল্লাহ ৩-০-২৮-১)

ফল: রংপুর রাইডার্স ৬ উইকেটে জয়ী

ম্যান অব দা ম্যাচ: ফরহাদ রেজা