বিপিএলে সোমবারের দ্বিতীয় ম্যাচে ৩ উইকেটে জিতেছে মুশফিকুর রহিমের দল। ১৪০ রানের লক্ষ্য এক বল বাকি থাকতে পেরিয়ে যায় চিটাগং।
মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সোমবার টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি ঢাকার। ম্যাচের তৃতীয় বলে রনি তালুকদারকে বোল্ড করে দেন ফ্রাইলিঙ্ক। দক্ষিণ আফ্রিকার এই পেসার নিজের পরের ওভারে বোল্ড করে থামান বোলারদের ওপর চড়াও হওয়া সুনিল নারাইনকে।
হেইনো কুনের সঙ্গে সাবধানী ব্যাটিংয়ে শুরুর ধাক্কা সামাল দেন সাকিব। নবম ওভারে আক্রমণে এসে জোড়া আঘাতে ঢাকাকে কাঁপিয়ে দেন আবু জায়েদ চৌধুরী। তিন চারে ২১ রান করে বোল্ড হয়ে যান কুন। ক্যামেরন ডেলপোর্টের হাতে শূন্য রানে ধরা পড়েন দারবিশ রাসুলি। জোড়া উইকেটের সঙ্গে আবু জায়েদ ওভারটি নেন মেডেন।
সাকিবের সঙ্গে নুরুল হাসান সোহানের ৩৯ রানের জুটিতে ধাক্কা কিছুটা সামলে উঠে ঢাকা। মিডিয়াম পেসে সাকিব-সোহানকে ফিরিয়ে আবার তাদের চাপে ফেলেন ডেলপোর্ট। লেগ-মিডলে পাওয়া ফুলটস বলে সীমানায় ধরা পড়েন ৩৪ বলে ৩৪ রান করা সাকিব। ৫ চারে ২৭ রান করা সোহান ফিরেন স্টাম্পড হয়ে।
আন্দ্রে রাসেল তুলতে পারেননি প্রত্যাশিত ঝড়। শেষের দিকে ১৫ বলে তিন চার ও এক ছক্কায় ২৮ রানের ইনিংসে দলকে লড়াইয়ের পুঁজি এনে দেন শুভাগত হোম।
আঁটসাঁট বোলিংয়ে ২৫ রানে ৩ উইকেট নেন ডেলপোর্ট। দুটি করে উইকেট নেন আবু জায়েদ ও ফ্রাইলিঙ্ক।
সাবলীল ব্যাটিংয়ে এগোচ্ছিলেন মুশফিক। শুরুতে নড়বড়ে ব্যাটিং করা মোসাদ্দেক হোসেন ক্রমশ ফিরে পান নিজেকে। একবার বাঁচেন রিভিউ নিয়ে। তাদের জমে যাওয়া জুটি ভাঙে বাজে শটে। রুবেল হোসেনকে ওড়ানোর চেষ্টায় নারাইনকে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান অধিনায়ক।
জয়ের জন্য শেষ ৪ ওভারে চিটাগংয়ের দরকার ছিল ২৬ রান। আক্রমণে ফিরে ১৭তম ওভারটি মেডেন নিয়ে সমীকরণ একটু কঠিন করে তুলেন সাকিব। সেই ওভারে বাঁহাতি স্পিনারকে রিভার্স সুইপ করতে গিয়ে বোল্ড হয়ে ফিরেন নাঈম হাসান।
অধিনায়কের মেডেন-উইকেটের পর মোহর ও রুবেলের দুটি আঁটসাঁট ওভারে সমীকরণ হয়ে যায় বেশ কঠিন। মোসাদ্দেকে রান আউটে পুরো দায়িত্ব যেন এসে পড়ে ফ্রাইলিঙ্কের কাঁধে। দলকে হতাশ করেননি দক্ষিণ আফ্রিকার এই ক্রিকেটার।
মোহরের করা শেষ ওভারে প্রয়োজন ছিল ১৬ রান। প্রথম বলে সিঙ্গেল নিয়ে ফ্রাইলিঙ্ককে স্ট্রাইক দেন সানজামুল ইসলাম। ছক্কা, দুই আর ছক্কায় দুই দলের স্কোর সমান করে ফেলেন ফ্রাইলিঙ্ক। পঞ্চম বল করার আগে ফ্লাড লাইটের কয়েকটি বাতি নিভে গেলে আলো কমে যায়। ম্লান আলোয় আরেকটি ছক্কা হাঁকিয়ে আলো ঝলমলে জয় এনে দেন এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান। ১০ বলে তিন ছক্কায় অপরাজিত থাকেন ২৫ রানে।
দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ের পর বোলিংয়ে ১৬ রানে ৪ উইকেট নেন সাকিব। তবে বলে-ব্যাটে নিজেকে মেলা ধরা ফ্রাইলিঙ্ক জিতে নেন ম্যাচ সেরার পুরস্কার।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ঢাকা ডায়নামাইটস: ২০ ওভারে ১৩৯/৯ (রনি ০, নারাইন ১৮, কুন ১৮, সাকিব ৩৪, রাসুলি ০, সোহান ২৭, রাসেল ১, শুভাগত ২৮, নাঈম ৬, মোহর ০*; ফ্রাইলিঙ্ক ৩-০১৯-২, নাঈম ৪-০-২৭-০, খালেদ ৪-০-২৭-১, আবু জায়েদ ৪-১-২৭-২, মোসাদ্দেক ১-০-১১-০, ডেলপোর্ট ৪-০-২৫-৩)
চিটাগং ভাইকিংস: ১৯.৫ ওভারে ১৪৫/৭ (শাহজাদ ০, ডেলপোর্ট ৩০, ইয়াসির ১৫, মুশফিক ২২, শানাকা ২, মোসাদ্দেক ৩৩, নাঈম ৪, ফ্রাইলিঙ্ক ২৫*, সানজামুল ২*; রাসেল ৩-০-২৫-১, শুভাগত ১-০-১৬-০, সাকিব ৪-১-১৬-৪, নারাইন ৪-০-২৬-০, রুবল ৪-০-২৪-১, মোহর ৩.৫-০-৩৭-০)
ফল: চিটাগং ভাইকিংস ৩ উইকেটে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: রবি ফ্রাইলিঙ্ক