গাপটিলের সেঞ্চুরি, নিশামের তাণ্ডবে কিউইদের জয়

গোটা তিনেক চোটের ধাক্কা কাটিয়ে ফেরার ম্যাচ সেঞ্চুরিতে রাঙালেন মার্টিন গাপটিল। ছক্কা ঝড়ে ব্যাটিং তাণ্ডবের পর দারুণ বোলিংয়ে প্রত্যাবর্তনের ম্যাচ স্মরণীয় করে রাখলেন জিমি নিশাম। রান উৎসবের ম্যাচ জিতে সিরিজে এগিয়ে গেল নিউ জিল্যান্ড। কুসল পেরেরার সেঞ্চুরিতে লড়াই করেও পেরে উঠল না শ্রীলঙ্কা।

স্পোর্টস ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 Jan 2019, 11:20 AM
Updated : 3 Jan 2019, 11:20 AM

প্রথম ওয়ানডেতে বৃহস্পতিবার মাউন্ট মঙ্গানুইতে শ্রীলঙ্কাকে ৪৫ রানে হারিয়ে তিন ম্যাচের সিরিজে এগিয়ে গেছে নিউ জিল্যান্ড।

প্রায় ১০ মাস পর ওয়ানডে খেলতে নেমে গাপটিল খেলেছেন ১১ চার ও ৫ ছক্কায় ১৩৯ বলে ১৩৮ রানের ইনিংস। চোট ও ফর্মহীনতা মিলিয়ে প্রায় দুই বছর বাইরে থাকার পর ফিরেই নিশাম খেলেছেন ১৩ বলে ৪৭ রানের টর্নেডো ইনিংস। এক ওভারে মেরেছেন ৫ ছক্কা, একটি নো বলসহ থিসারা পেরেরার ওই ওভার থেকে এসেছে ৩৪ রান, যা নিউ জিল্যান্ডের রেকর্ড।

এই দুই জনের মাঝে দুর্দান্ত দুটি ফিফটি করেছেন কেন উইলিয়ামসন ও রস টেইলর। নিউ জিল্যান্ড ৫০ ওভারে তোলে ৩৭১ রান। রান তাড়ায় কুসল পেরেরার ৮৬ বলে ১০২ রানের ইনিংসে অনেকটা সময় সম্ভাবনা ধরে রাখলেও শেষ দিকে পথ হারিয়ে লঙ্কানরা থামে ৩২৬ রানে।

টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা নিউ জিল্যান্ড ওপেনার কলিন মানরোকে হারায় পঞ্চম ওভারে। দ্বিতীয় উইকেটে গাপটিল ও উইলিয়ামসনের দুর্দান্ত জুটি গড়ে দেয় বড় স্কোরের ভিত। ১৬১ বলে দুজন যোগ করেন ১৬৬ রান।

৭৪ বলে ৭৬ রান করে উইলিয়ামসন ফেরার পর টেইলরকে নিয়ে আরেকটি কার্যকর জুটি গড়েন গাপটিল। এই জুটির ৮৮ রান আসে ৭০ বলে।

গাপটিল ১৪তম ওয়ানডে সেঞ্চুরি স্পর্শ করেন ১১১ বলে। সেঞ্চুরির পর ছক্কা মারেন তিনটি। তার ১৩৮ রানের ইনিংস থামে থিসারা পেরেরার আচমকা লাফানো বলে। পেরেরার বলেই ফেরেন ৩৭ বলে ৫৪ রান করা টেইলর।

এরপর হেনরি নিকোলস ও টম সাইফার্ট খুব সুবিধে করতে পারেননি। তবে সব পুষিয়ে দেন নিশাম একাই। ৪৯তম ওভারে পেরেরার প্রথম চার বলেই মারেন ছক্কা। পঞ্চম বলটি ছিল ‘নো’, নিশামের ব্যাট থেকেও আসে ২ রান। পরের বলে আরেকটি ছক্কা। শেষ বলে আর ছক্কা হয়নি, নিশাম নিতে পারেন ১ রান।

পরের ওভারে ইনিংসের শেষ বলটিতেও নিশাম মারেন ছক্কা। শেষ ৫ ওভার থেকে আসে ৭৩ রান।

বিশাল রান তাড়ায় শ্রীলঙ্কার শুরুটা হয় দারুণ। নিরোশান ডিকভেলা ও দানুশকা গুনাথিলাকা উদ্বোধনী জুটিতে ১১৯ রান তোলেন ১০৭ বলে।

এখানেও লঙ্কানদের বাধা হয়ে আবির্ভুত হন নিশাম। নিজের পরপর দুই ওভারে ফিরিয়ে দেন দারুণ খেলতে থাকা দুই ওপেনারেকই। ৫০ বলে ৭৬ করে ফেরেন ডিকভেলা, গুনাথিলাকা করেন ৪৩।

তিনে নেমে কুসল পেরেরা ধরে রাখেন রানের ধারা। কিন্তু লম্বা জুটি গড়ে তোলার মতো সঙ্গী পাননি কাউকে। বাঁহাতি ব্যাটসম্যান বলতে গেলে একাই টেনে নিতে থাকেন দলকে। ৮২ বলে স্পর্শ করেন সেঞ্চুরি।

তবে আরেকপাশ থেকে সহায়তা না পাওয়ায় বাড়তে থাকে প্রয়োজনীয় রান রেটের গতি। সেঞ্চুরির পর তিনি নিজেও আউট হয়ে যান উড়িয়ে মারতে গিয়ে। শেষ পর্যন্ত এক ওভার আগেই অলআউট হয় শ্রীলঙ্কা।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

নিউ জিল্যান্ড: ৫০ ওভারে ৩৭১/৭ (গাপটিল ১৩৮, মানরো ১৩, উইলিয়ামসন ৭৬, টেইলর ৫৪, নিকোলস ১৫, সাইফার্ট ১১, নিশাম ৪৭*, হেনরি ৬, সোধি ০*; মালিঙ্গা ২/৭৮, প্রদিপ ২/৭২, থিসারা ২/৮০, প্রসন্ন ০/৬০, সান্দাক্যান ০/৬৪, গুনারত্নে ০/৫, গুনাথিলাকা ০/১০)।

শ্রীলঙ্কা ১ম ইনিংস: ৪৯ ওভারে ৩২৬ (ডিকভেলা ৭৬, গুনাথিলাকা ৪৩, কুসল পেরেরা ১০২, কুসল মেন্ডিস ১৮, চান্দিমাল ১০, গুনারত্নে ১১, থিসারা ৪, প্রসন্ন ১৬, মালিঙ্গা ১১, সান্দাক্যান ৬, প্রাদপ ৬*; বোল্ট ২/৬৫, হেনরি ১/৮৭, ফার্গুসন ২/৬৫, সোধি ২/৫৩, নিশাম ৩/৩৮, মানরো ০/৭)।

ফল: নিউ জিল্যান্ড ৪৫ রানে জয়ী

সিরিজ: ৩ ম্যাচ সিরিজে নিউ জিল্যান্ড ১-০তে এগিয়ে

ম্যান অব দা ম্যাচ: মার্টিন গাপটিল