সাকিবময় জয়ে সমতায় বাংলাদেশ

দুর্দান্ত অলরাউন্ড নৈপুণ্যে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিলেন সাকিব আল হাসান। দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে সমতায় ফিরল বাংলাদেশ।

আরিফুল ইসলাম রনিআরিফুল ইসলাম রনিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 20 Dec 2018, 10:15 AM
Updated : 20 Dec 2018, 03:04 PM

সাকিবময় জয়

ব্যাটসম্যানরা গড়ে দিয়েছিলেন রেকর্ড সংগ্রহ। তাতে অবদান ছিল সাকিবের। বোলাররা মাঝেমধ্যে খেই হারালেও জ্বলে উঠলেন সাকিব। ৩৬ রানের জয়ে সিরিজে সমতা ফেরাল বাংলাদেশ।

ব্যাট হাতে শুরুতে ঝড় তুলেছিলেন লিটন দাস। তিনে নেমে সৌম্য সরকার ধরে রাখেন গতি। অবিচ্ছিন্ন পঞ্চম উইকেট জুটিতে তাণ্ডব চালান সাকিব ও মাহমুদউল্লাহ। আগে ব্যাট করে প্রথমবার দুইশ রান পার হয় বাংলাদেশ। রান তাড়ায় ক্যারিবিয়ানরা চেষ্টা করেছে ঝড় তোলার। কিন্তু বারবারই বাগড়া দিয়েছেন সাকিব। ব্যাট হাতে ২৬ বলে অপরাজিত ৪২ রানের পর বাংলাদেশ অধিনায়ক বল হাতে তুলে নিয়েছেন ৫ উইকেট।

১-১ সমতা ফেরা সিরিজের ফয়সালা শনিবার শেষ টি-টোয়েন্টিতে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ: ২০ ওভারে ২১১/৪ (তামিম ১৫, লিটন ৬০, সৌম্য ৩২, সাকিব ৪২*, মুশফিক ১, মাহমুদউল্লাহ ৪৩*; কটরেল ২/৩৮, টমাস ১/৪৩, ব্র্যাথওয়েট ০/৪৩, অ্যালেন ১/২৯, পল ০/৫৪)।

ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ১৯.২ ওভারে ১৭৫ (লুইস ১, হোপ ৩৬, পুরান ১৪, হেটমায়ার ১৯, পাওয়েল ৫০, ব্রাভো ২, ব্র্যাথওয়েট ৮, অ্যালেন ০, পল ২৯, কটরেল ৩*, টমাস ০; আবু হায়দার ১/৩৩, সাইফ ০/৪২, মুস্তাফিজ ২/৫০, সাকিব ৫/২১, মিরাজ ১/২৩, মাহমুদউল্লাহ ১/১)।

মাহমুদউল্লাহর হাতে শেষ

নিজের প্রথম ওভারটি করার সুযোগ পেলেন মাহমুদউল্লাহ ম্যাচের শেষ ওভারে। দ্বিতীয় বলেই স্লগ করতে গিয়ে শূন্য রানে বোল্ড ওশান টমাস। ওয়েস্ট ইন্ডিজ অল আউট ১৯.২ ওভারে ১৭৫ রানে।

পলের ঝড় থামালেন মুস্তাফিজ

সব হারিয়ে ফেলার পরও চেষ্টা করে যাচ্ছিলেন কিমো পল। খেলছিলেন দারুণ সব শট। শেষ পর্যন্ত তার ঝড়ো ইনিংস শেষ হলো মুস্তাফিজের বলে। লেংথ বল উড়িয়ে মারতে গিয়ে ক্যাচ দিলেন মিড উইকেটে আরিফুল হকের হাতে।

১৬ বলে ২৯ রান করে ফিরলেন পল। শেষের কাছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ, ১৮ ওভারে রান ৯ উইকেটে ১৭৩।

ফিফটির পরই শেষ পাওয়েল

ফিফটি করার পরের বলেই আকাশে তুলে বিদায় নিলেন রভম্যান পাওয়েল। মুস্তাফিজকে উড়িয়ে মারতে চেয়েছিলেন লং অনের ওপর দিয়ে। অনেকক্ষণ বাতাসে ভেসে থাকা বল দারুণ নির্ভরতায় হাতে জমিয়েছেন তামিম ইকবাল।

৩৪ বলে ৫০ রানে ফিরলেন পাওয়েল। ১৫.৫ ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান ৮ উইকেটে ১৫০।

পাওয়েলের ফিফটি

৬ ও ১৪ রানে দুবার জীবন পেয়ে রভম্যান পাওয়েল করলেন ঝড়ো ফিফটি। আরেক পাশে নিয়মিত উইকেট পড়লেও পাওয়েল পাল্টা আক্রমণে কিছুটা বাঁচিয়ে রেখেছেন ক্যারিবিয়ানদের আশা।

৩৩ বলে ফিফটি করেছেন পাওয়েল। আবু হায়দারের এক ওভারে টানা চার বলে মেরেছেন তিন চার, এক ছক্কা।

সাকিবের পঞ্চম

অ্যাঙ্গেলে ভেতরে ঢোকা বলে স্লগ সুইপের চেষ্টা, লাইন মিস করে বোল্ড ফ্যাবিয়ান অ্যালেন। বাংলাদেশ অধিনায়ক পেলেন টি-টোয়েন্টিতে প্রথমবার ৫ উইকেটের দেখা। ১৪.১ ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান ৭ উইকেটে ১৩৮।

বাংলাদেশের হয়ে টি-টোয়েন্টিতে আগে ৫ উইকেটের স্বাদ পেয়েছেন ইলিয়াস সানি ও মুস্তাফিজুর রহমান। ২০১২ সালে অভিষেক টি-টোয়েন্টিতেই আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে ১৩ রানে ৫ উইকেট নিয়েছিলেন সানি, ২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে ২২ রানে ৫ উইকেট নিয়েছিলেন মুস্তাফিজ।

সাকিব ৪ ওভারের স্পেল শেষ করেছেন ২১ রানে ৫ উইকেট নিয়ে।

সাকিবের চার উইকেটে পথহারা উইন্ডিজ

বল ঠিকমতো গ্লাভসে জমাতে অনেকটা সময় নিলেন মুশফিকুর রহিম। কিন্তু ব্যাটসম্যান কার্লোস ব্র্যাথওয়েটের সেদিকে খেয়ালই নেই যেন। শেষ পর্যন্ত স্টাম্পিং করার সময় পেলেন মুশফিক। সাকিব ধরলেন চতুর্থ শিকার।

সাকিবের বলে সুইপ করতে গিয়ে বাইরে চলে এসেছিল ব্র্যাথওয়েটের পা। বল মুশফিকের বুকে লেগে বাহুতে গড়িয়ে জমে গ্লাভসে। তখনও ভেতরে আসতে পারেননি ব্র্যাথওয়েট। হয়ে যান স্টাম্পড।

৩ বলে ৮ রানে আউট ব্র্যাথওয়েট। ১২.৪ ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৬ উইকেটে ১১৮। সাকিব চতুর্থবার পেলেন টি-টোয়েন্টিতে চার উইকেট।

ব্রাভোকেও ফেরালেন সাকিব

হেটমায়ারকে ফেরানোর পর একই ওভারে সাকিব ফেরালেন ড্যারেন ব্রাভোকে। ক্রস ব্যাটে স্লগ করতে গিয়েছিলেন ব্রাভো। ব্যাটের কানায় লেগে বল যায় শর্ট থার্ড ম্যানে মুস্তাফিজের হাতে।

৩ বলে ২ রান করে আউট ব্রাভো। ১১ ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান ৫ উইকেটে ১০১।

সাকিবের শিকার হেটমায়ার

বিপজ্জনক শিমরন হেটমায়ারকে ফিরিয়ে বাংলাদেশকে বড় স্বস্তি এনে দিলেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। দারুণ ক্যাচ নিলেন সাইফ উদ্দিন।

অ্যাঙ্গেলে অফ স্টাম্পের বাইরে বেরিয়ে যাওয়া বল অন সাইডে ওড়াতে চেয়েছিলেন হেটমায়ার। বল লাগে তার ব্যাটের ওপরের দিকে। মিড উইকেট থেকে অনেকটা দৌড়ে মিড অনের দিকে ছুটে সামনে ডাইভ দিয়ে ক্যাচ নেন সাইফ।

১৭ বলে ১৯ রানে ফিরলেন হেটমায়ার। ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান ১০.২ ওভারে ৪ উইকেটে ৯৮।

বাজে সিদ্ধান্তের পর টিকলেন হেটমায়ার

মিরাজের বলে শিমরন হেটমায়ারকে এলবিডব্লিউ দিয়েছিলেন অভিষিক্ত আম্পায়ার গাজী সোহেল। হেটমায়ার রিভিউ নেন সঙ্গে সঙ্গেই। রিপ্লেতে দেখা যায়, বল লেগেছে ব্যাটে, প্যাডে স্পর্শই করেনি। আলট্রা এজে সেটি স্পষ্ট হয় আরও। হেটমায়ারের রান ছিল তখন ৩।

শুরুতেই রক্ষা পেলেন পাওয়েল

মিরাজের বলে পুল শট ঠিকমতো খেলতে পারেননি রভম্যান পাওয়েল। বল গিয়েছিল সোজা শর্ট মিড উইকেটে সাকিবের দিকে। কিন্তু বাংলাদেশ অধিনায়ক হয়তো দেখতে পারেনি ঠিকমতো। বল তার আঙুল ছুঁয়ে যায় পেছনে। পাওয়েল বেঁচে গেলে ৬ রানে।

ওই বলেই শেষ হলো ক্যারিবিয়ানদের পাওয়ার প্লে। ৬ ওভার শেষে ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান ৩ উইকেটে ৭০।

হোপ-ঝড় থামালেন মিরাজ

অবশেষ শেই হোপকে থামাতে পারল বাংলাদেশ। নিজের প্রথম ওভারের দ্বিতীয় বলেই ক্যারিবিয়ান ওপেনারকে ফেরালেন মিরাজ।

মিরাজের বলটিতে সুইপ করেছিলেন হোপ। তবে ঠিকমতো যেতে পারেননি বলের নিচে। তাই জোর পাননি বেশি, বল ওপরেও ওঠেনি যথেষ্ট। ডিপ মিড উইকেটে ক্যাচ নেন লিটন। বোলার মিরাজের উল্লাসই বলে দিচ্ছিল, উইকেটটি কতটা কাঙ্ক্ষিত ছিল বাংলাদেশের।

১৯ বলে ৩৬ রানে ফিরলেন হোপ। ৫.২ ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান ৩ উইকেটে ৬২।

পুরানকে ফেরালেন সাকিব

জুটি ভাঙেতে আক্রমণে আসেন বাংলাদেশ অধিনায়ক নিজেই। তার দ্বিতীয় বলে সুইপ করে বল গ্যালারিতে পাঠান নিকোলাস পুরান। পরের বলেই খেলেছিলেন সুইপ। এবার ব্যাটের ওপরের দিকে লেগে বল ওঠে শর্ট ফাইন লেগে। ক্যাচ নেন তামিম।

৬ বলে ১৪ রান করে ফিরলেন পুরান। ৪.৩ ওভারে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২ উইকেটে ৫৯। জুটি ছিল ১৪ বলে ৪১ রানের। আরেক পাশে ১৪ বলে ৩৩ নিয়ে খেলছেন হোপ।

এক ওভারে ২৪

শেই হোপ আবারও ছুটছেন অপ্রতিরোধ্য গতিতে। তাকে থামানোর পথই পাচ্ছে না বাংলাদেশ। তার ব্যাটিং তাণ্ডবে মুস্তাফিজের এক ওভারে এসেছে ২৪ রান!

চতুর্থ ওভারে বোলিংয়ে আসা মুস্তাফিজের প্রথম চার বলেই চারটি চার মারেন হোপ। পঞ্চম বলে আসে দুই রান। পরের বলে ওয়াইডসহ বাউন্ডারিতে ৫ রান। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ফিফটি স্পর্শ করে ৩.৫ ওভারেই। শেষ বলে আসে সিঙ্গেল।

আবু হায়দারের শিকার লুইস

বিপজ্জনক এভিন লুইসকে ডানা মেলতে দিলেন না আবু হায়দার। উড়িয়ে মেরে আউট হলেন লুইস।

লেগ স্টাম্পে ফুল লেংথ বল করেছিলেন আবু হায়দার, বলটি ছিল শট খেলার মতোই। কিন্তু বেশি জোরে মারতে গিয়েই হয়তো যতটা আকাশে তুললেন লুইস, ততটা দূরত্ব পেরোলো না বল। মিড উইকেট সীমানায় ক্যাচ নিলেন লিটন।

৬ বলে ১ রান করে ফিরলেন লুইস। ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান ২.১ ওভারে ১ উইকেটে ১৮।

রিভিউয়ে রক্ষা লুইসের

প্রথম ওভারের শেষ বলে এভিন লুইসকে এলবিডব্লিউ দিয়েছিলেন আম্পায়ার। কিন্তু ক্যারিবিয়ান ওপেনার টিকে গেলেন রিভিউয়ে।

বাঁহাতি পেসার আবু হায়দারের বল স্কিড করে একটু নিচু হয়ে লাগে লুইসের প্যাডে। আম্পায়ার আঙুল তুললে শরীরী ভাষায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান লুইস। রিভিউ নেন। আলট্রা এজে দেখা যায়, প্যাডে লাগার আগে লুইসের ব্যাটের নিচের দিকে লেগেছিল বল।

রেকর্ড সংগ্রহ

লিটন দাসের ঝড়ে শুরু, সৌম্যর ব্যাটে বেগবান সেই ঝড়। মাঝে একটু কমে এলেও ঝড়ের তীব্রতা আবার বাড়ে সাকিব ও মাহমুদউল্লাহর ব্যাটে। সব মিলিয়ে ২০ ওভারে বাংলাদেশ তুলেছে ৪ উইকেটে ২১১। শেষ ৫ ওভারে এসেছে ৭১ রান।

আগে ব্যাট করে এই প্রথম দুইশ স্পর্শ করেছে বাংলাদেশ। দেশের মাটিতেও দুইশ হলো প্রথমবার। সব মিলিয়ে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড এই বছরই শ্রীলঙ্কায় নিদাহাস ট্রফিতে লঙ্কানদের ২১৪ রান তাড়ায় জিতে যাওয়া ম্যাচে করা ২১৫ রান।

শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে সর্বোচ্চ দলীয় রানের রেকর্ড এটিই। আগের সর্বোচ্চ ছিল ২০১৩ সালে বাংলাদেশের বিপক্ষে নিউ জিল্যান্ডের ২০৪।

২৬ বলে ৪২ রানে অপরাজিত থেকে ইনিংস শেষ করেছেন সাকিব, ২১ বলে অপরাজিত ৪৩ মাহমুদউল্লাহ। দুজনের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে এসেছে ৪২ বলে ৯১ রান।

পঞ্চম উইকেটে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ জুটি এটিই। ৮৪ রানের আগের রেকর্ড ছিল মাহমুদউল্লাহ ও মুশফিক জুটির।

জিততে হলে বাংলাদেশের বিপক্ষে রান তাড়ার রেকর্ড গড়তে হবে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে। এই বছরের শুরুতে ১৯৩ রান তাড়ায় লঙ্কানদের জয় বাংলাদেশের বিপক্ষে রান তাড়ার রেকর্ড।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ: ২০ ওভারে ২১১/৪ (তামিম ১৫, লিটন ৬০, সৌম্য ৩২, সাকিব ৪২*, মুশফিক ১, মাহমুদউল্লাহ ৪৩*; কটরেল ২/৩৮, টমাস ১/৪৩, ব্র্যাথওয়েট ০/৪৩, অ্যালেন ১/২৯, পল ০/৫৪)।

জুটির ফিফটি

দ্রুত ৩ উইকেট তুলে নিয়ে ম্যাচে ফেরার চেষ্টা করেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ, সাকিব ও মাহমুদউল্লাহর পাল্টা আক্রমণে আবার বাংলাদেশ নিয়েছে ইনিংসের লাগাম। পঞ্চম উইকেটে সাকিব ও মাহমুদউল্লাহ জুটির ফিফটি এসেছে কেবল ২১ বলে।

সাকিবের ছক্কায় দলের দেড়শ

দ্রুত ৩ উইকেট হারালেও মাহমুদউল্লাহ ও সাকিবের ব্যাটে এগোচ্ছে বাংলাদেশ। উইকেটে গিয়েই কটরেলকে টানা তিন বলে বাউন্ডারি মেরেছেন মাহমুদউল্লাহ। প্রতিপক্ষ অধিনায়ক ব্র্যাথওয়েটের বলে বাংলাদেশ অধিনায়কের ছক্কায় দল দেড়শ ছুঁয়েছে ১৫.২ ওভারে।

টিকলেন না মুশফিক

সৌম্য-লিটনের বিদায়ের পর বাংলাদেশ দ্রুত হারাল আরও একটি উইকেট। উইকেটে যাওয়ার পরপরই উড়িয়ে মারতে গিয়ে আউট হলেন মুশফিকুর রহিম।

নতুন দুই ব্যাটসম্যানকে চাপে রাখতেই ওশান টমাসকে আক্রমণে ফেরান ক্যারিবিয়ান অধিনায়ক। লেগ-মিডল স্টাম্পে ফুল লেংথ বলে সামনের পা সরিয়ে স্লগ করেছিলেন মুশফিক। বল ওঠে আকাশে। ডিপ মিড উইকেটে ফিল্ডার ফ্যাবিয়ান অ্যালেন শুরুতে ইঙ্গিত করেছিলেন ফ্লাড লাইটে বল হারিয়ে ফেলেছিলেন। পরে ঠিকই হাতে জমান বল।

৩ বলে ১ রানেই থামলেন মুশফিক। ১৩ ওভারে বাংলাদেশের রান ৪ উইকেটে ১২০। বাংলাদেশ ৩ উইকেট হারাল ১০ রানের মধ্যে।

কটরেলের শিকার লিটনও

ওভারের প্রথম বলে সৌম্য, শেষ বলে শিকার লিটন। দ্বিতীয় স্পেলে ফেরার ওভারটিতে দলকে জোড়া সাফল্য এনে দিলেন শেলডন কটরেল।

রাউন্ড দা উইকেটে এসে স্টাম্পের বেশ দূর থেকে বল করেছিলেন বাঁহাতি কটরেল। অ্যাঙ্গেলে একটু স্কিড করে ভেতরে ঢোকে বল। লিটন চেয়েছিলেন কাট করতে, কিন্তু জায়গা পাননি। শেষ মূহুর্তে লেট কাট করতে গিয়েও পারেননি বলে ব্যাট ছোঁয়াতে। বোল্ড হলেন ৩৪ বলে ৬০ রান করে।

১২ ওভারে বাংলাদেশ ৩ উইকেটে ১১৩।

দুর্দান্ত ক্যাচে সৌম্যর বিদায়

আক্রমণে ফিরে প্রথম বলেই দলকে ব্রেক থ্রু এনে দিলেন শেলডন কটরেল। ব্র্যাথওয়েটের দারুণ ক্যাচে ফিরলেন সৌম্য।

কটরেলের স্লোয়ার শর্ট বলটিতে জায়গা বানিয়ে খেলেছিলেন সৌম্য। শটে জোর ছিল বেশ। এক্সট্রা কাভারে দীর্ঘদেহী ব্র্যাথওয়েট লাফিয়ে ডান হাতে থামিয়ে দেন বলের গতি। তবে হাতে জমাতে পারেনি তখন। কিন্তু মাটিতে পড়ার সময় দ্বিতীয় প্রচেষ্টায় লুফে নেন বল।

২২ বলে ৩২ রান করে ফিরলেন সৌম্য। ভাঙল ৪৩ বলে ৬৮ রানের দ্বিতীয় উইকেট জুটি। বাংলাদেশের রান ১১.১ ওভারে ২ উইকেটে ১১০।

বাংলাদেশের একশ

লিটন দাসের সঙ্গে হাত খুলতে শুরু করেছেন সৌম্য সরকারও। দুইজনের দারুণ ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ একশ ছুঁয়ে ফেলেছে ১০.১ ওভারেই। লিটনের রান ২৯ বলে ৫৬, সৌম্যর ১৮ বলে ২৪। দুজনের জুটির রান ৫৮।

জীবন পেলেন লিটন

কিমো পলের বলে ক্যাচ দিয়েও বেঁচে গেলেন লিটন দাস। অফ স্টাম্পের বাইরে ফুল লেংথ বলে উড়িয়ে মেরেছিলেন। বৃত্তের ভেতরেই এক্সট্রা কাভারে ফিল্ডার ড্যারেন ব্রাভো বলের গতি বুঝতে সময় নিয়েছেন খানিকটা। পরে ডাইভ দিয়ে হাত ছোঁয়ালেও বল ধরে রাখতে পারেননি। লিটন রক্ষা পেলেন ৫৫ রানে।

লিটনের ফিফটি

প্রথম ম্যাচের ব্যর্থতা ভুলে লিটন যেন ফিরে গেলেন দুই দলের আগের সিরিজের ফর্মে। সেই সিরিজের শেষ ম্যাচে ২৪ বলে ফিফটি করেছিলেন এই ওপেনার। এবার ফিফটি করলেন ২৬ বলে। টি-টোয়েন্টিতে তার ফিফটি এই দুটিই।

ব্র্যাথওয়েটকে মিড অফের ওপর দিয়ে উড়িয়ে বাউন্ডারিতে লিটন স্পর্শ করেছেন ফিফটি। ইনিংসে সেটি তার পঞ্চম চার। পাশাপাশি ইনিসংটিতে লিটন ছক্কা মেরেছেন চারটি।

পাওয়ার প্লেতে ঝড়

লিটন দাসের সৌজন্যে তামিমকে হারানোর ধাক্কা সামলে বাংলাদেশ ছুটছে দারুণ গতিতে। পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে বাংলাদেশ তুলেছে ৬১ রান। লিটনের অবদান ১৯ বলে ৪১।

ছক্কায় দলের ফিফটি

ওশান টমাসের গতিময় ডেলিভারিকে আরও তীব্র গতিতে মাথার ওপর দিয়ে উড়িয়ে মারলেন লিটন। বল আছড়ে পড়ল সাইটস্ক্রিণের কাছে। লিটনের তৃতীয় ছক্কায় বাংলাদেশ স্পর্শ করল পঞ্চাশ। ৫.৩ ওভারে হলো বাংলাদেশের ফিফটি। পরের বলেই লিটন আরেকটি ছক্কা মারলেন দুর্দান্ত এক স্কুপ শটে।

আবারও ব্যর্থ তামিম

আগের ম্যাচের মতোই জীবন পেয়ে কাজে লাগাতে পারলেন না তামিম। ১৩ রানে জীবন পেয়ে আউট হয়ে গেলেন ১৫ রানে।

স্পিন আক্রমণে এনে প্রথম ওভারেই সফল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। বাঁহাতি স্পিনার ফ্যাবিয়ান অ্যালেন শুরু করেছিলেন ওয়াইড দিয়ে। পরের বলটি ছিল লেংথ বল। তামিম চেয়েছিলেন পুল করে মিড উইকেট দিয়ে ওড়াতে। কিন্তু পারেননি বৃত্তের ভেতরের ফিল্ডারকে ফাঁকি দিতে। ক্যাচ নিয়েছেন কটরেল।

১৬ বলে ১৫ রান করে আউট হলেন তামিম। বাংলাদেশ ৪.১ ওভারে ১ উইকেটে ৪২।

তামিম-লিটনের ঝড়ো শুরু

তামিম ও লিটনের সৌজন্যে বাংলাদেশ পেয়েছে ভালো শুরু। আগের ম্যাচর নায়ক কটরেলের এক ওভারে লিটন মেরেছেন তিনটি চার। ব্র্যাথওয়েটের প্রথম ওভারেই মেরেছেন টানা দুটি বিশাল ছক্কা। আরেক পাশে তামিমও খেলছেন আস্থার সঙ্গে।

৪ ওভারে বাংলাদেশের রান বিনা উইকেটে ৪১। ১০ বলে ২৫ রান নিয়ে খেলছেন লিটন, ১৫ বলে ১৫ তামিম।

জীবন পেলেন তামিম

আগের ম্যাচে প্রথম ওভারে ক্যাচ দিয়েও বেঁচে গিয়েছিলেন তামিম। এবার জীবন পেলেন তৃতীয় ওভারে।

বাঁহাতি পেসার শেলডন কটরেলকে উড়িয়ে মারতে চেয়েছিলেন কাভারের ওপর দিয়ে। খুব কঠিন ক্যাচ ছিল না। কিন্তু হাত ছুঁইয়েও বল জমিয়ে রাখতে পারেননি ফ্যাবিয়ান অ্যালেন। ১৩ রানে জীবন পেলেন তামিম।

অপরিবর্তিত বাংলাদেশও

প্রথম ম্যাচে একদম পাত্তা না পেলেও বাংলাদেশের টিম ম্যানেজমেন্ট ভরসা রেখেছে একই একাদশে। হেরে যাওয়া একাদশে আনা হয়নি কোনো পরিবর্তন।

একই একাদশ নিয়ে উইন্ডিজ

প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশকে উড়িয়ে দেওয়া একাদশে কোনো পরিবর্তন আনেনি ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সিরিজ জয়ের অভিযানে খেলতে নামছে তারা একই একাদশ নিয়ে।

টসে হেরে ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশ

জ্বরের কারণে খেলা নিয়ে খানিকটা শঙ্কা থাকলেও শেষ পর্যন্ত মাঠে নেমেছেন সাকিব আল হাসান। করেছেন টস। তবে আগের ম্যাচের মতো এবার টস ভাগ্যকে পাননি পাশে। ক্যারিবিয়ান অধিনায়ক কার্লোস ব্র্যাথওয়েট টস জিতে বাংলাদেশকে পাঠিয়েছেন ব্যাটিংয়ে।

প্রেরণায় উইন্ডিজ সফর

দুই দলের সবশেষ সিরিজের অভিজ্ঞতাই এখন বাংলাদেশের প্রেরণা। গত জুলাই-অগাস্টে সেই সিরিজে সেন্ট কিটসে প্রথম ম্যাচে হেরেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু পরের দুই ম্যাচে ফ্লোরিডায় দারুণ দুটি জয়ে বাংলাদেশই জিতে নিয়েছিল সিরিজ। এবারও সিরিজের প্রথম টি-টোয়েন্টিতে সিলেটে হেরেছে বাংলাদেশ। লক্ষ্য এবার মিরপুরের ম্যাচ দুটি জেতা। আপাতত প্রথম লক্ষ্য দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি জিতে সিরিজে সমতা ফেরানো। ম্যাচ শুরু হবে বিকেল পাঁচটায়।