নতুন চ্যালেঞ্জের জন্য প্রস্তুত হতে চান মাশরাফি

বাংলাদেশের জার্সিতে কি মিরপুরে শেষ ম্যাচ খেলে ফেলেছেন মাশরাফি? সিলেটের অভিষেক ওয়ানডে কি দেশের মাটিতে মাশরাফির শেষ? বিশ্বকাপের পর নিশ্চয়ই আর খেলবেন না! ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজ শুরুর আগে থেকে শুরু হয়েছে নানা জল্পনা। সময়ের সঙ্গে কেবল তীব্রই হয়েছে সেই স্রোত। সিরিজ শেষে যেন আরও বেগবান। সেই স্রোতে বাঁধ দিলেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। জানালেন, শেষ নিয়ে ভাবছেন না, বরং প্রস্তুত হতে চান সামনের সব চ্যালেঞ্জের জন্য।

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 14 Dec 2018, 04:02 PM
Updated : 14 Dec 2018, 04:30 PM

২০১৯ বিশ্বকাপের পর আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানাবেন মাশরাফি, এটা ধরে নিয়েই মূলত চলছে আলোচনার এই জোয়ার। বিশ্বকাপের আগে এই ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজই ঘরের মাঠে বাংলাদেশের শেষ সিরিজ। বিশ্বকাপের পর সত্যিই অবসর নিলে দেশের হয়ে দেশের মাটিতে শেষ ম্যাচ খেলে ফেলেছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।

তবে মাশরাফি সিরিজ শুরুর আগে থেকেই বলে আসছেন, ভবিষ্যৎ বা অবসর নিয়ে সুনির্দিষ্ট কিছুই ভাবেননি। সিরিজ শেষে সংবাদ সম্মেলনেও উঠল একই প্রসঙ্গ। মাশরাফির উত্তর ঠিক আগের মতোই।

“সত্যি বলতে, ২০১১ থেকে প্রতি ম্যাচ খেলার সময়ই আমার মনে হয়, আবার যদি হাঁটুতে লেগে যায়, যেটা আগেও হুট করে হয়েছে, তাহলে এমনিতেও শেষ। ২০১১ থেকেই এরকম মনে হয়। আপনি যে অর্থে বলেছেন, সত্যি বলতে একদম গভীর থেকেই সত্যি কথাই বলছি, মনের কথাই বলেছি যে কখনও এত গভীরভাবে ভাবিনি। কারণ সামনে আরও চ্যালেঞ্জ আছে। সেসব নেওয়ার জন্য আরও প্রস্তুত হতে চাই।”

“বিশ্বকাপের পর কি করব, সেটা বিশ্বকাপের শেষ ম্যাচ খেলার পর ঠিক করব। যদি মনে হয় খেলব না, তাহলে সেদিনই জানিয়ে দেব। বা হয়তো ঘরে এসে বলব। আর যদি মনে হয়, খেলতে পারছি, এসে রিভিউ করে আপনাদের জানাব। তো এখন আপনারা বিভ্রান্ত হবেন না।”

আগামী জাতীয় নির্বাচনে মাশরাফির প্রার্থী হওয়া নিয়েও সিরিজ শুরুর আগে থেকে আলোচনা হয়েছে তুমুল। তার মনোযোগ পুরোপুরি খেলায় থাকবে কিনা, উঠেছে সেই প্রশ্ন। সেই সিরিজেই দলকে সিরিজ জয়ে নেতৃত্ব দিলেন। তিন ম্যাচে ৬ উইকেট নিয়ে নিজে হয়েছেন সিরিজের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি (যৌথভাবে মেহেদী হাসান মিরাজের সঙ্গে)।

মাশরাফি জানালেন, বাইরের আলোচনা কিংবা নিবেদন প্রশ্নবিদ্ধ হওয়া, এসব নিয়ে তার ভাবনা ছিল না একটুও। নিজের কাছে তিনি ছিলেন পরিষ্কার।

“এই সিরিজ যে হবে, এক বছর আগেই জানি। প্রত্যেক ক্রিকেটারের আলাদা পরিকল্পনা থাকে। আমারও ছিল। মূল সমস্যা যেটি হয়েছিল যে হ্যামস্ট্রিংয়ের ইনজুরি খুব ভোগাচ্ছিল। কিন্তু প্রস্তুতির কথা বললে, জিম্বাবুয়ে সিরিজের পর আমার বিশ্রাম ছিল। আমি প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম, নিজের মতো চেষ্টা করেছি। কারও কথার নিয়ন্ত্রণ তো আপনার হাতে নেই।”

“সিদ্ধান্তের কথা যেটি বললেন, আমি সবসময়ই বিশ্বাস করি, মানুষের জীবনে যা ঘটে, সেটা কারও নিয়ন্ত্রণে থাকে না। যেটি ঘটার, সেটি ঘটবেই। জন্মের পর থেকে সবার সবকিছু লিখিত থাকে। যে সিদ্ধান্তই নিন, সেসব আপনার পক্ষে আসবে বা বিপক্ষে, সেটার নিয়ন্ত্রণ আপনার থাকে না। আমি কিন্তু টুর্নামেন্ট শুরুর আগে যে পরিকল্পনা ছিল, সেটিতেই ছিলাম। আজকের পর হয়তো অন্যকিছু চিন্তা করতে পারি। আজকে পর্যন্ত পুরো মনোযোগ ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজে।”

“আমি পরিষ্কার করে বলতে চাচ্ছি যে, আমি নিজের কাছে পরিষ্কার ছিলাম এবং ফোকাসড ছিলাম যে আমার আগে কাজ ছিল খেলা। আগে এটি শেষ করে অন্য কাজ করব। আমি আর দশটা সিরিজের মতোই ফোকাসড ছিলাম। টি-টোয়েন্টির জন্য দলকে শুভ কামনা জানিয়ে যাচ্ছি। আমি আমার কাজই করব।”