মাশরাফির রেকর্ডের রোমাঞ্চ ছুঁয়ে যাচ্ছে মুশফিককে

লম্বা ব্যাটিং সেশন শেষ করে কিটব্যাগ গুছিয়ে ড্রেসিং রুমে ফিরছিলেন মুশফিকুর রহিম। মাশরাফি বিন মুর্তজার রেকর্ডের কথা শুনে থমকে দাঁড়ালেন। বিস্তারিত জেনে স্বতস্ফূর্ত হাসিতে বললেন, “দারুণ অর্জন এটি। রেকর্ডটি মাশরাফি ভাইয়ের প্রাপ্য।”

ক্রীড়া প্রতিবেদকবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 13 Dec 2018, 02:56 PM
Updated : 13 Dec 2018, 02:57 PM

রেকর্ডটি নেতৃত্বের। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তৃতীয় ওয়ানডেতে টস করলেই বাংলাদেশকে সবচেয়ে বেশি ওয়ানডেতে নেতৃত্ব দেওয়ার রেকর্ড গড়বেন মাশরাফি। পেরিয়ে যাবেন তার প্রিয় অধিনায়ক হাবিবুল বাশারের ৬৯ ম্যাচে অধিনায়কত্বের রেকর্ড।

চার বছর আগে মুশফিকের কাছ থেকে নেতৃত্ব পেয়েই এই রেকর্ডের পথে শুরু হয়েছিল মাশরাফির যাত্রা। প্রথম দফায় নেতৃত্ব পাওয়ার পর কেবল ৭টি ওয়ানডেতে টস করতে পেরেছিলেন মাশরাফি। এরপর চোট-আঘাতের সঙ্গে লড়াই করতে করতে ছিটকে পড়েন নেতৃত্বের লড়াই থেকে।

২০১৪ সালে বাংলাদেশ ক্রিকেটের দুর্দশার প্রহর কাটানোর আশায় মুশফিককে সরিয়ে আবার নেতৃত্বে ফেরানো হয় মাশরাফিকে। সেই আশা পূরণ করে অধিনায়ক মাশরাফি বাংলাদেশের ক্রিকেটকে রাঙিয়েছেন অপ্রত্যাশিত সাফল্যের রঙে। একের পর এক সিরিজ জয়, বিশ্বকাপে প্রথমবার কোয়ার্টার-ফাইনালে ওঠা, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে প্রথমবার সেমি-ফাইনাল খেলা, আইসিসি ওয়ানডে র‌্যাঙ্কিংয়ে ছয়ে ওঠা, মাশরাফির হাত ধরে নতুন উচ্চতা ছুঁয়েছে ওয়ানডের বাংলাদেশ

সেই পরিক্রমায়ই মাশরাফি উঠছেন চূড়ায়। নেতৃত্ব হারালেও বাংলাদেশের এই সাফল্য যাত্রায় বড় অবদান ছিল মুশফিকের। ব্যাট হাতে খেলেছেন দুর্দান্ত সব ইনিংস। মাশরাফির অর্জনের রোমাঞ্চ ছুঁয়ে গেল তাকেও। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বললেন, রেকর্ডটি মাশরাফির পাশেই মানায়।

“দেশকে সবচেয়ে বেশি ওয়ানডেতে নেতৃত্ব দেওয়া অনেক বড় অর্জন। সাফল্য পেয়েছেন বলেই মাশরাফি ভাই টানা নেতৃত্ব দিতে পেরেছেন। রেকর্ডটি তাই তার প্রাপ্য। অনেক বড় বড় সাফল্য এসেছে তার অধিনায়কত্বে। আশা করি তার রেকর্ডের ম্যাচটি আমরা জয় দিয়ে স্মরণীয় করে রাখতে পারব। আরও অনেক দিন তিনি আমাদের নেতৃত্ব দেবেন, সেটিও আশা করি আমরা।”

মাশরাফির নেতৃত্বগুণের যে দিকটি সবচেয়ে বেশি প্রশংসিত হয়েছে সব সময়, রেকর্ড গড়ার আগে সেটা আবারও তুলে ধরলেন মুশফিক।

“প্রথম কথা হলো, মাশরাফি ভাই অসাধারণ একজন মানুষ। ক্রিকেটার বা অধিনায়কের আগে, উনি খুব ভালো একজন মানুষ। ভালো মানুষ বলেই তিনি সবার প্রিয়। যেটি তার অধিনায়কত্বেও ইতিবাচক প্রভাব রেখেছে।”

“দলকে দারুণভাবে অনুপ্রাণিত করতে পারেন উনি। সব অধিনায়কই এটা করতে চায়, কিন্তু সবাই পেরে ওঠে না। মাশরাফি ভাই কথা দিয়ে, উদাহরণ দিয়ে, শরীরী ভাষা দিয়ে সবাইকে উজ্জীবিত করেন। আমাদের মতো দলের জন্য যেটি খুব দরকার।”